পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

রাজধানীতে মহামারিতে রূপ নিয়েছে চিকুনগুনিয়া

Posted on July 14, 2017 | in জাতীয়, স্বাস্থ্য | by

রাজধানী ঢাকায় চিকুনগুনিয়া মহামারি আকারে রূপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ‘এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ তথা চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ডিএনসিসি  গৃহীত কার্যক্রম শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে’ বিশেষজ্ঞরা এ কথা জানান।

ডিএনসিসির আমন্ত্রণে সংবাদ সম্মেলনে তিন জন বিশেষজ্ঞ উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন, অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান (এপিডেমিওলজিস্ট), ডা. তৈহিদ উদ্দীন (এন্টোমলজিস্ট ) ও ডা. মুনজুর এ চৌধুরী (এন্টোমলজিস্ট )।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মহামারি হচ্ছে একটি রোগের যে অবস্থান থাকে, সেটি তার অবস্থান থেকে নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট একটি স্থানে অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়ে। সে মোতাবেক বর্তমান সময়ে চিকুনগুনিয়াকে মহামারি বলা যায়। এটি আমার ব্যক্তিগত মত। এটিকে মহামারি ঘোষণা করার অথরিটি রয়েছে।’

জবাবে মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘মহামারি হোক আর যাই হোক, এজন্য ডিএনসিসি দায়ী না। এডিস মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া রোগ ছড়ায়। এডিস মশা সিটি করপোরেশনের ড্রেন কিংবা ময়লার ডাস্টবিনে জন্মায় না। এ মশা জন্মায় বাসাবাড়িতে, পরিষ্কার পানিতে, নির্মাণ সামগ্রীতে, এসি, ফুলের টব, ক্যান, পরিত্যক্ত টায়ার ও ডাবের খোসায়। আমরা বাসাবাড়িতে গিয়ে ওষুধ দিতে পারি না।’
আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা আগাম পূর্বাভাস পাইনি। তাছাড়া এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কোনও জাতীয় নির্দেশিকা আজ পর্যন্ত প্রস্তুত করা হয়নি। এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তৈরি করে। যে কারণে প্রথমে এ রোগের নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। অনেকেই মনে করেন এ জন্য ডিএনসিসি দায়ী।’
এডিস মশার ফলে ডেঙ্গু জ্বর দেখা দিতে পারে আশঙ্কা করে ডা. মুনজুর এ চৌধুরী  বলেন, ‘এডিস মশা যেহেতু চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গুর বাহক, সেহেতু দুই রোগ এক সঙ্গেও দেখা দিতে পারে। তখন পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এডিস মশা যদি কাউকে কামড় দেয় তাহলে তার চিকুনগুনিয়া হবে। আবার চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত কোনও রোগীকে মশা কামড়ালে তার মধ্যেও এ ভাইরাস ছড়িয়ে যাবে। সেটি যদি আবার কোনও সুস্থ মানুষকে কামড়ায় তাহলে তারও চিকুনগুনিয়া হবে।’
ডা. তৈহিদ উদ্দীন (এন্টোমলজিস্ট) বলেন, ‘এডিস মশার মাধ্যমে জিকার ভাইরাসও ছড়ায়। সুতরাং সবাইকে সচেতন হতে হবে। যদি কোনও ব্যক্তি এ রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে তাকে মশারির ভেতর রাখতে হবে। না হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘মেয়র হিসেবে আমি আক্রান্তদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি, সমবেদনা জানাচ্ছি। আমাদের কাজ আগের চেয়ে ১০ গুণ বেড়েছে। ক্যান্টনমেন্ট, বসুন্ধরা ও উত্তরার কিছু কিছু এলাকা আমাদের বাইরে। সব জায়গায় আমরা হাত দিতে পারি না ।’
আনিসুল হক বলেন, ‘এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য সারা পৃথিবীতেই জনগণের সম্পৃক্ততা সবচেয়ে গরুত্বপূর্ণ। নাগরিকরা অনেকেই চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে জানেন, কিন্তু এ ব্যাপারে যথাযথ সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেন না। আমরা আগে মশা মারার ওষুধ নগর ভবন থেকে জুনে প্রেরণ করতাম। কিন্তু এখন সরাসরি ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এক এক স্থানে একাধিকবার স্প্রে করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশন আর কী করবে?’
অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএমএম সালেহ ভূঁইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud