May 6, 2024
ঢাকা: জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নির্ধারিত সৈনিক ছাড়াও জরুরি ভিত্তিতে আরো অতিরিক্ত প্রায় ১১শ’ সৈনিক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে জরুরি ভিত্তিতে সৈনিক পাঠানোর অনুরোধের পর এসব অতিরিক্ত সৈন্য পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। এদিকে, বিশ্বের ৪৬টি শান্তিরক্ষা মিশনে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ১১ হাজার সৈনিক কর্মরত রয়েছেন। গত তিন বছরে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম থেকে বাংলাদেশের আয় ৯১৭ মিলিয়ন ডলার (৭ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা প্রায়)।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে ’ইথিকস ডে’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান শেষে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানিয়েছেন। আব্দুল মোমেন বলেন, ‘গত ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যক্তিগতভাবে মোবাইলে যোগাযোগ করে দক্ষিণ সুদানে এই অতিরিক্ত সৈনিক প্রেরণের অনুরোধ জানান।’ তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত সৈন্যদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩শ’ পুলিশ সদস্য গত সোমবার এরই মধ্যে দক্ষিণ সুদানে পৌঁছেছে। শান্তিরক্ষা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যদেরও শিগগিরই তাদের নতুন শান্তিরক্ষা মিশন দক্ষিণ সুদানে পাঠানো হবে।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বাংলাদেশই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বোচ্চ সংখ্যক সৈনিক প্রেরণকারী দেশ। এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ আট হাজারের অধিক সৈনিক শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হয়েছে। বিশ্বের ৪৬টি মিশনে প্রায় ১১ হাজার শান্তিরক্ষী সদস্য কর্মরত রয়েছেন।’
এ প্রসঙ্গে নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সদ্য বিদায়ী প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আনোয়ারুল মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশের সৈনিকরা খুবই দক্ষ এবং কুশলী। তারা পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারে বলে আমাদের সৈনিকদের চাহিদা বেশী শান্তিরক্ষা মিশনে।’জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) মামুন-অর-রশীদ বলেন, ‘গাজিপুরে আমাদের শান্তিরক্ষা মিশনে সৈনিক প্রেরণের জন্য যে ট্রেনিং সেন্টারটি করা হয়েছে সেখানকার প্রশিক্ষণের মান খুবই উন্নত। বিভিন্ন দেশের থেকে সৈনিকরা এসেও সেখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকেন। যে কারণে সৈনিক প্রেরণে তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যেও পার্শ্ববর্তী অনেক দেশ থেকেই আমরা এগিয়ে।’
ড. অব্দুল মোমেন বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে ২০১২ এই সাড়ে তিন বছরে ৪২ হাজার ২৪৯ জন সৈনিক শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেয়। যা পূর্ববর্তী চার বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।’তিনি বলেন, ‘এই সময়েই বাংলাদেশী নারী পুলিশ সদস্যরা সর্বপ্রথম শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেয়। বর্তমানে প্রায় ৫শ’ নারী পুলিশ সদস্য রয়েছে এবং পুলিশ সদস্য ২০০৪ সালে থাকা ৪৯১ জন থেকে বেড়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার জনে উন্নীত হয়েছে।’
সূত্র: বাসস
ঢাকা: রাজধানীর অন্যতম প্রবেশ দ্বার আব্দুল্লাহপুর এলাকায় সকাল থেকে কড়া নিরাপত্তা জোরদার রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লাঠি হাতে অবস্থান করছেন। তারা বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি করছেন। ১৮ দলের কর্মী সন্দেহ হলে কাউকে ঢাকামুখি হতে দেয়া হচ্ছে না। সকালে ওই এলাকায় সেনাবাহিনী একটি ভ্যানে করে মাইকিং করে। গাড়ি থেকে মাইকে বলা হয়, জনসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে জনকল্যানে আপনাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আপনারা রাস্তায় অবৈধ পার্কিং-সমাবেশ করবেন না। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন। ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের অবস্থান সমাবেশে স্থানীয় এমপি এডভোকেট সাহারা খাতুন নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ঢাকা: জাতিসংঘ মহাসচিবের অনুরোধের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদেশে জরুরি ভিত্তিতে দক্ষিণ সুদানে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রস্ততি নেয়া হয়েছে। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ কথা জানানো হয়েছে। এতে জানানো হয়, সর্বাধিক শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর অন্যতম হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে স্বীকৃত ও প্রশংসিত হয়েছে। পেশাদারীত্ব, শৃঙ্খলা, কর্তব্যপরায়ণতা ও মানবতাবোধের কারণে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীরা সারা বিশ্বের আস্থা অর্জন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার জাতিসংঘের মাহাসচিব জনাব বান কি মুন সাউথ সুদানের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী পাঠাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানান। জাতিসংঘের মহাসচিব সাউথ সুদানে জরুরিভিত্তিতে একটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন, একটি সামরিক হাসপাতাল ইউনিট, সামরিক পরিবহন বিমান এবং সামরিক হেলিকপ্টার পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন। ওই অনুরোধের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সাউথ সুদানে জনবল এবং বিমান পাঠাতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ওই জনবল ও সরঞ্জামাদির পরিবহন যে কোন সময় শুরু হবে। দক্ষিণ সুদানের বর্তমান পরিস্থিতিতে, দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ, বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের আস্থা সুদৃঢ় করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
সাভার: মহাসড়কে জননিরাপত্তা ও নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করতে সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সড়কগুলোতে টহল জোরদার করেছে সেনাবাহিনী। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি সেনা টহল জোরদার করায় মহাসড়কে বৃদ্ধি পেয়েছে গণপরিবহনের সংখ্যা। বেড়েছে ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যাও। সেনা টহল অব্যাহত থাকায় সাভার ও আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের কোথাও অবরোধ সমর্থকদের কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। তবে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন এমনকি বিআরটিসির কোনো বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি ঢাকা-আরিচা,নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল– আবদুল্লাহপুর মহাসড়কে। মহাসড়কে সেনা টহলের কার্যক্রম নির্বাচনী কাজের অংশ কিনা তা নিশ্চিত করেনি সেনা কর্তৃপক্ষ। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সময়সীমার আগেই সেনাবাহিনীর তৎপরতা টহল মূলত শীতকালীন মহড়ারই অংশ।
তিনি জানান, শীতকালীন মহড়ায় থেকে সেনাবাহিনী সব সময় কিছু না কিছু জনকল্যানমূলক কাজ করে।কখনো জনসাধারণকে বিনামূল্যে চিকিৎসা, কখনো শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়ায় সড়ক মহাসড়কে থাকা প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করে চলাচল উপযোগী করাই লক্ষ্য। এর বাইরে সেনানিবাস থেকে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানসহ সৈনিকদের নির্বিঘ্নে মহড়াস্থলে যাতায়াত নিশ্চিত করতে অবরোধ কর্মসূচির মাঝে সেনাবাহিনী সদস্যরা টহল অপরিহার্য। সেনাসদস্যদের নিজস্ব নিরাপত্তা নিশ্চিতের কারণে জননিরাপত্তা-ও এ ক্ষেত্রে নিশ্চিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ওই কর্মকর্তা। সেনা টহলে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কতটুকু সুবিধা হচ্ছে- জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার ওসি শেখ বদরুল আলম নতুন বার্তাকে জানান, প্রথম মনস্তাত্বিক চাপ। দ্বিতীয়ত এ কারণে অবরোধকারীদের কোনো তৎপরতা নেই। আমরা সমন্বিতভাবে টহল কার্যক্রম পরিচালনার কথা বলেছিলাম, তবে সংশ্লিষ্ট সেনা কর্মকর্তারা আমাদের জানিয়েছেন-এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় আপাতত নিজেদের মতো করেই টহল কার্যক্রম চালাবেন তারা।
ঢাকা : জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে এবার সুদানে শান্তি মিশনে যাচ্ছে আরও ১৪৫০ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে সেনা পাঠানোর প্রক্রিয়া। চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় ইক্যুইপমেন্ট বহনের বিশেষ জাহাজ। জানা গেছে, জাহাজে বোঝাই হচ্ছে মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় গাড়ি, অস্ত্র, সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র। অগ্রবর্তী একটি দল এরই মধ্যে সুদানে পৌঁছে গেছে। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখে যাচ্ছেন। এতে যোগ হচ্ছেন আরও ১৪৫০ জন। জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, এবারের সøটে সুদানে ১২৫০ জন সেনা যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু শেষে আরও দুইশ’ অতিরিক্ত শান্তিরক্ষীর সুদান শান্তি মিশনে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ নিয়ে মোট ১৪৫০ জন সদস্য যাচ্ছেন উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের সীমান্তবর্তী এই আরবীয় দেশটিতে। ড. মোমেন বলেন, জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সুনাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক আগেই বিশ্বের সব চেয়ে বেশি সেনা সরবরাহকারী দেশ হিসেবে জাতিসংঘে প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এতে আরও ১৪৫০ জন সেনা যোগ হওয়াতে এখন বাংলাদেশকে সহজেই কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারবে না।
ড. মোমেন বলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে জাতিসংঘ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। তিনি বলেন, বাংলাদেশি সেনারা বিশ্বের দেশে দেশে যেখানেই অশান্ত পরিবেশ সেখানেই দক্ষতার সঙ্গে ভূমিকা রেখে কাজ করছে। আর সে কারণেই জাতিসংঘও কোথাও সেনা নিয়োগ প্রয়োজন হলে বাংলাদেশকে প্রাধান্য দেয়।
এর আগে সশস্ত্র ও পুলিশ বাহিনীর সদস্য মিলে মোট নয় হাজার ৫৪৯ বাংলাদেশি বিশ্বের ১২টি দেশে শান্তি রক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলেন। সুদানে নতুন ১৪৫০ জন যোগ দিতে চলেছে। যাতে মোট সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১০ হাজার ৬৯৯ জন।
এ প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, দেশের উন্নয়ন বিরোধী একটি শক্তি প্রায়ই গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করে বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী থেকে জাতিসংঘ আর কোনো শান্তিরক্ষী নেবে না। এই শক্তিটি নিউইয়র্কেও সক্রিয়। তবে তাদের এই প্রত্যাশা কখনোই পূরণ হবে না। জাতিসংঘে বাংলাদেশ একটি ইতিবাচক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। নতুন করে আরও ১৪৫০ জন সেনা শান্তি মিশনে যোগ দেওয়াটি তারই প্রমাণ।
ঢাকা: আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাতক্ষীরায় সেনা মোতায়েন হয়নি। সেখানে শীতকালীন মহড়া দিচ্ছেন সেনা সদস্যরা। এ কারণে কয়েকটি টহল গাড়ি দেখা গেছে। যেসব গণমাধ্যম সেনা মোতায়েনের সংবাদ প্রকাশ করেছে- তারা জাতিকে ভুল তথ্য দিচ্ছেন। এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পরিচালক শাহিনুল ইসলাম। সাতক্ষীরায় সেনা মোতায়েন বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন স্থানে সেনা সদস্যদের শীতকালীন মহড়া চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় সাতক্ষীরায় সেনা সদস্যরা গেছেন। বিভিন্ন স্থানে সেনা সদস্যদের যানবাহন চলাচল করছে। এটা নিরাপত্তার দায়িত্বের কোনো টহল নয়। আইএসপিআরের পরিচালক বলেন, এ সংবাদ প্রকাশের আগে সেনাসদস্য বা আইএসপিআরের কারো সঙ্গে গণমাধ্যম কর্মীদের আলোচনা হয়নি। তারা নিজেদের ধারণা থেকে সংবাদ প্রকাশ করেছে।
সাতক্ষীরা: সেনাবাহিনীর একটি দল সাতক্ষীরা পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেনাবাহিনীর দলটি সাতক্ষীরা শহরে পৌঁছে। বর্তমানে তারা সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে অবস্থান করছেন। জেলার তথ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো, সিরাজুল হক মল্লিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরে ফোন করলে জানানো হয়, এ ব্যাপারে এখনও কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। সাতক্ষীরায় জামায়াত-শিবিরের শক্ত অবস্থান রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় হওয়ার পর থেকেই সাতক্ষীরায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা ব্যাপক সহিংসতা চালিয়েছে। গত কয়েকমাসে তাদের হামলায় ৫৫ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। সর্বশেষ গত রবিবার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাতক্ষীরায় যৌথবাহিনী অভিযানে নামে। এ পর্যন্ত যৌথবাহিনীর অভিযানে পাঁচজন মারা গেছেন। এখনও অভিযান চলছে। বৃহস্পতিবারও অভিযান চালানোর সময় জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনে নির্বাচনের আগে সেনা মোতায়েন করার ব্যাপারে শুক্রবার নির্বাচন কমিশনে বৈঠক হবে। এজন্য দেশের সব জেলা প্রশাসকদের ঢাকায় ডাকা হয়েছে।
খুলনা: খুলনা শিপইয়ার্ডে প্রথমবারের মতো নির্মাণ করা পাঁচটি যুদ্ধজাহাজের বাকি তিনটি অপরাজেয়, অদম্য ও অতন্দ্র নৌ বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রোববার দুপুরে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সহকারী নৌপ্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার এডমিরাল এএমএমএম আওরঙ্গজেব চৌধুরী এনডিসি, পিএসসি’র উপস্থিতিতে এ জাহাজ হস্তান্তর করা হয়। এ উপলক্ষে খুলনা শিপইয়ার্ডে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে নৌ বাহিনীর সহকারী নৌপ্রধান রিয়ার এডমিরাল এএমএমএম আওরঙ্গজেব চৌধুরী এনডিসি এবং পিএসসি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, মায়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার নিষ্পত্তি হওয়ার কারণে সমুদ্রসীমা বেড়ে যাওয়ায় যুদ্ধজাহাজের প্রয়োজনীয়তা এখন অনেক বেশি। এসময় যুদ্ধজাহাজ নির্মাণে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা জাতীয়ভাবে গর্ব বোধ করার মতো বিষয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, আগে যুদ্ধ জাহাজের জন্য বংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে বিদেশী রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল ছিল, এবং এ জন্য প্রচুর মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হতো। আজ একবিংশ শতাব্দীতে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ করে জাতির মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। এই পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশ নৌ বাহিনী আজ বাকি তিনটি যুদ্ধ জাহাজ খুলনা শিপইয়ার্ড থেকে গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
নির্মিত জাহাজগুলো তুলনামূলক ছোট হলেও এর নির্মাণ ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু তৈরির প্রেরণা যোগাবে।— যোগ করেন তিনি। সহকারী নৌপ্রধান আশা প্রকাশ করেন, খুব শিগগিরই খুলনা শিপইয়ার্ড যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করে বিদেশেও রফতানি করতে পারবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর আরইউ আহমেদ। এসময় সামরিক-বেসামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, চায়না শিপবিল্ডিং অ্যান্ড অপসোর ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির প্রতিনিধি, খুলনা শিইইয়ার্ড লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকরা এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১১ সালের ৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে পাঁচটি যুদ্ধজাহাজের কিল লেইং করেন সেগুলোর মধ্যে পূর্বে পদ্মা ও সুরমা যুদ্ধজাহাজ দুইটি নৌ বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রোববার বাকি তিনটি যুদ্ধজাহাজ হস্তান্তর করা হলো। ৫০ দশমিক ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য, সাত দশমিক ৫০ মিটার প্রস্থের এবং চার দশমিক ১০মিটার গভীরতার এসব জাহাজ সমুদ্রসীমা রক্ষা, চোরাচালান রোধ, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও দুর্যোগকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলাসহ জাতীয় প্রতিরক্ষায় মূখ্য ভূমিকা পালন করবে।
ভবিষ্যতে যুদ্ধ জাহাজসহ অন্যান্য আধুনিক জাহাজ তৈরিতে খুলনা শিপইয়ার্ড আরও বড় ভূমিকা রাখবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে।
ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে পৌঁছেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সর্ববৃহৎযুদ্ধজাহাজ ‘সমুদ্রজয়’ শুক্রবার জাহাজটি ফরিদ হাবিব জাহাজটির কর্মকর্তাদের অভ্যর্থনা জানানএ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যানডব্লিউ মজীনাসহ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। সমুদ্রসীমা আইন-বিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের (ইটলস) রায়ে বাংলাদেশের বর্ধিত সমুদ্র এলাকায় অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে স্মরণীয় করে রাখতে জাহাজটির নামকরণ করা হয়েছে ‘সমুদ্রজয়’। ৩ হাজার ৩১৩ টন ওজনের জাহাজটি নৌবাহিনীর নবম ব্রিগেড স্কোয়াড্রনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ২৯ নটিক্যাল মাইল গতির জাহাজটিতে ডলফিন, ব্ল্যাক হক ও সি হক হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে পারবে। চলতি বছরের ২৩ মে যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোতে কোস্টগার্ডের হাই এনডুরেন্স কাটার জার্ভিস জাহাজটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে তিন ধাপে বালাদেশ নৌবাহিনীর ১৯ জন কর্মকর্তা ও ১১৪ জন নাবিকের প্রশিক্ষণ শেষে ২৬ অক্টোবর সানফ্রান্সিসকো থেকে জাহাজটি সানডিয়াগো হয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা করে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আসার পথে ফিলিপাইনে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ‘হাইয়ান’-এ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনায় কোটি টাকা মূল্যের ত্রাণসামগ্রী ম্যানিলায় পৌঁছে দেয় ‘সমুদ্রজয়’।
শেরপুর: শেরপুর-জামালপুর সড়কের কুলুরচরে শুক্রবার সকালে সিএনজিচালিত অটোরিক্সার সঙ্গে সারবাহী একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই আলাল উদ্দিন (২৫) নামে এক সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এসময় সিএনজি চালকসহ ৫ জন গুরুতর আহত হয়। তাদের শেরপুর ও জামালপুর জেনারেল হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার বেলা ১০টার দিকে শেরপুর-জামালপুর সড়কের কুলুরচর এলাকায় শেরপুর থেকে জামালপুরগামী একটি সিএনজিচালিত অটোরিক্সার সঙ্গে শেরপুরগামী সার বোঝাই একটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এসময় সিএনজিটি দুমড়ে-মুচড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্টে সেনা বাহিনীর ল্যান্স নায়েক পদে কর্মরত জেলার ঝিনাইগাঁতী উপজেলার মানিককূড়া গ্রামের ছট্টু সেখের ছেলে আলাল উদ্দিন নিহত হয়। দুর্ঘটনার পর সিএনজি যাত্রীদের এলাকাবাসী উদ্ধার করে জামালপুর এবং শেরপুর হাসপাতালে ভর্তি করেন। নিহত সেনা সদস্য ৬ থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি কাটিয়ে আজ কর্মস্থলে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। চালক পালিয়ে গেলেও ট্রাকটি আটক করেছে সদর থানা পুলিশ।