পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চান নাজমুল হুদা

ঢাকা-১৭ আসনে (গুলশান এলাকা) নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চান তৃণমূল বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয় জোটের (বিএনএ) চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ থেকে ‘কিছুটা’ আশ্বাস পেয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।
বর্তমানে এই আসনের সাংসদ বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) এস এম আবুল কালাম আজাদ। গতকাল শনিবার এক প্রশ্নের জবাবে নাজমুল হুদা এ কথা বলেন। তাঁর দাবি, তাঁর নিজ এলাকা ঢাকার দোহার-নবাবগঞ্জ আসনটি চাচা আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের জন্য ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বর্তমানে ওই আসনের সাংসদ জাতীয় পার্টির সালমা ইসলাম।

এর আগে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার’ নিয়ে কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনই নির্বাচন করবে। নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কাজ করবে না।

আগামী নির্বাচনের সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারই ক্ষমতায় থাকবে জানিয়ে নাজমুল হুদা বলেন, তবে নির্বাচনের ওপর ওই সরকারের হস্তক্ষেপ থাকবে না। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন কীভাবে—এর ব্যাখ্যা দিয়ে নাজমুল হুদা বলেন, ইচ্ছা করেলই রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনের অন্য কোনো সদস্যকে তাঁদের সুনির্দিষ্ট মেয়াদের আগে চাকরি থেকে অপসারণ করতে পারবেন না। শুধু অসদাচরণ প্রমাণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সুপারিশেই একজন নির্বাচন কমিশনারকে অপসারণ করা যায়। এর অর্থ হচ্ছে সম্পূর্ণ ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্ব স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবে। আর সরকার যাঁর অধীনেই থাকুক না কেন সংবিধান অনুযায়ী সব কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্ব পালনে থাকবেন স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে, প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নয়।

Posted in জাতীয়, নির্বাচন কমিশন | Comments Off on নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চান নাজমুল হুদা

হাল ছেড়ে দিল ইসি!

নিউজ ডেস্ক:
ডিসি, এসপি, রিটার্নিং অফিসার ও ওসিরা মতাসীনদের নিয়ন্ত্রণেই স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ঠেকাতে মাঠে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হলেও তারা থানা সদরের বাইরে যাচ্ছে না। রিটার্নিং অফিসাররা মতাসীন দলের নেতাদের কথায় চলছেন।

ডিসি-এসপিরাও মতাসীনদের প্রার্থী বিজয়ী করতে ব্যস্ত। ইসি থেকে ডিসি-এসপিদের ফোন করলেও তারা বিরক্ত হচ্ছেন। ভোটের দিন নির্দ্বিধায় মতাসীনদের হাতে ব্যালট তুলে দিচ্ছেন সিল দেওয়ার জন্য। চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনের এ চিত্র পাল্টাতে বার বার কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা, হুঁশিয়ারি দিয়েও ব্যর্থ হচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

0,,15725511_303,00
এমন পরিস্থিতিতে দুই দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষে এখন হাল ছেড়ে দিয়েছে ইসি। এখন কোনোভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে আগামী বছর মেয়াদ শেষে বিদায় নিতে চাইছেন বর্তমান কমিশনাররা। ইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ মনোভাব জানা গেছে।

ইউপি নির্বাচনের এমন পরিস্থিতিতে ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা মনে করছেন, মাঠপ্রশাসনের ওপর নির্বাচনের সব দায়িত্ব দিয়ে ইসি হাঁপ ছেড়ে বাঁচতে চাইছে। তাই তারা নির্বাচনী হাল ছেড়ে দিয়েছেন। যে যেমনে পারছেন, সিল মেরে নিচ্ছেন।
অনেক মাঠ কর্মকর্তা ফলাফলও পাল্টিয়ে দিচ্ছেন, ইসি কিছুই বলছে না। অনেকে আপে করে বলেন, কী দরকার টাকা দিয়ে ব্যালট ছাপানোর।

চেয়ারম্যানদের বললেই তারা নিজেদের প্রতীকে সিল দিয়ে ব্যালট ছাপিয়ে নিতেন! একজন নির্বাচন কমিশনার ােভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব তো আমাদের নয়।
উৎসৃ. বাংলাদেশ প্রতিদিন

Posted in নির্বাচন কমিশন | Comments Off on হাল ছেড়ে দিল ইসি!

নির্বাচন কমিশন চলেছে হরিলুট

নিউজ ডেস্ক: ইউপি নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের দিন দেশের বিভিন্ন ইউপিতে যেভাবে ভোট গ্রহণের অনিয়মের অবিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিক একই ভাবে নির্বাচন কমিশনেও চলেছে হরিলুট। নির্বাচনের দিন রাতে ইসি সচিবালয়ের ১৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এক বেলা ৮৬ হাজার টাকার ড়িম পোলাও খেয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, নির্বাচনের দিন রাত পর্যন্ত আমাদের থাকতে হয়। তাই কমিশন আমাদের জন্য বরাদ্দ্ দিয়েছে কিন্তু সেই বরাদ্দের টাকা নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা হরিলুট করেছে। তারা ৮৬ হাজার টাকা খরচ দেখিয়ে আমাদের এক বেলা এক প্যাকেট করে ড়িম পোলাও এবং একটি আধা লিটার পানির বোতল দিয়েছে।
জানা গেছে, ইউপি নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বৈঠক ও ছয় ধাপে নির্বাচনের দিনের খরচসহ আলাদা প্রায় সাড়ে ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সচিবলয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খাওয়ানোর জন্য কিন্তু সাধারণ কর্মচারীদের ঠিকঠাক কিছুই খা্ওয়ানো হচ্ছে না। নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা বলছে, আমাদের কাছে আর বেশি টাকা নেই। যে কয় টাকা আছে বাঁকি দিনগুলোতে হবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডটকমকে জানান, ডিম পোলাও খেয়ে ৮৬ হাজার টাকা বিল তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের দিন সাংবাদিকদের জন্য মাত্র এক হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ টাকা দিয়ে এতো সংবাদ কর্মীদের একটা দিন চা-বিস্কিট খাওয়ানো সম্ভব? সারদিন রাত তারা সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য ইসিতে থাকে অন্য কিছু না হক অন্তত এককাপ চা তো খাওয়াতে হয়।
এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডটকমকে বলেন, আমি এ বিষযে জানি না। তবে ডিম পোলও খেয়ে কি ভাবে ৮৬ হাজার টাকা বিল হয়। আমি বিষয়টি খতিযে দেখছি কেউ দোষী থাকলে ব্যবস্থা নিব।
এদিকে নির্বাচন কর্মকর্তাদের ট্রেনিংয়ের নামে চলছে হরিলুট, লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ নিয়ে ইসি সচিবালয় থেকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের ট্রেনিং দেওয়ার জন্য নেওয়া হচ্ছে ইচ্ছে মত মোটা অংকের বাজেট।পরিবার নিয়ে থাকছেন ভ্রমন করছেন সরকারি খরচে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ইউপি নির্বাচনে ঢাকা থেকে সচিব উপ-সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা যাচ্ছে ট্রেনিং দিতে। ইউপি নির্বাচনে এ রকম তো আগে তেমন দেখা যায় নি। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের জেলা ও উপজেলার নির্বাচন অফিসাররা ট্রেনিং দেন আগেও এমন হত কিন্তু এবার সচিবালয় থেকে এত বড় কর্মকর্তাকে যেতে হবে কেন?
তিনি বলেন, ট্রেনিংটা মূল উদ্দেশ্যে হল ভ্রমন এবং মোটা অংকের টাকা বরাদ্দ নেওয়া।উনারা যাবেন ৪ থেকে ৫ জেলায় তাহলে দেশের অন্য জেলা গুলোতে কে ট্রেনিং দিবে।

Posted in নির্বাচন কমিশন | Comments Off on নির্বাচন কমিশন চলেছে হরিলুট

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনিয়ম আর সহিংসতার কারণ কী?

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে চলছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। প্রথমবারের মত তৃণমূলের এই স্তরে রাজনৈতিকভাবে বা দলীয় প্রতীকে হওয়া নির্বাচন নিয়ে চলছে ব্যাপক বিতর্ক।
অনেক ইউনিয়ন থেকে কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই এবং সংঘর্ষসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ছাড়াও এখন পর্যন্ত নির্বাচনের দুই ধাপে সহিংসতায় ২৮ নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে।download
এ নিয়ে স্টুডিওতে আলোচনা করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক এবং বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান।
বিবিসি বাংলা

Posted in নির্বাচন কমিশন | Comments Off on ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনিয়ম আর সহিংসতার কারণ কী?

নির্বাচনে অনিয়ম: সিইসিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নরসিংদী: মাধবদী পৌরসভা নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডে অনিয়মের অভিযোগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ও প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী মো. ওবায়দুর রহমান টিটু বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় বিবাদী করা হয়েছে প্রধান নির্বাচন কশিনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নরসিংদী জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ রহমান, রিটার্নিং কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, নরসিংদী সদর নির্বাচন কমিশনার নজরুল ইসলাম, প্রিজাইডিং অফিসার মো. জয়নাল আবেদীন, বিজয়ী কাউন্সিলর মো. শেখ ফরিদ ও অন্য পরাজিত প্রার্থী মো. ইসমাইলকে।101_Kazi-Rakibuddin-Ahmad_110415_6

মামলার বিবরণে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সিইসি দেশের মেয়াদ উত্তীর্ণ পৌরসভার নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য তফসিল ঘোষণা করেন। সে মোতাবেক তিনি সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনার কাছে মাধবদী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন। পরে তাকে পানির বোতল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। মামলার বিবাদী শেখ ফরিদ উট পাখি প্রতীক ও মো. ইসমাইল পাঞ্জাবি প্রতীক বরাদ্দ পান।

গত ৩১ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হলে শেখ ফরিদ উট পাখি প্রতীকে পরাজিত হবে বুঝতে পেরে অন্য প্রার্থী মো. ইসমাইলের (পাঞ্জাবি প্রতীক) যোগসাজসে সন্ত্রাসী নিয়ে ভোটকেন্দ্রে হামলা চালায়। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা মাধবদী পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করেন।

এর প্রেক্ষিতে বাদী নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। পরে স্থগিত পৌরসভায় নির্বাচন কমিশনার ১২ জানুয়ারি পুনরায় ভোটগ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেন।

ভোটগ্রহণের দিন কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ ফরিদ (উট পাখি) তার লোকজন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে ককটেল, বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উট প্রতীকে সিল মারেন। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক তিনি বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন। পরে ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি শান্ত হলে সাধারণ ভোটাররা পুনরায় ভোট দেন। বিকাল ৪টার পর বাদী মো. ওবায়দুর রহমান টিটুর এজেন্ট আমিনুল ইসলামের সামনে ভোট গণনা হলে তার প্রতীক (পানির বোতল) জয়ী হয়। উট প্রতীকের এজেন্ট বিষয়টি বুঝতে পেরে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশের যোগসাজসে পানির বোতলের ভোট উট পাখি প্রতীকের বান্ডেলের মধ্যে ঢুকিয়ে তার এজেন্টের কোনো স্বাক্ষর ছাড়াই এক হাজার ৪০৪ ভোটে উট পাখি প্রতীক বিজয়ী হয়েছে বলে ঘোষণা করেন। তার পানির বোতল প্রতীকে ৮১৫ ভোট প্রাপ্ত ঘোষণা করলেও মোট দুই হাজার ৯০৭ ভোটের মধ্যে কত ভোট বাতিল হয়েছে এবং তৃতীয় জন কত ভোট পেয়েছেন তা ঘোষণা করা হয়নি।

এ বিষয়ে তিনি গত ১৭ জানুয়ারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানালেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ অবস্থায় তিনি পুনরায় ভোট গণনার দাবি জানান।

Posted in নির্বাচন কমিশন | Comments Off on নির্বাচনে অনিয়ম: সিইসিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

পৌর নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হচ্ছে না : সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেনা মোতায়েনের মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, তাই পৌরসভা নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।1428932059

কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পৌর এলাকাগুলোতে এমন কোনো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। প্রতিটি পৌরসভার রিটার্নিং কর্মকর্তারা আমাদের অবগত করেছেন যে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’

সিইসি বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে প্রতি তিন ওয়ার্ডের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রতিটি পৌরসভার জন্য একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পৌর নির্বাচনে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৯ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ জন ফোর্স মোতায়েন করা হবে। কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, এপিবিএন সদস্য মোতায়েন থাকবে।

এ ছাড়া প্রভাবমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য বহিরাগতদের অবস্থান ২৮ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে নিষিদ্ধ করা হবে। যেদিন ভোট হবে সেদিন অন্য এলাকার প্রভাবশালীরা থাকলে বা নির্বাচনে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করলে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে কমিশন সূত্রে জানা যায়।

র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল টিম হিসেবে মোতায়েন থাকবে।

এ বৈঠকে সিইসি, অন্যান্য কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিব যোগ দেন। উপস্থিত এ ছাড়া রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশ, বিজিবি, আনসার, এনএসআই, ডিজিএফআই, ডিবি ও কোস্টগার্ডসহ সব বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনী এলাকার পরিস্থিতি শুনেছি। এখন পর্যালোচনা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করব। ভোটে পূর্ণ শৃঙ্খলা থাকবে।
তিনি বলেন, মাঠে উৎসবমুখর পরিবেশে আচরণবিধি মেনেই প্রচারণা চলছে। দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন।

সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, উল্লেখ করে কাজী রকিব জানান, জঙ্গি ও সন্ত্রাসের সমস্যা জেনারেল সমস্যা, এটা তেমন সমস্যা হবে না। এ পর্যন্ত সেরকম কোনো সমস্যা নেই বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন। সন্ত্রাসীদের ধরপাকড়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত সন্ত্রাসী-অপরাধী ধরপাকড় কার্যক্রম আরো ত্বরান্বিত হবে। এ নিয়ে কোনো উদ্বেগ থাকবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে কাজী রকিব বলেন, বিজিবি-র্যা ব বলেছে, তারা ফোর্স বাড়িয়ে দেবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সব ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান কাজী রকিব।

সিইসি বলেন, যেকোনো অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আমরাও অ্যাকশন নেব। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তারা ফিল্ডে রয়েছেন, তারাই এটা দেখবে। আমাদের প্রতিবেদন দেবে।

কাজী রকিব বলেন, আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলে দিয়েছি, আগে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, সামনে যেন না হয়। সাংবাদিকরাও ভোটে ব্যাঘাত না ঘটানোর বিষয়টি খেয়াল রাখবেন, আশা করি।

Posted in নির্বাচন কমিশন | Comments Off on পৌর নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হচ্ছে না : সিইসি

‘দৌড়ের ওপর’ ইসি

ঢাকা: দেশের ইতিহাসে এবারেই প্রথম দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার পরিকল্পনা চলছে। আর এজন্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন সংশোধন অধ্যাদেশ পাওয়ার পরপরই সারাদেশের ২৪৫টি পৌরসভা নির্বাচন আয়োজন করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী ডিসেম্বরেই পৌরসভা নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। এ উপলক্ষে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তফসিল ঘোষণা দিতে বিধিমালার সংশোধন নিয়ে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত কয়েক দফা বৈঠক করেছে ইসি। সংশোধিত অধ্যাদেশের গেজেট হাতে পাওয়ার পর সন্ধ্যার বৈঠকে নির্বাচন বিধি ও আচরণবিধিমালা সংশোধনের প্রায় সব কাজ শেষ করেছে কমিশন। বুধবার বা বৃহস্পতিবার বিধি চূড়ান্ত করে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে ইসি সূত্রে জানা যায়।2015_11_04_09_23_05_fyGtJ95vOIpJlm6mlS6q7sw0aRse2V_original

ডিসেম্বরে পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কমিশনার জানান, নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে গেলে আমাদের এত তাড়াহুড়া করতে হতো না। কারণ নির্বাচনের জন্য কী কাজ করতে হবে সব আগে থেকে ঠিক করা থাকে। এখন সরকার স্থানীয় নির্বাচন দলীয় ব্যানারে করতে চাওয়ায় কমিশনকে বিধি সংশোধনসহ সব কাজ দ্রুত করতে হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, কিছু পৌরসভার মেয়াদও এর মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এ কারণে এগুলোতে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতাও আছে। এ ছাড়া ২ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে নতুন ভোটারদের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে। তখন তারা আবার ভোট দাবি করতে পারে। অনেকে মামলাও করতে পারে। তাই এসব ঝামেলা এড়ানোর জন্যই ডিসেম্বরেই এ নির্বাচন করার পক্ষে ইসি।

ইসির বেশ কজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয়ভাবে নির্বাচন হওয়ায় তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। তবে বিধিমালায় প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা নির্ধারণ, দল মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সংক্রান্ত সংশোধন, প্রচারণায় সরকারি সুবিধাভোগীর বিধিনিষেধ এসব সংশোধন আনছে কমিশন। এছাড়া সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি ও নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত করতে বেশ কিছু ধারা সংযোজন করা হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পাশাপাশি এমপি ও সিটি করপোরেশনের মেয়ররা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না বলেও বিধিতে এ সংশোধন আনা হচ্ছে।
অন্যদিকে, পৌর নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে, কমিশন ইতোমধ্যে নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ২৪৫ পৌরসভার ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্ট পৌরসভাগুলোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার উপযোগী করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

ইসির সহকারী সচিব রৌশন আরা বেগম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ডিসেম্বর হতে মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে ২৪৫টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত নির্বাচন উপলক্ষে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমুহের ছোট-খাটো মেরামত করে নির্বাচনে ব্যবহার উপযোগী করতে অনুরোধ হয়েছে। এ ছাড়া ইতোমধ্যে পৌরসভা নির্বাচনে ২ কোটিরও বেশি ব্যালট মুদ্রণের জন্য বিজিপ্রেস ও আর্মি প্রিন্টিং প্রেসের সঙ্গে বৈঠকও করেছে ইসি।

পৌর নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে ইসি কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনেকটা সংসদ নির্বাচনের সাথে সাদৃশ্য থাকবে। এজন্যে নির্বাচনের বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালায় সংশোধন করা হচ্ছে। বিধি সংশোধনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কমিশন অনুমোদন দিলে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করে ইসি। তবে জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারকের অনুপস্থিতির কারণে বিধিমালাটি তার মতামতের জন্য রেখে দেয়া হয়েছে। তিনি কাজে যোগ দিলে কমিশন বৈঠকে বিধিমালা সংশোধন চূড়ান্ত করে আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে নভেম্বরের মাঝামাঝিতে তফসিল ঘোষণা করা হবে।

ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পৌরসভা অধ্যাদেশটি আমরা হাতে পেয়েছি। শিগগিরই খসড়া প্রণীত বিধিমালাটি চূড়ান্ত করে কমিশন বৈঠকে পাঠানো হবে। এরপর তা অনুমোদিত হলে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আগেই জেনেছি সরকার দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে চায়, তাই নির্বাচনের আচরণবিধি ও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার সংশোধনের খসড়া করে রেখেছি। এখন অধ্যাদেশের সঙ্গে মিলিয়ে আরো কিছু প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে হলে যোগ করে কমিশন বৈঠকে ওঠাব।’

পৌর নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনে মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা থাকায় আমরা ডিসেম্বরেই পৌরসভা নির্বাচন করব। তবে এখনও আমাদের হাতে বেশ কিছু কাজ বাকি আছে।’ ইসির তথ্যমতে, বর্তমানে সারাদেশে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৩টি। এর মধ্যে ২০১১ সালে নির্বাচনী উপযোগী ২৬৯টি পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল সাবেক ড. শামসুল হুদা কমিশন। তবে এবার স্থানীয় সরকারের দেয়া তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে ২৪৫টি নির্বাচন উপযোগী রয়েছে। এদিকে সোমবার দলীয় পরিচয়ে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ (২০০৯ এর ৫৮ নং আইন) এর অধিতর সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার।

সংশোধিত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর (৫৫ক)-তে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দল আরপিও, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ২ (১২ এ)-তে সংজ্ঞায়িত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। (৬১ক)-তে বলা হয়েছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী অর্থ কোনো প্রার্থী যিনি কোনো রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত নন। (২০ ক) বলেছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ ধারা ১৯ এর বিধান সাপেক্ষে কোনো পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কোনো ব্যক্তিকে কোনো রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে। চলতি বছরের ১২ অক্টোবর এই আইনটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়।

বাংলামেইল

Posted in নির্বাচন কমিশন | Comments Off on ‘দৌড়ের ওপর’ ইসি

নতুন কােন দলকে নিবন্ধন দেয়া হবে না: সিইসি

ঢাকা: নতুন কোনো দলকে নিবন্ধন দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ। মঙ্গলবার শেরে বাংলা এনইসি সম্মেলন কক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, নতুন করে কোনো দলকে নিবন্ধন দিতে হলে পর্যাপ্ত সময় দরকার। সে সময় আমাদের হাতে নেই। দলীয় পরিচয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে পারলেও সংসদ নির্বাচনের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিতে পারবে। এ বিধান আমরা স্থানীয় নির্বাচনে রাখছি।02_Kazi-Rakibuddin-Ahmed_Election-Commission_180315_0006

দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে সহিংসতা বাড়বে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পৃথিবীতে অনেক দেশ আছে যাদের নির্বাচনে পুলিশও দরকার হয় না। আমরা আশা করছি বাংলাদেশেও একদিন এমন সংস্কৃতি আসবে তখন নির্বাচনে সহিংসতা থাকবে না। নির্বাচনে সহিংসতা ঠেকানোর জন্য আমরা বেশি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে মোতায়েন করার চেষ্টা করব।

দলীয়ভাবে নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিককের এক প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় সমর্থনে হচ্ছে। পত্র-পত্রিকায়ও প্রার্থীকে অমুক দলের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করে দেয়া হয়। আমরা শুধু নির্বাচনের সময় নির্দলীয় প্রতীক দিয়ে থাকি। আগে থেকেই নির্বাচনের সব কর্মকাণ্ড দলীয় পরিচয়ে হচ্ছে। এখন সেটাকে আইনের মাধ্যমে আনু্ষ্ঠানিকতা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন এখনও হয়নি। এই অধ্যাদেশের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। আমাদের দেখতে হবে আইনে কী আছে। সে অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নেব। তবে আমাদের হাতে কম সময় থাকায় আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি, যাতে অধ্যাদেশ হাতে পেলে নির্বাচনী বিধি সংশোধন করতে পারি। পৌরসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচনের অর্ডিন্যান্স হাতে পেলে আমরা পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করব। সে হিসেবে ১৫ নভেম্বরের দিকে অর্ডিন্যান্স পেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দলীয়ভবে নির্বাচন করা সম্ভব।

বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা মৃত ভোটার, ভোটারতালিকা হালনাগাদ, নারী ভোটারের তথ্য নেওয়ার জন্য প্রতিনিধিদের সহায়তা নিয়ে থাকি। এজন্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমরা পযায়ক্রমে ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটির জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করব।

তিনি বলেন, আজ ডিএনসিসির মেয়র ও কাউন্সিলারদের সঙ্গে মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহ নিয়ে সহযোগিতা চাইলাম। তারা দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে মৃত ভোটারের সঠিক তালিকা ইসিতে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, স্মার্টকার্ড বিতরণকে সামনে রেখে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে মৃত ভোটারের নাম কর্তন, মৃত্যু রেজিস্টার হালনাগাদ করা, শশ্মান ও গোরস্থানের মৃতদের তালিকা সংগ্রহ করার বিষয়ে উত্তর সিটির জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা চেয়েছে কমিশন। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, জাবেদ আলী, মো. শাহনেওয়াজ, ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হকসহ কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন।

Posted in নির্বাচন কমিশন | Comments Off on নতুন কােন দলকে নিবন্ধন দেয়া হবে না: সিইসি

এনআইডি সংশোধন: হয়রানি, ভোগান্তিতে নাগরিকরা

নিউজ ডেস্ক: বিনামূল্যের জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের সুযোগ নিতে এসে সময় ও অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ নাগরিকরা। ভুক্তভোগীরা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের অসতর্কতায় তাদের পকেটের টাকা গচ্চা যাচ্ছে অযথা।

এ মাসেই বিনামূল্যে পরিচয়পত্র সংশোধন ও ডুপ্লিকেট কার্ড নেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আর এ সময়ের মধ্যেই সেবা দিতে হবে লাখো নাগরিককে, যার দায়িত্বে রয়েছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।

নাগরিকদের ভোগান্তির কথা একরকম স্বীকার করেই নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা তাগিদ দিলেন প্রকল্প বিকেন্দ্রিকরণের বিষয়ে।

আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভোটার তালিকা প্রকল্প কার্যালয়ে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শত শত মানুষ নিজেদের পরিচয়পত্রে থাকা ভুল সংশোধন ও ডুপ্লিকেট পরিচয়পত্রের জন্য অপেক্ষমান, যাদের বেশিরভাগই কাজের ধীরগতি নিয়ে ক্ষুব্ধ।

গাজীপুর থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর যেমন বললেন, “আমার নাম মো. জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু ভোটার তালিকা ও পরিচয়পত্রে নাম রয়েছে শুধু জাহাঙ্গীর। আমার জন্মতারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ৮৩ সাল, আইডি কার্ডে রয়েছে৭৩ সাল। এ দোষ কি আমার? কমিশনের দোষ এখন আমার ওপর চাপানো হচ্ছে। দুই দিন ধরে ঘুরছি, কিছু করতে পারছি না।”

এই ভুক্তভোগী জানান, ডাটা এন্ট্রি কে করেছে, কেন ভুল হলো- তা জানা নেই তার।national-id

“তবে বিদেশে ভিসা নিতে গিয়ে এক শব্দের নাম ও পাসপোর্ট করতে গিয়ে জন্মতারিখ নিয়ে বেঁধেছে বিপত্তি। এখন প্রতিদিন টাকা-পয়সা খরচ করে এসেও কূলকিনারা নেই।”

জাহাঙ্গীর জানান, ভোটার হতে ঝামেলা না হলেও সংশোধন করতে এসে রীতিমতো ভোগান্তিতে পড়েছেন।

গত বছর ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এমন দুজন জানালেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। কবে নাগাদ তারা আইডি পাবেন-এ সংক্রান্ত কোনো তথ্যও তাদের জানা নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, “লেমিনেটেড কার্ড দেবে? শুনছি স্মার্টকার্ড দেবে- কিছুই জানি না। দেড় বছর ধরে আইডি কার্ড ছাড়া ঘুরছি, এ দায় কার? এখানে এসেছি অনেক টাকা খরচ করে, বললো জরুরি প্রয়োজনে কার্ড লাগবে- এমন আবেদন করতে। এ ধরনের লাখ লাখ লোক কার্ড পায়নি।”

একজন তরুণী জানান, নিজের পরিচয়পত্রে পিতার নামের ঘরে রয়েছে মাতার নাম, মাতার নামের ঘরে রয়েছে স্বামীর নাম।

“নিজেই ফরম পূরণ করার পরও এ ধরনের ভুল কেন হল? ডাটা এন্ট্রিতে ভুল করায় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে হচ্ছে।”

বুধবার সকালেও আগারগাঁওয়ের ওই ভবনের নিচে কয়েকশ’ নাগরিককে লাইনে দাঁড়িয়ে ফরম জমা দিতে দেখা যায়। বিকালে দেখা মিলল আরও কয়েকশ জন আছেন ডুপ্লিকেট কার্ড হাতে পাওয়ার অপেক্ষায়।

তথ্য সংশোধন ও নতুন পরিচয়পত্র নিতে আসা এই নাগরিকদের আবেদন নিয়েও চলছে এক ধরনের ব্যবসা।

বুধবার ভবনের সামনে অন্তত ডজনখানেক টেবিল বসিয়ে ফরম বিক্রি হতে দেখা গেল, যা কিনতে কাউকে খরচ করতে হচ্ছে ১০ টাকা, কাউকে ২০ টাকা। ফরম পূরণেও ব্যয় করতে হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা।

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা একজন জানান, এক কর্মকর্তার সুপারিশে এসেছেন, তাই লাইনে না দাঁড়িয়ে ভোটার হওয়ার কাজটি করতে পারছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনার থেকে বিভিন্ন পেশাজীবীদের এমন সুপারিশ প্রতিদিন আসে এখানে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কয়েকজন জানান, প্রকল্পের পরিচালক অপারেশন থেকে টেকনিক্যাল পর্যন্ত সবার কাছে প্রতিদিন তদবির আসে। ইতোমধ্যে দুর্নীতি-অনিয়মের জন্য চার জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

“এখানে অব্যবস্থাপনা রয়েছেও বেশ। ভবনের ভেতরে-বাইরে মারামারি ঘটনাও ঘটেছে। প্রকল্পের লোকজন ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রায়ই বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। দালালদের চিহ্নিত করে শাস্তির পাশাপাশি সঠিক ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিলে দুর্ভোগও কমবে,” বলেন এক কর্মকর্তা।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, আইডি কার্ডের সেবা নিতে দরকার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। বিভাগ, জেলা ও উপজেলাওয়ারি ডেস্ক রাখতে হবে। অনিয়ম রোধে প্রকল্পের লোকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

বিনামূল্যে সেবা নিতেই ভিড়

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের কমিউনিকেশন্স অফিসার আশিকুর রহমান জানান, নাগরিকদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে ১ সেপ্টেম্বর থেকে আইডি কার্ডের সংশোধন ও অন্যান্য সেবার জন্যে ফি কার্যকর হচ্ছে।

“এসব বিবেচনায় নিয়ে ভোটাররা তাদের পরিচয়পত্র সংশোধনের ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিনের আবেদনকারীর সংখ্যা গত কয়েকমাসের তুলনায় বেশ। অন্তত দু’হাজার নাগরিককে সেবা দেওয়া হচ্ছে প্রতিদিন।”

এ কর্মকর্তা জানান, সেবার কাজ চলমান থাকবে। তবে বিনামূল্যে সেবা নিতে পারবে এ মাস পর্যন্ত।

জানতে চাইলে ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, সারাদেশে সার্ভার স্টেশন স্থাপনের কাজ শেষ হওয়ার পথে। কেন্দ্রের সঙ্গে সব স্টেশনের ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন। তা করতে পারলেই সেবার বিকেন্দ্রীকরণ করা সম্ভব হবে।

বর্তমানে ৯ কোটি ৬২ লাখেরও বেশি ভোটার নিবন্ধিত রয়েছে। এরমধ্যে ৪৭ লাখেরও বেশি ভোটারের হাতে কোনো পরিচয়পত্র নেই।
সুত্র…বিডিনিউজ

Posted in নির্বাচন কমিশন | Comments Off on এনআইডি সংশোধন: হয়রানি, ভোগান্তিতে নাগরিকরা

মোদির বার্লিন ওয়াল ও মমতার ‘এক বাংলা’

19869_1

 

রেজোয়ান সিদ্দিকী
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদির বাংলাদেশ সফরের আগেই এক বার্তায় বলেছেন, রাজ্যসভা ও লোকসভায় বাংলাদেশের সাথে স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে ভারতের যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে, সে দেশের সংবাদপত্রগুলো তার মূল্যায়নে ব্যর্থ হয়েছে। তার এ চুক্তি স্বাক্ষর বার্লিন প্রাচীরের পতনের মতো ঐতিহাসিক ঘটনা। আমরা মনে করি না যে, জনাব মোদি এটা অবহিত নন যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মধ্যকার বিভক্তিরেখা হিসেবে বার্লিন ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯৬১ সালে। বার্লিন ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রিত সমাজতান্ত্রিক পূর্ব জার্মানির রাজধানী। আর তার অপর প্রান্তেই ছিল যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পশ্চিম জার্মানি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যে জার্মানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে মিত্রবাহিনী যুদ্ধ করেছিল, সে জার্মানি পূর্ব-পশ্চিমে ভাগ ছিল না। সে জার্মানির নেতা ছিলেন এডলফ হিটলার। তার সাথে প্রধানত যোগ দিয়েছিল ইতালি ও জাপান। সে যুদ্ধে জার্মানির অনিবার্য পতনের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন রাষ্ট্র ভাগ-বাটোয়ারার অংশ হিসেবে বার্লিনসহ জার্মানির পূর্বাংশের কর্তৃত্ব গ্রহণ করে এবং সেখানে সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা চালু করে। এভাবে ইউরোপের অনেক দেশই কার্যত দুই পরাশক্তির অধীনে চলে যায়। সোভিয়েত ইউনিয়ন তার নিয়ন্ত্রণাধীন দেশগুলোতে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করে। আর যুক্তরাষ্ট্র তার নিয়ন্ত্রণাধীন দেশগুলোতে চালু করে পুঁজিবাদী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা।
আর তখন থেকেই পৃথিবী দুই পরাশক্তির অধীনে চলে যায়। এই দুই পরাশক্তি দেশে দেশে তাদের প্রভাববলয় সৃষ্টির প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। আর সেই প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবেই পৃথিবীতে শীতল যুদ্ধের যুগ শুরু হয়। উভয় পরাশক্তিই প্রভাববলয় বিস্তারের ক্ষেত্রে কোনো নীতি-নৈতিকতার ধার ধারে না। প্রয়োজনে তারা সামরিক অভ্যুত্থানের পথ বেছে নিতেও পিছপা হয় না।
তবে বার্লিন ওয়াল জার্মান জাতির বিভক্তি কখনো শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে পারেনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউরোপ পুনর্গঠনের জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থে মার্শাল পরিকল্পনা গ্রহণ করে যুক্তরাষ্ট্র। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী ইউরোপের অর্থনৈতিক পুনর্গঠন যত দ্রুত হচ্ছিল, সোভিয়েত ইউনিয়নের তরফ থেকে সে ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব ছিল না। কারণ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের যে ক্ষতি হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের তা হয়নি। সোভিয়েত ইউনিয়ন নিজেই ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। ফলে দ্রুত অন্যদের চিন্তা করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। যেটুকু শক্তি তার ছিল, তার বেশির ভাগই তারা ব্যয় করছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঠাণ্ডাযুদ্ধ মোকাবেলায় সমরাস্ত্র নির্মাণের কাজে। ফলে অর্থনীতি গুছিয়ে নেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।
তখন বিভক্ত জার্মানির পূর্বাংশের কাছে অর্থনৈতিকভাবে পশ্চিম জার্মানি হয়ে ওঠে ঈর্ষনীয় দেশ। ফলে পূর্ব জার্মানির লোকেরা সুযোগ পেলেই পশ্চিম জার্মানিতে পালিয়ে যেত। আর সে জনস্রোত রোধ করতেই ১৯৬১ সালে এই দেয়াল নির্মাণ করা হয়। এক বার্লিন ওয়াল জার্মানির দুই অংশের মধ্যে যাতায়াতের পথ রুদ্ধ করেছিল বটে, তবে পশ্চিম জার্মানির উন্নয়নের খবর তাদের কাছে অজ্ঞাত থাকেনি। এতে সোভিয়েত ইউনিয়নের শত কর্তৃত্ব সত্তে¡ও পূর্ব জার্মানির সাধারণ মানুষের মধ্যে জাতি হিসেবে একীভূত হওয়ার আকাক্সক্ষা ক্রমেই প্রবলতর হয়ে উঠতে থাকে। জার্মানরা জাতি হিসেবে কখনো আলাদা ছিল না। কেবল জবরদস্তিমূলকভাবে সমাজতান্ত্রিক আদর্শ দিয়ে তাদের পৃথক করার চিন্তা বাতুলতা ছিল মাত্র। জার্মানদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস, ভাষা, ধর্ম কোনো কিছুই কখনো আলাদা ছিল না। এরকম একটি যূথবদ্ধ জাতিকে শুধু দেয়াল দিয়ে আলাদা করা যায় না। সোভিয়েত ইউনিয়নও তা পারেনি। ফলে জার্মানদের এক রাষ্ট্রভুক্ত হওয়ার আকাক্সক্ষা দিনকে দিন প্রবলতরই হয়েছে। উপরন্তু পূর্ব জার্মানির লোকেরাও মনে করেছে যে, পশ্চিম জার্মানির সাথে একীভূত হলে তাদের জীবন-মানে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।
এক দিকে জার্মানদের এই আকাক্সক্ষা, অপর দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রব্যবস্থা ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ায় পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন সূচিত হতে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জবরদস্তিমূলকভাবে যেসব রাষ্ট্রকে সোভিয়েত ইউনিয়ন তার অন্তর্ভুক্ত করেছিল, তাদের মধ্যে স্বাতন্ত্র্যের আকাক্সক্ষা আবার প্রবলতর হয়ে ওঠে এবং তারা আবার সোভিয়েত ইউনিয়ন ত্যাগ করে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের অস্তিত্ব ঘোষণা করতে চায়। ভাঙন শুরু হয় সোভিয়েত ইউনিয়নে। লাটভিয়া-লিথুয়ানিয়া দিয়ে শুরু হয়েছিল সে ভাঙন। তার ধাক্কা এসে লাগে জার্মানিতেও।
এরই মধ্যে পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানি উভয় এলাকায়ই একীভূত হওয়ার আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠতে থাকে। এ ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগের ক্ষমতা তত দিনে সোভিয়েত ইউনিয়ন হারিয়ে ফেলেছিল। ফলে বার্লিন প্রাচীরের দুই পাশেই এই দেয়ালবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। আর তত দিনে প্রায় ৩৫ লাখ লোক পূর্ব জার্মানি থেকে পশ্চিম জার্মানিতে পালিয়ে আসে। ফলে পূর্ব জার্মানি সরকার ১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর ঘোষণা করে যে, পূর্ব জার্মানির নাগরিকেরা অবাধে পশ্চিম জার্মানি ভ্রমণ করতে পারবে। আর তখনই শুরু হয়ে যায় বার্লিন প্রাচীর ভাঙনের প্রক্রিয়া। কৃত্রিমভাবে বিভক্ত জার্মানির লোকেরা উভয়প্রান্ত থেকে ভাঙতে শুরু করে বার্লিন প্রাচীর। এই প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে দুই বার্লিন আবার একত্র হয়ে যায়। জার্মান জাতি পুনরায় এক জার্মানিতে পরিণত হয়।
ভারতের সাথে স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনাকে বার্লিন প্রাচীরের পতনের সাথে তুলনা করে বসেছেন। এই স্থলসীমান্ত চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল ১৯৭৪ সালে, এটি ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি নামে অধিক পরিচিত। এই চুক্তি স্বাক্ষরের প্রায় সাথে সাথেই বাংলাদেশ তা অনুমোদন করে। হস্তান্তর করে ছিটমহল কিন্তু নানা অজুহাতে ভারত ৪১ বছর ধরে এ চুক্তি বাস্তবায়নে গড়িমসি করতে থাকে। জনাব মোদিকে ধন্যবাদ, তিনি ভারতের সংসদে তা অনুমোদন করিয়ে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। তবে এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, এ চুক্তি অনুমোদনের ফলে শুধুমাত্র বাংলাদেশের জনগণই লাভবান হয়নি, ভারতীয় জনগণও সমানভাবে লাভবান হয়েছে। কিন্তু মোদি কথাটা এমনভাবে উপস্থাপন করলেন যে, মনে হলো, জোর করে বিভক্ত করা ভারত ও বাংলাদেশ আবার একীভূত হয়ে গেল। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে মোদির ধারণায় ঘাটতি আছে বলেই মনে হয়।
নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় আসার আগেই বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী অনেক কাণ্ডই ঘটে গেছে। ভারত ব্যবহার করতে শুরু করেছে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর। চালু হয়ে গেছে কলকাতা-ঢাকা-শিলং-আগরতলা বাস সার্ভিস। রেলপথ যাবে কলতাকা থেকে ঢাকা হয়ে আগরতলা ও ত্রিপুরা। শিলং, আগরতলা বা ত্রিপুরায় বাংলাদেশীদের কোনো কাজ নেই। চিকিৎসা করাতে বা বেড়াতে যারা ভারত যান তারা যান কলকাতা হয়ে কিংবা বিমানে দিল্লি হয়ে অন্যত্র। আগরতলা, শিলং বা ত্রিপুরায় বেড়াতেও যান না কোনো বাংলাদেশী। সে পরিবেশও সেখানে নেই। ফলে এই রুট বাংলাদেশের জন্য অর্থহীন এক পথ। কিন্তু ভারতের জন্য তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কার্যত ভারত এই রুট ব্যবহার করবে তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে পণ্য পরিবহনের জন্য। আর যা করবে, তা বাংলাদেশের জন্য এক বিরাট নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করবে। ভারতের সাত রাজ্যে স্বাধীনতাকামীরা গত পঞ্চাশ বছর ধরে ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। সেখানে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে এসব পথে অস্ত্র ও সেনা পরিবহনের সুযোগ দিলে অকারণেই বাংলাদেশ ভারতের স্বাধীনতাকামীদের রোষানলে পড়বে। আর আমরা ওই সাত রাজ্যে যেটুকু পণ্য রফতানি করি, তাও বন্ধ হয়ে যাবে।
এরকম একটি পরিস্থিতিতে গত ৪ জুন কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিস উদ্বোধন করতে গিয়ে বলেছেন, রাজনীতি যাই থাকুক দুই দেশের মাটি এক, ভাষা এক, সংস্কৃতিও এক। তাই দুই বাংলাকে আর আলাদা করা যাবে না। ঐক্যবদ্ধভাবে দুই বাংলা আরো নতুন নতুন রাস্তার পথ দেখাবে। তিনি বলেন, ‘রাজশাহী ও রংপুর দিয়ে মালদহ ও শিলিগুড়ির পথে আরো দুটি বাস রুট চূড়ান্ত হওয়ার পথে রয়েছে। দুই বাংলার মধ্যে যাতায়াতের জন্য আরো দু’টি চেকপোস্টও চালু হচ্ছে। স্থলসীমান্ত চুক্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, কয়েক হাজার ভারতবাসী আমাদের কাছে ফিরে আসবেন, এটাই গুরুত্বপূর্ণ।
এ ক্ষেত্রে মোদির কথার সাথে মমতার কথার কোনো ভেদ নেই। মমতার ভুলটা সম্ভবত এখানেই যে, দুই বাংলার পৃথক হওয়ার প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে তিনি সম্ভবত পরিপূর্ণ ওয়াকিবহাল নন। পূর্ব বাংলা (বাংলাদেশ) কেন পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য ভোট দিলো, কেন বাংলাদেশ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করল, এর পুরো ইতিহাস জানলে মমতা বা মোদি এমন কথা বলতেন কি-না, সন্দেহ। পূর্ব বাংলা ও পশ্চিম বাংলা পাকিস্তান না ভারতের অন্তর্ভুক্ত থাকবে তা নিয়ে ১৯৪৭ সালে ভোটাভুটি হয়েছিল। তাতে পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্তির পক্ষে পূর্ব বাংলায় ভোট দিয়েছিলেন ১৬৬ জন আর ভারতে থাকার জন্য ভোট দিয়েছিলেনমাত্র ৩৫ জন। আর পশ্চিম বাংলায় ভারতের পক্ষে থাকার জন্য ভোট দিয়েছিলেন ৫৮ জন, বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন ২১ জন।
১৯৩৫ সালে ব্রিটেন ভারত শাসন আইন প্রবর্তন করলে ১৯৩৫ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত অবিভক্ত বাংলায় মুসলমানদের শাসন চালু ছিল। তাদের প্রমাদ গুনেছিল ভারতীয় সাম্প্রদায়িক নেতারা। তারা ধরে নিয়েছিল যে, বাংলা যদি এক থাকে, তাহলে কোনো দিনই হিন্দুরা বাংলার রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে পারবে না। কারণ, তখনো বাংলায় ৬৭ শতাংশ লোক ছিল মুসলমান। হিন্দু সাম্প্রদায়িকতাবাদীদের প্রধান ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বলেছিলেন, গোটা ভারত যদি একটি রাষ্ট্র হিসেবেও স্বাধীন হয়, তাহলেও বাংলা ভাগ করতে হবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাস্তায় মিছিল করেছেন, ব্রিটিশের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন যে, মুসলমানদের ক্ষেত্রে এক লোক এক ভোট নীতি চলবে না (পড়–ন, জয়া চ্যাটার্জির বই ‘বাংলা ভাগ হলো’)। বাংলা ভাগ হয়েছে। আমরা পূর্ব বাংলার মানুষেরা যুদ্ধ করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছি। আর পশ্চিমবঙ্গ সর্বভারতীয় যূপকাষ্ঠে কেবলই খাবি খাচ্ছে। নরেন্দ্র মোদি ও মমতা ব্যানার্জি উভয়েই যেন বিষয়টি তলিয়ে দেখেন।

Posted in নির্বাচন কমিশন | Comments Off on মোদির বার্লিন ওয়াল ও মমতার ‘এক বাংলা’

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud