May 19, 2024
ঢাকা: জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নির্ধারিত সৈনিক ছাড়াও জরুরি ভিত্তিতে আরো অতিরিক্ত প্রায় ১১শ’ সৈনিক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে জরুরি ভিত্তিতে সৈনিক পাঠানোর অনুরোধের পর এসব অতিরিক্ত সৈন্য পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। এদিকে, বিশ্বের ৪৬টি শান্তিরক্ষা মিশনে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ১১ হাজার সৈনিক কর্মরত রয়েছেন। গত তিন বছরে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম থেকে বাংলাদেশের আয় ৯১৭ মিলিয়ন ডলার (৭ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা প্রায়)।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে ’ইথিকস ডে’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান শেষে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানিয়েছেন। আব্দুল মোমেন বলেন, ‘গত ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যক্তিগতভাবে মোবাইলে যোগাযোগ করে দক্ষিণ সুদানে এই অতিরিক্ত সৈনিক প্রেরণের অনুরোধ জানান।’ তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত সৈন্যদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩শ’ পুলিশ সদস্য গত সোমবার এরই মধ্যে দক্ষিণ সুদানে পৌঁছেছে। শান্তিরক্ষা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যদেরও শিগগিরই তাদের নতুন শান্তিরক্ষা মিশন দক্ষিণ সুদানে পাঠানো হবে।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বাংলাদেশই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বোচ্চ সংখ্যক সৈনিক প্রেরণকারী দেশ। এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ আট হাজারের অধিক সৈনিক শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হয়েছে। বিশ্বের ৪৬টি মিশনে প্রায় ১১ হাজার শান্তিরক্ষী সদস্য কর্মরত রয়েছেন।’
এ প্রসঙ্গে নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সদ্য বিদায়ী প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আনোয়ারুল মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশের সৈনিকরা খুবই দক্ষ এবং কুশলী। তারা পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারে বলে আমাদের সৈনিকদের চাহিদা বেশী শান্তিরক্ষা মিশনে।’জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) মামুন-অর-রশীদ বলেন, ‘গাজিপুরে আমাদের শান্তিরক্ষা মিশনে সৈনিক প্রেরণের জন্য যে ট্রেনিং সেন্টারটি করা হয়েছে সেখানকার প্রশিক্ষণের মান খুবই উন্নত। বিভিন্ন দেশের থেকে সৈনিকরা এসেও সেখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকেন। যে কারণে সৈনিক প্রেরণে তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যেও পার্শ্ববর্তী অনেক দেশ থেকেই আমরা এগিয়ে।’
ড. অব্দুল মোমেন বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে ২০১২ এই সাড়ে তিন বছরে ৪২ হাজার ২৪৯ জন সৈনিক শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেয়। যা পূর্ববর্তী চার বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।’তিনি বলেন, ‘এই সময়েই বাংলাদেশী নারী পুলিশ সদস্যরা সর্বপ্রথম শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেয়। বর্তমানে প্রায় ৫শ’ নারী পুলিশ সদস্য রয়েছে এবং পুলিশ সদস্য ২০০৪ সালে থাকা ৪৯১ জন থেকে বেড়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার জনে উন্নীত হয়েছে।’
সূত্র: বাসস