পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

সরকারের সামনে এখন আর কোনো দ্বিতীয় পথ খোলা নেই

Posted on February 23, 2013 | in নির্বাচিত কলাম | by

miKv‡ii mvg‡b GLb Avi †Kv‡bv wØZxq c_ †Lvjv †bBগত মাসের (জানুয়ারি) শেষদিকে আমি স্নেহভাজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে একটা অনুরোধ জানিয়েছিলাম। একবার নয়, দু’বার জানিয়েছিলাম। তিনি কতটা গুরুত্ব দিয়েছেন, তা আমি জানি না। যদি গুরুত্ব দিতেন তাহলে বর্তমান ঐতিহাসিক প্রজন্ম চত্বরের ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার শোভনকে হয়তো এমন শোচনীয়ভাবে জীবন দিতে হতো না। আমাদের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার দায়িত্ব পালনে আন্তরিক এবং অত্যন্ত তৎপর, তা আমি জানি। কিন্তু তিনি কতটা অভিজ্ঞ কিছুসংখ্যক পুলিশ অফিসারকে নিয়ন্ত্রণ করতে তা আমি জানি না।

গত ১৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় জঙ্গি মৌলবাদবিরোধী এবং বর্তমান শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থক আরেক ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন তার অফিসে গমনের পথে তিন দুর্বৃত্তের দ্বারা আক্রান্ত হন। তারা তাকে উপর্যুপরি কাঁধে, পিঠে ও তলপেটের নিচে সাতবার ছুরিকাঘাত করে এবং মৃত ভেবে ছুরি ও চাপাতি ফেলে দ্রুত পালিয়ে যায়। এক রিকশাচালক আহত আসিফকে পথে পড়ে থাকতে দেখে পার্শ্ববর্তী মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে নিকটাত্মীয় ও পুলিশ এলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার আহত স্থানগুলোতে অস্ত্রোপচার করা হয়। পুলিশ রক্তমাখা ছুরি ও জ্যাকেট ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে জব্দ করে।
আমি আসিফ মহিউদ্দীনকে চিনি। বিখ্যাত কথাশিল্পী প্রয়াত শামসুদ্দীন আবুল কালামের সে ভাগ্নে। তার বোন ছন্দা বাংলাদেশ বিমানে অফিসার র‌্যাঙ্কে চাকরি করেন। আসিফ বয়সে তরুণ এবং মৌলবাদবিরোধী। মুক্ত গণমাধ্যমে ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরোধিতা করে লেখালেখি করে। তাকে মৌলবাদী জঙ্গিরা বহুবার হত্যার হুমকি দিয়েছে। বিশেষত একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তির দাবিতে সে তীব্র ভাষায় লেখালেখি চালালে তার প্রাণনাশের হুমকি আরও বেড়ে যায়। তাকে যে হত্যার উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করা হয়েছিল, তাতে কারও কোনো সন্দেহ নেই। আসিফ ভাগ্যের গুণে বেঁচে গেছে।
আসিফকে এই হত্যার চেষ্টা ঢাকার মিডিয়াতেও তেমন গুরুত্ব পায়নি। তারা হয়তো ধরে নিয়েছিলেন এটা একটি সাধারণ সন্ত্রাসী কর্মকা-, যা ঢাকাতে হরহামেশাই ঘটে থাকে। কিন্তু গত নভেম্বর মাসে ঢাকায় থাকাকালে আসিফের সঙ্গে পরিচয় হওয়া এবং তার লেখাজোখা পড়ার পর তার ওপর এই হামলার খবরে বুঝতে দেরি হয়নি, এই হামলা সাধারণ হামলা নয়, এটা পূর্বপরিকল্পিত হামলা এবং এর পেছনে জামায়াত-শিবিরের হাত অবশ্যই আছে। বুদ্ধিজীবী ও কথাশিল্পী হুমায়ুন আজাদকে যেভাবে কুপিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল, আসিফকেও একইভাবে হত্যা করতে চাওয়া হয়েছিল। হত্যাচেষ্টার প্যাটার্ন এক এবং মোটিভও অভিন্ন। আসিফ মহিউদ্দীনও সেক্যুলারিজমে বিশ্বাসী এবং মধ্যযুগীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে অনবরত কলম চালনা করছে। একজন শ্রেষ্ঠ ব্লগ লেখক হিসেবে জার্মান বেতার ডয়েচে ভেলে থেকে সে পুরস্কৃত।
নভেম্বর মাসে ঢাকায় প্রায় কুড়িদিন অবস্থানকালে আমি আসিফের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে এবং তার লেখাজোখার সঙ্গে পরিচিত হই। সে যে একজন প্রতিভাবান লেখক, তা তার লেখার মুনশিয়ানা দেখেই বুঝতে পারি। তার লেখার বিষয়বস্তুর মধ্যে রয়েছে, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের বিচার এবং নারীর সমানাধিকার। ফতোয়া বিচারের বিরুদ্ধে সে তীব্রভাবে সোচ্চার। ‘৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের শনাক্তকরণে সে করে অবিরাম ব্লগ ও ফেসবুক ব্যবহার। ধর্মান্ধতা ও ধর্মীয় গোঁড়ামির করে বিরুদ্ধাচরণ। করে প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে লেখালেখি।
এ ছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গরিব ছাত্রদের বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে সে একটি সমাবেশের আয়োজন করেছিল। একুশের ভাষা আন্দোলনে নারীদের অবদান নিয়ে সে লেখালেখি শুরু করে এবং মমতাজ বেগমকে বিস্মৃতির অন্ধকার থেকে তুলে আনে। ফলে মমতাজ বেগম একুশের পদক পান। আসিফের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর গড়ে ওঠার পেছনে যেসব ব্লগারের অনন্য অবদান রয়েছে আসিফ তাদের মধ্যে একজন। তারই বন্ধু রাজীবকে পরে দা-ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার প্যাটার্ন ও মোটিভ অভিন্ন। আসিফ ভাগ্যের জোরে বেঁচেছে, রাজীব বাঁচতে পারেনি।
আসিফের ওপর হামলার ঘটনাটিও পুলিশের কাছে গুরুত্ব পায়নি বলেই আমার ধারণা। আমি যখন জানতে পারি, উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত সত্ত্বেও আসিফ ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেছে, তখন এই ভেবে শঙ্কিত হই যে, যাকে মৃত ভেবে দুর্বৃত্তরা চলে গেছে, সে বেঁচে আছে জানলে তাকে হাসপাতালে অরক্ষিত অবস্থায় আবার হত্যা করার চেষ্টা হতে পারে। এই আশঙ্কায় আমি লন্ডন থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আবার টেলিফোনে বিনীত অনুরোধ জানাই, হাসপাতালে আসিফের জন্য যেন একটি পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করা হয় এবং এটিকে সাধারণ সন্ত্রাসী কর্মকা- হিসেবে না দেখে জামায়াত-শিবিরের সিরিজ হত্যার ও হত্যাচেষ্টার একটি হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে অপরাধীদের অবিলম্বে ধরার জন্য পুলিশ সক্রিয় হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোন থানায় ঘটনাটি ঘটছে তা আমার কাছ থেকে জেনে নিয়ে ‘বিষয়টি আমি দেখছি’ বলে টেলিফোন ছেড়ে দেন।
ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর একজন যোগ্য সাবেক ব্যুরোক্র্যাট এবং বর্তমানে সফল রাজনীতিক ও মন্ত্রী। তিনি আসিফ হত্যাচেষ্টাকে কোনো গুরুত্ব দেননি এই অভিযোগ আমার নেই। আমার ধারণা, তিনি সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারদের নির্দেশ দিলেও তারা সেই নির্দেশকে তেমন আমল দেয়নি। দিলে আসিফেরই বন্ধু এবং প্রজন্ম চত্বরের আরেক ব্লগ লেখক রাজীবকে হয়তো অল্প কয়েকদিনের মধ্যে এমন নির্মমভাবে জীবন দিতে হতো না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানোর পর আমি ঢাকায় আসিফের আত্মীয়-স্বজনের কাছে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, গুরুতর আহত অবস্থায় আসিফ হাসপাতালে যে ক’দিন ছিল, সে ক’দিন সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় ছিল। শঙ্কিত আত্মীয়-স্বজন তাকে পালাক্রমে পাহারা দিয়েছে। একজন পুলিশকেও তার ধারেকাছে দেখা যায়নি। তার হত্যাচেষ্টার তদন্তটিও চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে- না চলার মতো।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পর্কে আমার কোনো অভিযোগ নেই। বরং যে ক্রাইসিসকালে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব নিতে সাহস দেখিয়ে রাজি হয়েছেন, সে জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমার বলার কথা, আসিফ হত্যাচেষ্টাকে পুলিশ যথাসময়ে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে যদি গ্রহণ করত এবং জামায়াত-শিবিরের আবার একাত্তরের ভূমিকায় ফিরে যাওয়ার তৎপরতাকে গুরুত্ব দিয়ে তৎপর হতো, তাহলে আসিফের ওপর হামলার মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে হয়তো রাজীবের মর্মন্তুদ মৃত্যুটি ঘটত না। তাকে বাঁচানো সম্ভব হতো।
রাজীবের হত্যা তদন্ত এবং দুর্বৃত্তদের ধরার কাজ কত দ্রুতগতিতে চলছে তা আমি জানি না! তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তার পুলিশ কর্মকর্তাদের আমি বহুদূরে বসেও এই সতর্কবাণীটি জানাতে পারি যে, আসিফ হত্যাচেষ্টা এবং রাজীব হত্যার দুর্বৃত্তদের যদি অবিলম্বে ধরা এবং শাস্তি দান সম্ভব না হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে জামায়াত-শিবিরের ঘাতক বাহিনীর হাতে আরও বহু সেক্যুলারিস্ট লেখক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীকে প্রাণ দিতে হতে পারে।
ভয়াবহ হত্যাচেষ্টা থেকে ভাগ্যের জোরে বেঁচে যাওয়ার পর আসিফ মহিউদ্দীন ১৫ জানুয়ারি তারিখে উত্তরা পশ্চিম থানায় যে এজাহার দিয়েছে, তাতে পরিষ্কারভাবে বলেছে, ‘আমি মুক্ত গণমাধ্যমে ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরোধিতা করে থাকি। আমি মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। স্বাধীন মতপ্রকাশ করতে গিয়ে অনেকবার আমি অজ্ঞাতনামা অনেকের হুমকির সম্মুখীন হয়েছি। অনেকবার আমাকে সেসব মুক্ত গণমাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। বিশেষত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি ও নানা গণবিরোধী সিদ্ধান্তের সমালোচনা করায় বিভিন্ন গোষ্ঠী আমার ওপর বিরূপ ছিল।’
আসিফের এজাহারে বর্ণিত এই গোষ্ঠী কারা পুলিশের তা জানতে নিশ্চয়ই এখনও বাকি নেই। হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলার আগে ও পরে আরও বহু সেক্যুলারিস্ট রাজনীতিক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী জামায়াত-শিবিরের পরিকল্পিত হত্যার শিকার হয়েছে। বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে রমনার বটমূল, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সেক্যুলার সংস্থাগুলোর নববর্ষসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে এসব হামলা ও হত্যাকা- প্রশ্রয় পেয়েছে। আওয়ামী লীগের বর্তমান শাসনামলে এই সন্ত্রাসের শক্তি ও সংখ্যা হ্রাস পেলেও বর্তমানে আবার তা বৃদ্ধির পথে। নৃশংস হত্যা জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির বহু ব্যবহৃত পন্থা। ‘৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি বানচাল করার জন্য তারা এখন আবার ডেসপারেট অবস্থায় সেই পন্থার আশ্রয় নিয়েছে।
এই সময় সরকার যদি আরও সতর্ক ও কঠোর না হয়, তাহলে জামায়াত তাদের হত্যা ও গুপ্তহত্যার রাজনীতিকে গৃহযুদ্ধের পর্যায়ে টেনে নেবে। ‘৭১ সালে অসংখ্য সেক্যুলার বুদ্ধিজীবী হত্যা দ্বারা একই উদ্দেশ্য তারা সাধন করতে চেয়েছিল। সেবার স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র জনযুদ্ধ শুরু না হলে এবং দেশ মুক্ত না হলে জামায়াতি বর্বরতা ও পৈশাচিকতা হয়তো বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করত।
বর্তমানেও ‘৭১-এর মতো গণধিক্কৃত জামায়াত ‘৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার জন্য দোসর বিএনপির অঘোষিত মদদে হরতাল, সমাবেশের নামে দেশময় চোরাগোপ্তা হামলা, যাত্রীসহ বাস পোড়ানো ইত্যাদি নাশকতামূলক কাজ শুরু করেছিল এবং প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছে, দেশে তারা গৃহযুদ্ধ শুরু করবে। এই সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা থেকে তারা সরে এসেছে তা ভাবার কোনো কারণ নেই। আরও দেখা গেছে, এই মুষ্টিমেয় দুষ্কৃতীদের রুখে দাঁড়ানোর মতো সংখ্যাশক্তি, অস্ত্রশক্তি ও দক্ষতা পুলিশ অনেক সময়ই দেখাতে পারে না। ফলে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল, এই আকস্মিকভাবে ঘটা স্ট্রিট ব্যাটেল দেশময় না বিস্তৃতি লাভ করে এবং সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো শেষ পর্যন্ত না এদের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে। যদি সেই কা- ঘটে, অর্থাৎ দাঙ্গা-হাঙ্গামার বিস্তারে জামায়াত সক্ষম হয়, তাহলে বিএনপি তো উইংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষাই করছে, তারা তখন জামায়াতকে প্রকাশ্য ম“ দিতে এগিয়ে আসতে দ্বিধা করবে না। এই ভয়াবহ আশঙ্কা থেকে দেশকে ‘৭১-এর জনযুদ্ধের মতো বাঁচিয়েছে ২০১৩ সালের শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের অভূতপূর্ব জনসমাবেশ এবং জনপ্রতিরোধ। এই জনসমুদ্র যার পুরোভাগে রয়েছে আপসহীন তরুণ প্রজন্ম, তারা ‘৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের চরম দ-দানের দাবিতে গর্জে উঠেছে। ফলে অবস্থা বেগতিক দেখে জামায়াত-শিবির পলাতক। তবে চোরাগোপ্তা মূষিকি তৎপরতা চালাচ্ছে এবং এই আন্দোলনের উৎসাহদাতা তরুণ ব্লগারদের একে একে হত্যা করে আন্দোলনটিকে ভীতিগ্রস্ত ও বানচাল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমার সরকারের দায়িত্ব এখানেই। জামায়াতি তৎপরতা দমনে সরকারকে চৌদ্দআনা সহায়তা জুগিয়েছে এই আন্দোলন। সরকারের দায়িত্ব এই আন্দোলনের পেছনের সেক্যুলার কর্মী, লেখক, বুদ্ধিজীবী ও ব্লগারদের জামায়াতি ঘাতকদের নির্মম হত্যা পরিকল্পনা থেকে বাঁচানোর জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করা।
জামায়াত-শিবিরের শক্তিকে অনেক বড় করে দেখে সেক্যুলারিস্টদের ভীত হওয়ার কিছু নেই। এদের হাতে প্রচুর ক্যাডার, সুইসাইড স্কোয়াড আছে- এটা গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য জামায়াতিদেরই প্রচার। সরকার কঠোর হলে দেখবেন, এরা একদল কাপুরুষ-ঘাতক ছাড়া আর কিছু নয়। এদের হাতে কোনো নতুন অস্ত্র নেই। একমাত্র ধর্মের অপব্যাখ্যা ও অপব্যবহার ছাড়া। তাই প্রজন্ম একাত্তরকে ইসলামবিরোধী, ধর্মবিরোধী আখ্যা দিয়ে মিথ্যা প্রচার চালানো ছাড়া এরা আর কিছুই করতে পারছে না। সেক্যুলারিজমকে তারা ধর্মহীনতা ও ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ এই মিথ্যা প্রচারটি এখনও চালাচ্ছে। কিন্তু হালে পানি পাচ্ছে না। কারণ, বাংলাদেশের মানুষ জেনে ফেলেছে, জামায়াতিদের মওদুদিবাদ এমন একটি জঘন্য ফ্যাসিবাদ, পবিত্র ইসলামের সঙ্গে যার কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলাম রক্ষার জন্য মওদুদিবাদের আশ্রয় গ্রহণের কোনো দরকার নেই। তা হবে ইসলামের অবমাননা।
বাংলাদেশ জেগেছে। একাত্তরের মতো জেগেছে। এই জাগরণের নেতৃত্বে সচেতন তরুণ সমাজ। তারা ঢাকায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ ঘটিয়েছে। অন্যদিকে ২২ ফেব্র“য়ারি শুক্রবার ডেসপারেট জামায়াত তাদের গৃহযুদ্ধের ঘোষণা সফল করার লক্ষ্যে হঠাৎ চোরাগোপ্তা হামলার পরিবর্তে ঢাকা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ সরকারকে মোকাবেলা করতেই হবে। জামায়াতিদের হত্যার রাজনীতি এবং গৃহযুদ্ধের পাঁয়তারা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ‘৭১-এর মতো আরেকটি জনযুদ্ধ চালিয়ে হাসিনা সরকারকে প্রতিরোধ ও পরাস্ত করতে হবে। সরকারের সামনে আর কোনো দ্বিতীয় পথ খোলা নেই।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud