পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

রাজধানীতে মহামারিতে রূপ নিয়েছে চিকুনগুনিয়া

রাজধানী ঢাকায় চিকুনগুনিয়া মহামারি আকারে রূপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ‘এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ তথা চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ডিএনসিসি  গৃহীত কার্যক্রম শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে’ বিশেষজ্ঞরা এ কথা জানান।

ডিএনসিসির আমন্ত্রণে সংবাদ সম্মেলনে তিন জন বিশেষজ্ঞ উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন, অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান (এপিডেমিওলজিস্ট), ডা. তৈহিদ উদ্দীন (এন্টোমলজিস্ট ) ও ডা. মুনজুর এ চৌধুরী (এন্টোমলজিস্ট )।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মহামারি হচ্ছে একটি রোগের যে অবস্থান থাকে, সেটি তার অবস্থান থেকে নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট একটি স্থানে অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়ে। সে মোতাবেক বর্তমান সময়ে চিকুনগুনিয়াকে মহামারি বলা যায়। এটি আমার ব্যক্তিগত মত। এটিকে মহামারি ঘোষণা করার অথরিটি রয়েছে।’

জবাবে মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘মহামারি হোক আর যাই হোক, এজন্য ডিএনসিসি দায়ী না। এডিস মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া রোগ ছড়ায়। এডিস মশা সিটি করপোরেশনের ড্রেন কিংবা ময়লার ডাস্টবিনে জন্মায় না। এ মশা জন্মায় বাসাবাড়িতে, পরিষ্কার পানিতে, নির্মাণ সামগ্রীতে, এসি, ফুলের টব, ক্যান, পরিত্যক্ত টায়ার ও ডাবের খোসায়। আমরা বাসাবাড়িতে গিয়ে ওষুধ দিতে পারি না।’
আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা আগাম পূর্বাভাস পাইনি। তাছাড়া এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কোনও জাতীয় নির্দেশিকা আজ পর্যন্ত প্রস্তুত করা হয়নি। এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তৈরি করে। যে কারণে প্রথমে এ রোগের নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। অনেকেই মনে করেন এ জন্য ডিএনসিসি দায়ী।’
এডিস মশার ফলে ডেঙ্গু জ্বর দেখা দিতে পারে আশঙ্কা করে ডা. মুনজুর এ চৌধুরী  বলেন, ‘এডিস মশা যেহেতু চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গুর বাহক, সেহেতু দুই রোগ এক সঙ্গেও দেখা দিতে পারে। তখন পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এডিস মশা যদি কাউকে কামড় দেয় তাহলে তার চিকুনগুনিয়া হবে। আবার চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত কোনও রোগীকে মশা কামড়ালে তার মধ্যেও এ ভাইরাস ছড়িয়ে যাবে। সেটি যদি আবার কোনও সুস্থ মানুষকে কামড়ায় তাহলে তারও চিকুনগুনিয়া হবে।’
ডা. তৈহিদ উদ্দীন (এন্টোমলজিস্ট) বলেন, ‘এডিস মশার মাধ্যমে জিকার ভাইরাসও ছড়ায়। সুতরাং সবাইকে সচেতন হতে হবে। যদি কোনও ব্যক্তি এ রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে তাকে মশারির ভেতর রাখতে হবে। না হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘মেয়র হিসেবে আমি আক্রান্তদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি, সমবেদনা জানাচ্ছি। আমাদের কাজ আগের চেয়ে ১০ গুণ বেড়েছে। ক্যান্টনমেন্ট, বসুন্ধরা ও উত্তরার কিছু কিছু এলাকা আমাদের বাইরে। সব জায়গায় আমরা হাত দিতে পারি না ।’
আনিসুল হক বলেন, ‘এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য সারা পৃথিবীতেই জনগণের সম্পৃক্ততা সবচেয়ে গরুত্বপূর্ণ। নাগরিকরা অনেকেই চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে জানেন, কিন্তু এ ব্যাপারে যথাযথ সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেন না। আমরা আগে মশা মারার ওষুধ নগর ভবন থেকে জুনে প্রেরণ করতাম। কিন্তু এখন সরাসরি ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এক এক স্থানে একাধিকবার স্প্রে করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশন আর কী করবে?’
অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএমএম সালেহ ভূঁইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Posted in জাতীয়, স্বাস্থ্য | Comments Off on রাজধানীতে মহামারিতে রূপ নিয়েছে চিকুনগুনিয়া

চিকুনগুনিয়ার টেস্ট নিয়ে বিভ্রান্তি!

ডেস্ক রিপোর্ট : শরীরে ব্যথা নিয়ে কাজী মুশফিকুর রহমান ল্যাব এইড হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন। বেশ কিছুদিন থেকেই তিনি মেরুদণ্ড ও পিঠে ব্যথার ভুগছিলেন। ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় তিনি চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন। গায়ে ব্যথার কথা শুনেই ল্যাব এইড হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলে দেন, তার চিকুনগুনিয়া হয়েছে। অগত্যা মুশফিকুর রহমান আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর জানতে পারলেন তার ব্যথার কারণ চিকুনগুনিয়া নয়, আগের ব্যথাই ভোগাচ্ছে তাকে।

এদিকে, জ্বর নিয়ে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে ৪ জুলাই ডাক্তার দেখান আলীম হায়দার নামের এক ব্যক্তি। ভোররাতের দিকে জ্বর হয়েছে শুনে চিকিৎসক তাকে নাপা দেন। কিন্তু নাপা খেয়েও জ্বর না কমায় তাকে কিছু টেস্ট দেন এবং প্রতিদিন তিনটা করে সাপোজিটর নিতে বলেন। ৬ জুলাই পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান তিনি। একজন চিকিৎসক বলেন, টেস্টে ভাইরাস পাওয়া গেছে। আরেক চিকিৎসক অ্যালাট্রল লিখে দিতে বলেন। তখন আলীম বলেন, ‘অ্যালাট্রল অ্যালার্জি জন্য খাওয়া হয়, আমি কেন খাবো? জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনার চিকুনগুনিয়া, শরীর চুলকাবে। এজন্য এ ওষুধ।’ পরে তিনি আইইডিসিআরে গেলে কর্মরত চিকিৎসক বলেন, শরীরে ভাইরাস রয়েছে কিন্তু এটা যে চিকুনগুনিয়ার ভাইরাস সেটা চিকিৎসক বলতে পারেন না।

সম্প্রতি রাজধানীতে চিকুনগুনিয়া জ্বরের প্রকোপ বেড়ে গেছে। রাজধানীর প্রায় প্রতিটি হাসপাতালেই চিকুনগুনিয়ার রোগীরা চিকিৎসকের কাছে আসছেন বা ভর্তি হচ্ছেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসকরা লক্ষণ দেখে চিকুনগুনিয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন। অথচ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ছাড়া আর কোথাও চিকুনগুনিয়া রোগের পরীক্ষা করা হয় না। ফলে এ রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা নিয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছেন রোগীদের। পাশাপাশি তাদের ভোগান্তিতেও পড়তে হচ্ছে।

কোথায়াও কোথাও টাইফয়েড, নিউমোনিয়ো ও অন্যান্য ভাইরাস জ্বরের ক্ষেত্রেও চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ফলে ভুল চিকিৎসার সুযোগ থাকছে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এই জ্বরের পরীক্ষাও করতে হয় নির্দিষ্ট সময়ের ভেতরে। ডায়াবেটিসের মতো খাওয়ার আগে পরে এই টেস্ট করতে হয়। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে হাতেগোনা দুই-তিনটি হাসপাতাল বিশেষ কিট পদ্ধতিতে এ পরীক্ষা করা হলেও সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।

ধানমন্ডি ১৫-তে অবস্থিত ইবনে সিনা স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকুনগুনিয়া জ্বরের টেস্ট করা হয় বলে হাসপাতালটি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা একথা জানান। তিনি বলেন, ‘আপনি ধানমন্ডির ৯-এ তে-ইবনে সিনায় চলে যান। চিকুনগুনিয়ার টেস্ট সব জায়গাতেই হয়, তবে ওখানে সবচেয়ে বেশি হয়।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএসএমএমইউ-এর ভাইরোলজি বিভাগ এবং আইইডিসিআরে চিকুনগুনিয়ার পরীক্ষা সবার জন্য উন্মুক্ত হলেও বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে পাঠানো রোগের নমুনা নিয়ে তারা কাজ করে।

আইইডিসিআর-এর জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এএসএম আলমগীর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চিকুনগুনিয়ার জন্য এখন যেসব টেস্ট হয় সেগুলোর নাম অ্যান্টিবডি টেস্ট। আমাদের প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাইরে করলে সেগুলো ফলস পজিটিভ আবার কোথাও ফলস নেগেটিভ আসে।’

সবার জন্য চিকুনগুনিয়ার পরীক্ষার দরকার নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কেবল বৃদ্ধ, শিশু, গর্ভবতী কিংবা যারা অন্য রোগে আক্রান্ত তাদের জন্য চিকুনগুনিয়া টেস্ট প্রয়োজন হতে পারে। আইইডিসিআরে আসতে হবে তবে সেটা হতে হবে জ্বর হওয়য়ার পাঁচ দিনের মধ্যে।’

তিনি বলেন, ‘বেরসকারি হাসপাতাল থেকে চিকুনগুনিয়া হয়েছে বলে দেওয়ার পর এখানকার টেস্টে ধরা পড়েছে সে চিকুনগুনিয়া নেগেটিভ। আবার ওদের হয়নি কিন্তু আমাদের পরীক্ষায় এসেছে পজিটিভ। কিট পদ্ধতি নীর্ভরযোগ্য কোনও পদ্ধতি নয়।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চিকুনগুনিয়া জ্বরের ভাইরাস নিশ্চিত হতে কমফার্মমেটরি পলমিসাইডটেইন রিঅ্যাকশন বা আরটি পিসিআর পরীক্ষা জরুরি। যা শুধু আইইডিসিআরে করা হয়ে থাকে। বেসরকারি পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে চিকুনগুনিয়ার পরীক্ষা যেটা হয়, সেটা হয়ে থাকে স্ট্রিপ পদ্ধতিতে। তবে এ পরীক্ষার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া শতভাগ নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। তারা হয়তো ডেঙ্গু জ্বরের ল্যাব টেস্ট করাতে পারে তবে চিকুনগুনিয়ার নয়।’

নাম প্রকাশে এই ইন্সটিটিউটের এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় হরদম চিকুনগুনিয়া বলে টেস্ট হচ্ছে। কিন্তু সেটা কনর্ফামরেটরি টেস্ট না। চিকুনগুনিয়ার টেস্ট করানোর দরকার নেই বলেই আমরা ইন্সটিটিউট থেকে বলছি, কিন্তু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে এ পরীক্ষা করছে আর তার সুযোগ নিচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলো।

এই কর্মকর্তার সঙ্গে একমত পোষন করেন বিএসএমএমইউ-এর মেডিসিন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘চিকুনগুনিয়ার মূল যে পরীক্ষা সেটা আইইডিসিআর ছাড়া অন্য কোথাও হয় না। বাকি হাসপাতালগুলোয় অ্যান্টিবডি টেস্ট করা হয়। আইইডিসিআর ছাড়া পিসিআর পরীক্ষা দেশে অন্য কোথাও হয় না। কাজেই চিকুনগুনিয়ার টেস্ট করাতে হলে সেখানে করাই ভালো।’

অতি সম্প্রতি রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে কনর্ফামেটরি পিসিআর টেস্ট করা হচ্ছে। এ হাসপাতালের ল্যাব ইনচার্জ ডা. মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২৪ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অ্যাপোলো হাসপাতাল কনর্ফামেটরি টেস্টের রেজাল্ট দিয়ে থাকে। অ্যাপোলো হাসপাতালে জ্বরের প্রথমদিন এ টেস্ট করেই পজিটিভ কিংবা নেগেটিভ রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ল্যাব এইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের কমিউনিকেশন্স বিভাগের অ্যাসিস্টেন্ট জেনারেল ম্যানেজার সাইফুর রহমান লেনিন বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে ভিন্ন পদ্ধতি আইসিটি (Immuno Chromatographic test-For Chikunguniya) এর মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া টেস্ট হয়ে থাকে। আইইডিসিআর চিকুনগুনিয়া হওয়া মাত্রই শনাক্ত করতে পারে। কিন্তু আইসিটি পদ্ধতিতে চিকুনগুনিয়া ধরা পড়ে অ্যাটাক হওয়ার পাঁচদিন পরে। ‘ভুল কিংবা নির্ভুল’ বিষয় ভিন্ন কথা কিন্তু আইইডিসিআর আর আমাদের পদ্ধতি পৃথক।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চিকুনগুনিয়ার প্রার্দুভাব রয়েছে এটা সত্যি। কিন্তু হাসপাতালগুলো যেভাবে টেস্ট নিয়ে লুকোচুরি করছে তার অবসান হওয়া উচিত। লক্ষণ দেখে চিকুনগুনিয়া বলা আর টেস্ট না হওয়া সত্ত্বেও চিকুনগুনিয়া হয়েছে বলে দাবি করা এক কথা নয়।’

এদিকে, চিকুনগুনিয়া নিয়ে আইইডিসিআর-এর পরীক্ষা পদ্ধতি ‘মোস্ট অথেনটিক’ বলে মন্তব্য করলেন ইবনে সিনা হাসাপাতালের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আশরাফুল ইসলাম। তবে নিজেদের পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের এখানে অ্যান্টি বডি পরীক্ষা করা হয়। চিকুনগুনিয়াতে আক্রান্ত হলে শরীরে অ্যান্টি বডি তৈরি হয়। সেই অ্যান্টি বডি কতটুকু সেটার টেস্ট হয় ইবনে সিনাতে। চিকুনগুনিয়ার টেস্ট আইইডিসিআর ছাড়া কোথাও হয় না বলে সরকার যে কথা বলছে সেটা সত্যি।’

সূত্র : বাংলাট্রিবিউন।

Posted in স্বাস্থ্য | Comments Off on চিকুনগুনিয়ার টেস্ট নিয়ে বিভ্রান্তি!

রামপাল: শর্ত পূরণে বাংলাদেশকে দেড় বছর সময় ইউনেস্কোর

ডেস্ক রিপোর্ট : রামপালে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের আগে কৌশলগত পরিবেশ মূল্যায়ন (এসইএ) করে প্রতিবেদন দেওয়ার পাশাপাশি রিঅ্যাকটিভ মনিটরিং মিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে বলেছে জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেসকো, সেজন্য বাংলাদেশ সরকার সময় পাচ্ছে দেড় বছর।

পোল্যান্ডের ক্রাকাও শহরে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪১তম অধিবেশনে সুন্দরবনের পাশে নির্মাণাধীন এই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে শুনানির পর ওই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

তবে বিশ্ব ঐতিহ্য (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ) সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ প্রাকৃতিক নিদর্শনগুলোর তালিকায় যুক্ত করার যে প্রস্তাব শুনানিতে উঠেছিল, শেষ পর্যন্ত তা বাদ দেওয়া হয়েছে।

ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচারের (আইইউসিএন) রিঅ্যাকটিভ মনিটরিং মিশন ২০১৬ সালে সুন্দরবন এলাকা ঘুরে যাওয়ার পর তাদের প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ করেছিল, তা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিবেদন দিতে বলেছে হেরিটেজ কমিটি।
সেই সঙ্গে সুন্দরবনের ওপর প্রস্তাবিত রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রভাব বুঝতে কৌশলগত পরিবেশ মূল্যায়ন (এসইএ) করে ওই প্রতিবেদনের অনুলিপি পর্যালোচনার জন্য হেরিটেজ সেন্টারে পাঠাতে বলা হয়েছে।  হেরিটেজ কমিটির ৪৩তম অধিবেশনে এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে।

ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপালে যে স্থানে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার এই তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে, তা সুন্দরবনের প্রান্তসীমার চেয়ে ১৪ কিলোমিটার দূরে এবং বনের বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ থেকে ৬৭ কিলোমিটার দূরে।

পরিবেশবাদীদের একটি অংশের আশঙ্কা, ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সুন্দরবনের যাতে ক্ষতি না হয়, তার সব ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে।
পাল্টাপাল্টি এই অবস্থানের মধ্যে ইউনেসকো গতবছর বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের কাছে ওই বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দেয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পশুর নদ পানি উত্তোলন ও অবকাঠামো নির্মাণের কারণে সুন্দরবনের প্রতিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করে রামপাল প্রকল্প বাতিলের সুপারিশ করা হয় সেখানে।
বুধবার শুনানির পর ইউনেসকো রামপাল নিয়ে আপত্তির জায়গা থেকে সরে এসেছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। তবে ইউনেসকো পাস হওয়া প্রস্তাবের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি এখনও প্রকাশ করেনি।
ইউনেসকোর ইউটিউব চ্যানেলে শুনানির যে ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে হেরিটেজ কমিটির দশ দফা প্রস্তাবের খসড়ায় কিছু সংশোধনী এনে মোট ১১টি দফায় চূড়ান্ত প্রস্তাবটি পাস হতে দেখা যায়।  
রামপালের বিষয়ে ইউনেসকোর সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওদের এজেন্ডায় যে নিষেধাজ্ঞাটা ছিল সেটা এখন আর নেই। আমরা কাজ করতে পারব। অফকোর্স দেয়ার আর সাম কনসার্ন; একটা এনভায়রনমেন্টাল এসেসমেন্ট রিপোর্ট দিতে হবে আমাদের। দ্যাটস অল।”

হেরিটেজ কমিটির শুনানিতে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

তিনি বলেন, কৌশলগত পরিবেশ মূল্যায়নের (এসইএ) যে সুপারিশ এসেছে তার সঙ্গে বাংলাদেশও একমত। তিনি আশ্বস্ত করেন, সুন্দরবনের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই বাংলাদেশ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং ঝুঁকি কমানোর সব ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে। 
বাংলাদেশ সরকার কৌশলগত পরিবেশ মূল্যায়নের (এসইএ) যে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে, ইউনেসকো তাকে স্বাগত জানিয়েছে। প্রকল্প এলাকার  বাস্তুসংস্থান ব্যবস্থার পর্যবেক্ষণে সরকার যেসব উদ্যোগের কথা জানিয়েছে, সেগুলোরও প্রশংসা করেছে।

কিন্তু সেই সঙ্গে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ও সুন্দরবন এলাকার লবণাক্ততা বৃদ্ধি এবং মিঠা পানির সরবরাহ কমে আসার বিষয়টি উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে হেরিটেজ কমিটির প্রস্তাবে।

হেরিটেজ কমিটি বলেছে, রামপালে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে পানি ও বায়ু দূষণ বাড়বে। সেই সঙ্গে নৌচলাচল ও ড্রেজিংয়ের প্রয়োজনও বাড়বে; প্রচুর মিঠা পানি তোলার প্রয়োজন হবে। এর বিরূপ প্রভাব সামাল দিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। কীভাবে তা করা হবে তা থাকতে হবে ওই ইআইএ প্রতিবেদনে।  

রামপাল প্রকল্প অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল খসড়া প্রস্তাবের নবম দফায়। তুরস্কের প্রতিনিধি ওই অংশটি সংশোধনের প্রস্তাব করেন এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে আনতে ঢাকাকে পর্যাপ্ত কারিগরি ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানের কথা যুক্ত করতে বলেন। অন্যদিকে ফিনল্যান্ডের প্রতিনিধি ওই দফা অবিকৃত রেখে কারিগরি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি যোগ করার প্রস্তাব রাখেন।  
পরে শুনানিতে ফিনল্যান্ডের প্রতিনিধি জানান, তুরস্কের প্রস্তাবে তাদের আপত্তি নেই। তবে গুরুত্ব বোঝানোর জন্য পানি ও বায়ু দূষণ এবং জাহাজ চলাচল ও ড্রেজিংয়ের ঝুঁকির বিষয়গুলো যেন থাকে। সে অনুযায়ীই প্রস্তাবের ওই দফাটি গৃহীত হয়। 
খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষার (ইআইএ) আগে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে যাওয়া পশুর নদ খনন বন্ধ রাখতে হবে। শুনানির পর ওই অংশ সংশোধন করে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে ভবিষ্যতে ড্রেজিং করলে কী প্রভাব পড়বে তা যেন ইআইএতে থাকে।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল অয়েল স্পিল অ্যান্ড কেমিকেল কনটিনজেন্সি প্ল্যান নামে যে পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করছে, তাকে স্বাগত জানিয়ে সুন্দরবনের নৌপথে সম্ভাব্য দুর্ঘটনায় দূষণ এড়াতে সেখানে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে একটি কার্যকর ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে পাস হওয়া প্রস্তাবে। 

সুন্দরবন নিয়ে আলোচনার শুরুতে তুরস্কের প্রতিনিধি স্বাদু পানির প্রবাহ নিয়ে পর্যবেক্ষকদের বিশ্লেষণ এবং বাংলাদেশের প্রতিবেদনের মধ্যে পার্থক্য ঘুচিয়ে আনার আহ্বান জানান। যেহেতু বাংলাদেশকে পানির জন্য নদীর উজানের প্রবাহের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়, সেহেতু এই জটিলতা নিরসনে বাংলাদেশকে যথেষ্ট সময় দেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি।   

খসড়া প্রস্তাবের শেষ দফায় ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশকে সুন্দরবনের সংরক্ষণের সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা লেখা ছিল। শুনানি শেষে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশকে ওই প্রতিবেদন দিতে হবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে।

সূত্র : বিডিনিউজ২৪।

Posted in সারা দেশ, স্বাস্থ্য | Comments Off on রামপাল: শর্ত পূরণে বাংলাদেশকে দেড় বছর সময় ইউনেস্কোর

অ্যাপের আওতায় আসছে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আরও গতিশীল করতে ডিজিটাল মনিটরিংয়ের আওতায় আনছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এজন্য একটি অ্যাপ চালু করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সংস্থার পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছবি ও ভিডিওসহ তার নিজ এলাকার চিত্র তুলে ধরবেন। এ কাজের সরাসরি মনিটরিং করবেন মেয়রসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে অ্যাপটি তৈরির কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে।

ডিএসসিসি সূত্র জানিয়েছে, সংস্থার অধীনে বর্তমানে পাঁচ হাজার ২১৬ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন। কিন্তু এর পরও নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে শুরু করে প্রধান প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে প্রতিদিন ময়লা আবর্জনার স্তূপ পড়ে থাকে। এ জন্য বিভিন্ন সময়ে নানা উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে পাঁচ হাজার ৭০০টি মিনি ডাস্টবিনও স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। এজন্য করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অবহেলাকেই দায়ী করা হচ্ছে। ডিউটি না করে বেতন-ভাতাসহ সব সুযোগ সুবিধা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে এদের বিরুদ্ধে।

এই কর্মীদের কাজে ফাঁকি রোধে ডিজিটাল ট্র্যাকিং সিস্টেমও চালু রয়েছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে প্রত্যেক কর্মীকে গ্রামীণফোনের একটি করে সিম দেওয়া হয়েছে। বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে এই সিম ব্যবহারকারী প্রতিটি কর্মীর সর্বশেষ অবস্থান জানতে পারবেন কর্মকর্তারা। এর মাধ্যমেই তাদের হাজিরা নিশ্চিত হয়। ফলে দায়িত্বে কেউ অবহেলা করলে সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়বেন। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। ‘চতুর’ কর্মীরা বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে হাজিরা নিশ্চিত করেন। এরপর অ্যাপের মাধ্যমে বিষয়টি মনিটরিং করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে ময়লা ও আবর্জনা জমে থাকার কারণে বিভিন্ন সময়ে মেয়রকে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ নগরবাসীর কথা শুনতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিভিন্ন সময়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় গতি ফেরাতে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন।

ডিজিটাল অ্যাপ সিস্টেমের মাধ্যম একজন পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক (পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মাঠ পর্যায়ের নিয়ন্ত্রক) তার নির্ধারিত এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, সড়ক ও এলাকার ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে সকাল সাতটার আগে এই অ্যাপে তার অ্যাকাউন্টে আপলোড করবেন। মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা বিষয়টি সরাসরি মনিটরিং করতে পারবেন। এই অ্যাপে সরাসরি দেখার (লাইভ) ব্যবস্থাও থাকবে। কোনও কর্মকর্তা কাজে যোগ না দিয়ে ফাঁকি দিলে নতুন এ অ্যাপের মাধ্যমে ধরা পড়ে যাবেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিএসসিসির সিস্টেম অ্যানালিস্ট মো. আবু তৈয়ব রোকন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের প্রচেষ্টায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে গতি ফেরাতে একটি অ্যাপ চালু করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে। এর পর উদ্বোধন করা হবে।’

ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য মেয়রের নির্দেশনা রয়েছে। তিনি নিজেও বিষয়টি সরাসরি তদারকি করেন। কেউ যাতে কাজে ফাঁকি দিতে না পারে সে জন্য পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও পরিদর্শকদের কাজসহ পুরো বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে অ্যাপের আওতায় আনা হচ্ছে।’

Posted in স্বাস্থ্য | Comments Off on অ্যাপের আওতায় আসছে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

কিভাবে সুস্থভাবে পালন করবেন ঈদ

রমজানের এক মাস রাখার পরে আমরা সবাই ঈদ আনন্দ উদযাপন করে থাকি। রোজায় যেহেতু একটা নিয়ম মাফিক খাবার খাওয়া হত। তাই ঈদে এই জন্য শারিরীকভাবে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে কিছু খাবার খেলে। তাই সুস্থ থাকতে পরিহার করতে হবে সেসব খাবার। ঈদে কিভাবে সুস্থ থাকবে তা নিয়ে ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তা আমাদের নতুন কিছু ডটকমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-

১.রোজার পরে ঈদের সময় খাবার পরে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় বুকজ্বালা। সেজন্য ভাজা খাবার পরিহার করতে হবে।

২.ডায়াবেটিস যাদের আছে তারা তো মিষ্টি খাআর থেকে সংযত থাকে ঈদেও নিজেদের সংযত রাখুন। তবে স্যাকারিন বা অ্যাকারবোজ দিয়ে রান্না হলে খেতে পারেন অনায়াসেই।

৩. হার্টের রোগীদের জন্য ঈদে তেমন বাধানিষেধ নেই। তবে একসঙ্গে অতিরিক্ত খাবার খাবেন না।

৪. গর্ভবতী মায়েরা বেশি পরিমাণে মিষ্টিজাতীয় খাবার খাবেন না; গুরুপাক খাবেন না। একবারে বেশি পরিমাণে খাবেন না। যে খাবারগুলো সহজেই হজম হয়, সেগুলো অল্প পরিমাণে বারবার খান। সময়মতো খাবেন।

৬. শ্বাসকষ্টে ভুগছেন এমন রোগী খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন হোন। গরুর মাংস, হাঁসের মাংস, হাঁসের ডিম, ইলিশ মাছ, বেগুন, নারিকেল, আনারস, পাকা কলায় হতে পারে অ্যালার্জি। এ থেকে বাড়তে পারে আপনার শ্বাসকষ্ট।  এ ছাড়া একবারে বেশি খেয়ে ফেললে বাড়তে পারে শ্বাসকষ্ট। 

Posted in লাইফস্টাইল, স্বাস্থ্য | Comments Off on কিভাবে সুস্থভাবে পালন করবেন ঈদ

রোজায় ত্বক সুস্থ রাখতে

অনেকে মনে করেন রোজা ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক প্রাণহীন করে তোলে। কিন্তু ত্বকের জন্য বেশ উপকারি, এটি ত্বকের একজিমা ও সোরিয়াসিস দূর করে ত্বককে উন্নত করতে সাহায্য করে । তবে সারাদিন না খেয়ে থাকার কারণে পানির অভাবে ত্বক কিছুটা রুক্ষ মলিন দেখায়। কিছু নিয়ম মেলে চললে রোজায় ত্বককে সতেজ সজীব রাখা সম্ভব।

রোজায় ডায়েট বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এইসময় তৈলাক্ত এবং ঝালযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তৈলাক্ত খাবার ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি করে।

২। ইফতারে প্রচুর পরিমাণে ফল এবং সবজি রাখুন। ফল ত্বকের পুষ্টি যুগিয়ে ত্বকের মলিনতা দূর করে দেয়।

৩। কন্ডিশনারযুক্ত ক্লিনজার ব্যবহার করুন। এটি ত্বক শুষ্ক না করে মেকআপ এবং ময়লা দূর করে দেয়।

>৪। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করুন।

৫। আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করে থাকেন তাহলে রোজার সময়টি ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন। ব্যায়াম আপনার শক্তি ক্ষয় করে দূর্বল করে দেবে।

৬। অতিরিক্ত ঠান্ডা এবং সফট ড্রিংক্স খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ঠান্ডা পানি এবং সফট ড্রিংক্স হজমে সমস্যা করে থাকে। ইফতার করুন সাধারণ পানি পান করে।

৭। অতিরিক্ত লবণ এবং লবণাক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। লবণ এবং লবণাক্ত খাবার শরীরে পানির চাহিদা বৃদ্ধি করে পানির তৃষ্ণা বাড়িয়ে দেয়।

৮। রোজার সময় স্ক্রাব কম করুন। রোজায় শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে থাকে, এইসময় স্ক্রাব ত্বককে আরও মলিন এবং রুক্ষ করে দেয়।

৯।  এইসময় ত্বক ময়েশ্চারাইজ করা প্রয়োজন হয়। দিনে দুই থেকে তিনবার হাত-পায়ে ময়েশ্চারাইজিং লোশন এবং ক্রিম ব্যবহার করুন। মুখ কয়েকবার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধোয়ার অভ্যাস করুন।

১০। দ্রুত ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে টোনার হিসেবে গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন। মুখ এবং ঘাড়ে দিনে ৩-৪ বার গোলাপ জল ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের কালো দাগ দূর করে, রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে ত্বকে সতেজতা বৃদ্ধি করে। ত্বকে তাৎক্ষনিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে থাকে।

১১। এইসময় প্রচুর পানি পান করা উচিত। পানি শরীর হাইড্রেটেড করার পাশাপাশি খাবার খাওয়ার আগ্রহ কমিয়ে দেয়। পানির স্বাদ বৃদ্ধির জন্য এতে এলাচ, বেসিল পাতা যোগ করতে পারেন।

সূত্র : নতুন কিছু ডটকম।

Posted in স্বাস্থ্য | Comments Off on রোজায় ত্বক সুস্থ রাখতে

রোজায় খেজুরের উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক : পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফল দেয় তাৎক্ষণিক শক্তি।

খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অনুসারে, শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয় বৈজ্ঞানিকভাবেও খেজুরের রয়েছে নানান উপকারিতা।

তাৎক্ষণিক কর্মশক্তি: নয়া দিল্লির ফোর্টিস লা ফেম হাসপাতালের ক্লিনিকাল পুষ্টিবিদ লাভনিত বাত্রা বলেন, “খেজুর হল পুষ্টির ক্যাপসুল। এতে প্রচুর চিনি বা শর্করা থাকায় এক কামড়েই কর্মশক্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ। পাশাপাশি এটি মস্তিষ্ককে সতর্ক করে তোলে এবং অবসাদ দূর করে। তাই ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা রাখার পর শরীরের অবসাদ দূর করতে খেজুর অত্যন্ত উপকারী।”

এতে আরও রয়েছে লৌহ, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আঁশ, গ্লুকোজ, ম্যাগনেসিয়াম, সুক্রোজ ইত্যাদি যা শরীরকে চাঙা করে তুলতে পারে মাত্র আধা ঘণ্টাতেই।

অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ: রোজার রাখার কারণে অনেকেই বুক জ্বালাপোড়া, অ্যাসিডিটি ইত্যাদি সমস্যায় ভোগেন, যার সমাধান খেজুর। এটি শরীরে অম্ল তৈরির পরিমাণ কমায় এবং পাকস্থলীকে আরাম দেয়।

বাড়তি খাওয়া নিয়ন্ত্রণ: রোজার মাসে ইফতারে বেশি খেয়ে ফেলা অতি সাধারণ ব্যাপার। যার একটি কারণ হল, সারাদিন না খেয়ে থাকার পর শরীরও চায় খাবার সঞ্চয় করে রাখতে।

বাত্রা বলেন, “ইফতারের সময় ধীরগতিতে খান খুব কম মানুষই। তড়িঘড়ি করে গোগ্রাসে গেলার কারণে বেশিরভাগ সময়ই বেশি খাওয়া হয়ে যায়। তাই খেজুর খেয়ে রোজা ভাঙলে এতে থাকা জটিল কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে শরীরের সময় বেশি লাগে। ফলে, দীর্ঘসময় ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর খেজুরে থাকা আঁশ বাড়তি খাওয়া নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।”

হজমে সহায়ক: সারাদিন না খেয়ে থাকার পর একসঙ্গে অনেক খাবার খাওয়ার কারণে হজম প্রক্রিয়ার উপর প্রচণ্ড চাপ পড়ে, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তবে পাকস্থলিতে হজমে সহায়ক  ‘এনজাইমেস’ নিঃসরণ এবং নিয়মিত মল অপসারণে সহায়তা করার মাধ্যমে একমুঠ খেজুর এই সমস্যা সমাধানে সক্ষম।

শরীরের বিষাক্ত উপাদান অপসারণ: শরীরে জমা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল অপসারণে সহায়ক খেজুর।

সূত্র : বিডিনিউজ২৪।

Posted in স্বাস্থ্য | Comments Off on রোজায় খেজুরের উপকারিতা

বিবাহিত নারীদের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কারণ বাড়তি ওজন

দেশে প্রতি পাঁচজন বিবাহিত নারীর একজন স্থুল অথবা অধিক ওজনের অধিকারী। স্থূলতার কারণে তাদের ডায়াবেটিস এবং অ্যান্ডমেট্রিয়াল ক্যান্সার, জরায়ু-মুখ ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার ও ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের মতো বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। গ্রামীণ এলাকার চেয়ে শহুরে এলাকায় স্থূলতা এবং অধিক ওজনের প্রাদুর্ভাব বেশি ।

আইসিডিডিআর,বির সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে স্থূলতার জন্য সম্পদ সূচক, শিক্ষার অবস্থা, টেলিভিশন দেখার সময়কাল এর মতো বেশ কিছু কারণকে চিহ্নিত করা হয়েছে।AAAAAAASwetha  actress photos _45_

চিহ্নিত কারণগুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিবাহিত নারীদের স্থূলতার ব্যাপকতাকে হ্রাস করা সম্ভব বলে সুপারিশ করা হয়। ২০১৬ সালে আইসিডিডিআর,বির পুষ্টি প্রোগ্রামের প্রধান হরিবন্ধু শর্মা, আইসিডিডিআর,বি এবং আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকর্মীদের নিয়ে ১৮ থেকে ৪৯ বছরের নারীদের (যারা বর্তমানে বিবাহিত বা পূর্বে ছিলেন) অধিক ওজন এবং স্থূলতা সংশ্লিষ্ট কারণগুলো চিহ্নিত করার জন্য বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে ২০১১ এর পুষ্টি সংক্রান্ত উপাত্ত বিশ্লেষণ করেন।

সম্প্রতি গবেষণাটির ফলাফল বিএমসি ওবেসিটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে দেখা যায় গবেষণার আওতাভুক্ত ১৬ হাজার ৪ শ’ ৯৩ জন নারীর মধ্যে ১৮ শতাংশই অধিক ওজনের অধিকারী অথবা স্থূল। শহরে বসবাসরত নারীদের মধ্যে শারীরিক পরিশ্রমের সাথে যুক্ত নারীদের চেয়ে পূর্ণ মাত্রার কর্মজীবী নয় এমন নারীরা অধিক ওজন এবং স্থূল হবার দেড়গুণ (১.৪৪ গুণ) বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। শহর ও গ্রাম উভয় জায়গার ধনী ও খাদ্য সুরক্ষিত পরিবারের নারীরা অধিক ওজন এবং স্থূল হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন।

আইসিডিডিআর,বির পুষ্টি এবং ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগ এর জ্যেষ্ঠ পরিচালক এবং এই গবেষণার জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, ‘স্থূলতার এই উচ্চ মাত্রা আমাদের দেশের চিকিৎসা বাজেটে প্রভাব ফেলবে। যদি এর মোকাবেলা করা না হয় তবে অধিক ওজন এবং স্থূলতা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন রোগ যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ, হৃদরোগ ইত্যাদি বৃদ্ধি পাবে।

প্রধান গবেষক হরিবন্ধু শর্মার মতে, ‘স্থূলতা সমস্যার ক্রমবর্ধমাণ অবস্থা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জনস্বাস্থ্যখাতের জন্য হুমকি স্বরূপ। ঐতিহ্যগতভাবে স্থূলতা এবং অধিক ওজনের সমস্যা বৃহদার্থে ধনী-দেশগুলোর সমস্যা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতেও এর প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এ দেশগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সাধারণত অপুষ্টি এবং সংক্রামক রোগ মোকাবেলায় সম্পদ ব্যয় করবার প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু যেহেতু তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাড়ছে তাই তাদের অবশ্যই পুষ্টি সংশ্লিষ্ট অসংক্রামক রোগ ব্যবস্থাপনায়ও মনোনিবেশ করতে হবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামীণ এলাকার চেয়ে শহুরে এলাকায় স্থূলতা এবং অধিক ওজনের প্রাদুর্ভাব বেশি। গবেষক শর্মা মনে করেন বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মাঝে এই সমস্যার গভীরতা বোঝার জন্য আরো গবেষণার প্রয়োজন আছে। তিনি বাংলাদেশের পরবর্তী ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভেতে স্থূলতা সংশ্লিষ্ট সূচকসমূহ যেমন শারীরিক কার্যকলাপ, টিভি দেখার সময়কাল, কিভাবে প্রাপ্ত বয়স্করা অবসর সময় কাটায় এবং খাদ্যগ্রহণ বিষয়ক তথ্য গ্রহণ করার জন্য গুরুত্ব প্রদান করেন।

এই পরীক্ষামূলক গবেষণা ও অনুসন্ধান বাংলাদেশের গ্রাম এবং শহরের নারীদের স্থূলতা এবং অধিক ওজন সমস্যা প্রতিরোধ কার্যক্রমের সঠিক কৌশল মূল্যায়নে সহায়তা করবে। শহর ও গ্রামের নারীদের স্থূলতা প্রাদুর্ভাব কমাতে জনস্বাস্থ্য কার্যক্রম অপরিহার্য। স্থূলতা মোকাবেলায় বিদ্যালয়ে, সমাজে এবং কর্মক্ষেত্রে স্থূলতার পরিণতি, শারীরিক কর্মকাণ্ডকে উদ্বুদ্ধকরণ, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও স্থূলতা প্রতিরোধ বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা দরকার।
অধিক ওজনের সমস্যা মোকাবেলায়, বিশেষত গ্রামীণ এলাকায় পুষ্টিগত অবস্থা প্রতিনিয়ত পদ্ধতিগত মূল্যায়ন ও নজরদারির মধ্যে নিয়ে আসা গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে, প্রতিবছর কমপক্ষে ২৮ লক্ষ মানুষ অধিক ওজন এবং স্থূলতার কারণে মারা যায়। বিশেষ করে নারীদের জন্য স্থূলতা নানাভাবে ক্ষতিকর হতে পারে। স্থূলতার কারণে তারা ডায়াবেটিস এবং অ্যান্ডমেট্রিয়াল ক্যান্সার, জরায়ু-মুখ ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের মতো বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হবার অনেক বেশি ঝুঁকিতে থাকে বলে প্রমাণিত।

মঙ্গলবার আইসিডিডিআর,বির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

Posted in স্বাস্থ্য | Comments Off on বিবাহিত নারীদের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কারণ বাড়তি ওজন

জিকা আক্রান্তের চিকিৎসার দায়িত্ব সরকারের: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে কেউ মশাবাহিত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সরকার তার চিকিৎসার ভার নেবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানিয়েছেন। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “যে কোনো রোগী চিহ্নিত হলে সমস্ত চিকিৎসা ব্যয় আমরাই দেব। ডাক্তারের কাছে আমরা নিয়ে যাব। তারপর ফলোআপ করব। দেশে জিকা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত বা উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলেও জানান মন্ত্রী।
‘জিকা ভাইরাস: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’-বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। গতবছর ব্রাজিলে নতুন করে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মেলার পর মাত্র চার মাসের মধ্যে বহু দেশে তা ছড়িয়ে পড়ে। এর বাহক এডিস এজিপ্টি মশা। জিকা ভাইরাসে সচরাচর মৃত্যুর ঘটনা দেখা যায় না। এর লক্ষণও সবসময় স্পষ্ট থাকে না। এই ভাইরাস সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হয়ে এসেছে নবজাতকদের নিয়ে।145420MOSQUITO_(2)
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গর্ভবতী মা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার অনাগত শিশুর মাথা স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হতে পারে, মস্তিষ্কের গঠন থাকতে পারে অপূর্ণ। এ রোগকে বলে মাইক্রোসেফালি।এ ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক বা ওষুধ নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম ও বেশি করে তরল খাবার খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়। জিকা ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় এক সপ্তাহ আগে বিশ্বময় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
সংসদে জিকা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সর্বশক্তি নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “জনগণের প্রতি আহ্বান, আপনারা আশ্বস্ত থাকুন। এই ভাইরাস দেশে কোনোভাবেই সংক্রমিত হতে পারবে না। সরকার জিকা ভাইরাস প্রতিরোধে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি অবস্থা ঘোষণার দুইদিনের মধ্যে সব সিভিল সার্জন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকে ইমেইলের মাধ্যমে জিকা সম্পর্কিত তথ্য উপাত্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। নাসিম বলেন, “এরই মধ্যে জিকা ভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং জরুরি অবস্থা মোকাবেলার জন্য ‘প্রিপেয়ার্ডনেস প্লান’ করা হয়েছে।

“সব আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বারে মেডিকেল টিমের কার‌্যক্রম নিশ্চিত করা হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরে জিকা ভাইরাস স্ক্রিনিং মনিটর করতে ওয়েব ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং সম্ভাব্য জিকা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে এডিস মশা নিধনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিটি কর্পোরেশন, স্থানীয় সরকারের উদ্যোগে সমন্বিত কার‌্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।” মন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে গণমাধ্যমে জিকা ভাইরাস সংক্রান্ত সংবাদ প্রচার করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দীন মো. নূরুল হক বলেন, “কুর্মিটোলায় (কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল) ২০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড করা আছে।
“আমি এরই মধ্যে পরিচালককে বলে দিয়েছি, জিকার জন্য সেম ওয়ার্ড ফাংশন থাকবে। কোনো লোক জ্বর নিয়ে দেশে আসলে তাকে এই ওয়ার্ডে আনতে হবে। সুস্থ না হওয়া পর‌্যন্ত সে এখানেই থাকবে। সুস্থ হলে তাকে নির্দিষ্ট সময় পর‌্যন্ত আমরা তা ফলোআপ করবে।” ইতোমধ্যে জিকা ভাইরাস দেখা গেছে এমন দেশ থেকে কেউ বাংলাদেশে আসলে এই ফলোআপের মধ্য দিয়ে যেতে হবে বলে জানান তিনি।

Posted in জাতীয়, স্বাস্থ্য | Comments Off on জিকা আক্রান্তের চিকিৎসার দায়িত্ব সরকারের: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

আসছে জিকা ভ্যাকসিন!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জিকা ভাইরাসের মহামারি নিয়ে বিশ্বজুড়ে যখন উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে, তখন ভারতের একটি জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি দাবি করল, জিকা ভ্যাকসিন তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে তারা। জিকা আতঙ্কের বিরুদ্ধে নিঃসন্দেহে এটি সুসংবাদ। ভারতের হায়দরাবাদের ‘ভারত বায়োটেক’ নামের ভ্যাকসিন ও বায়ো থেরাপি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বুধবার দাবি করেছে, জিকা ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে ব্যাপক অগ্রগতিতে আছে তারা। তারা গবেষণাগারে দুইটি ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। যার মধ্যে একটি প্রাণীর ওপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগের উপযোগী হয়েছে। পরীক্ষা শেষ হলে তা মানবদেহে প্রয়োগ করা হবে। জিকা প্রতিরোধে এই ভ্যাকসিনে সফলতা পাওয়া যাবে বলে তারা দৃঢ় বিশ্বাসী।

news_imgভারত বায়োটেক বড় বড় রোগের প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করে এবং বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির সমাদর রয়েছে। গত বছর তারা জিকা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির কাজে হাত দেয়। ভারত বায়োটেকের সিএমডি কৃষ্ণা এলা বলেছেন, আমাদের বিশ্বাস জিকাভ্যাক (জিকার ভ্যাকসিন) তৈরিতে আমরা সবার চেয়ে এগিয়ে আছি এবং সম্ভবত আমরাই প্রথম জিকাভ্যাকের প্যাটেন্টের জন্য প্রস্তাব দিতে যাচ্ছি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যের উল্লেখ করে কৃষ্ণা এলা বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ২৩ দেশে জিকা ভাইরাস ছড়িয়েছে। এর মধ্যে মহামারি আকার নিয়েছে ব্রাজিলে। ২০১৫ সালে দেশটিতে ৩ হাজার ৫৩০টি শিশু মাইক্রোসেফ্যালি নিয়ে জন্মেছে। মাইক্রোসেফ্যালি বলতে বোঝায় নবজাতকের মাথা স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হওয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, ব্রাজিলে মাইক্রোসেফ্যালির জন্য জিকা ভাইরাস দায়ী। এডিস মশার কামাড়ে জিকা ভাইরাস সংক্রমিত হয়। মানবদেহে এডিসের কামড়ে ইয়োলো ফেভার, ওয়েস্ট নিল এবং ডেঙ্গুর ভাইরাস ছড়ায়।

জিকা ভাইরাসের মহামারি ঠেকাতে বিশ্বের চিকিৎসাসম্পর্কিত শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো জিকা ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে মাথা ঘামাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জিকা ভাইরাস প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে গবেষণামূলক কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।

Posted in স্বাস্থ্য | Comments Off on আসছে জিকা ভ্যাকসিন!

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud