পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

প্রজন্ম চত্বরে বাড়ছে ভিড়, বিকালে রায়েরবাজারে সমাবেশ

265ঢাকা : দেশব্যাপী ইসলামী সমমনা ১২ দলের শুক্রবারের বিক্ষোভের পর শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্বের আন্দালনের শনিবার ভোর থেকেই বাড়ছে আন্দোলনকারীদের ভিড়। তবে শাহবাগের আন্দোলনকারীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় নতুন করে লাগাতার অবস্থানের ঘোষণা দেয়ার পর রাত ১১টার সময় তা স্থগিত করে। এবং শনিবার সকালে ফের জমায়েতের ঘোষণা দেয়।

এদিকে শনিবার ভোর থেকেই যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি এবং পূর্বঘোষিত জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে শনিবারের বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নিয়ে শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করে আন্দোলনকারীরা।

যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে নতুন উদ্যমে শুরু হওয়া এ গণআন্দোলন শনিবার পড়েছে ১৯তম দিনে। আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগানের মধ্য দিয়ে পতাকা মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

শুক্রবার শাহবাগের শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর থেকে পূর্বনির্ধারিত মাসব্যাপী কর্মসূচির সঙ্গে আরো কিছু যুক্ত করা হয়। বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা, জাতীয় পতাকায় অগ্নিসংযোগ, শহীদ মিনার ভাংচুরসহ শুক্রবার সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের তা-বের প্রতিবাদে শনিবার বিকাল ৩টায় সারা দেশে জাতীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষনা দেয়া হয়।

এদিকে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুসারে শনিবার বিকাল ৩টায় রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে পতাকা হাতে মহাসমাবেশ  ও শপথ গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ, কাদের মোল্লাসহ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিসহ ৬ দফা দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ দিন টানা গণঅবস্থান চালিয়ে গণআন্দোলন চলে গণজাগরণ চত্বরে। শুক্রবার সকালে মূল গণজাগরণ চত্বর ছেড়ে দিয়ে কিছুটা দূরে শুরু হয় গণস্বাক্ষর কর্মসূচি। কিন্তু জুমার নামাজের পর দেশজুড়ে ইসলামী সমমনা ১২ দলের বিক্ষোভ কর্মসূচির পর বিকাল থেকে ফের শাহবাগে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।

Posted in জাতীয় | Leave a comment

প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের প্রতিবাদ সমাবেশ

26ঢাকা: শুক্রবার দেশব্যাপী সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবে সমাবেশ করছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন। শনিবার দুপুর ১২টায় এ প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী।

সমাবেশে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খানসহ অন্যান্য সংবাদিক নেতারা উপস্থিত রয়েছেন।

উল্লেখ্য, শুক্রবার বাদ জুমা ইসলামী সমমনা ১২ দলের প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশ ও মুসল্লিদের হামলায় অন্তত ১২ জন সাংবাদিক আহত হন।

Posted in জাতীয় | Leave a comment

যশোরে ইসলামী ব্যাংক ভাঙচুর

যশোরে ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথ ভাঙচুর করেছে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতাকর্মীরা। এসময় ব্যাংকের যশোর শাখায় তারা ইটপাটকেল ছোড়ে। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে হরতালবিরোধী ১৪ দলের একটি মিছিল থেকে এ ভাঙচুর চালানো হয়।

মিছিলটি শহরের চৌরাস্তা এলাকা পার হওয়ার সময় কোতোয়ালি থানার সামনে ইসলামী ব্যাংকে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় মিছিলকারীরা ব্যাংকের এটিএম বুথ ভাঙচুর করে। এতে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনের কয়েকটি গ্লাস ভেঙে যায়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রহমান এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই মিছিলকারীরা চলে যায়।

Posted in সারা দেশ | Leave a comment

জননী, শুনতে পাচ্ছেন শাহবাগ আপনার লাখো সন্তানের গর্জন

Rbbx, ïb‡Z cv‡”Qb kvnevM Avcbvi jv‡Lv mš—v‡bi MR©bশহীদ জননী জাহানারা ইমাম তার মেধাবী সন্তান রুমীকে উৎসর্গ করলেন ‘৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে। তারকাচিহ্নিত সন্তান রুমীর পড়তে যাওয়ার কথা স্বপ্নের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ‘৭১-এর ৭ মার্চ রেসকোর্স মাঠে লাখো জনতার সামনে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। ‘৪৭-এ ব্রিটিশ শাসকরা চলে যাওয়ার সময় আমাদের বুকে চাপিয়ে দিয়ে গেলো পাকিস্তান নামক উদ্ভট রাষ্ট্রের পাঞ্জাবি সিভিল-মিলিটারি শাসকদের। এদিকে যে বাঙালি নেতা যেমন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, সোহরাওয়ার্দী বাংলার রাজনৈতিক অঙ্গনে নক্ষত্র হয়ে জ্বলছিলেন। তারা কেন যেন নিষ্প্রভ হয়ে অবাঙালি ধূর্ত নেতা জিন্নাহর হাতে বাঙালির ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব অর্পণ করলেন। ১৯৪০ সালে ২৩ মার্চ লাহোরে পাকিস্তান প্রস্তাবের জন্য যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো, সেখানে একশত ভাগ বাঙালি শেরেবাংলা উর্দুতে বক্তৃতা করলেন। এর ফলে জিন্নাহর ধারণা হলো যে মুসলমান বাঙালিদের প্রিয় ভাষা উর্দু। এরই ফলশ্র“তিতে জিন্নাহ সাহেব ‘৪৮ সালে ঢাকায় এসে বললেন, ‘উর্দু, উর্দু এবং উর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’। গর্জে উঠলো বাংলার দামাল ছেলেরা। এলো ভাষা আন্দোলন। ‘৫২ সালের ২১ ফেব্র“য়ারি ঢাকার রাজপথে চললো গুলি। রক্ত ঝরলো। সেখানে উপ্ত হলো আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজ। ১৯৬২-তে শিক্ষা আন্দোলন, ‘৪৬-তে সমাবর্তন বর্জনের আন্দোলন, ‘৬৬-তে ছয়দফা ঘোষিত যা কিনা বাঙালির মুক্তি সনদ বা ম্যাগনা কার্টা, ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং পাকিস্তানের স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল এবং রাষ্ট্রপতি আইয়ুবের পতন। আরেক জেনারেল ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা গ্রহণ করে ঘোষণা দিলেন যে, সাধারণ নির্বাচন হবে। পাকিস্তানের ২৪ বছরের ইতিহাসে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো ১৯৭০-এর ডিসেম্বর। জাতীয় পরিষদের ৩০০ আসনের ভেতর বাংলাদেশের জন্য (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছিল ১৬২টি আসন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ১৬০টি আসন। অর্থাৎ জনগণ ছয়দফার ম্যান্ডেট দিলেন বঙ্গবন্ধুকে। পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে ৪টি প্রদেশের ভেতর পশ্চিম পাঞ্জাব এবং সিন্ধু প্রদেশে ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলো। তারপরও ভুট্টো দাবি করলেন তনি পশ্চিম পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা। অথচ তখন পশ্চিম পাকিস্তান নামে কোনো প্রদেশ ছিল না। ইতোমধ্যে ভুট্টো এবং পাকিস্তানি জেনারেলদের অশুভ আঁতাত গড়ে উঠলো। নানা চক্রান্ত হলো। পরিশেষে ২৫ মার্চ ‘৭১-এ পাকবাহিনী নিরস্ত্র ঢাকা শহরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। শুরু হলো মহান মুক্তিযুদ্ধ। পাকবাহিনী ধানম-ি, গুলশান, বনানী, বেইলি রোডের মতো অভিজাত এলাকায় কোনো আক্রমণ চালায়নি। তারা হামলা করেছে বস্তি আর হিন্দু এলাকা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। নয় মাস যুদ্ধ চললো। ৩০ লাখ লোক শহীদ হলেন। ৩ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারালেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সরকার গঠন করলেন। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ-রাষ্ট্রপতি এবং ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী। তাজউদ্দিন আহমেদের বলিষ্ঠ এবং দক্ষ নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ চললো এবং ১৬ ডিসেম্বর ‘৭১-এ চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলো। ২৬ মার্চ ‘৭১-এর প্রথম প্রহরে পাকবাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে সবাই আত্মনিয়োগ করেন। পাকিস্তানের অত্যাচারে ১ কোটি মানুষ দেশ ত্যাগ করেছিল। অসংখ্য রেল ও সড়ক সেতু ভেঙে দেয়া হয়। অতএব বিরাট এক প্রশাসনিক গুরুদায়িত্ব।

তবে সেই সঙ্গে যেটা হওয়া উচিত ছিল, তাহলো শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা দেয়া এবং পাকবাহিনীর সহযোগীদের বিচারের ব্যবস্থা করা। অবশ্য রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ ৮ অর্থাৎ কোলাবরেটর আইন জারি করে এদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু যেটি ক্ষতির কারণ, তাহলো মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের আত্মীয়করণ না হয়ে উল্টো হলো। অর্থাৎ হানাদার বাহিনীর সময় যারা চাকরি করেছিলেন তাদের সবাইকে কাজ করতে দেয়া হলো। কোনো যাচাই-বাছাই করা হয়নি। শুধু সরকারের দেয়া একটা আনুগত্য পত্রে তারা স্বাক্ষর করেন। অবশ্য মুজিবনগরে সিভিল সার্ভিস সদস্যদের সংখ্যা খুব কম ছিল। মুজিবনগর থেকে জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। স্বাধীনতা অর্জনের দুমাসের মাথায় এদের প্রত্যাহার করা হয়। এরা একটি কাজ খুব নিষ্ঠার সঙ্গে করছিলেন, তাহলো গণকবর খুঁজে বের করা। এদের প্রস্থানের পর কাজটিতে ভাটা পড়ে এবং এক পর্যায়ে স্তিমিত হয়ে যায়। পাকিস্তানি মানসিকতার প্রশাসকরা দালাল আইনের প্রয়োগেও শিথিলতা দেখান। তারপরও বিপুলসংখ্যক দালালদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং দেশব্যাপী ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করে বিচার কাজ শুরু হয় এবং অনেকের শাস্তি হয়। কিন্তু চাকা ঘুরে যায় ‘৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর। বস্তুত পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুর ফাঁসির আদেশ ‘৭১-এ দিয়ে রেখেছিল। তাদের দালাল যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কথিত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছিলেন তারা ‘৭৫-এর ১৫ আগস্ট পাকিস্তানি আদেশ কার্যকর করেন। জুলফিকার আলী ভুট্টোর মেয়ে বেনজির বলেছিলেন যে শেষ রাতে তার বাবা তাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার খবর দেয়। তার মানে খুনিদের সঙ্গে ভুট্টোর হটলাইন ছিল এবং বিষয়টা মনিটর করা হচ্ছিল। পাকিস্তানি স্পন্সরড হত্যাকা-, সে জন্য জয় বাংলা সøগানের পরিবর্তে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ এলো এবং বাংলাদেশ বেতার হলো রেডিও বাংলাদেশ। এরপর ডিসেম্বর সায়েম-জিয়া প্রশাসন দালাল আইন বাতিল করলো এবং যাদের শাস্তি হয়েছিল তাদের ছেড়ে দেয়া হলো। সেখানেই শেষ নয়, যুদ্ধাপরাধীদের জিয়ার দল বিএনপিতে নেয়া হলো। যেমন- শাহ আজিজুর রহমান। তিনি ‘৭১ সালে পাকিস্তানের হয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিলেন। তাকে প্রধানমন্ত্রী এবং জয়পুরহাটের নরহন্তা আব্দুল আলিমকে মন্ত্রী করা হয়। শর্ষিনার পীর সাহেব বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিলেন, তাই তাকে জিয়া স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করেন। এভাবে জিয়া, এরশাদ আমল কেটে গেলো। ১৯৯১ সালে বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী হলেন জামাতের সমর্থন নিয়ে। শহীদদের নাম বিস্মৃত হতে লাগলো। তখন সেই কথা মনে হলো, ‘বীরের রক্তস্রোত, মাতার অশ্র“ধারা/সবই কি ধরার ধুলায় হবে হারা’ তবে ইতিহাস বড় কঠিন। কোন বাঁকে কে এসে হাজির হন। এখন সময় আবির্ভাব হলো শহীদ জননী জাহানারা ইমামের। তিনি তো একশত ভাগ অরাজনৈতিক। যুদ্ধে পুত্র হারিয়েছেন, স্বামীও অমানুষিক নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বেশকিছু প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব তথা কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, রাজনীতিক, আইনজীবী এদের সমন্বয়ে গঠন করলেন ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি। ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক তিনি। তাকে উৎসাহ জুগিয়েছেন আরেক মহীয়ষী নারী এবং আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় কবি সুফিয়া কামাল। সম্মানিত পাঠক, স্মরণ করুন যখন রাজাকার দৌরাত্ম্য প্রশাসন দেশের শাসনকার্য চালাচ্ছিল, তখন একজন নারী যিনি ক্যান্সার আক্রান্ত, তিনি কি বিরাট এক দায়িত্ব নিলেন। এরপর সমমনা অন্যান্য সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের শত বাধাকে অতিক্রম করে গণআদালত গঠন করে সেখানে গোলাম আযমকে বিচার করে প্রতীকী ফাঁসি দেয়া হয়। সরকার তাকেসহ ২৪ জনকে আসামি করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করে। তিনি এই অভিযোগ মাথায় নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তবে তার প্রতিষ্ঠিত ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি নিরলসভাবে তার আদর্শকে অনুসরণ করে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে থাকে। অনেক সম্মানীত ব্যক্তি এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সবার নাম উল্লেখ করা সম্ভব নয়। তবে বিশেষ করে উল্লেখ করতে হয় শ্রদ্ধেয় কবীর চৌধুরী স্যারের নাম। যিনি ‘৯০-এর কাছাকাছি বয়সে অসুস্থ শরীরেও নির্মূল কমিটির সভায় উপস্থিত থাকতেন। বর্তমানে দেশব্যাপী এমন কি উপজেলা পর্যায়ে অনেক কমিটি গঠিত হয়েছে। বর্তমানে নির্মূল কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম রাব্বানি। বিশেষ কারণে তিনি দেশের বাইরে রয়েছেন। নির্বাহী চেয়ারম্যান শাহরিয়ার কবির, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন এবং সেক্রেটারি মুকুল অত্যন্ত দক্ষতা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে আন্দোলনটি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জননী, আজ একটি কথা মনে পড়লো শেরাটন হোটেলে একটি সেমিনারে বড় ব্যবসায়ীদের সেমিনার চলছিল। আমি উপস্থিত ছিলাম। তখন আপনার নেতৃত্বে আন্দোলন তুঙ্গে। বিএনপির এক ব্যবসায়ী কাম রাজনীতিক ব্যঙ্গ করে বলছিলেন বাংলাদেশে দুজন গুরুত্বপূর্ণ ইমাম- একজন বায়তুল মোকাররমের অপরজন জাহানারা ইমাম। অনেকে হো হো করে হেসেছিল। সেই ভদ্দরলোক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন চোরের মতো। এরা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। যতোদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততোদিন আপনার নাম জ্বলজ্বল করে জ্বলবে। যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লাকে গুরুতর অপরাধে লঘুদ- দেয়ার ফলে শাহবাগে কতিপয় দেশপ্রেমিক ব্লগার যে আহ্বান জানিয়েছিলেন, তা মহাসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত একই আওয়াজ তাহলো যুদ্ধাপরাধী নিপাত যাক। শহীদ জননী ১৯৯২ সালে যে আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিলেন তা আজ মহীরুহে পরিণত হয়েছে। বর্তমান মহাজোট সরকারের বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ম্যানিফেস্টোতে অঙ্গীকার ছিল যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে। বিচার শুরু হয়েছে তবে কিছু সময় নষ্ট হয়েছে। এটি অবশ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গাফিলতি কিংবা অদক্ষতার জন্য। অথবা তাদের ভেতর জামাতি সমর্থক আমলা ছিল, যাদের অন্তর্ঘাতমূলক কার্যক্রমের জন্য মূল্যবান সময় নষ্ট হয়ে গেছে। তবুও সেই পুরোনো কথা, একেবারে না হওয়ার চেয়ে বিলম্বে হওয়া ভালো। জননীর প্রতিষ্ঠিত নির্মূল কমিটি বিভিন্ন গঠনমূলক প্রস্তাব দিয়ে আসছে। তবে সরকারের কর্ণকুহরে প্রবেশ করতে সময় লাগছে। দুসপ্তাহ ধরে অষ্টপ্রহর শাহবাগে আন্দোলন চলছে। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই আসছেন। এখন অবশ্য উপজেলা পর্যন্ত এই গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে উঠছে। জননী, গোটা শাহবাগ এলাকায় একটি মাত্র ছবি, যা অঙ্কিত, সেটি আপনার। বিশালকায় এটি। কিন্তু যেটি কেউ লক্ষ করেনি, তাহলো এটি সকলের অলক্ষে বিস্তৃত হয়ে ৫৬ হাজার বর্গমাইল ছেয়ে ফেলেছে। ১৬ কোটি মানুষের হৃদয়ে এই ছবি। কবি রবি ঠাকুরের ভাষায় বলতে হয়, ‘নয়ন সমুখে তুমি নাই, নয়নের মাঝখানে নিয়েছো যে ঠাঁই।’ আমরা সবাই বড়ই তৃপ্ত এবং আনন্দিত যে অনেকে ভেবেছিলেন যে যুদ্ধাপরাধীদের বোধহয় ভুলে গেছে, তা নয়। আর আমরা যারা আপনার সরাসরি সৈনিক, তারা মনে মনে বেশি গর্ববোধ করি। তবে আমরা বাইরে বিনয়ী। আর আমাদের গর্ব তো আপনাকে নিয়ে। শাহবাগ গিয়ে আপনার ছবি দর্শনে হৃদয়ে আসে প্রশান্তি। নতুনভাবে জেগে ওঠে প্রেরণা, উদ্যম। তবে এতো বড় গণজাগরণেও কিন্তু ঘাতকরা দমেনি। ক’দিন আগে অসাধারণ এক দেশপ্রেমিক ব্লগার রাজীবকে ওরা তার বাড়ির সামনে হত্যা করে। হত্যার পদ্ধতি প্রমাণ করে যে ওরা ‘৭১-এর ঘাতকদের উত্তরসূরি। তাছাড়া সেই ইসলামবিরোধী হওয়ার অভিযোগ রাজীবের হত্যাকা- ঘটার পর পাকিস্তানে নাকি একদল উল্লাস করেছিল। অবশ্য পাকিস্তানে এটা অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। ‘৭১ সালে পাকিস্তানিরা যখন বাঙালি নিধন করেছিল তখন হাতেগোনা ২/১ জন পাকিস্তানি বুদ্ধিজীবী কোনো প্রতিবাদ করেনি। এখনো বেশিরভাগ পাকিস্তানি শিক্ষিতরা বাঙালিদের ঘৃণার চোখে দেখে। আমি নিজের একটি অভিজ্ঞতা বলতে চাই। লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে চেকআউটের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম। জার্মানির হামবুর্গ যাওয়ার জন্য বিমান ধরবো। সারারাত প্লেনে ছিলাম। মাথাটা ভার ভার, সিগন্যাল খেয়াল না করে কাউন্টারে হাজির হয়ে খেয়াল হলো যে, ভুল করছি। সঙ্গে সঙ্গে একাধিকবার সরি বললাম। দুর্ভাগ্যক্রমে সে কাউন্টারে ছিল এক পাকিস্তানি কুকুর (ব্যক্তি)। বাংলাদেশের পাসপোর্ট দেখার পর আমাকে এতো অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে লাগলো। ক্ষোভে, দুঃখে মন বিষণ্ন হয়ে উঠলো। কিছু বলতে পারছিলাম না পাছে আরো বিলম্ব ঘটায়। হ্যামবুর্গ বিমানবন্দরে একজন নিতে আসবে, আর আমি আদৌ জার্মান ভাষা জানি না। আমার এই অবস্থা দেখে পাশের কাউন্টারের ইংরেজ ভদ্দরলোক বললেন, ‘ফরগেট ইট’ তারপর সেই কুকুরের (ব্যক্তি) হাত থেকে রেহাই পাই। পাকিস্তানিরা বাঙালিদের কোনোদিন পছন্দ করতো না। তবে প্রভুভক্ত কুকুরের মতো যেসব বাঙালি পাকিস্তানিদের পদলেহন করতো, তারা অবশ্য পাকিস্তানি প্রভুদের অনুকম্পা পেয়েছে বা এখনো পায়।
আমি নাম মনে করতে পারছি না। মুনতাসীর মামুনও হতে পারে। যিনি হোন, তার লেখায় পড়েছিলাম। ঘটনাটা বেশ আগের। তিনি লিখেছেন যে বেশকিছু ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেছেন, তাদের অনেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ছিলেন। তারা সবাই আহা উহু করেছেন। তারা বলেছেন যে, আমরা ভাই ভাই ছিলাম, পৃথক হয়ে গেলাম। কিন্তু কেউ এ কথা বলেননি যে, বাংলাদেশে পাকিস্তানিরা যা করেছে তা অন্যায় হয়েছে। কি ভ্রাতৃত্বের দাবি। নির্বিচারে হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে তারপরও আবার ভাই ভাই হওয়ার কথা বলে। কতোটা অহমিকা এবং নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করলে এরকম বেয়াকুবের মতো কথা বলতে পারে। ফেব্র“য়ারি মাস, ভাষার মাস। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের খেলা শেষ হলো। খোদার অশেষ রহমত যে কোনো পাকিস্তানি ক্রিকেটার খেলেনি এই লিগে। আবার ফিরে আসি আজকের বিষয়ে। আমাদের অনেক আশা, অনেক প্রত্যাশা। সেই সঙ্গে বাধাও অনেক। ইতোমধ্যে আমরা এক অমূল্য রতন রাজীবকে হারিয়েছি। আমরা জানি যে ঘুমানোর আগে আমাদের অনেক পথ হাঁটতে হবে। তবে নতুন প্রজন্ম যেভাবে জেগেছে, তাতে আশাহত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মনে করি। শেষ করার আগে পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি শহীদ জননীকে।
সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ : সাবেক ইপিসিএস ও কলাম লেখক

Posted in নির্বাচিত কলাম | Leave a comment

সরকারের সামনে এখন আর কোনো দ্বিতীয় পথ খোলা নেই

miKv‡ii mvg‡b GLb Avi †Kv‡bv wØZxq c_ †Lvjv †bBগত মাসের (জানুয়ারি) শেষদিকে আমি স্নেহভাজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে একটা অনুরোধ জানিয়েছিলাম। একবার নয়, দু’বার জানিয়েছিলাম। তিনি কতটা গুরুত্ব দিয়েছেন, তা আমি জানি না। যদি গুরুত্ব দিতেন তাহলে বর্তমান ঐতিহাসিক প্রজন্ম চত্বরের ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার শোভনকে হয়তো এমন শোচনীয়ভাবে জীবন দিতে হতো না। আমাদের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার দায়িত্ব পালনে আন্তরিক এবং অত্যন্ত তৎপর, তা আমি জানি। কিন্তু তিনি কতটা অভিজ্ঞ কিছুসংখ্যক পুলিশ অফিসারকে নিয়ন্ত্রণ করতে তা আমি জানি না।

গত ১৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় জঙ্গি মৌলবাদবিরোধী এবং বর্তমান শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থক আরেক ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন তার অফিসে গমনের পথে তিন দুর্বৃত্তের দ্বারা আক্রান্ত হন। তারা তাকে উপর্যুপরি কাঁধে, পিঠে ও তলপেটের নিচে সাতবার ছুরিকাঘাত করে এবং মৃত ভেবে ছুরি ও চাপাতি ফেলে দ্রুত পালিয়ে যায়। এক রিকশাচালক আহত আসিফকে পথে পড়ে থাকতে দেখে পার্শ্ববর্তী মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে নিকটাত্মীয় ও পুলিশ এলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার আহত স্থানগুলোতে অস্ত্রোপচার করা হয়। পুলিশ রক্তমাখা ছুরি ও জ্যাকেট ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে জব্দ করে।
আমি আসিফ মহিউদ্দীনকে চিনি। বিখ্যাত কথাশিল্পী প্রয়াত শামসুদ্দীন আবুল কালামের সে ভাগ্নে। তার বোন ছন্দা বাংলাদেশ বিমানে অফিসার র‌্যাঙ্কে চাকরি করেন। আসিফ বয়সে তরুণ এবং মৌলবাদবিরোধী। মুক্ত গণমাধ্যমে ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরোধিতা করে লেখালেখি করে। তাকে মৌলবাদী জঙ্গিরা বহুবার হত্যার হুমকি দিয়েছে। বিশেষত একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তির দাবিতে সে তীব্র ভাষায় লেখালেখি চালালে তার প্রাণনাশের হুমকি আরও বেড়ে যায়। তাকে যে হত্যার উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করা হয়েছিল, তাতে কারও কোনো সন্দেহ নেই। আসিফ ভাগ্যের গুণে বেঁচে গেছে।
আসিফকে এই হত্যার চেষ্টা ঢাকার মিডিয়াতেও তেমন গুরুত্ব পায়নি। তারা হয়তো ধরে নিয়েছিলেন এটা একটি সাধারণ সন্ত্রাসী কর্মকা-, যা ঢাকাতে হরহামেশাই ঘটে থাকে। কিন্তু গত নভেম্বর মাসে ঢাকায় থাকাকালে আসিফের সঙ্গে পরিচয় হওয়া এবং তার লেখাজোখা পড়ার পর তার ওপর এই হামলার খবরে বুঝতে দেরি হয়নি, এই হামলা সাধারণ হামলা নয়, এটা পূর্বপরিকল্পিত হামলা এবং এর পেছনে জামায়াত-শিবিরের হাত অবশ্যই আছে। বুদ্ধিজীবী ও কথাশিল্পী হুমায়ুন আজাদকে যেভাবে কুপিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল, আসিফকেও একইভাবে হত্যা করতে চাওয়া হয়েছিল। হত্যাচেষ্টার প্যাটার্ন এক এবং মোটিভও অভিন্ন। আসিফ মহিউদ্দীনও সেক্যুলারিজমে বিশ্বাসী এবং মধ্যযুগীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে অনবরত কলম চালনা করছে। একজন শ্রেষ্ঠ ব্লগ লেখক হিসেবে জার্মান বেতার ডয়েচে ভেলে থেকে সে পুরস্কৃত।
নভেম্বর মাসে ঢাকায় প্রায় কুড়িদিন অবস্থানকালে আমি আসিফের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে এবং তার লেখাজোখার সঙ্গে পরিচিত হই। সে যে একজন প্রতিভাবান লেখক, তা তার লেখার মুনশিয়ানা দেখেই বুঝতে পারি। তার লেখার বিষয়বস্তুর মধ্যে রয়েছে, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের বিচার এবং নারীর সমানাধিকার। ফতোয়া বিচারের বিরুদ্ধে সে তীব্রভাবে সোচ্চার। ‘৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের শনাক্তকরণে সে করে অবিরাম ব্লগ ও ফেসবুক ব্যবহার। ধর্মান্ধতা ও ধর্মীয় গোঁড়ামির করে বিরুদ্ধাচরণ। করে প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে লেখালেখি।
এ ছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গরিব ছাত্রদের বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে সে একটি সমাবেশের আয়োজন করেছিল। একুশের ভাষা আন্দোলনে নারীদের অবদান নিয়ে সে লেখালেখি শুরু করে এবং মমতাজ বেগমকে বিস্মৃতির অন্ধকার থেকে তুলে আনে। ফলে মমতাজ বেগম একুশের পদক পান। আসিফের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর গড়ে ওঠার পেছনে যেসব ব্লগারের অনন্য অবদান রয়েছে আসিফ তাদের মধ্যে একজন। তারই বন্ধু রাজীবকে পরে দা-ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার প্যাটার্ন ও মোটিভ অভিন্ন। আসিফ ভাগ্যের জোরে বেঁচেছে, রাজীব বাঁচতে পারেনি।
আসিফের ওপর হামলার ঘটনাটিও পুলিশের কাছে গুরুত্ব পায়নি বলেই আমার ধারণা। আমি যখন জানতে পারি, উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত সত্ত্বেও আসিফ ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেছে, তখন এই ভেবে শঙ্কিত হই যে, যাকে মৃত ভেবে দুর্বৃত্তরা চলে গেছে, সে বেঁচে আছে জানলে তাকে হাসপাতালে অরক্ষিত অবস্থায় আবার হত্যা করার চেষ্টা হতে পারে। এই আশঙ্কায় আমি লন্ডন থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আবার টেলিফোনে বিনীত অনুরোধ জানাই, হাসপাতালে আসিফের জন্য যেন একটি পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করা হয় এবং এটিকে সাধারণ সন্ত্রাসী কর্মকা- হিসেবে না দেখে জামায়াত-শিবিরের সিরিজ হত্যার ও হত্যাচেষ্টার একটি হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে অপরাধীদের অবিলম্বে ধরার জন্য পুলিশ সক্রিয় হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোন থানায় ঘটনাটি ঘটছে তা আমার কাছ থেকে জেনে নিয়ে ‘বিষয়টি আমি দেখছি’ বলে টেলিফোন ছেড়ে দেন।
ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর একজন যোগ্য সাবেক ব্যুরোক্র্যাট এবং বর্তমানে সফল রাজনীতিক ও মন্ত্রী। তিনি আসিফ হত্যাচেষ্টাকে কোনো গুরুত্ব দেননি এই অভিযোগ আমার নেই। আমার ধারণা, তিনি সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারদের নির্দেশ দিলেও তারা সেই নির্দেশকে তেমন আমল দেয়নি। দিলে আসিফেরই বন্ধু এবং প্রজন্ম চত্বরের আরেক ব্লগ লেখক রাজীবকে হয়তো অল্প কয়েকদিনের মধ্যে এমন নির্মমভাবে জীবন দিতে হতো না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানোর পর আমি ঢাকায় আসিফের আত্মীয়-স্বজনের কাছে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, গুরুতর আহত অবস্থায় আসিফ হাসপাতালে যে ক’দিন ছিল, সে ক’দিন সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় ছিল। শঙ্কিত আত্মীয়-স্বজন তাকে পালাক্রমে পাহারা দিয়েছে। একজন পুলিশকেও তার ধারেকাছে দেখা যায়নি। তার হত্যাচেষ্টার তদন্তটিও চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে- না চলার মতো।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পর্কে আমার কোনো অভিযোগ নেই। বরং যে ক্রাইসিসকালে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব নিতে সাহস দেখিয়ে রাজি হয়েছেন, সে জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমার বলার কথা, আসিফ হত্যাচেষ্টাকে পুলিশ যথাসময়ে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে যদি গ্রহণ করত এবং জামায়াত-শিবিরের আবার একাত্তরের ভূমিকায় ফিরে যাওয়ার তৎপরতাকে গুরুত্ব দিয়ে তৎপর হতো, তাহলে আসিফের ওপর হামলার মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে হয়তো রাজীবের মর্মন্তুদ মৃত্যুটি ঘটত না। তাকে বাঁচানো সম্ভব হতো।
রাজীবের হত্যা তদন্ত এবং দুর্বৃত্তদের ধরার কাজ কত দ্রুতগতিতে চলছে তা আমি জানি না! তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তার পুলিশ কর্মকর্তাদের আমি বহুদূরে বসেও এই সতর্কবাণীটি জানাতে পারি যে, আসিফ হত্যাচেষ্টা এবং রাজীব হত্যার দুর্বৃত্তদের যদি অবিলম্বে ধরা এবং শাস্তি দান সম্ভব না হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে জামায়াত-শিবিরের ঘাতক বাহিনীর হাতে আরও বহু সেক্যুলারিস্ট লেখক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীকে প্রাণ দিতে হতে পারে।
ভয়াবহ হত্যাচেষ্টা থেকে ভাগ্যের জোরে বেঁচে যাওয়ার পর আসিফ মহিউদ্দীন ১৫ জানুয়ারি তারিখে উত্তরা পশ্চিম থানায় যে এজাহার দিয়েছে, তাতে পরিষ্কারভাবে বলেছে, ‘আমি মুক্ত গণমাধ্যমে ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরোধিতা করে থাকি। আমি মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। স্বাধীন মতপ্রকাশ করতে গিয়ে অনেকবার আমি অজ্ঞাতনামা অনেকের হুমকির সম্মুখীন হয়েছি। অনেকবার আমাকে সেসব মুক্ত গণমাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। বিশেষত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি ও নানা গণবিরোধী সিদ্ধান্তের সমালোচনা করায় বিভিন্ন গোষ্ঠী আমার ওপর বিরূপ ছিল।’
আসিফের এজাহারে বর্ণিত এই গোষ্ঠী কারা পুলিশের তা জানতে নিশ্চয়ই এখনও বাকি নেই। হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলার আগে ও পরে আরও বহু সেক্যুলারিস্ট রাজনীতিক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী জামায়াত-শিবিরের পরিকল্পিত হত্যার শিকার হয়েছে। বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে রমনার বটমূল, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সেক্যুলার সংস্থাগুলোর নববর্ষসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে এসব হামলা ও হত্যাকা- প্রশ্রয় পেয়েছে। আওয়ামী লীগের বর্তমান শাসনামলে এই সন্ত্রাসের শক্তি ও সংখ্যা হ্রাস পেলেও বর্তমানে আবার তা বৃদ্ধির পথে। নৃশংস হত্যা জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির বহু ব্যবহৃত পন্থা। ‘৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি বানচাল করার জন্য তারা এখন আবার ডেসপারেট অবস্থায় সেই পন্থার আশ্রয় নিয়েছে।
এই সময় সরকার যদি আরও সতর্ক ও কঠোর না হয়, তাহলে জামায়াত তাদের হত্যা ও গুপ্তহত্যার রাজনীতিকে গৃহযুদ্ধের পর্যায়ে টেনে নেবে। ‘৭১ সালে অসংখ্য সেক্যুলার বুদ্ধিজীবী হত্যা দ্বারা একই উদ্দেশ্য তারা সাধন করতে চেয়েছিল। সেবার স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র জনযুদ্ধ শুরু না হলে এবং দেশ মুক্ত না হলে জামায়াতি বর্বরতা ও পৈশাচিকতা হয়তো বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করত।
বর্তমানেও ‘৭১-এর মতো গণধিক্কৃত জামায়াত ‘৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার জন্য দোসর বিএনপির অঘোষিত মদদে হরতাল, সমাবেশের নামে দেশময় চোরাগোপ্তা হামলা, যাত্রীসহ বাস পোড়ানো ইত্যাদি নাশকতামূলক কাজ শুরু করেছিল এবং প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছে, দেশে তারা গৃহযুদ্ধ শুরু করবে। এই সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা থেকে তারা সরে এসেছে তা ভাবার কোনো কারণ নেই। আরও দেখা গেছে, এই মুষ্টিমেয় দুষ্কৃতীদের রুখে দাঁড়ানোর মতো সংখ্যাশক্তি, অস্ত্রশক্তি ও দক্ষতা পুলিশ অনেক সময়ই দেখাতে পারে না। ফলে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল, এই আকস্মিকভাবে ঘটা স্ট্রিট ব্যাটেল দেশময় না বিস্তৃতি লাভ করে এবং সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো শেষ পর্যন্ত না এদের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে। যদি সেই কা- ঘটে, অর্থাৎ দাঙ্গা-হাঙ্গামার বিস্তারে জামায়াত সক্ষম হয়, তাহলে বিএনপি তো উইংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষাই করছে, তারা তখন জামায়াতকে প্রকাশ্য ম“ দিতে এগিয়ে আসতে দ্বিধা করবে না। এই ভয়াবহ আশঙ্কা থেকে দেশকে ‘৭১-এর জনযুদ্ধের মতো বাঁচিয়েছে ২০১৩ সালের শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের অভূতপূর্ব জনসমাবেশ এবং জনপ্রতিরোধ। এই জনসমুদ্র যার পুরোভাগে রয়েছে আপসহীন তরুণ প্রজন্ম, তারা ‘৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের চরম দ-দানের দাবিতে গর্জে উঠেছে। ফলে অবস্থা বেগতিক দেখে জামায়াত-শিবির পলাতক। তবে চোরাগোপ্তা মূষিকি তৎপরতা চালাচ্ছে এবং এই আন্দোলনের উৎসাহদাতা তরুণ ব্লগারদের একে একে হত্যা করে আন্দোলনটিকে ভীতিগ্রস্ত ও বানচাল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমার সরকারের দায়িত্ব এখানেই। জামায়াতি তৎপরতা দমনে সরকারকে চৌদ্দআনা সহায়তা জুগিয়েছে এই আন্দোলন। সরকারের দায়িত্ব এই আন্দোলনের পেছনের সেক্যুলার কর্মী, লেখক, বুদ্ধিজীবী ও ব্লগারদের জামায়াতি ঘাতকদের নির্মম হত্যা পরিকল্পনা থেকে বাঁচানোর জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করা।
জামায়াত-শিবিরের শক্তিকে অনেক বড় করে দেখে সেক্যুলারিস্টদের ভীত হওয়ার কিছু নেই। এদের হাতে প্রচুর ক্যাডার, সুইসাইড স্কোয়াড আছে- এটা গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য জামায়াতিদেরই প্রচার। সরকার কঠোর হলে দেখবেন, এরা একদল কাপুরুষ-ঘাতক ছাড়া আর কিছু নয়। এদের হাতে কোনো নতুন অস্ত্র নেই। একমাত্র ধর্মের অপব্যাখ্যা ও অপব্যবহার ছাড়া। তাই প্রজন্ম একাত্তরকে ইসলামবিরোধী, ধর্মবিরোধী আখ্যা দিয়ে মিথ্যা প্রচার চালানো ছাড়া এরা আর কিছুই করতে পারছে না। সেক্যুলারিজমকে তারা ধর্মহীনতা ও ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ এই মিথ্যা প্রচারটি এখনও চালাচ্ছে। কিন্তু হালে পানি পাচ্ছে না। কারণ, বাংলাদেশের মানুষ জেনে ফেলেছে, জামায়াতিদের মওদুদিবাদ এমন একটি জঘন্য ফ্যাসিবাদ, পবিত্র ইসলামের সঙ্গে যার কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলাম রক্ষার জন্য মওদুদিবাদের আশ্রয় গ্রহণের কোনো দরকার নেই। তা হবে ইসলামের অবমাননা।
বাংলাদেশ জেগেছে। একাত্তরের মতো জেগেছে। এই জাগরণের নেতৃত্বে সচেতন তরুণ সমাজ। তারা ঢাকায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ ঘটিয়েছে। অন্যদিকে ২২ ফেব্র“য়ারি শুক্রবার ডেসপারেট জামায়াত তাদের গৃহযুদ্ধের ঘোষণা সফল করার লক্ষ্যে হঠাৎ চোরাগোপ্তা হামলার পরিবর্তে ঢাকা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ সরকারকে মোকাবেলা করতেই হবে। জামায়াতিদের হত্যার রাজনীতি এবং গৃহযুদ্ধের পাঁয়তারা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ‘৭১-এর মতো আরেকটি জনযুদ্ধ চালিয়ে হাসিনা সরকারকে প্রতিরোধ ও পরাস্ত করতে হবে। সরকারের সামনে আর কোনো দ্বিতীয় পথ খোলা নেই।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী

Posted in নির্বাচিত কলাম | Leave a comment

জুনিয়রদের আইপিএল থেকে দূরে রাখার পক্ষে জয়সুরিয়া

1Joysoriaশ্রীলংকা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও দলটির বর্তমান প্রধান নির্বাচক সনৎ জয়সুরিয়া মনে করেন, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) থেকে শ্রীলংকার জুনিয়র ক্রিকেটারদের দূরে রাখতে পারলে সেটা ভাল হবে। তবে এটা সম্পূর্ণ তার ‘ব্যক্তিগত মত’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। খবর পিটিআই।

শ্রীলংকা পর্যটনের এক প্রমোশনাল ইভেন্টে অংশ নিতে এসে অনুষ্ঠানের বাইরে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেন তিনি।

জয়সুরিয়া মনে করেন, তরুন খেলোয়াড়রা আইপিএলে অংশগ্রহণ করুক শ্রীলংকার জনগণ তা চায় না। কারণ এজন্য তাদের ভিন্নধর্মী টেকনিকের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়, যা তাদের ক্রিকেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

তিনি বলেন, “অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা আইপিএল খেলুক এটা সত্যিই ভাল। কিন্তু দুই ফরম্যাটের মধ্যে কোনটা তার জন্য ভাল হবে সেটা খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল।” দলের আবর্তনকালীন সময়ে শ্রীলংকা জাতীয় দলের নেতৃত্ব এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের কাছে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, “সুন্দরভাবে দলের পরিবর্তনকালীন সময় হিসেবেই আমরা দলে কিছু নতুন মুখ স্থান দিয়েছি এবং এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজকে অধিনায়ক আর দিনেশ চান্দিমালকে সহ-অধিনায়ক নির্বাচন করেছি।”

‘আগামী কয়েক বছর পর কুমার সাঙ্গাকারা, তিলকরত্নে দিলশান, সামারাবীরা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে দৃশ্যপটে থাকবেন না’ বলেও উল্লেখ করেন জয়সুরিয়া।

‘বিদেশের মাটিতে শ্রীলংকা দল কেন কদাচিৎ জয়ের মুখ দেখে’ এমন প্রশ্নের জবাবে জয়সুরিয়া বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দলটা অস্টেলিয়া টেস্ট সিরিজ হেরেছে, এটা খুবই দুঃখজনক। তবে সিডনির তৃতীয় টেস্টে দল ভাল খেলেছে।”

‘শ্রীলংকা দলের ফাস্ট বোলিং কোচ হিসেবে চামিন্দা ভাসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি আরো বেশি মনোযোগ দেওয়া এবং বোলিং বিভাগকে শক্তিশালী করা দরকার।”

Posted in খেলাধুলা | Leave a comment

শচিন শেবাগ ও হরভজনের সমর্থন

1361২০২০ সালের সামার অলিম্পিক গেমসে স্কোয়াশ অন্তর্ভুক্তির দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটার শচিন টেন্ডুলকার, বীরেন্দার শেবাগ ও হরভজন সিং।

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট শুরু হওয়ার আগে ‘আমি স্কোয়াশ সমর্থন করি, তুমি করবে কি?’ ব্যানার লিখে ছবিসহ টুইটারে পোস্ট করেন এ তিন ক্রিকেটার।

টেনিস তারকা রজার ফেদেরার ২০২০ সালের অলিম্পিক গেমসে প্রথমবারের স্কোয়াশ অন্তর্ভুক্তির দাবি জানানোর এক সপ্তাহ পর এ র‌্যাকেট স্পোর্টসের প্রতি সমর্থন জানালেন ক্রিকেটাররা।

মহিলা বিভাগে বিশ্বের শীর্ষ স্কোয়াশ তারকা নিকোল ডেভিডের সঙ্গে রটারডামে বৈঠকের পর ফেদেরার বলেন, ‘এটা একটা চমৎকার খেলা, অলিম্পিকে স্কোয়াশ অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে আমি মনে করি। বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে এ টুর্নামেন্ট হয়। প্রতি রোববার আমার বাবার সঙ্গে আমি স্কোয়াশ খেলি।’

স্কোয়াশের প্রতি ক্রীড়াবিদদের এমন সমর্থনকে স্বাগত জানিয়েছেন ভারতের শীর্ষ স্কোয়াশ তারকা দিপিকা পাল্লিকাল।

স্কোয়াশ অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামী সেপ্টেম্বরে পিটার্সবার্গে ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

Posted in খেলাধুলা | Leave a comment

মালিতে ১৩ কানাডীয় সেনা ও ৬৫ বিদ্রোহী নিহত

1361599মালির উত্তরাঞ্চলের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ইফোগাসে তুমুল যুদ্ধে সাদের ১৩  সেনা এবং ৬৫ ইসলামপন্থী বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। গত শুক্রবার সম্মুখ যুদ্ধে নিহতের এ ঘটনা ঘটে। সাদের সামরিক বাহিনী এ খবর জানিয়েছে। খবর বিবিসি।

সাদের সামরিক বাহিনী জানায়, ইফোগাস পাহাড়ি অঞ্চলে ইসলামপন্থী বিদ্রোহীরা লুকিয়ে রয়েছে-এমন ধারণার পর সেখানে হামলা করা হলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সাদ সেনাবাহিনী গত শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে জানায়, ইফোগাস পাহাড়ি অঞ্চলে হামলা চালিয়ে ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের পাঁচটি যান ধ্বংস করা হয়েছে। একইসঙ্গে ওই হামলায়  ৬৫ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধে সাদের ১৩ সেনা নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছে।

মালির কিদাল নগরীতে এ মাসের শুরু থেকে সাদের প্রায় ১ হাজার ৮০০ সেনা টহল দিচ্ছে।

মালিতে মোতায়েন আফ্রিকান নেতৃত্বাধীন মিশনের আহ্বানে সাদ সেখানে ২ হাজার সৈন্য পাঠায়।

এদিকে, মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, মালি সীমান্তে তারা গোয়েন্দা ড্রোন মোতায়েন করেছে।এগুলো ইসলামপন্থী বিদোহীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করবে।সংগৃহিত এসব তথ্য ফ্রান্সের গোয়েন্দাদের সরবরাহ করা হবে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফ্রান্স তার সাবেক উপনিবেশ মালির ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়।২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ইসলামপন্থী বিদ্রোহীরা মালির উত্তরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল।ফ্রান্স অভিযান চালিয়ে ওই অঞ্চল বিদ্রোহীদের কাছে থেকে নিয়ন্ত্রণে নেয়।

Posted in আন্তর্জাতিক | Leave a comment

সারা দেশে পতাকা মিছিল বিকেলে

mviv †`‡k cZvKv wgwQ‡ji WvK, niZvj cÖwZnZ Kivi bZyb Kg©m~wPঢাকা : শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ থেকে সারা দেশে পতাকা হাতে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার বিকেল ৩টায় এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনের নেতৃত্বাধীন সংগঠন ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার।

‘জাতীয় পতাকা অবমাননা, শহীদ মিনারে ভাঙচুর, সাংবাদিক নির্যাতন, জাতীয় মসজিদের খতিবকে লাঞ্ছনা, সারা দেশে অগ্নিসংযোগ ও আমার দেশ পত্রিকার উস্কানিমূলক প্রতিবেদনের প্রতিবাদে’-এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাসহ রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগে তরুণদের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয়। ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ২১ ফেব্রুয়ারি তিনটি মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারির সমাবেশে আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন, প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তবে সেদিন রাতে মিরপুরে খুন হন আন্দোলনকারী ব্লগার রাজীব হায়দার। পরে সেদিন রাত ১১টার দিকে কর্মসূচির পরিবর্তন ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। বলেন, “সাত ঘণ্টা নয়, আন্দোলন চলবে ২৪ ঘণ্টা।” বৃহস্পতিবার এর ১৭তম দিনে তা আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

তবে আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ শুক্রবার সকালেও প্রজন্ম চত্বরে সমবেত হতে থাকে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তারা মূল মোড় থেকে সরে গিয়ে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন। পরে বিকেলে সেখানে শুরু হয় গণস্বাক্ষর কর্মসূচি।

এদিকে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর সারা দেশে ইসলামী ও সমমনা ১২ দলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ কারণে শুক্রবার আবারো উত্তাল হয়ে ওঠে শাহবাগ।

Posted in জাতীয় | Leave a comment

সাংবাদিক হামলাকারীদের বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর : প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী

ঢাকা: ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পেশাগত দায়িত্বপালনরত সাংবাদিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিল বলেছেন, বিভিন্ন স্থানে একযোগে এ হামলা প্রমাণ করে এটি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং পরিকল্পিতভাবে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা এ হামলা চালিয়েছে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, ফটো সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যানদের ওপর সংঘবদ্ধ এ হামলাকে তিনি গণমাধ্যমের ওপর ‘ফ্যাসিবাদী’ আক্রমণ বলে অভিহিত করেন।

শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে মাহবুবুল হক শাকিল আরো বলেন, এ হামলাকারীদের গ্রেফতার এবং বিচারের আওতায় আনতে সরকার বদ্ধ পরিকর।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রাতে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক আহত সাংবাদিকদের দেখতে সমরিতা, স্কয়ার এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। এ সময় তারা আহত সাংবাদিকদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

Posted in ইসলাম | Leave a comment

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud