May 19, 2024
নিউজ ডেস্ক: আসন্ন তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য দেশের ৩৯টি সংস্থার তিন হাজার ৬৭১ জন এবং স্থানীয় বিদেশি তিন সংস্থার ৩৩ জন পর্যবেক্ষককে অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (নিক)। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য সংস্থাগুলো করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার অনুমোদনপত্রে স্বাক্ষর করেন নিক-র জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান।
তিন হাজার ৭০৪ জন পর্যবেক্ষকের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৫টি স্থানীয় সংস্থার এক হাজার ৩৩০ জন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৭টি সংস্থার এক হাজার ৪৪৫ জন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে সাতটি সংস্থার ৮৯৬ জন পর্যবেক্ষণ করবেন।
এ ছাড়া স্থানীয় বিদেশি তিনটি সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের (ডিআই) ১৮ জন, ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশনের (আইএইচআরসি) ১০ জন এবং জাপান অ্যাম্বাসির পাঁচজন পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।
অনুমোদনপত্রে বলা হয়েছে, পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো প্রতি দলে অনধিক পাঁচজন করে দল গঠন করে ভ্রাম্যমাণ পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। তবে কোনো কেন্দ্রে বা বুথে স্থায়ীভাবে কোনো পর্যবেক্ষক অবস্থান করতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তার অনুমতিসাপেক্ষে স্বল্প সময়ের জন্য তারা বুথে প্রবেশ করতে পারবেন।
ভোটের দিনের অন্তত এক সপ্তাহ আগে অনুমোদিত পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে প্রত্যেক পর্যবেক্ষকের তথ্য পর্যবেক্ষক নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত ফরমে লিখে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। সঙ্গে দিতে হবে এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
পর্যবেক্ষকদের কাছ থেকে পাওয়া এসব আবেদন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা অনুযায়ী যাচাই করে সংস্থাভিত্তিক বৈধ পর্যবেক্ষকদের তালিকা তৈরি করবেন রিটার্নিং অফিসার। এসব পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে কারো কোনো আপত্তি না থাকলে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত পরিচয়পত্র পাবেন তাঁরা।
তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য একই ধরনের পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়েছে। এ জন্য পরিচয়পত্রের ওপর সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের নাম লেখা সিলমোহর দিতে হবে।
এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক লেখা স্টিকারযুক্ত গাড়িতে পর্যবেক্ষক ছাড়া অন্য কেউ ভ্রমণ করতে পারবেন না বলেও জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে আগামীকাল রোববার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ওই বৈঠকেই তিন সিটির নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
নিউজ ডেস্ক: সুইপার, দারোয়ান, মালী, ঝাড়ুদার, আয়া, পিয়ন কিংবা নৈশপ্রহরী—পোলিং অফিসারের তালিকা থেকে বাদ যাননি কেউই। তাঁদের নিয়োগ দিয়েছেন উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহ আলম। মিরপুরের পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন হজরত শাহ আলী মহিলা কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. শাহজাহান, মো. শুক্কুর আলী, মো. মোজ্জামেল হক, মো. সামসুল হক ও মো. সামসুল হক। তাঁরা ওই বিদ্যালয়ের দারোয়ান। এ ছাড়া নিয়োগ পেয়েছেন বিদ্যালয়ের ঝাড়ুদার দেলোয়ারা খাতুন ও রুনা আক্তার, নৈশপ্রহরী মো. জামাল, মালী মো. একরামুল হক, সুইপার মো. কবীর হোসেন, আয়া পারুল আক্তার ও পিয়ন মনোয়ারা বেগম। গত ১৩ এপ্রিল শাহ আলম চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শুরু করেন। এর তিনদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার ওই কর্মচারীরা দায়িত্ব পালনে অপারগতা জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অব্যাহতি চান। এর একটি কপি নির্বাচন কমিশনেও দাখিল করা হয়েছে।
আবেদনপত্রে ওই কর্মচারীরা বলেছেন, ‘ইতোপূর্বে আমরা কখনো রাষ্ট্রীয় অধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করি নাই। আমরা সামান্য অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন কর্মচারী। নির্বাচনী বুথে ভোটারদের আঙুলে কালি লাগানো ছাড়া অন্য কাজ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’ আবেদনপত্রে শাহ আলী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিন একটি নোটে বলেছেন, আবেদনকারীদের অক্ষরজ্ঞান কম। দায়িত্ব পালনে শুধু কালির ব্যবহার ছাড়া অন্য কাজ করানো কষ্টকর হবে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০-এর ৮ নম্বর বিধি অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচনে পোলিং অফিসারের প্যানেল প্রস্তুতের জন্য সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন এলাকার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা পাঠাতে অনুরোধ করবেন। সে অনুযায়ী, হজরত শাহ আলী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের কাছে কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা চেয়ে অনুরোধ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। অধ্যক্ষ তালিকা পাঠালে ঝাড়ুদার, মালী, আয়া, দারোয়ান, নৈশপ্রহরী, পিয়ন, সুইপারকেও পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব দেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহ আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ হয়নি। জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব সিরাজুল ইসলাম মুঠোফোনে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, শাহ আলী মহিলা কলেজ থেকে যে ব্যক্তিদের নাম দেওয়া হয়েছিল, তাতে পদবি উল্লেখ করা হয়নি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহ আলমের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়টি সংশোধন করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বিধি অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তা যে কাউকে নিয়োগ দিতে পারেন। কিন্তু তাই বলে এ ধরনের লোকদের ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়াটা ঠিক হয়নি।
সুত্র… এনটিভি
ঢাকা: ‘পুলিশ ম্যাপিং এর মাধ্যমে অপরাধপ্রবণ এলাকা মনিটরিং করা প্রয়োজন বলে মনে করেন ঢাকা সিটি নির্বাচনে উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
তবে তিনি এও বলেন, যেহেতু পুলিশ সিটি কর্পোরেশনের আওতায় নয়। তাই সবাইকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) সকালে সিটি নির্বাচনে উত্তরের প্রার্থীদের জনগণের মুখোমুখি করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। গুলশানের এমানুয়েলস ব্যাংকুয়েট হলে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের থিম ‘একটি রাষ্ট্রে নাগরিকের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ নেই’।
এক প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে স্থানে পহেলা বৈশাখে আমাদের বোনেরা নির্যাতিত হয়েছেন, সেটি অভিজিতের ঘটনার স্থান থেকে খুব দূরে নয়। একই জায়গায় পুলিশের সামনে কেন বারবার এমন ঘটনা ঘটছে- সেটি দেখতে হবে। নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দিতে হবে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলের সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ বলেন, জনগণের প্রতিনিধিদের অবশ্যই নির্দিষ্ট সময় পরপর নিজেদের সম্পদের হিসেব জনগণকে দেওয়া উচিত। সে সময়টি হতে পারে তিন বছর।
তিনি বলেন, কারও কারও দাবিগুলো মেয়রের এখতিয়ারের বাইরে। তবু যার যার স্থান থেকে চেষ্টা করা যায়।
অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন উন্নয়নমূলক কাজ শুরুর সময় এটি কবে শেষ হবে, সে সময়সীমা জানিয়ে দেওয়া উচিত।
এলাকাবাসীকে নিয়ে একটি মনিটরিং সেল তৈরি করে কাজের অগ্রগতি মনিটর করা যেতে পারে।
সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের পরিচালনায় এতে উপস্থিত প্রার্থীরা নিজেদের কথা জনগণের সামনে তুলে ধরছেন এবং নাগরিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন।
অনুষ্ঠোনে আরো উপস্থিত রয়েছেন মেয়রপ্রার্থী, মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মো. জোনায়েদ আব্দুর রহিম সাকি, আবদুল্লাহ আল ক্বাফী, আনিসুজ্জামান খোকন, শেখ শহীদুজ্জামান, কাজী মো. শহীদুল্লাহ, মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ, নাদের চৌধুরী, এ ওয়াই এম কামরুল ইসলাম, মো. জামান ভূঞা, শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ।
স্টাফ রিপোর্টার : আজ এই সকালে সাইকেল চালিয়ে এতো ভালো লাগছে যে মনে হচ্ছে মেয়র হলেও নিয়ম করে সাইকেল চালাবো, বলছিলেন একজন উচ্ছ্বসিত মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পারি দেওয়ার পর এই উচ্ছ্বাস তার। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী আনিসুল হকের শুক্রবারের প্রচারাভিযানটি ছিলো ব্যতিক্রমী। একটি পরিচ্ছন্ন দূষণমুক্ত নগরীর কথা তিনি নির্বাচনী ইশতেহারেই ঘোষণা দিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে মেয়র হলে নগরে সাইকেলকে জনপ্রিয় করে তোলাও হবে তার একটি অন্যতম উদ্যোগ। সাইকেলের জন্য যে আলাদা লেনের দাবি দীর্ঘ দিনের তাও সম্ভাব্য সড়কগুলোতে নিশ্চিত করা হবে, সে ঘোষণাও দিলেন আনিসুল হক। আর বিডি-সাইকেলিস্ট গ্রুপের সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে প্রমাণ করলেন, তিনিও সাইকেলিস্ট। এবং ভালো সাইকেল চালান। বিডি-সাইকেলিস্ট গ্রুপের দেড় শতাধিক তরুণ তরুণী তাদের নিয়মিত ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে শুক্রবার যায় রাজধানীর পশ্চিমাংশে বসিলা এলাকায়। সেখানে বুড়িগঙ্গা তৃতীয় সেতুর গোড়ায় যখন দলটি পৌঁছায় তখন তাদের সঙ্গে যোগ দেন আনিসুল হক। এরপর সেতুসড়ক ধরে এগিয়ে, মোহাম্মদীয়া হাউজিংয়ের ভেতর দিয়ে, বাঁশবাড়ি হয়ে, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড ধরে আসাদ গেট হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউতে গিয়ে শেষ হয় সেই সাইকেল যাত্রা। আনিসুল হক বলেন, এটি কোনও নির্বাচনী ৠালি নয়, এ ৠালি সাইকেলকে জনপ্রিয় করে তুলতেই। তবে যারা সাইকেল চালিয়ে এই নগরীকে দুষণ মুক্ত করতে চান, যে তারুণ্যের দল বিডি-সাইকেলিস্ট তাদের দীর্ঘ ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাচ্ছে তাদের সঙ্গে আমিও সামিল। মেয়র নির্বাচিত হলে একটি দূষণমুক্ত নগরী করার লক্ষ্যে কাজ করবেন এই প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, যারা দুষণমুক্ত নগরী চান, আর যারা আমার এই ঘোষণায় আস্থা রাখেন তাদের বলবো মেয়র নির্বাচনে আমার মার্কা টেবিল ঘড়ি। আপনারা আমাকে নির্বাচিত করুন, আমি আপনাদের আস্থার প্রতিফলন আমার কাজের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত করবো। সাইকেল চালিয়ে আসার পথেই আনিসুল হককেও সড়কের বিভিন্ন স্থানে থামতে হয়। এখানে সেখানে মিনিবাস, সিএনজি অবিন্যস্তভাবে রাস্তায় আড়াআড়ি করে দাড়িয়ে থাকলে তাদের সাইকেল যাত্রাও আটকে যায়। একটি পরিপাটি সুবিন্যস্ত নগরী গড়ে তোলারও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এই মেয়র প্রার্থী। ঘড়ির কাটায় ৯টা বাজতেই যথা সময়ে আনিসুল হক পৌঁছে যান বসিলায়। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন ওই আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। এগিয়ে গিয়ে বসিলার জনবসতিগুলোতে কিছুটা গণসংযোগও করেন তারা। পরে একটি ছোট্ট পথসভায় আনিসুল হকের জন্য বসিলাবাসির কাছে ভোট চান সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবেই তাকে পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। আর আনিসুল হক তার বক্তৃতায় বলেন, বসিলা এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। একটি নতুন জনপদ হিসেবে এটি ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে। তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে এই এলাকায় সকল নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবেন। নিজের বেড়ে ওঠা, ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠা, অর্থনৈতিকভাবে নিজেকে একটি শক্ত ভীতের ওপর দাঁড় করার দীর্ঘ পথ পরিক্রমাও সংক্ষেপে এলাকাবাসীর কাছে তুলে ধরেন আনিসুল হক। তিনি বলেন, শিক্ষা, সংস্কৃতি আর মানুষের ভালোবাসাকে পুঁজি করেই তার এই পথ চলা। বিজিএমইএ ও এফবিসিসিআই’র মতো দুটি বড় সংগঠন চালিয়ে নিজের যোগ্যতা যাচাই করেই ঢাকার মেয়র হওয়ার মতো এই বড় চ্যালেঞ্জে নেমেছেন বলেও জানান আনিসুল হক। তিনি বলেন, তার এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ ঢাকাবাসীর জন্য। ঢাকা উত্তরের সমস্যাগুলো এরই মধ্যে তিনি চিহ্নিত করেছেন। সেগুলো সমাধানের পথেই পাঁচ বছরের জন্য কাজ করে যাবো। মানিক মিঞা এভিনিউতে সাইকেল ৠালি শেষ হলে সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, সরকারের বিভিন্ন মহল বলছে আগামীতে নির্বাচন দলীয়ভাবেই হবে। তিনি কোনও দলীয় প্রার্থী নন, তবে আওয়ামী লীগের সমর্থিত। দলীয়ভাবে মেয়র নির্বাচনের বিষয়টি কিভাবে দেখছেন? উত্তরে আনিসুল হক বলেন, আমি পাঁচ বছরের জন্য ঢাকাবাসীকে সেবা দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে এসেছি, আপাতত আমি এই পাঁচ বছরের বাইরে বা পরে কি হবে তা নিয়ে ভাবছি না। এই নির্বাচনকে স্রেফ নির্বাচন হিসেবে না দেখে, তার প্রার্থীতাকে একটি পরিচ্ছন্ন-সবুজ-মানবিক নগর গড়ার বার্তা হিসেবে দেখার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান এই ব্যবসায়ী নেতা। তিনি বলেন, অনেক সমস্যা রয়েছে, এবার একটি সমাধান যাত্রা।
ঢাকা: যে সব প্রার্থী নির্দেশনা থাকার পরও নির্বাচনী মিছিল করবেন তাদের প্রার্থিতা বাতিল করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে নির্বাচন কমিশনার মো, শাহনেওয়াজ সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তাদের আরও কঠোর হতে বলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। নির্বাচনী প্রচারণায় মাইকের ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিধি অনুযায়ী দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মাইকে প্রচারণা চালানোর বিধান আছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ওয়ার্ডে প্রচারণার জন্য একটি ও পথসভায় আরও একটি মাইক ব্যবহার করতে পারবেন প্রার্থীরা। কোনো প্রার্থী একাধিক মাইক ব্যবহার করে প্রচারণা চালালে অথবা সময়ের আগে মাইকে প্রচারণা শুরু করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসন্ন তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মিছিল নিষিদ্ধ করেছে ইসি। নিষিদ্ধ করেছে জনসভাও। তবে গণসংযোগকালে কেবল একটি মাইক নিয়ে পথসভা করা যাবে।
স্টাফ রিপোর্টার : অভিনব পদ্ধতিতে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারণা চালাচ্ছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রপ্রার্থীরা। উদ্দেশ্য একটাই, ভোটারদের মন জয়।
ভোটারদের আকৃষ্ট করতে স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী আখতারুজ্জামান আয়াতুল্লাহ বিয়ে করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
কেউ কেউ আবার কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। কেউ বা ছুটছেন মসজিদ ও মন্দিরে। অনেক প্রার্থীই পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে নেমেছেন বিশেষ প্রচার-প্রচারণায়।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) নানা ধরনের প্রচারণার হালচাল লক্ষ করা যায় প্রার্থীদের। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাঈদ খোকন ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মির্জা আব্বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রচারণায় পিছিয়ে নেই অন্যরাও।
তবে ভিন্নধর্মী প্রচারণা দেখা গেলো আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মো. গোলাম মাওলা রনির। ভোট চাওয়ার জন্য তিনি কৌশল অবলম্বন করছেন।
রনি বলেন, অন্য প্রার্থীদের মতো আমি মাঠ চষে বেড়াচ্ছি না। আমি একশ’-দেড়শ’ জন নিয়ে উঠান বৈঠক করছি। এছাড়া মসজিদে নামাজ আদায়ের পর মুসল্লিদের কাছে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, মাঠ চষে বেড়ানো শত বছরের পুরনো একটা প্রথা। তাই কৌশলে ভোট চাইছি।
মো. আখতারুজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লাহ’র প্রচারণার কৌশল আরও অভিনব। তিনি ভোটারদের বলছেন, বিজয়ী হলে বিয়ে করবেন। মঙ্গলবার সকালে ওসমানী উদ্যানে লাউ প্রতীকে ভোট চাইতে দেখা গেছে আয়াতুল্লাহকে।
অপরদিকে মন্দিরে মন্দিরে ছুটছেন দিলীপ ভদ্র। মঙ্গলবার বাসাবো মন্দির ও বৌদ্ধ মন্দিরে হাতি মার্কায় ভোট চাইলেন তিনি।
দিলীপ বলেন, আমার বিশ্বাস সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি অন্যদের ভোটও পাবো। সবাই আমাকে সমর্থন করছেন। নগরবাসী পরিবর্তন চায়।
এদিকে পহেলা বৈশাখে বিশেষ প্রচারণায় নেমেছেন জাতীয় পার্টির সাইফুদ্দিন মিলন। তিনি সবার কাছে সোফা প্রতীকে ভোট চাইলেন। সকাল ৭টার দিকে তিনি লালবাগ কেল্লায় একটি বৈশাখী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
মিলন বলেন, সকালে লালবাগ কেল্লায় বৈশাখী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। এছাড়া ঢাকেশ্বরী, লালবাগ, নামিজ উদ্দিন রোডেও প্রচারণা চালাবো। চারিদিকে মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তাদের মধ্যে একটা পরিবর্তনের প্রত্যাশা লক্ষ্য করা গেছে।
সিপিবি-বাসদের প্রার্থী বজলুর রশীদ ফিরোজের প্রচারণাও ছিল বৈশাখকেন্দ্রিক। তিনি সকালে রমনা বটমূলে টেবিল প্রতীকে ভোট চেয়ে লিফলেট বিলি করেন।
ফিরোজ বলেন, রমনা পার্কে সকাল ৭টা থেকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। এরপর সেগুনবাগিচায় বাসদ অফিসে বৈশাখ উপলক্ষে
আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেবো।
ভাড়াটিয়াদের নিয়ে গড়া সংগঠনের সভাপতি মো. বাহরানে সুলতান বাহারও বৈশাখ কেন্দ্র করে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। বাহার বলেন, আমার সারাদিনের প্রচারণা বৈশাখকে ঘিরে। শাহবাগ, রমনা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শার্ট প্রতীকে ভোট চাইছি।
বিএনএফ প্রার্থী মোহাম্মদ শফিউল্লাহ চৌধুরীও বৈশাখকেন্দ্রিক প্রচারণায় নেমেছেন। তিনি বলেন, সকালে বাসাবো ও কদমতলা এলাকায় দু’টি বৈশাখী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। এবার সবার কাছে ময়ূর প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেছি। নগরবাসী এবার একটা পরিবর্তন চায় বলে মনে হচ্ছে। ২৮ এপ্রিল নিরব ভোট বিপ্লব ঘটবে।
স্টাফ রিপোর্টার : কালো টাকা ও পেশি শক্তি ব্যবহার বন্ধ করতে সবার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ।
সোমবার সকালে ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ সহযোগিতার আহ্বান জানান।
সিইসি বলেন, ‘অনেক প্রার্থী অভিযোগ, নির্বাচনে কালো টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে। আপনাদের মতো আমরাও চাই নির্বাচনে কালো টাকা ও পেশী শক্তি বন্ধ হোক। কিন্তু এর জন্য আপনাদের সবার সহযোগিতা দরকার। আপনারা সহযোগিতা করলে আমরা এটা বন্ধ করতে পারবো।’
তিনি বলেন, ‘হলফনামায় যারা মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন নির্বাচনের আগে ও পরে এর প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারো মুখ চেয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে না।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এলাকার জনগণ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে ও প্রার্থীরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন। কোন ধরনের বেআইনী কাজ যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। আমরা কোনোভাবে বেআইনী কর্মকাণ্ড হতে দেবো না।’
প্রার্থীদের উদ্দেশ্য করে সিইসি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে ও নিয়মতান্ত্রিকতার সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী নির্বাচনের পরিবেশ গড়ে তুলি। এলাকার উন্নয়নে জয়-পরাজয় ভুলে সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ইসির পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। এখন পর্যন্ত আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
নির্বাচনে নিয়জিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে কাজী রকিব বলেন, ‘আমি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিচ্ছি আপনারা আইনানুযায়ী নিরপেক্ষ থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। কোনো ধরনের ভয় পাওয়ার দরকার নেই।’
নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুল মোবারক, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জাবেদ আল, আবু হাফিজ, মো. শাহনেওয়াজ, বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান, ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, দক্ষিণ সিটি রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ প্রমুখ।
স্টাফ রিপোর্টার : সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও সুন্দর করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন, প্রচারণা মনিটরিং, কালোটাকা ও পেশীশক্তি প্রভাবমুক্ত করা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
রোবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানী কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিল ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা এসব দাবি জানান।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপ¯ি’ত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
এ সময় সেখানে আরও উপ¯ি’ত ছিলেন-ডিএমপি কমিশনার, নির্বাচন কমিশনাররা এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
লাইফস্টাইল ডেস্ক : বৈশাখের সাজে নিজেকে রাঙাতে প্রস্তুত সব বয়সী বাঙালি নারী। তরুণীদের মাঝে সে প্রবণতা আরও অনেক বেশি। নিজেকে ইচ্ছামতো রাঙাতে কারো নেই একটুও ক্লান্তি। সারাদিনের ঘোরাফেরা শেষেও সাজগোজে নিজেকে অনন্য রাখতে চান। এই গরমে স্বস্তির সঙ্গে নিজের সাজকে সুন্দর রাখতে শিখে নিতে পারেন দারুন কিছু কৌশল।
মেকআপ
প্রচণ্ড গরম আর রোদের তাপে মেকআপ নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে। বৈশাখী সাজে মেকআপ ঠিক রাখতে বেছে নিতে পারেন হাল্কা বেইজের কিছু। তাই বেছে নিতে পারেন অয়েল ফ্রি বা ওয়াটার প্রুফ মেকআপ। তবে তা অবশ্যই স্বাভাবিক মানের হওয়া চাই।
চোখের সাজ
চোখে লাগাতে পারেন হাল্কা আই শ্যাডো আর মাশকারা। এ ক্ষেত্রে কাজল, আই লাইনার বা মাশকারা অবশ্যই ওয়াটার প্রুফ হতে হবে। চোখের চারদিকে ছড়িয়ে পড়া এড়াতে কাজল দেওয়ার পর হাল্কা একটু পাউডার দিয়ে নেবেন। তাতে আর কাজল ছড়ানোর ভয় থাকবে না।
ঠোঁটের সাজ
গাঢ় দিতে চাইলে অবশ্যই লাল রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করতে হবে। অন্যদিকে হালকা রঙের লিপস্টিকও ব্যবহার করতে পারেন। তবে রঙটা যেন অবশ্যই আপনার পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। অপেক্ষাকৃত হালকা রঙই ভালো লাগে বেশি।
কপালের সাজ
কপালে ছোট বা বড় লাল টিপই বেশি মানাবে। অন্য রঙের টিপও ব্যাবহার করতে পারেন, সেক্ষেত্রে এখানেও পোশাকের রঙের সঙ্গে মিল রাখা বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। তবে, এক্ষেত্রে গাঢ় রঙ অত্যাবশ্যকীয়।
চুলের সাজ
বড় চুলের সাজে করতে পারেন খোঁপা বা বেণী। শাড়ি বা সালওয়ার কামিজ যাই পরুন না কেন, চুলে খোঁপা বা বেণী দুটোই ভালো মানায়। এ ক্ষেত্রে হাত খোঁপা করে চুলের দু পাশে বা পুরোটা জুড়ে গেঁথে নিতে পারেন দেশি ফুলের মালা। মানানসই কাটে মাঝারি বা ছোট চুল ছেড়ে দিলেও ভালো মানায়। উৎসবের দিন সেটাকে আয়রন করে একপাশে রেখে দিতে পারেন। ছোট্ট কোনো ব্যান্ড দিয়েও হাল্কা হাতে একটু অগোছালো করে আঁটকে নিতে পারেন। তবে তাতেও ফুল থাকা চাই। এছাড়া মাথায় দিতে পারেন ফুলের তাজ। উৎসবের এই দিনকে আরও বেশি মোহনীয়তা দিতে মাথায় ফুলের তাজের তুলনা হয় না।
ঢাকা: ‘সলো ফ্লাইং (একক উড্ডয়ন)’ একজন প্রশিক্ষণার্থী পাইলটের কাছে পরম কাঙ্খিত একটি বিষয়। দীর্ঘদিন তত্ত্বীয় ক্লাস, প্রশিক্ষকের সঙ্গে ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা আকাশে উড্ডয়ন (ফ্লাই)। এরপরই মিলবে সলো ফ্লাইংয়ের সুযোগ।
২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমিতে ভর্তি হওয়ার পর অন্য সব পাইলটের মতো এই দিনটির অপেক্ষাতে ছিলেন তামান্না রহমান হৃদির।
মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) তামান্নার জন্য এলো সেই দিনটি। অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে প্রশিক্ষক ছাড়াই রাজশাহীর আকাশে ঘুরে বেড়ালেন এই তরুণ প্রশিক্ষণার্থী বৈমানিক।
সফলতার সঙ্গে সলো ফ্লাইং শেষে ভূমিতে অবতরণের পর তারই প্রশিক্ষক ক্যাপ্টেন সাইদ কামাল অভিনন্দিত করলেন সবার আগে।
এ সময় ক্যাপ্টেন সাইদ পরদিন (০১ এপ্রিল) তামান্নার সলো ফ্লাইং উদযাপনের ঘোষণা দেন। এরপর ক্যাপ্টেন সাইদ সফলভাবে সলো ফ্লাইংয়ের ব্যাজ পরিয়ে দেন তামান্নাকে।
ফ্লাইং একাডেমির উড়োজাহাজ শেখার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় রাজশাহীতে। আর ঢাকায় চলে তাত্ত্বিক ক্লাস। তামান্নার এই সফলতার ব্যাজ পরানোর তোলা ছবি ঢাকায় একাডেমির সেক্রেটারি জেনারেল ক্যাপ্টেন আহমেদ ফজলুর রহমানকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়।
নিয়মানুযায়ী সলো ফ্লাইংয়ের পরদিন প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণার্থীকে নিয়ে আবার উড্ডয়ন করেন এবং সলো ফ্লাইংয়ের ভুল-ত্রুটিগুলো হাতে-কলমে সংশোধন করে দেবেন। কথা ছিল ১ এপ্রিল প্রশিক্ষকের সঙ্গে উড্ডয়ন শেষে রাতে তামান্নার সলো ফ্লাইং উদযাপন করা হবে।
মঙ্গলবারের এই আনন্দ ও সফলতার ছবি দেখে অত্যন্ত খুশি হন একাডেমির অন্যতম কর্ণধার ক্যাপ্টেন আহমেদ। প্রশিক্ষণার্থী বৈমানিকের এই সফলতায় শিক্ষক হিসেবে একরাশ ভালোলাগা নিয়ে বুধবার সকালে একাডেমিতে আসেন ক্যাপ্টেন আহমেদ। কিন্তু দুপুরেই আসে আকস্মিক এই দুর্ঘটনার খবর।
বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না ক্যাপ্টেন আহমেদ। দুর্ঘটনার পর বারবার মোবাইল ফোন থেকে তিনি ওই ছবিটি দেখছিলেন।
হাসিমুখে ক্যাপ্টেন সাইদ তার ছাত্রীকে ব্যাজ পরিয়ে দিচ্ছেন। ছাত্রীও খুশিমনে স্যারের পরানো ব্যাজের দিকে তাকিয়ে আছেন। এই ছবিটিই বারবার দেখছেন ক্যাপ্টেন আহমেদ। এরপর স্যারের সঙ্গে বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে আরো একটি ছবি তোলেন তামান্না ও অন্য দু’জন প্রশিক্ষণার্থী। চমৎকার একটি দৃশ্য।
পরদিনই এই ছবি স্মৃতি। প্রশিক্ষণার্থী দুর্ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আর প্রশিক্ষক সাইদ গুরুতর দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে হাসপাতালে লড়াই করছেন।