April 27, 2025
ডেস্ক রিপোর্ট : সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সেনা মোতায়ন করতে হলে স্ট্রাইকিং ফোর্স নয় সেনাবাহিনীকে পূর্ণ ক্ষমতা দিয়েই ভোটের মাঠে নামানো উচিৎ বলে মনে করেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। তবে সেনা নির্ভর নির্বাচন দীর্ঘ মেয়াদে গণতন্ত্রের জন্য সুফল বয়ে আনবে কিনা সে বিষয়েও রয়েছে সংশয়। সেক্ষেত্রে সাংবিধানিক ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী ভূমিকা নেয়ার পরামর্শ তাদের।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা অনুসারে নিজেদের অংশিজনের সঙ্গে সংলাপের অংশ হিসেবে সোমবার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন চৌত্রিশজন বিশিষ্ট নাগরিক। যেখানে অধিকাংশরাই মত দেন নির্বাচনে সেনা মোতায়নের পক্ষে। আলোচনায় আরো ছিল ‘না’ ভোট আর কমিশনকে শক্তিশালী করার বিষয়টি।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইনের মতে ভোটারদের স্বস্তির জন্য সেনা মোতায়নের কথা ভাবতে পারে কমিশন। তবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োগ করলে তা থেকে সুফল আসবে না বলে মনে করেন তিনি।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ ছহুল হোসাইন বলেন, ‘মানুষ মনে করে সেনাবাহিনী যদি আসে তাহলে কেউ আর পক্ষপাতিত্য করবে না। মানুষের বিশ্বাসের এই জায়গাকে যদি মূল্যায়ন করা যায় ক্ষতি কি?’
অন্যদিকে দু’একটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করে প্রাথমিক সুফল পাওয়া গেলেও দীর্ঘমেয়াদে তা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে বলে মনে করেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ।
আইসিএলডিএস নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ বলেন, ‘ঢালাওভাবে সেনাবাহিনী না থাকলে নির্বাচন হবে না, সেনাবাহিনী থাকলে ভালো নির্বাচন হয় এটা হলো আমাদের পলিটিকাল যে প্রসেস আছে তার মধ্যে সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করার একটি উদ্যোগের মধ্যেই পড়ে। সেই উদ্যোগটা যত গভীরতা পাবে ততই সেনাবাহিনী রাজনৈতিক একটা ভাগ পাওয়ার প্রবণতা জেগে ওঠে। তো সেটি গণতন্ত্রের জন্য খুব একটা সুফল দেয় না।’
তবে নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর জনগনের পূর্ণ আস্থা অর্জন করতে হলে কমিশনকে সংবিধান প্রদত্ত ক্ষমতা সঠিকভাবে ব্যবহারের তাগিদ দিচ্ছেন তারা।
চলমান এই সংলাপ প্রক্রিয়া অংশিজনদের সঙ্গে কমিশনের দূরত্ব কমাবে বলেও মনে করেন তারা।
সময় অনলাইন।
ডেস্ক রিপোর্ট : নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি ‘না’ ভোট দেয়ার সুযোগ রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। ব্রিফিংয়ে সিইসি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কমিশন আইন অনুযায়ী সম্ভব সব কিছু করবে। ভোটের সময় সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বেশ কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছেন বলেও জানান সিইসি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমদের তারা বলেছেন যে, নির্বাচনকালীন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব তো আছেই তার বাইরেও আমাদের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো যাতে ভালোভাবে তাদের কাজ করতে পারে। নির্বাচনকালীন সেনাবাহিনীর কি ভূমিকা হবে, থাকবে বা থাকবে না এ রকম কথাও ছিলো। ভোটার তালিকা এবং ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে তারা যেনো কোনো ধরণের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন না হয়, অবাধে, নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে এ ব্যাপারে আমাদের তারা পরামর্শ দিয়েছেন। তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি, আইনের আলোকে নির্বাচন কমিশনের ওপর সাংবিধানিকভাবে যে ক্ষমতা অর্পণ করা আছে তা সঠিকভাবে পালন করে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়ার চেষ্টা করবো।’
সূত্র : সময়টিভি অনলাইন।
ডেস্ক রিপোর্ট : নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপ আজ। সোমবার বেলা ১১টায় কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে শুরু হবে এই বৈঠক শুরু হয়েছে। সোমবার বিকেল ৪টায় এ নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খান মো. নুরুল হুদা।
এর আগে বৈঠকে বিশিষ্টজনদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। এরমধ্যে রয়েছে- নির্বাচনী আইন সংস্কার, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ, নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহের নিরীক্ষা।
সংলাপের কার্যসূচিতে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য প্রথমে দুই মিনিট করে সময় বরাদ্দ থাকলেও পরে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব জানান, কথা বলার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবেন সবাই।
ডেস্ক রিপোর্ট : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বহুল প্রত্যাশিত সংলাপ সোমবার (৩০ জুলাই) শুরু হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপের শুরুর দিনে দেশের সুশীল সমাজের সঙ্গে সংলাপে বসছে। এদিন সকাল পৌনে ১১টায় নির্বাচন কমিশন ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। সংলাপের জন্য সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হবে বলে দেশের সব ধরনের নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, সংলাপে কমিশন প্রণীত নির্বাচনি কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ উপস্থাপন করে এ বিষয়ে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, পর্যবেক্ষক, নারী নেত্রীসহ প্রধান অংশীজনদের অভিমত নেওয়া হবে। তাদের পরামর্শ ও অভিমতের ওপর ভিত্তি করে কমিশন তার কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। নির্বাচনি কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপের আলোকেই সংলাপের এজেন্ডা বা কার্যপত্র তৈরি করা হয়েছে।
সংলাপে নির্বাচনি আইন ও বিধিমালা সংশোধন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন যুগোপযোগী করা, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়নে পরামর্শ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রম যুগোপযোগী করার বিষয়ে পরামর্শ, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নিরীক্ষা সংক্রান্ত প্রস্তাবনাসহ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে অভিমত গ্রহণ সংলাপের এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য সুশীল সমাজের ৫৯জন প্রতিনিধিকে ইসির পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সংলাপের বিষয়ে ইসি সচিবালয়ে নতুন ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইসি কমিশন একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে। সোমবার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে। এটা ধারাবাহিকভাবে আরও কিছুদিন চলবে। দেশে যারা নারী নেতৃত্ব আছেন, সাংবাদিক আছেন, তারাসহ অন্যদের সঙ্গেও কথা বলা হবে।’
এদিকে ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী সকাল ১১টায় শুরু হয়ে দুপুরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও সমালোচনার মুখে সংলাপের সময় বাড়ানো হয়েছে। পূর্ব-নির্ধারিত সময় হিসেবে আমন্ত্রিত সুশীলরা প্রতিজনে গড়ে দুই মিনিট করে সময় পাবেন, এমন একটি হিসাব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সুশীল সমাজের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে ইসি বিষয়টি উপলব্ধি করে মধ্যাহ্নের বিরতি দিয়ে দুই বেলা সংলাপ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রয়োজনে সময় বাড়ানো হবে। আমন্ত্রিত অতিথিদের বক্তব্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত বৈঠক চলবে। আগে জোহরের নামাজ পর্যন্ত আলোচনার সিদ্ধান্ত থাকলেও নামাজের বিরতির পরও আলোচনা অব্যাহত থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনার সময় তো আমরা নির্ধারণ করে দেইনি। সময় বাড়ানোর সুযোগ আছে। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা আসবেন, তারা কথা বলবেন। কিন্তু সময়ের অভাবে কথা বলতে পারবেন না, তা তো হতে পারে না। তাই যতক্ষণ সময় প্রয়োজন, তাদের সঙ্গে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাব।’
উল্লেখ্য, গত ১৬ই জুলাই ইসি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে রোডম্যাপ প্রকাশ করে। এই কর্মপরিকল্পনায় সাতটি বড় বিষয়ের ওপর কার্যক্রম নেওয়ার পরিকল্পনা করে। এর মধ্যে বড় একটি বিষয় ছিল সংলাপ। ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের মাধ্যমে এই সংলাপ শুরু হতে যাচ্ছে। সুশীল সমাজের ৫৯ জনের তালিকায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, সাবেক সচিব, সাবেক রাষ্ট্রদূত, বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, আইনজীবী, অর্থনীতিবিদ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা রয়েছেন। সুশীল সমাজের সঙ্গে সংলাপের পর ইসি ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক দলসহ অন্যদের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাবে।
গত ৬ই ফেব্রুয়ারি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অধ্যাপক ড. অজয় রায় : একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের তুলনায় বইয়ের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক কম ছাপানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনা। এসব তাদের খামখেয়ালিপনা ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ, তারা জানে যদি বিনামূল্যে বই দিতে হয় তাহলে সকলকেই দিতে হবে। কথা হচ্ছে, যদি বিনামূল্যে বই দিতে না পারেন তাহলে একটা মূল্য ধার্য করুন যেন সেই মূল্যে বাজার থেকে বই কিনে নেওয়া যায়। একাদশ শ্রেণির বই সাধারণত বিনামূল্যে দেওয়া হয় না, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়া একদমই ঠিক নয়। আমরা দেখতে পাই, বাজারে অনেক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান তাদের মন-মতো মূল্য নির্ধারণ করে থাকে। যার ফলে বেশিরভাগ দরিদ্র শিক্ষার্থী পুরনো বই কিনে পড়তে বাধ্য হয়। এই যে নকল বই ছাপানো, নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে বই বিক্রি, এগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। একই সঙ্গে এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এটার জন্য একটা সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন, দরকার হলে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইবেন। এছাড়া আর কোনো উপায় আমি দেখছি না।
নকল বই ছাপলে তো অবশ্যই চড়া মূল্যে বিক্রি করবে, প্রকাশকরা তো ব্যবসায়িক স্বার্থ দেখবে। বিনামূল্যে যদি বই না দেওয়া যায় তাহলে প্রতিশ্রুতি কেন দেওয়া হয়? এই অর্ধেক বই-বা ছাপানোর দরকার কী? এগুলো হচ্ছে অদ্ভুত সব অনিয়ম। আমরা এক অদ্ভুত উটের পিঠে চলছি। এভাবে চলতে থাকলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। শুধুমাত্র শিক্ষাক্ষেত্রে না, এটার বড় একটা প্রভাব আমাদের দেশের অর্থনীতির উপরও পড়বে। অর্থনৈতিক চাপ পড়বে অভিভাবকদের উপর। তাদেরকে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে নকল বই কিনতে হবে। নকল বইয়ের কোয়ালিটিও খারাপ হবে। এসব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরদারি আরও বাড়াতে হবে।
পরিচিতি: শিক্ষাবিদ
মতামত গ্রহণ: সাগর গনি
ডেস্ক রিপোর্ট :নির্বাচনী ‘রোডম্যাপ’ নিয়ে বিএনপি তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখালেও তা আমলে নিতে নারাজ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলছেন, এই কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী অনুষ্ঠেয় সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো যেসব প্রস্তাব দেবে, সেখান থেকে কিছু নেওয়ার মতো হলে বিবেচনা করবেন তারা।
মঙ্গলবার রাতে প্রশ্নের জবাবে বিএনপির প্রতিক্রিয়াকে সিইসি বর্ণনা করেন দলটির ‘রাজনৈতিক ভাষ্য’ হিসেবে।
“দলগুলোর অনেক হিসাব-নিকাশ থাকে। আমাদের রোডম্যাপ নিয়ে ভালো-মন্দ সমালোচনা অনেকে করবে। তাদের সঙ্গে তো দেখা হবে সংলাপে। এখন যা-ই বলুক না কেন বিস্তারিত বক্তব্য সংলাপে শুনব। সে সময় যা পরামর্শ আসবে, তা ভালোভাবে গ্রহণ করার মতো হলে আমরাও নেব।”
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রোববার দেড় বছরের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করে নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।
এর অংশ হিসেবে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস, আইন সংস্কারসহ অন্তত সাতটি বিষয়ে আগামী ৩১ জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের সূচি রয়েছে ইসির।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি এবার নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে। নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিতে তার বিকল্প নেই বলে মনে করছে দলটি।
এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণার সময় সিইসি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর ইসির কাজে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা এলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তফসিল ঘোষণার আগে কমিশনের করার কিছুই থাকে না।
তার ওই বক্তব্যে হতাশ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “এই রোডম্যাপে জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করে পুরনো কায়দায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়ার নীলনকশার বাস্তবায়নে তাদের যাত্রা প্রক্রিয়া শুরু করল বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে।”
অপরদিকে নির্বাচনী রোডম্যাপকে স্বাগত জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তবে দলটির সাধারণ সম্পাদকওবায়দুল কাদের বলেছেন, “এ ব্যাপারে এ মুহূর্তে আওয়ামী লীগের যে বক্তব্য সেটা হচ্ছে, এই রোডম্যাপটি বাস্তবায়নের অগ্রগতি দেখে আমরা কথা বলব। তারা যা বলেছেন তা রোডম্যাপ, আমরা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াটা দেখতে চাই।”
‘রোডম্যাপ’ খারিজ করলেও নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নেওয়ার বিষয়ে এখনও নেতিবাচক নয় বিএনপি। এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেছেন, “যখন সংলাপ হবে, তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব।”
এতেই নির্বাচন আয়োজন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ নিরসনের আশা দেখছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, “আমরা কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করব। রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতির উদ্দেশ্যে কথা বলে, তাদের বক্তব্য রাজনৈতিক।”
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া ইসির কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে বলেই মনে করছেন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “আমি সব সমালোচনাকেই স্বাগত জানাই। কারণ সমালোচনা হলো সাহায্যকারী। কোনো ভুল থাকলে শোধরানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়।
“যে কোনো সমালোচনা কাজের নতুন দিক উন্মোচন করে। কারও কথায় ভালো পরামর্শ এলে তা আমরা আলোচনা করে দেখব।”
সংলাপের আগে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি তাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘ফোকাল পয়েন্ট’ হিসেবে বেছে নিয়েছে।
যোগাযোগের সুবিধার জন্য গত ১২ জুলাই নিবন্ধিত দলগুলোর কাছে ‘ফোকাল পয়েন্ট’ হিসেবে একজনের নাম চেয়েছিল কমিশন। এর জবাবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মঙ্গলবার ইসি সচিবকে চিঠি দিয়ে তাদের ‘ফোকাল পয়েন্টের’ নাম-ঠিকানা জানিয়েছে।
দলগুলোকে বুধবারের মধ্যে নাম-ঠিকানা দিতে বলা হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪০টি দলের মধ্যে কেবল দুই দলের তথ্যই ইসির হাতে এসেছে।
সংলাপ: ৪০ দলের ‘ফোকাল পয়েন্ট’ চেয়েছে ইসি
কমিটিতে ৩৩% নারী: প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিপাকে ইসলামী দলগুলো
এছাড়া দলের সব স্তরে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পূরণের অগ্রগতি জানিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে ১৬টি দল।
গত ১৩ জুন ৪০টি দলের কাছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন চেয়েছিল ইসি। এক মাসের মধ্যে দলগুলোর এ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল।
মঙ্গলবার পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, খেলাফত মজলিস, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, কল্যাণ পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-জেপি ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট তাদের অগ্রগতি জানিয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, দলগুলো ২০২০ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে।
নির্ধারিত সময় পার হলেও অধিকাংশ দলের সাড়া না মেলায় পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে বিষয়টি কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হবে।
সূত্র : বিডিনিউজ২৪।
ডেস্ক রিপোর্ট : জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম চালু প্রসঙ্গে অনেক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। তবে আমরা ইভিএম চালুর দরজা একেবারে বন্ধ করিনি, বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। রবিবার নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) ঘোষণা করার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা ইভিএম ব্যবহার প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা নিয়ে সংলাপের সময় আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলব। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো কতটুকু প্রস্তুত এবং আমাদের কী প্রস্তুতি আছে তা নিয়েও কথা হবে।’
তিনি আরও বলেন ‘বর্তমানে আমাদের ৭-৮টি ইভিএম মেশিন রয়েছে, সেগুলো ৫-৬ বছরের পুরনো প্রযুক্তির। আমাদের নির্বাচনে মোট আড়াই লাখ ভোট কেন্দ্রের জন্য ইভিএম লাগবে। এখানে সরকারেরও আর্থিক সক্ষমতার প্রশ্ন রয়েছে। সব দিক বিবেচনা করে আমরা ইভিএম বিষয়ে বাস্তব সিদ্ধান্ত নেব।’
রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে কে সভা-সমাবেশ করতে পারল বা কে করতে পারল না, এটা আমাদের দেখার বিষয় না এবং এটা আমাদের দায়-দায়িত্বও না। নির্বাচন কমিশন সুনির্দিষ্ট আইনের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করে এবং তা করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলের বিষয় দেখবার দায়িত্ব সরকারের, তা সরকার দেখবে। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইন অনুযায়ী তখন এটা কমিশনের দেখার সুযোগ রয়েছে, তখন কমিশন এটা বিবেচনায় নেবে।’
কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ অনুষ্ঠানে সিইসি বলেন, ‘এখন থেকে দেড় বছরের কম সময়ের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সে লক্ষ্যে আমরা রোডম্যাপ প্রকাশ করেছি। আগামী ৩১ জুলাই থেকে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ হবে। আমরা সুশীল সমাজ, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা, নারী সংগঠনের নেতা, গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ করবো এবং পর্যায়ক্রমে আমরা রোডম্যাপের কাজ চালিয়ে যাবো।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা সবার প্রভাবমুক্ত থেকে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বদ্ধপরিকর এবং আমরা তা করতে পারবো।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপে ৭টি করণীয় বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হল- আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার, নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজিকরণ ও যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ, সংসদীয় এলাকা পুনর্নির্ধারণ, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং সরবরাহ, বিধি বিধান অনুসরণপূর্বক ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ।
এসময় নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন ও নির্বাচন কমিশন সচিব মো. আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাংলাট্রিবিউন।
ডেস্ক রিপোর্ট : জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জনগণকে জিম্মি করে বিএনপিকে কোন আন্দোলন করতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
শনিবার সকালে রাজধানীর রাজউক মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি। আগামী নির্বাচনকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি নেতারা বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন গেছেন নুতন করে ষড়যন্ত্র করার জন্য। বিএনপি নির্বাচন নিয়ে এক এক সময় এক এক রকম কথা বলেন। গ্রহণযোগ্য এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবেন নির্বাচন কমিশন। সাংবিধানিক ভাবে এর নেতৃত্ব দেবেন মাননীয় সরকার। বিএনপি একবার বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, একবার বলে সহায়ক সরকার। আন্দোলনের নামে হামলা মানুষ হত্যা এটাকে কোনোভাবে সহ করা হবে না।
সূত্র : সময়টিভি অনলাইন।
ডেস্ক রিপোর্ট : বিএনপির সমালোচনার মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে দেড় বছরের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আসছে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।
১৫ ফেব্রুয়ারি ৫ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পাঁচ মাসের মাথায় রোববার এই নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ করা হচ্ছে।
ইসির এই কর্মপরিকল্পনাকে ‘অর্থহীন’ বলে প্রতিক্রিয়া এসেছে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির কাছ থেকে। তারা নির্বাচনকালীন সরকারের উপরই গুরুত্ব দিচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত কর্মপরিকল্পনা ইসি চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে তা বই আকাশে প্রকাশ হয়েছে। রোববার সিইসি তা উন্মোচন করবেন।”
“আনুষ্ঠানিক এ রোডম্যাপ ধরেই কাজ বাস্তবায়ন হবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে। এ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে সবার কাছে ইসির সব কাজ তুলে ধরা হবে। তাদের মতামত নিয়ে সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে,” বলেন তিনি।
সবার মতামতের ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে এ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটি।
এ নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে অন্যতম সাতটি বিষয়ে রাজনৈতিক দলসহ ছয় ধরনের অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশের সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া, রাজধানীর মতো বড় শহরের আসন সীমিত করে নির্দিষ্ট করে দেওয়া, আরপিও-সীমানা নির্ধারণ অধ্যাদেশ বাংলায় রূপান্তরের প্রস্তাবও থাকছে কর্মপরিকল্পনায়।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সংলাপে শেষ মুহূর্তে নারী সংগঠনের নেত্রীদের সঙ্গে বসার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ৩১ জুলাই থেকে অক্টোবর নাগাদ এ সংলাপে পর্যায়ক্রমে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, নারী সংগঠনের নেত্রী ও নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন নিয়ে ইসি
দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সময়ে সংসদ নির্বাচন করতে দৃঢ়তার সঙ্গে ও সুচিন্তিত পন্থায় এগিয়ে যাচ্ছে। দেশবাসী একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছেন। সার্বিকভাবে দেশে জাতীয় নির্বাচনের একটি অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে।
ইসি কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো নিয়ে অংশীজন, গণমাধ্যম, দলসহ সংশ্লিষ্টদের সামনে উপস্থাপন করে সবার মতামত নেবে। সবার মতামতের আলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আইনানুগ ও গ্রহণযোগ্য করে তোলা সম্ভব বলে ইসি বিশ্বাস করে।
কর্মপরিকল্পনায় ৭ করণীয়
> আইনি কাঠামোসমূহ পর্যালোচনা ও সংস্কার
> নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজ ও যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ
> সংসদীয় এলাকার নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণ
> নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ
> বিধি অনুসারে ভোটকেন্দ্র স্থাপন
> নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা
> সুষ্ঠু নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ
আইন সংস্কার নিয়ে প্রস্তাব
কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, নির্বাচন পরিচালনায় বিদ্যমান আইন-বিধি প্রয়োগ করে অতীতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব হয়েছে। এখন আইনি কাঠামোর আমূল সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে ইসি বিবেচনা করে না। তবে পরিবেশ-পরিস্থিতির পরিবর্তনের মুখে এগুলো আরও যুগোপযোগী করার সুযোগ রয়েছে। যাতে ভোট প্রক্রিয়া আরও সহজতর ও অর্থবহ হয়।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ও নির্বাচন পরিচালনা বিধি অনুযায়ী ‘পোস্টাল ব্যালটে’ ভোটে দেওয়ার প্রক্রিয়াটি জটিল। বিশেষ করে বিদেশে অবস্থানরতদের সহজ পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার কাঠামো বের করা প্রয়োজন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থীর গেজেট প্রকাশ নিয়ে বিধিতে অস্পষ্টতা রয়েছে উল্লেখ করে তা দূর করার প্রস্তাব কমিশনের। সেই সঙ্গে আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে আরও অসঙ্গতি পেলে তা দূর করতে উদ্যোগ থাকবে ইসির।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে এ পর্যন্ত দু’শতাধিক সংশোধনী আনা হয়েছে। এ আইনটিও যুগোপযোগী করতে আরও সংস্কারের প্রয়োজন হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও সীমানা পুনর্নির্ধারণ অধ্যাদেশ বাংলা ভাষায় রূপান্তর করা গেলে ভোটার, প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবার কাছে সহজবোধ্য হবে বলে মনে করছে ইসি।
সীমানা পুনর্বিন্যাসে নতুন প্রশাসনিক এলাকা ও বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণ করতে চায় ইসি।
বিদ্যমান অধ্যাদেশে জনসংখ্যার বিবেচনায় আসন বিন্যাস করা হয়। জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় শহর ও গ্রামাঞ্চলের আসনে বৈষম্য সৃষ্টি হবে। বড় শহরের জনসংখ্যা বাড়লেও অনেকে ভোটার হন গ্রামাঞ্চলে।
ইসির প্রস্তাব হচ্ছে-আইন সংস্কার করে শুধু জনসংখ্যাকে বিবেচনা না করে জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা ও আয়তনকে বিবেচনায় আনা যেতে পারে।
রাজধানীর মতো বড় শহরের আসন সংখ্যা সীমিত করে নির্দিষ্ট করা যায় বলে মনে করে সংস্থাটি।
সীমানা পুনর্নির্ধারণে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নীতিমালার আলোকে সংসদীয় আসনের সীমানার খসড়া করে সংশ্লিষ্ট দাবি-আপত্তি-নিষ্পত্তি শেষে চূড়ান্ত করা হবে।
অবৈধ অর্থ ব্যবহার রোধ ও পেশি শক্তির ব্যবহার দমনে আইনি সংস্কার ও তা প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট সবার সুপারিশ পেলে শান্তিপূর্ণ ভোট করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে ইসি। এ সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে গঠিত কমিটি সব পর্যালোচনা করে তা চূড়ান্ত করবে।
ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণ; দলের নিবন্ধন হালনাগাদ, ইসির জনবলের সক্ষমতা বাড়াতে কার্যক্রম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা পরিকল্পনাও তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।
১৬ ফেব্রুয়ারি ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর ২৩ মে আগামী দেড় বছরের কাজের খসড়া সূচি ঘোষণা করেন সিইসি নূরুল হুদা।
সূত্র : বিডিনিউজ২৪।
ডেস্ক রিপোর্ট : সংলাপের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ‘ফোকাল পয়েন্ট’ হিসেবে একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির নাম চেয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ইসিতে নিবন্ধিত ৪০টি দলের নির্ধারিত ঠিকানায় যোগাযোগ করে নিয়মিত সাড়া না পাওয়ায় এ উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাটি।
ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বুধবার সব দলের সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়ে ‘ফোকাল পয়েন্ট’ হিসেবে একজনের নাম, ফোন নম্বর ও যোগাযোগের ঠিকানা চেয়েছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সেসব তথ্য ইসি সচিবালয়ের পাঠাতে বলা হয়েছে।
ওই চিঠিতে বলা হয়, “তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করার প্রয়োজনে আপনার দলের ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে (সভাপতি/প্রেসিডেন্ট/আমির/আহ্বায়ক/চেয়ারম্যান অথবা সমপর্যায়ের পদাধিকারী এবং সাধারণ সম্পাদক/মহাসচিব/সেক্রেটারি জেনারেল অথবা সমপর্যায়ের পদাধিকারীর মধ্য থেকে যে কোনো একজন) একজনের নাম, ফোন নম্বর, মোবাইল নম্বর, ফ্যাক্স নম্বর, ই-মেইল ও পত্র যোগাযোগের ঠিকানা সাত কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাতে হবে।”
সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস, আইন সংস্কারসহ অন্তত সাতটি বিষয়ে আগামী ৩১ জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।
কিন্তু সব দলের হালনাগাদ তথ্য কমিশনের কাছে না থাকায় চিঠি দিয়ে ‘ফোকাল পয়েন্ট’ খোঁজার এই উদ্যোগ।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন সময়ে এসব দলের নির্ধারিত ঠিকানায় চিঠি দিয়ে তারা সাড়া পাননি। কয়েকটি দল আগের ঠিকানা বাদ দিয়ে এখন দলের চেয়ারম্যানের বাসার ঠিকানা ব্যবহার করছে।
এছাড়া সব দলের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা কমিটি বহাল রয়েছে কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
দলগুলো নিবন্ধনের শর্ত ঠিকভাবে পালন করছে তাও দেখা দরকার বলে কমিশনের কর্মকর্তারা মনে করছেন।
ইসির কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগ্রহী নতুন দলের কাছে নিবন্ধনের আবেদন চাওয়া হবে অক্টোবরে। পাশাপাশি নিবন্ধতি ৪০টি দল শর্তগুলো মেনে চলছে কি না তা নিরীক্ষা করা হবে।
ইসির ‘নিবন্ধন যাচাই কমিটি’ এ বিষয়ে কাজ করবে বলে কমিশনের একজন উপ সচিব জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অক্টোবর থেকে মার্চের মধ্যে দলের নিবন্ধন সম্পন্ন করা হবে। অক্টোবর থেকে জানুয়ারির মধ্যে পুরনো দলগুলোর অবস্থা যাচাই করা হবে।
২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবরের পর শুরু হবে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা।
এনপিপির হালনাগাদ তথ্য চেয়ে চিঠি
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) নিবন্ধনের শর্ত পূরণের বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য চেয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে রোববার চিঠি দিয়েছে ইসি।
ইসির সহকারী সচিব রৌশন আরা বেগম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, নিবন্ধন বিধির ৯ ধারা অনুসারে নিবন্ধনের শর্ত প্রতিপালন সম্পর্কে কমিশনকে অবহিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে অনুযায়ী শর্ত পূরণের হালনাগাদ তথ্য ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ইসিকে জানাতে হবে।
নিবন্ধন বিধিমালার ৯ ধারা অনুযায়ী, দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নতুন কমিটির সদস্যদের তালিকা ও সভার কার্যবিবরণী কমিশনে দাখিল করতে হবে। কমিশন সময়ে সময়ে যেসব তথ্য-দলিল চাইবে তা দেওয়ার পাশাপাশি যেসব বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইবে তা দিতে হবে।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরুর পর ২০০৮ সালে এনপিপি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায়।
সূত্র : বিডিনিউজ২৪।