May 19, 2024
খুলনা: খুলনা শিপইয়ার্ডে প্রথমবারের মতো নির্মাণ করা পাঁচটি যুদ্ধজাহাজের বাকি তিনটি অপরাজেয়, অদম্য ও অতন্দ্র নৌ বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রোববার দুপুরে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সহকারী নৌপ্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার এডমিরাল এএমএমএম আওরঙ্গজেব চৌধুরী এনডিসি, পিএসসি’র উপস্থিতিতে এ জাহাজ হস্তান্তর করা হয়। এ উপলক্ষে খুলনা শিপইয়ার্ডে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে নৌ বাহিনীর সহকারী নৌপ্রধান রিয়ার এডমিরাল এএমএমএম আওরঙ্গজেব চৌধুরী এনডিসি এবং পিএসসি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, মায়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার নিষ্পত্তি হওয়ার কারণে সমুদ্রসীমা বেড়ে যাওয়ায় যুদ্ধজাহাজের প্রয়োজনীয়তা এখন অনেক বেশি। এসময় যুদ্ধজাহাজ নির্মাণে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা জাতীয়ভাবে গর্ব বোধ করার মতো বিষয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, আগে যুদ্ধ জাহাজের জন্য বংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে বিদেশী রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল ছিল, এবং এ জন্য প্রচুর মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হতো। আজ একবিংশ শতাব্দীতে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ করে জাতির মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। এই পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশ নৌ বাহিনী আজ বাকি তিনটি যুদ্ধ জাহাজ খুলনা শিপইয়ার্ড থেকে গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
নির্মিত জাহাজগুলো তুলনামূলক ছোট হলেও এর নির্মাণ ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু তৈরির প্রেরণা যোগাবে।— যোগ করেন তিনি। সহকারী নৌপ্রধান আশা প্রকাশ করেন, খুব শিগগিরই খুলনা শিপইয়ার্ড যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করে বিদেশেও রফতানি করতে পারবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর আরইউ আহমেদ। এসময় সামরিক-বেসামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, চায়না শিপবিল্ডিং অ্যান্ড অপসোর ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির প্রতিনিধি, খুলনা শিইইয়ার্ড লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকরা এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১১ সালের ৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে পাঁচটি যুদ্ধজাহাজের কিল লেইং করেন সেগুলোর মধ্যে পূর্বে পদ্মা ও সুরমা যুদ্ধজাহাজ দুইটি নৌ বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রোববার বাকি তিনটি যুদ্ধজাহাজ হস্তান্তর করা হলো। ৫০ দশমিক ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য, সাত দশমিক ৫০ মিটার প্রস্থের এবং চার দশমিক ১০মিটার গভীরতার এসব জাহাজ সমুদ্রসীমা রক্ষা, চোরাচালান রোধ, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও দুর্যোগকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলাসহ জাতীয় প্রতিরক্ষায় মূখ্য ভূমিকা পালন করবে।
ভবিষ্যতে যুদ্ধ জাহাজসহ অন্যান্য আধুনিক জাহাজ তৈরিতে খুলনা শিপইয়ার্ড আরও বড় ভূমিকা রাখবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে।