May 7, 2024
সিটি নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) যে রিপোর্ট দিয়েছে তা পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে মাগুরা-১ আসনের উপ-নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
টিআইবি নির্বাচনী ব্যয় নিয়ে যে তথ্য প্রকাশ করেছে সে প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘সিটি নির্বাচন নিয়ে টিআইবির রিপোর্টের বিষয়ে সংবাদপত্রে দেখেছি। এছাড়া তাদের কাছে থেকে একটি রিপোর্ট বুধবার সন্ধ্যায় আমরা পেয়েছি। রিপোর্ট দেখে পর্যালোচনা করা হবে। তাছাড়া আমরা প্রার্থীদের ব্যয়ের হিসাব নেই। একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রার্থীরা তাদের ব্যয় রিটার্ন জমা দেয়। ইতোমধ্যে নির্বাচনী ব্যয় জমা দিতে চিঠিও দিয়েছি আমরা। প্রার্থীদের ব্যয়ের রিপোর্ট হাতে পেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
কাজী রকিব বলেন, ‘কে নির্বাচনে কতো ব্যয় করেছেন এটা একেকজন একেকভাবে বলবেন, প্রার্থীরা হিসাব দিলেই বুঝতে পারবো। তবে এটা দুরূহ ব্যাপার। সব রিপোর্ট হয়তো সঠিকভাবে হয় না। আমাদের দেখতে হবে। তবে এ ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি।’
ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ ও টিআইবি দাবি করেছে সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ইলেকশন ওয়ার্কি গ্রুপ নিজেরা কোনো পর্যবেক্ষণ করে না। তাদের সঙ্গে অনেকগুলো নিবন্ধিত সংস্থা রয়েছে। আমরা প্রত্যেক সংস্থাকে পর্যবেক্ষণের অনুমতি দিয়েছি। এদের মধ্যে দুটি সংস্থার রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। তারা বলেছে- দু’একটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।’
সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে ইসির ভূমিকা নিয়ে টিআইবি অভিযোগ করেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেনা মোতায়েনের বিষয়ে ইসি দোদুল্যমান ছিল না। শুধু করণিক ভুল ছিল। সেটা শুদ্ধ করেছি, বাকি সব ঠিক ছিল। নির্বাচনে সেনা ডাকার প্রয়োজন পড়েনি।’
মাগুরা-১ আসনের উপ-নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু রয়েছে। এছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আশা করি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ আগামী ৩০ মে মাগুরা-১ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ, ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম-সচিব জেসমীন টুলী, গণসংযোগ বিভাগের পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
ঢাকা: অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যোগ্য ও নিজ বুদ্ধিতে কাজ করার মতো মেরুদণ্ডবান নির্বাচন কমিশন দরকার বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা।
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য দলীয় বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোনো বিষয় নয়। নির্বাচন কমিশনের মতো স্বাধীন জায়গায় শক্ত, নিরপেক্ষ, সুযোগ্য ও মেরুদণ্ডবান ব্যক্তি দরকার। নিজ বুদ্ধিতে কাজ করার মতো কমিশন হলে অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব।’
সোমবার দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডিস্থ টিআইবি কার্যালয়ে সংগঠনটির গবেষণা প্রতিবেদন ‘ঢাকা উত্তর, ঢাক দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২০১৫: প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শামসুল হুদা।
সদ্য সমাপ্ত ৩ সিটি নির্বাচের মূল্যায়ন করে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক নির্বাচনেই দেখা যায় কিছু আইন থাকে। তবে সব প্রার্থীরাই এই আইন ভাঙেন। কমিশন সাময়িক কিছু নোটিশ দিলেও ক্ষমতাসীনদের ব্যাপারে একেবারে নিরব ভূমিকা পালন করেন। একাধিক প্রার্থী নিজে ও দলীয়ভাবে অনিয়মে জড়িয়ে পড়লেও কোনো ব্যবস্থা নেন না কমিশন।’
সাবেক এই সিইসি বলেন, ‘২০০৮ সালে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের প্রক্রিয়া তৈরি হয়েছিল। ইলেকট্রনিক্স ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে স্বচ্ছ ভোটদানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এতে জাল ভোটের কোনো সুযোগ নেই। সিটি নির্বাচনে ফের জাল ভোটের প্রচলন করে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়া হয়েছে। জাতি হিসেবে আমরা যে গণতান্ত্রিক পথে হাঁটছিলাম তা আজ থেমে গেছে। এর দায়ভায় বর্তমান নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।’
নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হলো ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করার প্রক্রিয়া। ভোট কেন্দ্রে সব প্রার্থী পোলিং এজেন্ট না থাকলে বা এক দলের থাকলে ভোট হয় না। ভোটে অনিয়ম দেখার জন্যই সব দলের পোলিং এজেন্টস রাখা হয়। এই নির্বাচনে সেটি হয়নি।’
শামসুল হুদা বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি না করায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এতে কমিশনের দুর্বল নেতৃত্বের প্রকাশ পেয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তাছাড়া সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যয়ের সীমা অনেক বেড়েছে। এতোবেশি ব্যয় করে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রার্থীদের টাকা তুলতে হয়। প্রার্থীদের ব্যয়ের সীমার বিষয়ে কঠোর না হওয়ায় এমনটি হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে শান্তি সৃষ্টির একটা সম্ভবনা দেখা দিয়েছিল। সব দল অংশ নিলেও নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা সবাইকে হতাশ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন। তারা রাজনৈতিক প্রভাবে কাজ করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা পালন করেছে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান করা হয়েছে।’
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘নির্বাচন দলীয় না হলেও দলীয় ব্যানারেই নির্বাচন করেছে সবাই। প্রার্থীরা ব্যয়সীমার অনেক বেশি ব্যয় করেছেন। দলীয় সমর্থন পেতে অর্থের লেনদেন করেছেন অনেক প্রার্থী। নির্বাচনে জাল ভোট ও অনেক কেন্দ্র দখল করেছে সরকার দলীয় প্রার্থীরা।’
এস এম নাহিয়ান: আগামী আগস্ট মাসের ১ তারিখ থেকে ভোটারদের হাতে ১০ বছরের জন্য উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড বিতরণের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। সবার হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দিবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিনবলেন, জুলাই মাসের শেষের দিকে না হলেও আগস্ট মাসের ১ তারিখ থেকে সবার হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়া হবে। বর্তমানে চালু লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্রটি ফিরিয়ে দিয়ে বিনা মূল্যে উন্নত মানের স্মার্টকার্ড পাবেন ভোটাররা। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ততথ্যে জানা গেছে, স্মার্টকার্ডে তিন স্তরে ২৫টির মতো নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে আটটি বৈশিষ্ট্য নিশ্চিত করা হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্রের জালিয়াতি রোধে নাগরিকদের দেওয়া হবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য এ স্মার্টকার্ড। বর্তমানে এক পৃষ্ঠায় নাম, পিতা ও মাতার নাম, জন্ম তারিখ ও আইডি নম্বর এবং অপর পৃষ্ঠায় ঠিকানা-সংবলিত লেমিনেটিং করা কার্ড পাচ্ছেন ভোটাররা। স্মার্ট কার্ডে নাগরিকের এসব তথ্যই থাকবে। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে জাতিকে স্মার্ট এনআইডি কার্ড ‘উপহার’ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল নির্বাচন কমিশনের (নিক)। এ উপলক্ষে গত বছরের জুন মাসেই নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এসএমএস, টিভিস্ক্রল, রোমান ব্যানার, প্রেস অ্যাড, টিভি অ্যাড, বিলবোর্ড, থিম সংয়ের খসড়া অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন কারণে বিজয় দিবসে স্মার্টকার্ড দিতে পারার পর চলতি বছরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে স্মার্টকার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে নির্বাচন কমিশন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন স্মার্টকার্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে এনআইডির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোও হয়েছিল। কিন্তু ওই দিনও স্মার্টকার্ড দিতে পারেনি ইসি।
গত ২৬ মার্চ ইসির ঘোষিত তারিখে স্মার্টকার্ড দিতে না পারা সম্পর্কে এনআইডির মহাপরিচালক বলেন, ‘তিন সিটি নির্বাচনের জন্য ঢাকা ও চট্রগ্রামে জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ২৯ এপ্রিল থেকে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী ১ আগস্ট থেকে আমরা সবার হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দিতে পারব।’
১৮ বছরের কম বয়সীদেরও স্মার্টকার্ড
স্মার্ট এনআইডি কার্ডের সাথে ১৮ বছরের কম বয়সী নাগরিকদেরও এনআইডি কার্ড কীভাবে দেওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন বিধিমালাতেও ১৮ বছরের কম বয়সী নাগরিকদের বা যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য না তাদের এনআইডি কার্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
১৮ বছরের কম বয়সীদের এনআইডি কার্ড দেওয়ার বিষয়ে এনআইডির মহাপরিচালক বলেন, এনআইডি কার্ড শুধু ভোটাররা পাবেন তা হতে পারে না। ভোটার হওয়ার যারা যোগ্য না- এমন অনেকেই এ দেশের নাগরিক। সে কারণে প্রথম পর্যায়ে ১৬-১৭ বয়সীদের এ পরিচয়পত্র দেওয়া যেতে পারে।
প্রথমবার ফ্রি
জাতীয় পরিচয়পত্র প্রথমবার পাওয়া যাবে বিনা মূল্যে। কিন্তু হারিয়ে গেলে এই স্মার্টকার্ড টাকা ছাড়া মিলবে না। প্রথমবার হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে ২০০ টাকা, দ্বিতীয়বারের জন্য ৩০০ এবং পরবর্তী যেকোনো বারের জন্য ৫০০ টাকা দিতে হবে। এ ছাড়া জরুরি ভিত্তিতে পরিচয়পত্র পেতে হলে ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা পর্যন্ত লাগবে। আর নবায়ন করতে হলে ১০০ টাকা দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
সুত্র… এনটিভি
ঢাকা: তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় অনিয়ম ও সহিংসতা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশের বৃহত্তম নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী জোট ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডব্লিউজি)।
নির্বাচনের দিন সংগঠিত ‘অপকর্ম’ এবং অনিয়মের কারণে এই নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি বলে মন্তব্য করেছে ২৮টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত এই জোট।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ইডব্লিউজি তাদের পর্যবেক্ষণের প্রাথমিক তথ্য তুলে ধরে এসব মতামত ব্যক্তি করে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিন সিটিতে ৬১৯টি কেন্দ্র থেকে তাদের ৬১৯ জন পর্যবেক্ষকের দেওয়া ভোট চিত্রের তথ্য দেখে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, ৯৯% কেন্দ্রেই অনিয়ম হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত তথ্য তুলে ধরেন ইডব্লিউজি’র পরিচালক ড. মুহাম্মদ আব্দুল আলীম। এ সময় নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ইডব্লিউজি’র স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, তালেয়া রেহমান ও কামরুল হাসান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এই নির্বাচন উল্লেখ যোগ্য মাত্রায় অনিয়ম এবং সহিংসতায় ভরপুর ছিল। বিপুল সংখ্যক ব্যালট ছিনতাই করে সিল মারা ভয়ভীতি প্রদর্শন, ভোট বাক্স দখল এবং নির্বাচনি সহিংসতার ঘটনা পরিলক্ষিত হয়।
পর্যবেক্ষিত অনেক ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ কার্যক্রমের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হলেও নানা ধরনের নির্বাচনী অনিয়মের কারণে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সার্বিক সততা ক্ষুণœ হয়েছে।
ইডব্লিউজি বলেছে, তাদের পর্যবেক্ষিত কেন্দ্রের মধ্যে ঢাকা উত্তরে ৫৫টি, দক্ষিণে ৪৬টি এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ৩৭টি কেন্দ্রে জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মারার ঘটনা ঘটে।
ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়, ঢাকা উত্তরে ৩৩টি, দক্ষিণে ৩৯টি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ৩০টি কেন্দ্রে। এছাড়া সহিংসতার ঘটনা ঘটে ঢাকা উত্তরে ৬৬টি, দক্ষিণে ২৬টি ও চট্টগ্রামে ৭২টি কেন্দ্রে।
সংবাদ সম্মেলনে পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া, ভোট কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া ও ভোট কেন্দ্রের ভেতরে গ্রেপ্তার চিত্র তুলে ধরে হয়।
সুনির্দিষ্ট কয়েকটি ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরে বলা হয়, এসব অনিয়ম ও সহিংস ঘটনা ব্যাপক ঘটনার অংশমাত্র।
আব্দুল আলীম বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং নির্বাচনের দিনে অনিয়মের কারণে ইডব্লিউজি এই নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করে না।
পরিকল্পিতভাবে ৩ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম ও সহিংসতার ঘটানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই নির্বাচনে যেসব জালিয়াতি হয়েছে তা নির্বাচনী ফলাফলকে পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এসব অনিয়মের প্রতিটি ঘটনাই ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা, নির্বাচনী কর্মকর্তা, স্বীকৃত পর্যবেক্ষক, প্রার্থীর এজেন্ট এবং নিরাপত্তা বাহিনির সামনেই ঘটেছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রথম থেকে এসব ঘটনার পেছনে একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের কথা বলা হয়। তবে পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেই রাজনৈতিক দলটি সরকার সমর্থক বলা হয়।
হুমায়ুন কবীর: ভোট জালিয়াতি, কেন্দ্র দখলসহ বিভিন্ন কারণে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। আজ মঙ্গলবার নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পরিস্থিতি দেখতে রাজধানীর দুটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন তিনি। তবে এ সময় সাংবাদিকরা বারবার প্রশ্ন করলেও শুধু দুটি শব্দই বলেছেন তিনি। মঙ্গবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শনে যান সিইসি। পরিদর্শন শেষে বের হওয়ার সময় অপেক্ষমাণ সাংবাদিকরা তাঁর কাছে জানতে চান, জালভোট, কেন্দ্র দখল, অরাজকতা, কারচুপি, বিভিন্ন স্থানে গোলাগুলি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কী? আপনার মন্তব্য জনগণ জানতে চায়। জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখান।’ এ কথা বলেই গাড়িতে উঠে চলে যান সিইসি। এরপর কাকলী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে যান প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সেখানেও সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি তিনি। এর আগে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশন থেকে বের হওয়ার সময়ও সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা না বলেই বের হয়ে যান কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
বিনোদন ডেস্ক : তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যাপকভাবে ভোটকেন্দ্র দখল, গোলাগুলি ও সহিংসতার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘কোনো মন্তব্য নাই। যা দেখেছেন আপনারা দেখান।’
মঙ্গলাবর দুপুরে রাজধানীর উত্তর সিটির ভোটকেন্দ্র রেসিডেন্টসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।
বেলা সাড়ে ১১টার পর নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে বের হয়ে প্রথমে ঢাকা দক্ষিণের অন্তর্গত ধানমণ্ডির কাকলী হাই স্কুল অ্যান্ড কলজের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। সেখানে ভোটারদের তেমন একটা উপস্থিতি দেখা যায়নি। এক বুথে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত মাত্র ৪৩টি ভোট পড়েছে।
এই কেন্দ্রে কোনো বুথেই বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আব্বাসের মগ মার্কার কোনো এজেন্ট পাওয়া যায়নি। তবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাঈদ খোকনের এজেন্ট পাওয়া গেছে একাধিক।
অবশ্য ফাহিমা জামিল নামের একজন নারী নিজেকে মগ প্রতীকের এজেন্ট বলে দাবি করেন। তবে তার কাছে কোনো আইডি কার্ড এবং তিনি যে মগ প্রতীকের এজন্টে এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এরপর সিইসি পরিদর্শন করেন ঢাকা উত্তর সিটির ভোটকেন্দ্র ধানমণ্ডির রেসিডন্টসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বের হলে সাংবাদিকরা সিইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। তবে তিনি এ সময় সাংবাদিকদের কাছে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে চাচ্ছিলেন না। পুলিশ তাকে সবদিক থেকে ঘিরে রেখেছিল।
এ সময় তিন সিটিতেই ব্যাপক সহিংসতা, গোলাগুলি ও অরাজকতা পরিস্থিতি নিয়ে ইসির মন্তব্য জানতে চাইলে গাড়িতে উঠতে উঠতে সিইসি বলেন, ‘কোনো মন্তব্য নেই। যা দেখেছেন আপনারা দেখান।’
এদিকে সিইসির গাড়িবহরে পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্যে ধাক্কা ধাক্কি হয়। ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া নিজেই বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভি, বাংলাভিশন, যমুনা ও ইটিভির ক্যামেরাপার্সন ও রিপোর্টারসহ কয়েকজন সাংবাদিককে ধাক্কাতে ধাক্কাতে সড়িয়ে দিয়ে সিইসিকে দ্রুত গাড়িতে উঠিয়ে দেন। পরে তিনি কেন্দ্র ত্যাগ করেন।
এস এম নাহিয়ান: ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আগামীকাল মঙ্গলবার। এরই মধ্যে অনেক ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে বাকি ছিল, সেখানে আজ সকাল থেকে পাঠানো হচ্ছে। নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে টহল দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মোট এক হাজার ৯৩টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। এসব কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী বিতরণের জন্য মোট আটটি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, আজ সোমবার সকাল থেকেই উত্তরের ২৬, ২৭ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের মোট ৬৩টি কেন্দ্রের নির্বাচনী সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে।
নির্দিষ্ট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসাররা এই কেন্দ্রে এসে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, সিলসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বুঝে নিয়ে নিজ নিজ কেন্দ্রে চলে যাচ্ছেন। এ ছাড়া ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ আলম সামগ্রী সরবরাহ করার কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করছেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যেসব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তার সবই তাঁরা গ্রহণ করেছেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ৮৮৯টি ভোটকেন্দ্রে বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণের জন্য মোট সাতটি কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম। সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণের নয়টি ওয়ার্ডের ১৮৫টি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে নির্বাচনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী সংগ্রহ করে নিজ নিজ কেন্দ্রে ফিরে যাচ্ছেন। এ সময় তাঁদের নিরাপত্তা দিতে সঙ্গে থাকছেন একদল পুলিশ সদস্য। এ ছাড়া যেসব কেন্দ্র বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্ণিত করা হয়েছে, সেসব কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে যাচ্ছেন আরো বেশি সংখ্যক পুলিশ সদস্য।
পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়েই এসব সরঞ্জাম নির্দিষ্ট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম এই তিন সিটির ভোটগ্রহণ হবে আগামীকাল। তিন সিটির ৬০ লক্ষাধিক ভোটার প্রায় আড়াই হাজার ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। যদিও ভোটকেন্দ্রগুলোর অধিকাংশই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তিন সিটিতে মোট প্রার্থী এক হাজার ১৮০ জন। নির্বাচন উপলক্ষে প্রায় ৮২ হাজার সদস্য আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর তিনটি ব্যাটালিয়ন রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করবে।
ঢাকা : ক্যান্টনমেন্ট যেহেতু ঢাকা সিটি করপোরেশনের মধ্যেই আছে, তাই সেনাবাহিনীকে বাহিরে বের করার দরকার নেই। সেনাবাহিনী রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে ক্যান্টনমেন্টের ভিতরেই থাকবে। নির্বাচনকালে রিটার্নিং অফিসার প্রয়োজন মনে করলে সেনাবাহিনী মাঠে নামবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে নিজকক্ষে তিনি এ কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটিতেও একইভাবে সেনাবাহিনী ক্যান্টনমেন্টেই থাকবে। প্রয়োজন হলেই তারা মাঠে নামবে। সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয় নিয়ে ইসির দু’রকম সিদ্ধান্ত কেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে শাহনেওয়াজ বলেন, জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি দূর করতেই সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে পরিষ্কার করা হলো।
স্টাফ রিপোর্টার : মির্জা আব্বাসের পক্ষে ইশতেহার পাঠ করেন তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস
ঢাকা: দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আর্দশ ঢাকা আন্দোলনের মনোনীত বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মির্জা আব্বাসের ১০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে মির্জা আব্বাসের পক্ষে তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস ইশতেহার পাঠ করেন।
১০ দফা ইশতেহারে ৯৮টি প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। ইশতেহারের প্রথমেই রাখা হয়েছে নাগরিক সেবা।
পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে নাগরিক বিনোদন, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা খাত, পরিবেশ উন্নয়ন ও বর্জ ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তির ঢাকা সমাজ সেবা, জননিরাপত্তা ও নগর পরিকল্পনা-প্রশাসন দিয়ে ইশতেহার সাজানো হয়েছে।
ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ, সদস্য সচিব শওকত মাহমুদ, ড. মাহফুজ উল্লাহ, ড. সুকমল বড়ুয়া প্রমুখ।
স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন সিটি নির্বাচনে ভোটের উপকরণ ছিনতাই বা অনিয়মের চেষ্টা হলেই পুলিশকে কোমরের নিচে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেইসঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে পরিস্থিতি মোকোবেলা করতে সবসময় প্রস্তুতও থাকতেও বলেছে ইসি।
রোববার আগারগাঁও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের এনইসি মিলনায়তনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ নির্দেশনা দেয় বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়।
বৈঠক সূত্র জানা যায়, সিইসি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে বলেন- নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে যথাযথভাবে আইনের প্রয়োগ ও অনুসরণ করতে হবে। কোনো অভিযোগ এলে যাচাই করতে হবে। মনে রাখবেন আইনের চোখে সবাই সমান, যিনি নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করবেন তিনি যত বড় ব্যক্তিই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। নির্বাচনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যাতে করে ভোটারগণ নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে। ভোটারদের নিরপাত্তা ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের রক্ষার্থে প্রয়োজন হলে অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে। ভোটকেন্দ্র ও বুথ দখল কোনোভাবে মেনে নেয়া হবে না এর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
এছাড়া অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী, মাস্তানদের খুঁজে বের করে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশও দেন তিনি। যাতে নির্বাচনে তারা কোনো প্রভাব ফেলতে না পারে।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক পুলিশকে বলেন, ‘অতীতে নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে, ভোটকেন্দ্রের মালামাল ছিনতাই হয়। কিন্তু পুলিশ গুলি ছোড়ে না এমনটি এবার মেনে নেয়া হবে না। এবার গুলি ছুড়তে হবে। এছাড়া আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটগণ ব্যবস্থা নিচ্ছেন তা কমিশন সচিবালয় ডিএমপি ও সিএমপিতে নিয়োমিত বিফ্রিং এ উল্লেখ করেতে হবে। মাদরাসাগুলোর ওপর কড়া নজরদারি ও মাদরাসার ঘটনাবলীর জন্য জেলা প্রশাসকগণকে মনিটরিং করতে হবে।’
সূত্র আরো জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন যেভাবে চাইবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এবং তারা সবাই নির্বাচনের শেষ পযন্ত মাঠে থাকবে ও সজাগ দৃষ্টি রাখবে।
বৈঠকে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, হঠাৎ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া ঠিক না। ভবিষ্যতে যাতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পাল্টে যেতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সহজলভ্য পেট্রোলবোমা থেকে ভোটারদের রক্ষা করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে র্যাবের দুইটি বোমা নিস্ক্রিয়কারী টিম থাকবে বলেও জানান তিনি।র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক চট্টগ্রামে জঙ্গি হামলার আশংকার কথাও বলেছেন। এক্ষেত্রে তিনি জঙ্গিদের কার্যক্রমের ওপর করা নজর রাখার কথা বলেন।
মাদরাসাগুলোতে এখনও জঙ্গি তৎপরতা অব্যাহত আছে। এ কারণে মাদরাসাগুলোতে সজাগ দৃষ্টি রাখার কথা বলেন তিনি।
বৈঠকে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আসন্ন সিটি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার, নির্বাচন কর্মকর্তা, প্রশাসন ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে পুলিশ দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে। এ কারণে পরিস্থিতির এখনও অবনতি ঘটেনি। সাধারণত ভোট কেন্দ্র সমস্যা হয় না। সমস্যা হয় নির্বাচনে এলাকার রাস্তা বা পাড়া মহল্লায় বেশি সমস্যা হয় এ কারণে প্রতি ওয়ার্ডে দু’টি মোবাইল ফোর্স এবং একটি র্যাবের মোবাইল ফোর্স দেয়ার প্রতি মত ব্যক্ত করেন।
এছাড়া তিনি ভোটকেন্দ্রে মিডিয়া প্রবেশের জন্য অনুমতিপত্র নিতে বলেন এবং তাদের তালিকা পুলিশকে দেয়ার সরবরাহের জন্য আবেদন জানান। তিনি বহিরাগতদের তল্লাশি করে বের করে দেয়ার বিপক্ষে মত দেন। তবে সন্দেহ হলে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
এসময় ডিজিএফআই এর মহাপরিচালক বলেছেন, ‘তিন সিটি নির্বাচনে এবার তুলনামূলকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অনেক বেশি। পরিস্থিতির এখনও শান্তিপূর্ণ আছে। তবে কিছু কিছু অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিনে বের হয়ে আসছেন আমরা তাদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখছি। নির্বাচনে সময় বহিরাগতদের সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রবেশ রোধ করতে আমরা বিশেষ চেকপোস্টের ব্যবস্থা করা হবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল অফিসার, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক, আনসার, বিজিবি, ডিজিএফআই এর মহাপরিচালক, কোস্ট গার্ড, এনএসআইএর ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারসহ নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঘোষিত তফসিল অনুসারে, ২৮ এপ্রিল তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচণের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা উত্তরের ১০৯৩ ভোট কেন্দ্র, দক্ষিণের ৮৮৯টি কেন্দ্র ও চট্টগ্রামের ৭১৯টি ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং, পোলিং ও সহকারী পোলিং অফিসার নিয়ে অর্ধ লক্ষাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন।