পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

‘দৌড়ের ওপর’ ইসি

Posted on November 4, 2015 | in নির্বাচন কমিশন | by

ঢাকা: দেশের ইতিহাসে এবারেই প্রথম দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার পরিকল্পনা চলছে। আর এজন্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন সংশোধন অধ্যাদেশ পাওয়ার পরপরই সারাদেশের ২৪৫টি পৌরসভা নির্বাচন আয়োজন করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী ডিসেম্বরেই পৌরসভা নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। এ উপলক্ষে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তফসিল ঘোষণা দিতে বিধিমালার সংশোধন নিয়ে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত কয়েক দফা বৈঠক করেছে ইসি। সংশোধিত অধ্যাদেশের গেজেট হাতে পাওয়ার পর সন্ধ্যার বৈঠকে নির্বাচন বিধি ও আচরণবিধিমালা সংশোধনের প্রায় সব কাজ শেষ করেছে কমিশন। বুধবার বা বৃহস্পতিবার বিধি চূড়ান্ত করে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে ইসি সূত্রে জানা যায়।2015_11_04_09_23_05_fyGtJ95vOIpJlm6mlS6q7sw0aRse2V_original

ডিসেম্বরে পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কমিশনার জানান, নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে গেলে আমাদের এত তাড়াহুড়া করতে হতো না। কারণ নির্বাচনের জন্য কী কাজ করতে হবে সব আগে থেকে ঠিক করা থাকে। এখন সরকার স্থানীয় নির্বাচন দলীয় ব্যানারে করতে চাওয়ায় কমিশনকে বিধি সংশোধনসহ সব কাজ দ্রুত করতে হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, কিছু পৌরসভার মেয়াদও এর মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এ কারণে এগুলোতে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতাও আছে। এ ছাড়া ২ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে নতুন ভোটারদের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে। তখন তারা আবার ভোট দাবি করতে পারে। অনেকে মামলাও করতে পারে। তাই এসব ঝামেলা এড়ানোর জন্যই ডিসেম্বরেই এ নির্বাচন করার পক্ষে ইসি।

ইসির বেশ কজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয়ভাবে নির্বাচন হওয়ায় তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। তবে বিধিমালায় প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা নির্ধারণ, দল মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সংক্রান্ত সংশোধন, প্রচারণায় সরকারি সুবিধাভোগীর বিধিনিষেধ এসব সংশোধন আনছে কমিশন। এছাড়া সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি ও নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত করতে বেশ কিছু ধারা সংযোজন করা হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পাশাপাশি এমপি ও সিটি করপোরেশনের মেয়ররা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না বলেও বিধিতে এ সংশোধন আনা হচ্ছে।
অন্যদিকে, পৌর নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে, কমিশন ইতোমধ্যে নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ২৪৫ পৌরসভার ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্ট পৌরসভাগুলোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার উপযোগী করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

ইসির সহকারী সচিব রৌশন আরা বেগম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ডিসেম্বর হতে মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে ২৪৫টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত নির্বাচন উপলক্ষে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমুহের ছোট-খাটো মেরামত করে নির্বাচনে ব্যবহার উপযোগী করতে অনুরোধ হয়েছে। এ ছাড়া ইতোমধ্যে পৌরসভা নির্বাচনে ২ কোটিরও বেশি ব্যালট মুদ্রণের জন্য বিজিপ্রেস ও আর্মি প্রিন্টিং প্রেসের সঙ্গে বৈঠকও করেছে ইসি।

পৌর নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে ইসি কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনেকটা সংসদ নির্বাচনের সাথে সাদৃশ্য থাকবে। এজন্যে নির্বাচনের বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালায় সংশোধন করা হচ্ছে। বিধি সংশোধনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কমিশন অনুমোদন দিলে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করে ইসি। তবে জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারকের অনুপস্থিতির কারণে বিধিমালাটি তার মতামতের জন্য রেখে দেয়া হয়েছে। তিনি কাজে যোগ দিলে কমিশন বৈঠকে বিধিমালা সংশোধন চূড়ান্ত করে আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে নভেম্বরের মাঝামাঝিতে তফসিল ঘোষণা করা হবে।

ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পৌরসভা অধ্যাদেশটি আমরা হাতে পেয়েছি। শিগগিরই খসড়া প্রণীত বিধিমালাটি চূড়ান্ত করে কমিশন বৈঠকে পাঠানো হবে। এরপর তা অনুমোদিত হলে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আগেই জেনেছি সরকার দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে চায়, তাই নির্বাচনের আচরণবিধি ও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার সংশোধনের খসড়া করে রেখেছি। এখন অধ্যাদেশের সঙ্গে মিলিয়ে আরো কিছু প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে হলে যোগ করে কমিশন বৈঠকে ওঠাব।’

পৌর নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনে মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা থাকায় আমরা ডিসেম্বরেই পৌরসভা নির্বাচন করব। তবে এখনও আমাদের হাতে বেশ কিছু কাজ বাকি আছে।’ ইসির তথ্যমতে, বর্তমানে সারাদেশে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৩টি। এর মধ্যে ২০১১ সালে নির্বাচনী উপযোগী ২৬৯টি পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল সাবেক ড. শামসুল হুদা কমিশন। তবে এবার স্থানীয় সরকারের দেয়া তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে ২৪৫টি নির্বাচন উপযোগী রয়েছে। এদিকে সোমবার দলীয় পরিচয়ে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ (২০০৯ এর ৫৮ নং আইন) এর অধিতর সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার।

সংশোধিত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর (৫৫ক)-তে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দল আরপিও, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ২ (১২ এ)-তে সংজ্ঞায়িত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। (৬১ক)-তে বলা হয়েছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী অর্থ কোনো প্রার্থী যিনি কোনো রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত নন। (২০ ক) বলেছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ ধারা ১৯ এর বিধান সাপেক্ষে কোনো পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কোনো ব্যক্তিকে কোনো রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে। চলতি বছরের ১২ অক্টোবর এই আইনটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়।

বাংলামেইল

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud