October 15, 2024
খুজিস্তা নূর-ই-নাহারিন : অনেকে নানা জায়গায় দেখা হলে কায়দা করে প্রশ্ন করেনÑ আমার লেখায় কেন শেখ হাসিনার সরকারকে সমর্থন করি? ফেসবুক ইনবক্সেও কেউ আকার-ইঙ্গিতে, কেউ বা সরাসরি একই ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করেন। কখনো হেসে এড়িয়ে যাই, কখনো বা বলি শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনা। তাই তাকে সমর্থন করে যাই। মাঝেমধ্যে গভীরভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছি, কেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নিঃশর্ত সমর্থন করি! কেনই বা বিশ্বাস করি না যে, শেখ হাসিনার বিকল্প এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা ছাড়া কিছু নেই। পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান বলে? নাকি নিজে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার সুবাদে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি গভীর আস্থা নিয়ে তার সান্নিধ্য লাভের সুযোগ ঘটায় এখনো পথ হারাতে পারিনি?
মেঘে মেঘে বেলা অনেক হয়েছে। বয়স আর অভিজ্ঞতা আমাদেরও এখন অনেক হয়ে গেছে। জীবনকে বোঝার পাশাপাশি সমাজ, রাজনীতি, জগৎ-সংসার কম দেখা হয়নি। খারাপ মানুষ, ভালো মানুষ, খারাপ চিন্তা, ভালো চিন্তা, গণমুখী রাজনীতি, গণবিরোধী অপশক্তি, ভালো রাজনীতিবিদ, মন্দ রাজনীতিবিদ; এক কথায় গোটা সমাজচিত্রে বাস করা চরিত্রগুলো কখনো বিচ্ছিন্নভাবে, কখনো বা সমষ্টিগতভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করলেই মনের গভীর থেকে যার প্রতি আস্থা, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা ও আনুগত্য জন্মায়; তিনি আর কেউ নন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
তার সরকারের প্রতি, তার অনেক মন্ত্রীর প্রতি কিংবা অনেক নেতাকর্মীর প্রতি অনেক প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু নির্দ্বিধায় বলতে পারি, শেখ হাসিনার প্রতি আকুণ্ঠ সমর্থন নিঃশর্ত। এই সমর্থন সব প্রশ্নের ঊর্ধ্বে। মোটা দাগে, অল্প কথায় যদি চিত্রিত করি যুক্তির ওপর ভর করে, কেন আমি শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাকেই মনে করি। তাতে মুক্তিযুদ্ধোত্তর ৪৬ বছরের রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থার একটি ছোটখাটো পোস্টমর্টেম হয়ে যায়। আমাদের রাজনীতি ৪৬ বছর ধরেই ব্যক্তিকে ঘিরে বা বলা যায় জনগণনির্ভর নেতৃত্বকে ঘিরে। সেখানে যৌথ রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকতা গড়ে ওঠেনি।
এমনি পরিস্থিতিতে যত শাসক এসেছেন, সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাইরে রাখলে শেখ হাসিনাই শাসক হিসেবে উত্তম। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত আদর্শ, মূল্যবোধ ও গণমুখী আদর্শিক রাজনীতি চোরাবালিতেই ডুবে যায়নি, নির্লোভ রাজনীতির বিপরীতে গণবিরোধী, ক্ষমতালোভী, সুযোগসন্ধানী রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়েই ওঠেনি; স্বৈরশাসকদের ছায়ায় ভোগ-বিলাসের পথে রাজনীতিকে সহজলভ্য বিত্তবৈভব গড়ার সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়নি, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষাক্ত বাতাসে সমাজ ও রাজনীতিকে আচ্ছন্নই করা হয়নি, উন্নয়নের সেøাগান তুলে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করাই হয়নি, ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অগণতান্ত্রিক শাসকরা মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক শক্তির বিপরীতে একাত্তর ও পঁচাত্তরের ঘাতকদেরও রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করেছিলেন। প্রশাসনকেও শাসকের অঙ্গ হিসেবে গড়ে তুলতে গিয়ে গণবিরোধী শক্তি হিসেবে তৈরি করেছিলেন।
স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে, রাজনৈতিক অঙ্গীকার নিয়ে আসা শেখ হাসিনার সংগ্রাম ছিল এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। মৃত্যুভয়কে পায়ে পায়ে জয় করে জনগণকে পিতার উত্তরাধিকারিত্ব নিয়ে সম্মোহনী শক্তিকে সংগঠিতই করেননি; আস্থা অর্জনের মধ্য দিয়ে, নিরন্তর সংগ্রামের ভেতর দিয়ে গণতন্ত্রের সংগ্রামে জয়ী হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে যে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অবর্ণনীয় নির্যাতন, ভাঙন ও হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে নিঃশেষ করার চেষ্টা হয়েছে, ২১ বছর পর তিনি সেই দলকে ব্যালট-বিপ্লবে ক্ষমতায় এনেছেন।
পৃথিবীর দেশে দেশে কি উন্নত, আধুনিক, কি অনুন্নত, পশ্চাৎপদ সব দেশেই রাষ্ট্রনায়োকচিত দক্ষ নেতৃত্বের গুণেই একেকটি রাষ্ট্র এগিয়েছে। তার ’৯৬ শাসনামল সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যেও সাম্প্রদায়িক, ধর্মান্ধ শক্তিকে নিয়ে বিরোধী দলের জোট গঠনের পর শেখ হাসিনাই বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণই করেননি, খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত করেছেন। অশান্ত উপমহাদেশের রাজনীতির মাঝখানে দাঁড়িয়ে অভিভাবকত্বের জায়গায় শান্তির দূত হিসেবে বন্ধুত্বের হাতছানি ছড়িয়ে দিয়েছেন। দেশের অভ্যন্তরে যুগের পর যুগ রক্তস্নাত পাহাড়িদের জীবনে শান্তিচুক্তির মধ্য দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। আলোচনা ও সমঝোতার মধ্য দিয়ে চরমপন্থিদের সুপথে ফিরিয়েছেন। সংসদে মন্ত্রীর বদলে এমপিদের স্থায়ী কমিটির সভাপতি, প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব চালুর মধ্য দিয়ে সংসদকেই সব কর্মকা-ের কেন্দ্রবিন্দু করতে চেয়েছেন। সুশাসন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শেখ হাসিনা সুসংহতই করেননি। রাষ্ট্রপতি হিসেবে দলের অভিজ্ঞ, বরেণ্য রাজনীতিবিদদের রেখে বিচারপতি সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত করেছেন। ১৯৯৮ সালের বন্যা দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলাই করেননি, নারীর ক্ষমতায়নের দুয়ারই খুলে দেননি, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের দিগন্তও উন্মোচিত করেছিলেন।
তবুও ষড়যন্ত্র তার প্রতি সদয় হয়নি। ২০০১ সালের নির্বাচনে তাকে পরাস্ত করা হয়েছে। অনেক শক্তি নেপথ্যে একসঙ্গে কাজ করে ভোটযুদ্ধে তাকে পরাজিত করেছিল। তবুও তিনি দমে যাননি। তার নেতাকর্মীদের ওপর হত্যাযজ্ঞই চালানো হয়নি, জঙ্গিবাদের উত্থানই ঘটানো হয়নি, সন্ত্রাসবাদের কালো থাবা জনপ্রিয় নেতাদের জীবনই কেড়ে নেয়নি; তাকেও প্রকাশ্য দিবালোকে একুশের বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। গোটা বাংলাদেশে অস্থির, অশান্ত, রক্তাক্ত জনপদে পরিণত করা হয়েছে। কিন্তু যার ধমনিতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত, সংগ্রাম যার বুকের ভেতর, দেশ ও মানুষ যার শক্তি তাকে দমায় কে? তিনি ফের ১৪ দল ও মহাজোট গঠন করে জনমত পক্ষে টেনে নিলেন।
একটি জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সব জনমত জরিপে তিনিই শীর্ষে থাকলেন। তবুও গণতন্ত্রের পথ থেকে বিচ্যুত হননি। কিন্তু আজকে যারা গণতন্ত্রের জন্য মায়াকান্না করছেন বা এদের সঙ্গে যারা গলা জড়াজড়ি করছেন তারা সবাই মিলে একটি একতরফা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাইলেন। সেই পথ ধরে ওয়ান-ইলেভেন এসে শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে ষড়যন্ত্রের পথে সরিয়ে দিতে চাইলেন। দলের অভ্যন্তরে একটি শক্তি সেই শক্তির সঙ্গে যুক্ত হলো। কিন্তু জনগণ ও কর্মী যার প্রতি আস্থাশীল সেই নেত্রী শেখ হাসিনাকে দাবিয়ে রাখা যায়নি। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তিনি দেশে ফিরেছেন, সাহসিকতার সঙ্গে সেই সরকারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। দীর্ঘদিন জেল খেটেছেন। কিন্তু নিজস্ব ক্যারিশমা, ইমেজ ও শক্তিতে পরাস্ত করে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেছেন।
ব্যালট-বিপ্লবে গণরায় রায় নিয়ে ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে দিনবদলের সনদ নিয়ে উন্নয়নের মহাসড়ক ধরেছেন। সাফাল্য তার হাতের মুঠোয় ধরা দিয়েছে। সমুদ্র বিজয়, সীমান্ত সমস্যার সমাধান, নিজস্ব অর্থনীতিকে বিশ্বমন্দার কবল থেকে রক্ষা করে জাতীয় প্রবৃদ্ধির সূচকই বাড়াননি, নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ তার হাত ধরে আজকের এই বাংলাদেশ। তিনি গণতন্ত্রের পথে গেছেন। তার অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। একের পর এক সিটি করপোরেশন ও উপনির্বাচনে বিএনপির বিজয় প্রমাণ করেছে।
২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে ওয়াক ওভার দিয়েছে। শেখ হাসিনার সমঝোতা ও আলোচনার প্রস্তাব নাকচ করেছে। যুদ্ধাপরাধী জামায়াতকে রক্ষার হটকারী পথ নিয়েছে। এক পাল্লায় উঠে সহিংস হরতাল, অবরোধ, ভোট বর্জন, প্রতিরোধসহ নানামুখী নাশকতার কর্মসূচি নিয়ে নিজেদের পঙ্গু করেছে। যারা বলছেন সংসদ অকার্যকর, শক্তিশালী বিরোধী দল নেই, তাদের আঙুল প্রশ্নের পর প্রশ্ন তুলে বিভ্রান্ত রাজনীতির অন্ধগলিতে পথহারা বিএনিপর দিকেই তোলা উচিত। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হলে ক্ষমতা নিশ্চিত নয়। ভোটযুদ্ধের চ্যালেঞ্জ গ্রহণই বড় কথা।
শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে পদ্মা সেতু করছেন। উন্নয়নের এক মহাকর্মযজ্ঞে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব ঘটেছে। সুশাসন নিশ্চিত করা সামনে তার চ্যালেঞ্জ। বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে দলে ও সংসদে যোগ্য ও জনপ্রিয় নেতৃত্ব নির্বাচন, মনোনয়ন তার সমানে চ্যালেঞ্জ। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাসে গণতন্ত্রের পথে যতটা না পরাস্ত করা গেছে, তার চেয়ে বেশি ষড়যন্ত্রের পথে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। বিশ্বমোড়লদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা এনেছিলেন। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে জীবন দিয়েছেন পরিবার-পরিজনসহ। কুড়িবারেরও বেশি শেখ হাসিনার প্রাণনাশের চেষ্টা হয়েছে। তার রাজনীতি ও ক্ষমতার বিরুদ্ধে অতীতেও ষড়যন্ত্র হয়েছে, বর্তমানেও হচ্ছে, ভবিষ্যতেও যে হবে তা অবলীলায় বলা যায়।
কারণ বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশের প্রতিটি ইঞ্চি মাটি ও মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারেন না। দেশপ্রেমই তার রাজনীতির মূল শক্তি, জনগণই তার ক্ষমতার উৎস। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রনায়কোচিত দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের বাইরে তার রয়েছে আটপৌরে এক মানবিক কোমল হৃদয়। কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, মুক্তিযোদ্ধা, অসহায় মানুষ, বিপদগ্রস্ত, নির্যাতিত কর্মী এক কথায় সাধারণের জন্য তার হৃদয় কেঁদে ওঠে। গভীর মমতায় কাছে টানে। অনাথের বিয়ে দেন, জীবনের নিরাপত্তা দেন। তিনি মানুষের কল্যাণে রাজনীতির পথে হাঁটেন। শেখ হাসিনাই আজকের দুনিয়ায় মহান জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উত্তরাধিকার হিসেবে আলোর বাতিঘর হিসেবে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করেছেন। তাই শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। আর এ জন্যই বারবার তাকে সমর্থন দিতে হয়।
এম সাখাওয়াত হোসেন : নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু, সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার অভিপ্রায় নিয়ে নির্বাচন কমিশনের শরিক বলে পরিচিত সংগঠনগুলোর সঙ্গে কিছু বিষয়ে ধারণা এবং মতামত নেওয়ার জন্য আলোচনা শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই দেশের কিছু বরণ্য ব্যক্তি, যাদের সুশীল সমাজের প্রতিনিধি বলে গণ্য করা হয় তাদের সঙ্গে এবং গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। এখন চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা। আলোচনার এ উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। কারণ বর্তমান বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা তখনই পায় যখন জনগণের কাছে ব্যাপকভাবে নির্বাচনের বিশুদ্ধতা নিয়ে সন্দেহ না থাকে। বিশেষ করে আমাদের মতো দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠান শুধু নির্বাচন কমিশনের একার কাজ নয়। সবার, বিশেষ করে শরিক বলে বিবেচিতদের সহযোগিতা অবশ্যই প্রয়োজন। যার প্রথমেই রয়েছে নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী আইন ও বিধান মেনে চলা।
যাহোক আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের এবার একমাত্র চাওয়া ছিল যাতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য হয়। নির্বাচন কমিশনও তেমনটাই ব্যক্ত করেছে। যেহেতু এ পর্যন্ত এসব আলোচনা মোটা দাগে হচ্ছে, নির্দিষ্ট কোনো ছকে হয়নি তাই বহু ধরনের মতামত এসেছেÑ যার সারবত্তা বের করাই দুরূহ হবে। তবে দুটি বিষয় নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত তুলে ধরা হয়েছে, যা নির্বাচন কমিশনের বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেই এ দুটি বিষয়ই সুষ্ঠু নির্বাচনের একমাত্র নিয়ামক নয়। এর একটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন এবং অপরটি ‘না ভোটের’ বিধান যুক্ত করা। নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কী হবে না, হলে কীভাবে হবে এ বিষয়টি রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যে পড়েছে। এর কারণ ২০১১ সালে সামরিক বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে বাদ দেওয়া। আলোচনায় এ দুটি বিষয় উঠে আসায় পরবর্তীকালে যেভাবে আলোচিত হয়েছে তাতে মনে হতে পারে ভালো নির্বাচনের জন্য এ দুটি বিষয়ই অন্তরায়। তেমনটা মোটেই নয়, এ দুই বিষয় অনুষঙ্গ মাত্র। যারা এ দুটি বিষয়ের নির্বাচনে সামরিক বাহিনী না রাখা এবং না ভোটের বিধান ‘যা এখন’ আমাদের প্রক্রিয়ায় নেই, ভারতে গত নির্বাচন থেকে যুক্ত হয়েছে। না রাখার কথা জোর দিয়ে কেন বলেছেন তারা, কেন নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছেন তার কোনো জোরালো যৌক্তিক কারণ তুলে ধরতে পেরেছেন বলে মনে হয় না।
যেমনটা আগেও বলেছি, সামরিক বাহিনীর সাহায্য এ পর্যন্ত সব জাতীয় নির্বাচনে প্রয়োজন হয়েছে, এ নির্বাচন এ সহযোগিতা ছাড়া অনুষ্ঠিত হবে বা হতে পারবে তা মনে হয় না এবং বিষয়টি সম্পূর্ণভাবেই নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভরশীল। এখানে প্রশ্ন থাকতে পারে যে, ওই সময়ে সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন এবং তাদের কার্যক্রম রিটার্নিং অফিসার তথা নির্বাচন আইনের আওতায় হবে, না সিআরপিসির আওতায় হবে? এখানেই প্রয়োজন মতামতের, যদিও আমি এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়া অন্য কারও মতামত খুব জরুরি তেমনটা মনে করি না।
এ সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে ভোটারদের নিরাপত্তা ও নির্বাচনের পরিবেশ আয়ত্তে রাখার জন্য। নির্বাচন কমিশন যদি শুধু অস্ত্রবিহীন আনসার-ভিডিপি দিয়েও অথবা কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত করাতে পারে সেটাই হবে কাম্য। তবে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক এবং নির্বাচনী সংস্কৃতির পরিবেশে তা সুখ-স্বপ্নই মাত্র। আদৌ এ স্বপ্ন বাংলাদেশে কোনোদিন বাস্তব হবে কিনা জানি না। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে অনেকের অনেক মত থাকলেও নির্বাচনের পরিবেশ এবং নিরাপত্তার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত সাদামাটা। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে তেমন থাকেনি।
আগামী নির্বাচনের পরিবেশ বা নির্বাচন কতখানি গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যথেষ্ট সন্দেহ রয়ে গেছে। কারণ বিগত দিনগুলোতে সাধারণ মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি, যার দায়-দায়িত্ব সব রাজনৈতিক দলের। তবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন সব সময়ই আশাবাদ প্রকাশ করেছে যে, তারা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারবে। হালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, বর্তমান সংবিধানের আওতায় দলীয় সরকারের অধীনেও শুধু নির্বাচন সম্ভব। অবশ্যই সম্ভব যদি সে পরিবেশ তৈরিতে সবার প্রচেষ্টা এবং সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় থাকে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তেমন লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
আলোচনা শুরু করেছিলাম নির্বাচনে সামরিক বাহিনীর কী ভূমিকা থাকবে তা নিয়ে। আমি মনে করি না এটি একটি বিতর্কের বিষয়। বিষয়টির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। তবে প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিয়োগ দিতে হলে তা নির্বাচনী আইন, আরপিও-১৯৭২ সংযোজন করতে হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি।
আমাদের দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অধিকাংশ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের উদাহরণ রয়েছে। তাত্ত্বিকভাবে আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত আধুনিক তাত্ত্বিক কাঠামোতে উদাহরণ বলে বিবেচিত হয়েছে। এ ব্যবস্থাপনায় একটি অত্যন্ত কার্যকরি শক্তিশালী নির্বাচনী আইন রয়েছে। রয়েছে সহজে আইন প্রণয়ন ও সংস্কারের ব্যবস্থা। একটি স্বাধীন এবং আইন দ্বারা শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনী আইনের মাধ্যমে আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে এবং মনোনয়ন নির্ধারণে ব্যবস্থা নেওয়ার আইনি ক্ষমতা ও নির্বাচনী বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আইনের বিধান ও আদালতে আবেদন করার ও ত্বরিত মীমাংসার ব্যবস্থা। তদুপরি নির্বাচন কমিশনের বিশাল বহরের মাঠ পর্যায়ের এবং প্রয়োজনীয় সরবরাহের (খড়মরংঃরপং) ব্যবস্থাপনার দক্ষতা। এতকিছুর পরও প্রশ্ন থাকাটা স্বাভাবিক যে, তা হলে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কেন গ্রহণযোগ্য হবে না? তাত্ত্বিকভাবে হওয়ার কথা, তবে বাস্তবটা কি তেমন? এ প্রশ্নের উত্তরে অন্তর্নিহিত রয়েছে তাত্ত্বিক ব্যবহারিক বা বাস্তবিক প্রেক্ষাপটে তফাৎ। আমাদের দেশের নির্বাচনী ইতিহাসে দলীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুখকর হয়নি, এর উদাহরণ টানার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করি না। এমনকি স্থানীয় সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায়ও হিমশিম খেতে হয়েছে। দু-চারটি ভালো স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে সার্বিক বলে চালিয়ে দেওয়া যায় না। স্মরণ থাকার কথা যে, ২০১৬ সাল পর্যন্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো কেমন হয়েছিল তা নিয়ে কথা বলারও তেমন কিছু নেই।
যেমনটা বলেছি, তাত্ত্বিক দিক থেকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সব কাঠামোই বিদ্যমান তথাপি দলীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে এযাবৎ নির্বাচন নিয়ে এত বিতর্কের কারণ প্রধানত তত্ত্বকে প্রয়োগে পরিণত করার মতো পরিবেশ তৈরি করা। বিদ্যমান পরিবেশে সম্ভব নয়। এ অবস্থায় গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অন্তরায়, যেগুলো আমার গবেষণা ও বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে লব্ধ, উল্লেখনীয়। রাজনৈতিক সংস্কৃতি, যা সুবিধাভোগী চধঃৎড়হ পষরহঃ রাজনীতিতে পরিণত হয়েছে। দুটি সামরিক ও আধাসামরিক শাসনের সময় থেকে ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রয়েছে। প্রশাসন ব্যবস্থা ব্যাপক দলীয়করণ যা ১৯৭৫-এর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত। নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ নিয়ে ধোঁয়াশা, বিশেষ করে স্থায়ী গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা না থাকায় দলীয় সরকার কর্তৃক নিয়োগ বিস্তারিত নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তার ব্যবস্থাপনার সমস্যা।
এ পর্যায়ে আমি সংক্ষিপ্তভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় আমাদের মতো দেশে, যেখানে ভালো নির্বাচনের অন্তরায়গুলো দারুণভাবে নির্বাচনের মুখ্য নিয়ামক হয়ে দাঁড়ায় তার অন্যতম নির্বাচনী নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করছি। আমাদের মতো দেশে যে কোনো নির্বাচনে প্রধান বিবেচ্য হিসেবে নির্বাচন কমিশনের মাথা ব্যথা এবং সবচেয়ে দুরূহ কাজ হিসেবে চিহ্নিত হয় নিরাপত্তার বিষয়।
একটি নির্বাচন নিরাপত্তার পরিকল্পনা করতে হয় তিন ধাপে (১) প্রাক-নির্বাচন ভোট গ্রহণ; (২) নির্বাচনের দিন এবং (৩) নির্বাচনের পর। এই তিন ধাপের প্রতিটিতে চার স্তরের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করতে হয়। বিভিন্ন বাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো, এর প্রশিক্ষণ, বাহিনীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কাঠামোগত বৈশিষ্ট্য এবং আমাদের মতো দেশে জনগণের আস্থার বিষয়টি বিবেচনায় এনে স্তরগুলো বিন্যাস করতে হয়। এই স্তরগুলো হলোÑ (১) কাঠামোগুলোর নিরাপত্তা; নির্বাচনী অফিস, রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস, ভোটকেন্দ্রসহ গণনাকেন্দ্র এবং অংশগ্রহণকারী দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় অফিসগুলো; (২) নির্বাচনে ব্যবহার্য দ্রব্যাদির নিরাপত্তা; (৩) তথ্যের নিরাপত্তা, ভোটার তালিকা, বিভিন্ন পরিসংখ্যান ও নির্বাচনের ফলাফল এবং সংশ্লিষ্ট আইনানুগ অন্যান্য তথ্যাদি এবং (৪) ভোটার, জনগণ ও নির্বাচনে নিয়োজিত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা। চতুর্থ স্তরের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এই স্তরের নিরাপত্তা নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি না হলে ভোটাররা, বিশেষ করে নারী ভোটার ও পক্ষান্তরে সংখ্যালঘু ভোটাররা নির্বাচন থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিরত থাকেন।
ওপরে আলোচিত ধাপ এবং স্তর বিবেচনা না করে নিরাপত্তার পরিকল্পনা কার্যকর হয় না। একই সঙ্গে প্রতি ধাপ এবং স্তরের জন্য কী ধরনের কাঠামোগত বৈশিষ্ট্যের প্রশিক্ষণ এবং নির্ভরযোগ্য বাহিনীর প্রয়োজন সেটা বিবেচনা করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। পরিকল্পনাকালে আরও মনে রাখতে হবে বর্তমান পরিবেশে জঙ্গি হামলার বিষয়টিকেও।
আমাদের দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা বিষয়টি কতখানি গুরুত্বপূর্ণ তার সামান্য উদাহরণ নির্বাচনী বাজেটে নিরাপত্তার খরচ। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালে শুধু নিরাপত্তা বাবদই খরচ হয়েছে একশ নিরানব্বই কোটি বিরানব্বই লাখ নয় হাজার একষট্টি টাকা (১৯৯,৯২,৯০৬১) নির্বাচনী বাজেটের ৭০ শতাংশ (৭০%)। স্মরণযোগ্য যে, মাত্র ১৪৭টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অপরদিকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে ব্যয় ছিল চুরানব্বই কোটি আটষট্টি লাখ ষাট হাজার ছাপান্ন টাকা (৯৪,৬৮,৬০,০৫৬) মাত্র এবং ১৯৯১ সালে খরচ হয়েছিল আটাশ কোটি তেপান্ন লাখ বাহাত্তর হাজার একশ সাঁয়ত্রিশ টাকা মাত্র (২৮,৫৩,৭২,১৩৭)।
শুধু জাতীয় সংসদেই নিরাপত্তার এত বিশাল খরচ নয়, অন্যান্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আরও বেশি মাত্রায় খরচ হয়েছে এবং হয়। উদাহরণস্বরূপ ২০১৬ সালের ইউনিয়ন কাউন্সিল নির্বাচনে ২৪৪,১৫,৩৬,৮৪১ টাকা মাত্র টাকা (দু’শ চৌচল্লিশ কোটি পনেরো লাখ ছত্রিশ হাজার আটশ একচল্লিশ টাকা মাত্র) নিরাপত্তার জন্য খরচ করেও একশর ওপর মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ইউনিয়ন কাউন্সিলের ওই নির্বাচন ছিল এযাবৎ সবচেয়ে বেশি সহিংসপূর্ণ। একই নির্বাচনে ২০১১ সালে খরচ হয়েছিল ১৩৪,৮১,০০,০০০ টাকা (একশ চৌত্রিশ কোটি একাশি লাখ টাকা মাত্র) অবশ্য ওই নির্বাচনে সহিংসতার পরিমাণ ছিল সবচেয়ে কম। সূত্র : নির্বাচন কমিশন-নির্বাচনী পরিসংখ্যান।
ওপরের পরিসংখ্যান থেকেই প্রতীয়মান, আমাদের দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে বড় যজ্ঞ নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা। এত ব্যাপক আয়োজন ইঙ্গিত দেয় যে, নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতে নিরাপত্তা বিধানই নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ। এত বড় যজ্ঞের পরও সুষ্ঠু নির্বাচন করা দুষ্কর যখন রাজনৈতিক সংস্কৃতি, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন থাকে এবং জনমনে বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গত কারণে ঘাটতি থাকে। তবে আমার মতে, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সবচেয়ে বড় সহায়ক প্রশাসনের নিরপেক্ষতা। প্রশাসনের সংজ্ঞায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও অন্তর্ভুক্ত, বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমার বিদ্যমান রাজনৈতিক বিভাজন এবং সংস্কৃতির কারণ নির্বাচন কমিশনের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতারও কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কাজেই ওপরের সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণের আঙ্গিকে আগামী নির্বাচনের নিরাপত্তা পরিকল্পনায় যা এখন থেকেই শুরু করা উচিত, কী ধরনের বাহিনী কোন ধাপ এবং স্তরের জন্য প্রযোজ্য হবে তা যেমন আইনি কাঠামো ও নিরাপত্তা পরিকল্পনায় রাখতে হবে, তেমনি রি-অ্যাকটিভ নয় প্রো-অ্যাকটিভ নিরাপত্তার পরিকল্পনায় সামরিক বাহিনী ব্যবহারের প্রশ্নটিরও উত্তর পাওয়া যাবে নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা ও সামর্থ্য থেকে। আমি মনে করি, প্রো-অ্যাকটিভ নিরাপত্তার জন্য সামরিক বাহিনীকে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে রাখতে নির্বাচনী আইনি কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করাই শ্রেয়। কাঠামোতে রাখা মানেই এই নয় যে, সামরিক বাহিনী অথবা আইনে উল্লেখিত সব বাহিনীকেই নিয়োগ দিতে হবে। কোন কোন বাহিনী কোন কোন স্তরের জন্য প্রয়োজন সে নির্ণয় নির্বাচন কমিশনের। কাজেই এ বিষয় নিয়ে বিতর্কও অবান্তর।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজ একটি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। এ কাজ করতে নির্বাচন কমিশনকে যা যা করা প্রয়োজন তেমন ক্ষমতাই সংবিধানের ১১৯ ধারার মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। বাস্তবতার নিরিখেই নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় যে পরিবর্তন ও পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা নির্বাচন কমিশনকে এখন থেকেই গ্রহণ করতে হবে।
এম সাখাওয়াত হোসেন: সাবেক নির্বাচন কমিশনার, কলাম লেখক ও পিএইচডি গবেষক
ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট অন ফেসিলিটেশন অফ ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড ইন এশিয়া এন্ড দি প্যাসিফিক চুক্তিতে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর করেছে।
ইউএনএসকাপ-এর সদরদপ্তরে জাতিসংঘের ইকোনমিক এন্ড সোস্যাল কমিশন ফর এশিয়া এন্ড দি প্যাসিফিক (ইউএনএসকাপ)-এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাদেশের পক্ষে থাইল্যান্ড সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশ এ চুক্তিতে প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ। এছাড়া চীন ও কম্বোডিয়া এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ।
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ‘হাইলেভেল ডায়ালগ অন এনহানসিং রিজিওন্যাল ট্রেড থ্রো ইফেকটিভ পার্টিসিপেশন ইন দি ডিজিটাল ইকোনমি’ শীর্ষক ডায়ালগে প্রথম প্যানেলিষ্ট হিসেবে বক্তৃতা করেন।
এসকাপ-এর আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এন্ড এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি ড. শামসাদ আক্তার-এর সভাপতিত্বে ডায়ালগে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন থাইল্যান্ডের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার কিয়েটচাই সোফাসটিনফং, কম্বোডিয়ার কমার্স মিনিস্টার পান সোরাসাক এবং থাইল্যান্ডে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বৈদেশিক বাণিজ্যে সক্ষমতা অর্জনে পেপারলেস ট্রেড সহায়ক ভূমিকা রাখবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালি জাতির স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়তে সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি বাঙ্গালী জাতিকে একটি স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, আজ তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঙ্গালি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি তথা দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করে ভিশন ২০২১ ঘোষণা করেছেন। ২০২১ সালে বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল মধ্য আয়ের দেশ। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিদেশী বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ এখন খুবই আকর্ষনীয়। বর্তমান সরকারের বিনিয়োগ বান্ধব নীতি ও পরিবেশের কারণে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশ এখন একটি বড় বাজার।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, সরকার আইন করে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করেছে। এরফলে বিনিয়োগকারীরা এখন শিল্পে শতভাগ বিনিয়োগ ও বিনিয়োগকৃত অর্থ লাভসহ যে কোন সময় ফেরত নেওয়ার সুবিধা পাচ্ছেন । প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ১শ’টি স্পেশাল ইকনোমিক জোনে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ গত বছরের চেয়ে ৪৪ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, বাণিজ্যে জটিলতা দূর ও দ্রুত কাজ সম্পাদন করতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশের আমদানি রপ্তানি অফিস, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি অফিস, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোসহ গুরুত্বপূর্ণ অফিসগুলোকে অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে।
এছাড়া তিনি ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য ইনফরমেশন পোর্টাল ও গ্লোবাল ট্রেড ডানা চালুসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সব ধরনের কার্যক্রমে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করার বিষয়টি তুলে ধরেন।
মন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় ৩৪.৮৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। এ বছর ৩৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সার্ভিস সেক্টরসহ এ রপ্তানি আয়ের পরিমান হবে ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ ঘোষিত এমডিজি অর্জন করে পুরষ্কার লাভ করেছে। এখন ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করতে সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
পরে তোফায়েল আহমেদ কম্বোডিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে একান্ত বৈঠক করেন। এ সময় থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী ৩০ আগষ্ট শ্রীলংকা যাবেন। সেখানে শ্রীলংকার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এবং বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং এফটিএ সম্পাদন বিষয়ে মতবিনিময় করবেন।
এছাড়া তিনি ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর কলম্বোয় অনুষ্ঠিতব্য ‘সেকেন্ড ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স-২০১৭’-এ যোগদান করে ১ সেপ্টেম্বর মিনিস্টার প্যানেলে বক্তৃতা করবেন।
এতে ২৯টি দেশের প্রতিনিধি অংশ নিবেন। এ কনফারেন্সের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘পিস, প্রোগ্রেস এন্ড প্রোসপারিটি।’
কনফারেন্সে বাণিজ্যমন্ত্রী ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলের দেশসমুহের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও নীতিনির্ধারকদের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করবেন। এতে করে বাংলাদেশের সাথে দেশগুলোর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাসস
ডেস্ক রিপোর্ট : প্যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিস ওয়েলস বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলের পথিকৃত হবে এবং অদূর ভবিষ্যতে মার্কিন বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন।
বৈঠকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একজন কর্মকর্তা জানান, মডারেট মুসলিম দেশ হিসেবে তিনি বাংলাদেশের প্রশংসা করেন এবং উন্নয়নের রোল মডেলের পথিকৃত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হবে বলেও তিনি আশা করেন। তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী মন্ত্রী এলিস ওয়েলস প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জ্বালানি উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন। এ অঞ্চল সফরের অংশ হিসেবে আজ সকালে তিনি ঢাকা পৌঁছেন।
এলিস ওয়েলস জ্বালানি খাতে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করে বলেন, এই দ্রুত অগ্রগতির কারণে জেনারেল ইলেক্ট্রিস-এর মতো মার্কিন কোম্পানিগুলো জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে।
ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি দেশের ভেতর এলএনজি গ্যাস সরবরাহে যাতে যথাসময়ে ভাসমান স্টেশন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করে সে ব্যাপারে এলিস ওয়েলসের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের সকল সূচকে বাংলাদেশের সাফল্য অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর ক্ষমতা গ্রহণের পর বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ এখন বিদ্যুৎ পাচ্ছেন। ২০০৯ সালে ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় ছিল।
প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পবিত্র ঈদুল আযহার দিন (২ সেপ্টম্বর) সকাল ৯টা থেকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ, রাজনীতিক, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা এবং সর্বস্তরের জনসাধারণের সাথে শুভেচ্ছা বিনময় করবেন।
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার একথা জানিয়ে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে এই শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও বেলা ১১টা থেকে বিচারপতি ও কূটনীতিকদের সাথে শেখ হাসিনা শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক : রেণ্য কন্ঠশিল্পী আবদুল জব্বারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৃথক শোক বার্তায় তারা এ কিংবদন্তী শিল্পীর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। এছাড়া শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধে আবদুল জব্বারের ভূমিকা স্মরণ করেন। তারা বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে এ কালজয়ী শিল্পীর অবদানকে কোনো কিছুর বিনিময়ে শোধ করার নয়।
আজ বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে আইসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার পাওয়া শিল্পী আবদুল জব্বার। গত সাড়ে ৩ মাস ধরে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
অনলাইন রিপোর্টার ॥ বরেণ্য কন্ঠশিল্পী আবদুল জব্বারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৃথক শোক বার্তায় তারা এ কিংবদন্তী শিল্পীর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। এছাড়া শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধে আবদুল জব্বারের ভূমিকা স্মরণ করেন। তারা বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে এ কালজয়ী শিল্পীর অবদানকে কোনো কিছুর বিনিময়ে শোধ করার নয়।
আজ বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে আইসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার পাওয়া শিল্পী আবদুল জব্বার। গত সাড়ে ৩ মাস ধরে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদক : সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন সড়কে যান চলাচল বেড়ে গেলে এবং বৃষ্টি হলেও ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়বেন না।
আজ বুধবার সকালে গাবতলী বাস টার্মিনালে পরিদর্শনে এসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বৃষ্টি-বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো অনেকাংশে মেরামতের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাই এবার ঈদযাত্রায় বৃষ্টি হলেও যাত্রীদের ভোগান্তি হবে না।
তিনি বলেন, আজ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত যান চলাচলের হার বেড়ে যাবে। যান চলাচলের চাপ বাড়লে গতি হয়তো ধীর হয়ে যেতে পারে। তবে যানজট হবে না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ঈদকে সমানে রেখে বিআরটিসির ৫০টি বাস রিজার্ভ রাখা হয়েছে। যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ থাকলে এই বাসগুলো নামানো হবে।
পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নিলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেসব পরিবহন অতিরিক্ত ভাড়া নিবে তাদের কাউন্টার বন্ধ করে দেওয়া হবে।
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি নির্মাণকে ফের অবৈধ উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতারেস।
তিনি অবৈধ এ বসতি নির্মাণ কার্যক্রমকে দুই রাষ্ট্র সমাধানে বড় বাধা এবং এটা দূর করা প্রয়োজন বলে মনে করেন।
দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ক্ষেত্রে বিকল্প কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জোর দিয়ে বলেন তিনি। খবর- আল জাজিরার।
গত মঙ্গলবার পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী রামি হামদাল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব এসব কথা বলেন।
দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই ফিলিস্তিনি জনগণের এ দুর্দশা অবসানের শর্ত। এটাই এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ বলেও দাবি করেন গুতারেস।
তবে জাতিসংঘ মহাসচিবের এ বক্তব্যের একদিন আগেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, পশ্চিম তীরের কোনো ইসরায়েলি বসতি উচ্ছেদ করা হবে না।
শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে পুনরায় ফিলিস্তিনের সঙ্গে আলোচনা শুরুর চেষ্টা চলছে- মধ্যপ্রাচ্য বিষয়টি হোয়াইট হাউস দূতের এমন মন্তব্যের পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী তার এ অবস্থানের কথা জানান।
নেতানিয়াহুর এ মনোভাব প্রসঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দেয় এমন কোনো উদ্যোগ থেকে দুই দেশেরই নিবৃত থাকা উচিত।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি জনবসতি নির্মাণ আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ। এটা শান্তির পথে বড় বাধা।
ওই বৈঠকে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী রামি হামদাল্লাহ পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি ও এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনাকারী দলের ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ওই বসতি নির্মাণ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। ফলে এটা চলছেই এবং আমরা আমাদের জমি হারাচ্ছি।
ফিলিস্তিনের জনগণ এবং মুসলমানদের কাছে পবিত্র শহরকে রক্ষার জন্য তিনি জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান।
১৯৬৭ সালে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম অধিগ্রহণ করে রেখেছে ইসরায়েল। এরপর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ওই জমিতে বসতি নির্মাণের মাধ্যমে ৫ লাখেরও বেশি ইহুদিকে পুনবার্সন করা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক আইনে এসব বসতি অবৈধ হলেও তার তোয়াক্কা করছে না নেতানিয়াহু সরকার।
অনলাইন ডেস্ক ॥ অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি নির্মাণকে ফের অবৈধ উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতারেস।
তিনি অবৈধ এ বসতি নির্মাণ কার্যক্রমকে দুই রাষ্ট্র সমাধানে বড় বাধা এবং এটা দূর করা প্রয়োজন বলে মনে করেন।
দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ক্ষেত্রে বিকল্প কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জোর দিয়ে বলেন তিনি। খবর- আল জাজিরার।
গত মঙ্গলবার পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী রামি হামদাল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব এসব কথা বলেন।
দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই ফিলিস্তিনি জনগণের এ দুর্দশা অবসানের শর্ত। এটাই এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ বলেও দাবি করেন গুতারেস।
তবে জাতিসংঘ মহাসচিবের এ বক্তব্যের একদিন আগেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, পশ্চিম তীরের কোনো ইসরায়েলি বসতি উচ্ছেদ করা হবে না।
শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে পুনরায় ফিলিস্তিনের সঙ্গে আলোচনা শুরুর চেষ্টা চলছে- মধ্যপ্রাচ্য বিষয়টি হোয়াইট হাউস দূতের এমন মন্তব্যের পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী তার এ অবস্থানের কথা জানান।
নেতানিয়াহুর এ মনোভাব প্রসঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দেয় এমন কোনো উদ্যোগ থেকে দুই দেশেরই নিবৃত থাকা উচিত।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি জনবসতি নির্মাণ আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ। এটা শান্তির পথে বড় বাধা।
ওই বৈঠকে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী রামি হামদাল্লাহ পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি ও এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনাকারী দলের ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ওই বসতি নির্মাণ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। ফলে এটা চলছেই এবং আমরা আমাদের জমি হারাচ্ছি।
ফিলিস্তিনের জনগণ এবং মুসলমানদের কাছে পবিত্র শহরকে রক্ষার জন্য তিনি জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান।
১৯৬৭ সালে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম অধিগ্রহণ করে রেখেছে ইসরায়েল। এরপর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ওই জমিতে বসতি নির্মাণের মাধ্যমে ৫ লাখেরও বেশি ইহুদিকে পুনবার্সন করা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক আইনে এসব বসতি অবৈধ হলেও তার তোয়াক্কা করছে না নেতানিয়াহু সরকার।
দিল্লি হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার জানিয়ে দিল ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’কে যেন অপরাধ বলে গণ্য না করা হয়।
বৈবাহিক ধর্ষণকে সাধারণ ধর্ষণের মতোই অপরাধ হিসেবে গণ্য করার আবেদন করে অনেকগুলি মামলা এক সঙ্গে জমা হয়েছে দিল্লি হাইকোর্টে।
সেই মামলাতেই হলফনামা পেশ করে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিল, ‘বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করলে বিয়ের মতো প্রতিষ্ঠানটাই ভেঙে যাবে। এছাড়াও এটি মহিলাদের হাতে তাঁদের স্বামীকে হয়রান করার একটি সহজ অস্ত্র হয়ে উঠবে।’
এই পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রতিককালে সুপ্রিম কোর্ট ও অন্যান্য কোর্টে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারার অপব্যবহার নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তারও উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রের বক্তব্যে। এই ধারায় স্ত্রীকে অত্যাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা যায় স্বামী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের।
তাই বিয়ের পর স্ত্রীকে ধর্ষণকে একটি অপরাধ হিসেবে গণ্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, কোনটি বৈবাহিক ধর্ষণ ও কোনটি বৈবাহিক ধর্ষণ নয়, তা সূক্ষ্ণ ভাবে ঠিক করতে হবে বলেও কেন্দ্রের হলফনামায় জানানো হয়েছে।
পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশ বৈবাহিক ধর্ষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে বলেই যে ভারতে অন্ধভাবে তা অনুসরণ করতে হবে, তার কোনও মানে নেই বলে কেন্দ্রের দাবি। তাদের মতে, ‘এই দেশে নিরক্ষরতা, দারিদ্র, সিংহভাগ মহিলাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের অভাব, সমাজের মনোভাব, সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের মতো এত সমস্যা রয়েছে, যে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করার আগে সব বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতে হবে।’
আদালত কীভাবে বৈবাহিক ধর্ষণের প্রমাণ পাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে কেন্দ্রের হলফনামায়।
বর্তমানে ভারতীয় দণ্ডবিধির যে ৩৭৫ নম্বর ধারায় ধর্ষণের বিচার হয়, তাতে বলা হয়েছে, ‘‘যদি স্ত্রীর বয়স ১৫ বছরের কম না হয়, তা হলে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে যৌনসঙ্গম করা ধর্ষণ নয়।’’
যদি কোনও মহিলা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনতে চান, তাহলে তার সহজ উপায় নেই। তাঁকে পারিবারিক হিংসা থেকে মহিলাদের সুরক্ষা সংক্রান্ত ২০০৫ সালের আইনের দারস্থ হতে হবে।
আপাতত সরকারের পক্ষ থেকে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
সোমবারের সাজা ঘোষণার পর এখন রোহতকের জেলই বাবা গুরমিত রাম রহিমের একমাত্র ঠিকানা। কারাদণ্ডের অন্ধকারেই দিন কাটছে বাবার। শোনা গিয়েছিল, সাজা শোনার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিল রাম রহিম। বিচারকের কাছে ক্ষমাও চায় ধর্ষকবাবা। কিন্তু কোনও কাকুতিমিনতিই কাজে লাগেনি। দু’টি পৃথক মামলায় ধর্মগুরুকে ১০-১০ করে মোট ২০ বছর কারদণ্ডের সাজা শোনায় সিবিআই-এর বিশেষ আদালত।
এত অপরাধ করার পরে জেলে গিয়ে কতটা অনুতপ্ত রাম রহিম? বেরিয়ে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, জেলে থেকেও বিন্দুমাত্র তেজ কমেনি গুরমিতের।
সাংবাদিক সঞ্জীব মহাজনের দাবি, জেলকর্মীদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার ভয় দেখায় বাবা। মন্ত্রী-আমলাদের সঙ্গে নিজের সুসম্পর্কের কথা জানিয়ে জেলকর্মীদের এই হুমকি দিয়েছে ধর্মগুরু।
জানা গিয়েছে, সোমবার আদালত থেকে জেলে আসার সময়ে বাবার সঙ্গেই ছিলেন তার দত্তক কন্যা হনিপ্রীত ইনসান। জেলে ঢোকার মুখে হনিপ্রীতকে বাধা দেন জেলের ডিরেক্টর জেনারেল। তখনই তার সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ে রাম রহিম। হনিপ্রীতকে ঢুকতে না দিলে ডিরেক্টরের চাকরি খেয়ে নেওয়া হবে বলে ভয় দেখায় বাবা। ধর্মগুরু ফোন করতে চাইলেও তাকে ফোন করতে দেওয়া হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক ॥ সোমবারের সাজা ঘোষণার পর এখন রোহতকের জেলই বাবা গুরমিত রাম রহিমের একমাত্র ঠিকানা। কারাদণ্ডের অন্ধকারেই দিন কাটছে বাবার। শোনা গিয়েছিল, সাজা শোনার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিল রাম রহিম। বিচারকের কাছে ক্ষমাও চায় ধর্ষকবাবা। কিন্তু কোনও কাকুতিমিনতিই কাজে লাগেনি। দু’টি পৃথক মামলায় ধর্মগুরুকে ১০-১০ করে মোট ২০ বছর কারদণ্ডের সাজা শোনায় সিবিআই-এর বিশেষ আদালত।
এত অপরাধ করার পরে জেলে গিয়ে কতটা অনুতপ্ত রাম রহিম? বেরিয়ে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, জেলে থেকেও বিন্দুমাত্র তেজ কমেনি গুরমিতের।
সাংবাদিক সঞ্জীব মহাজনের দাবি, জেলকর্মীদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার ভয় দেখায় বাবা। মন্ত্রী-আমলাদের সঙ্গে নিজের সুসম্পর্কের কথা জানিয়ে জেলকর্মীদের এই হুমকি দিয়েছে ধর্মগুরু।
জানা গিয়েছে, সোমবার আদালত থেকে জেলে আসার সময়ে বাবার সঙ্গেই ছিলেন তার দত্তক কন্যা হনিপ্রীত ইনসান। জেলে ঢোকার মুখে হনিপ্রীতকে বাধা দেন জেলের ডিরেক্টর জেনারেল। তখনই তার সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ে রাম রহিম। হনিপ্রীতকে ঢুকতে না দিলে ডিরেক্টরের চাকরি খেয়ে নেওয়া হবে বলে ভয় দেখায় বাবা। ধর্মগুরু ফোন করতে চাইলেও তাকে ফোন করতে দেওয়া হয়নি বলে জানা গিয়েছে।