পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

শাকপাতার গ্রামে

ঢাকা থেকে বেশি দূরে নয়, গাবতলি আমিনবাজার পার হলেই ভাকুর্তা ইউনিয়ন। সেখানকার গ্রামগুলোতে সারা বছর চাষ হয় শাকসবজি। সবুজ আর লালশাকের মাঠ দেখলে মনে হবে বাংলাদেশের পতাকার রংয়ে রাঙানো গ্রাম।

এক সময় ঢাকা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল ভাকুর্তা। যোগাযোগ ঘটিয়েছে একটি বেইলি ব্রীজ। একদিন চলতি পথে ভুলে সেই ঝুলন্ত ব্রীজের ওপর দিয়ে ভাকুর্তা ইউনিয়নে ঢুকে পড়েছিলাম। তারপর তো খালি মুগ্ধতা আর মুগ্ধতা।

ভাকুর্তা থেকে হেমায়েতপুর পর্যন্ত পুরো এলাকায় মুগ্ধতার ছড়াছড়ি। এখানে বলতে বাধ্য হবেন শ্যামলা বরণ বাংলা মায়ের রূপ দেখে যা আয়রে আয়!

পুরো এলাকাটাই সবুজ আর লাল রংয়ে শিল্পীর পটে আঁকা ছবি। এখানের মোগরাকান্দি, ভাকুর্তা, দক্ষিণ ভাকুর্তা, হিন্দুভাকুর্তা, মুসরিখোলা হয়ে দক্ষিণ শ্যামপুর পর্যন্ত পুরো এলাকাতে সব ধরনের শাক চাষ হয়।
গ্রামের লোকজন দীর্ঘদিন শাক চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। মৌসুম ভেদে পাটশাক, লালশাক, ডাটাশাক, মূলাশাক, পুঁইশাক, লাউশাক, সরিষা আর আলুশাক অন্যতম।

শাক চাষের পাশাপাশি এখানকার চাষিরা বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি সবজি, যেমন- লাউ, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপিসহ থাইপাতা, কারিপাতা আর ব্রকলির চাষও করেন।

প্রথমবার গিয়েছিলাম কোনো এক শরতে। তখন মেঠপথকে পিচপথে রূপান্তারের কাজ সবে শুরু হয়েছে। গ্রামকে শহর বানানোর চেষ্টা। তখন থেকে অনেকবারই আসা হয়েছে এখানে।

মজার ব্যাপার হল ভাকুর্তায় ঢোকার সময় তুরাগনদ জলে টলমল। আর গ্রামের ভেতরে দেখা যায় পথের বাম পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে বুড়িগঙ্গা নদী।

আমরা ভাকুর্তা ইউনিয়নে দশ মিনিট চলার পর হেমায়েতপুর চলে আসি। তারপর ঋষিপাড়া হয়ে দক্ষিণ শ্যামপুর। এখানে পথের সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। তবে মেঠোপথ কম, চমৎকার পিচঢালা পথ। বাস বা বড় গাড়ি খুব একটা আসে না। তাই হেঁটে হেঁটে বহুদূর চলে যাওয়া যায়।

মোগরকান্দা থেকে শুরু করে শ্যামপুর এলাকার রাস্তার দুধারের পুরো এলাকা জুড়েই সবজি ও শাকের চাষ। সেজন্য পুরো ভাকুর্তা ইউনিয়নকে বলা যায় শাকের গ্রাম।

এখানকার পথে পথে শাকের মহাজনদের দেখা যায় ট্রাকে ট্রাকে শাক বোঝাইয়ে ব্যস্ত। যা রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও ঠাটারীবাজার হয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে।

তিনি এরপর যা বললেন তার অর্থ হল- চাইরা ব্রিজ বা বুড়িগঙ্গা নদী অনেক আগে এখানে ছিল না। পুরোটাই আসলে চাইরা গ্রাম। এখনও এখানকার মানুষ গ্রাম জেগে ওঠার অপেক্ষায়। অনেকেই নদীর দিকে তাকিয়ে নিজের জায়গা খোঁজেন। লোকজন ব্রিজের নিচের নদীর এলাকাকে বলেন কুম বা গর্ত।

১৯৬২ সালের আগে বুড়িগঙ্গা চাইরা থেকে বহুদূরে ছিল। তখন বুড়িগঙ্গা খরস্রোতা। নদীর ঢেউয়ের তোড়ে চাইরা গ্রামে প্রায় সময় ভাঙন লেগে থাকত।

একদিন সব কিছু ভেঙেচুড়ে চাইরা গ্রাম বুড়িগঙ্গা গ্রাস করে। তারপর দীর্ঘদিন এর দুপাশ বিচ্ছিন্ন ছিল। পারাপারের জন্য ব্যবহার হত নৌকা। ২০০৫-২০০৬ সালে চাইরা ব্রিজ নির্মিত হয়।

এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। চাইরা ব্রিজ এলাকার মূল সংযোগ স্থল। এখানকার মানুষের আশা ভরসার জায়গা। আর সাধারণ মানুষের জন্য অপার সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে চাইরা গ্রাম বা চাইরা ব্রিজ ও এখানকার মনোরম প্রকৃতি।

ছুটির দিনের বিকালটা এখানে বেড়ানোর জন্য খুব চমৎকার বলা যায়। ইচ্ছে করলে নৌকাতেও বেড়ানো যাবে।

তাই চলে যেতেই পারেন এক বিকেলে ভাকুর্তা হয়ে চাইরা তারপর দক্ষিণ শ্যামপুর শাকের গ্রামে। নিশ্চিত এখানে এলে ভালোলাগার দোল খাবে প্রাণে!

প্রয়োজনীয় তথ্য

শাকের গ্রাম ঢাকার খুব কাছে সাভারের ভার্কুতায়। ভাকুর্তা গহনার গ্রাম হিসেবেও বিখ্যাত। শাক,  গহনা ও অসাধারণ প্রকৃতি মিলে ভাকুর্তা এক কথায় অনন্য।

এখানে গ্রাম্য বাজারে গ্রামেরই খাবার পাবেন। তবে মিষ্টির দোকানে মিষ্টি সাধারণ না। খেয়ে আসবেন সঙ্গে ঘরের জন্য নিয়ে।
ভাকুর্তা একবেলার ভ্রমণ। যে কোনো দুপুরে গিয়ে সন্ধ্যায় ফিরে আসতে পারবেন। মানে ভাকুর্তা দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার গল্প।
নিজস্ব বাহনে দল বেঁধে যাওয়াই ভালো। বাইক হলে আমার মতো একাই চলে যান। অথবা গাবতলির আমীন বাজার থেকে প্রতি মিনিটে ভাকুর্তার উদ্দেশ্যে ভাড়ার টয়োটা গাড়ি ছেড়ে যায়। যে কোনো একটাতে চড়ে বসে ভাকুর্তা বাজারে চলে যেতে পারবেন।
এরপর পায়ে হেঁটে বা ভ্যান ও রিকশাতে পুরো এলাকা চষে ফিরুন, ভালোলাগা ষোলআনা।

ছবি: লেখক।

Posted in Uncategorized, সারা দেশ | Comments Off on শাকপাতার গ্রামে

ইমরানের ‘আমার ইচ্ছে কোথায়’(ভিডিও)

ইমরান-মৌমিতার ‘আমার ইচ্ছে কোথায়’ শিরোনামে মিউজিক ভিডিওটি মাত্র ১২ দিনের ব্যবধানে ভিউ হয়েছে ৫ লাখ।

জমে উঠেছে হালের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ইমরান ও কলকাতার মডেল মৌমিতা হরির অনস্ক্রিণ রসায়ণ। তাদের ‘আমার ইচ্ছে কোথায়’ শিরোনামের মিউজিক ভিডিওটি আলোড়ন তুলেছে ইউটিউবে। চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে ভিউ। ইমরানের দুর্দান্ত গায়কীর সঙ্গে মৌমিতার সাবলীল অভিনয় মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের। অন্তর্জালে প্রকাশের মাত্র ১২ দিনের মাথায় ৫ লাখেরও বেশি দর্শক উপভোগ করেছেন গানটি।

দর্শকদের এই ভালোবাসায় মুগ্ধ গানের কলাকুশলীরা। মুঠি মুঠি ভালোবাসা ঢাকা ছাপিয়ে কলকাতায় বসেও অনুভব করছেন মডেল মৌমিতা হরি।

গ্লিটজকে জানালেন, ‘‘খুব ভালো লাগছে যে দর্শকরা খুব ভালো ভাবে গানটা গ্রহণ করেছে। সবার থেকে পজেটিভ ফিডব্যাক পাচ্ছি। আমার আর ইমরানের অনস্ক্রিণ কেমিস্ট্রি নিয়েও খুব ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। চন্দন দা’র ডিরেকশন নিয়ে তো কিছু বলার নাই। ইমরানের অন্য সব গান থেকে এই গানটা বেশ ডিফারেন্ট। এটা মূলত কথা প্রধান গান।’’
মৌমিতা আশা রাখছেন, ‘‘কিছুদিনের মধ্যে ৫০ লাখ ছড়িয়ে যাক গানটি।’’

অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সাউন্ডটেকের ব্যানারে ঈদ উপলক্ষে গানটি প্রকাশ করা হয়েছিলো। এটি লিখেছেন গীতিকবি জুলফিকার রাসেল। মিউজিক ভিডিওটি নির্মাণ করেছেন চন্দন রায় চৌধুরী। গানের সুর ও কম্পোজিশন ইমরানের নিজের।

Posted in Uncategorized | Comments Off on ইমরানের ‘আমার ইচ্ছে কোথায়’(ভিডিও)

দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে রেখেছে ইংল্যান্ড

স্পোর্টস ডেস্ক : আরেকটি উইকেট, ইংল্যান্ডের উল্লাসআফসোসে পুড়ছেন জো রুট? তা পুড়তেই পারেন, মাত্র ১০ রান হলেই যে কীর্তির খাতায় উঠে যেত তার নাম। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই খেললেন মহাকাব্যিক এক ইনিংস। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ইংল্যান্ডকে নিয়ে গেলেন বহুদূরে। কিন্তু হলো না ডাবল সেঞ্চুরি। ১৯০ রানে থেমে যায় তার ইনিংসটি। যার ওপর ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে ইংলিশরা প্রথম ইনিংস শেষ করে ৪৫৮ রানে। জবাবে প্রোটিয়ারা দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ৫ উইকেটে ২১৪ রানে।

আগের দিনের সঙ্গে আর মাত্র ৬ রান যোগ করে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান রুট। যাওয়ার আগে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেন ১৯০ রান। ২৩৪ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছিলেন ২৭ চার ও এক ছক্কায়। অধিনায়কের বিদায় পরপরই ইংলিশরা হারায় লিয়াম ডসনের (০) উইকেটটি। তবে পথ হারানো তরীকে লাইনে ফেরান মঈন আলী ও স্টুয়ার্ট ব্রড। প্রথম দিনেই হাফসেঞ্চুরির দেখা পাওয়া মঈন হাঁটছিলেন সেঞ্চুরির পথেও, কিন্তু কাগিসো রাবাদার বলে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় তাকে ৮৭ রানে। তার আগে ব্রডের সঙ্গে গড়েন ৪৬ রানের জুটি। ইংলিশ এই পেসার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে অপরাজিত ছিলেন ৫৭ রানে।

ব্যাটিংয়ের পর আসল কাজ বোলিংয়ে আরও ভয়ঙ্কর রুপে হাজির হন ব্রড। তার পেস আগুনে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা শুরুতেই হারায় উইকেট। চমৎকার ইন সুইংয়ে অভিষিক্ত হেইনো কুনকে (১) স্লিপে ক্যাচ বানান অ্যালিস্টার কুকের হাতে। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে স্বাগতিকরা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল অবশ্য অধিনায়ক ডিন এলগার ও হাশিম আমলার ব্যাটে।

৮১ রানের জুটি গড়ে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত যখন দিচ্ছিলেন তারা, তখনই মঈনের আঘাত। এই স্পিনারের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফেরেন আমলা (২৯)। ফাফ দু প্লেসিস না থাকায় অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া এলগার হয়ে উঠতে পারেননি রুটের মতো। ৫৪ রান করে তিনি ফিরে গেলে ১০০ রানের আগেই প্রোটিয়ারা হারায় ৩ উইকেট। সংখ্যাটা ‘৪’ হতে সময় লাগেনি, যখন ব্রডের দ্বিতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান জেপি দুমিনি (১৫)।

টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংস গড়ে তোলার কাজে লেগে পড়েন তখন তেম্বা বাভুমা ও থেউনিস ডি ব্রুইন। চমৎকার ব্যাটিংয়ে একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে যান তারা দলের স্কোর। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তাদের ৯৯ রান সফরকারীদের দিনের শেষভাগটা রাঙিয়ে নেওয়ার উপলক্ষ করে দিচ্ছিল তৈরি। কিন্তু ক্রিকেট দেবতা যে লিখে রেখেছিলেন অন্য কিছু! সে কারণেই হয়তো দিনের খেলা শেষ হওয়ার তিন ওভার আগে প্রোটিয়ারা হারায় ডি ব্রুইনের উইকেটটি। ৮৫ বলে ৪৮ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে আউট হয়ে যান জেমস অ্যান্ডারসনের বলে।

অন্য প্রান্তে থাকা বাভুমা (৪৮*) নাইটওয়াচম্যান রাবাদাকে (৯*) নিয়ে দিনের বাকি সময়টা দিয়েছেন কাটিয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :

(দ্বিতীয় দিন শেষে)
ইংল্যান্ড : প্রথম ইনিংস ১০৫.৩ ওভারে ৪৫৮ (রুট ১৯০, মঈন ৮৭, ব্রড ৫৭*, স্টোকস ৫৬; মরকেল ৪/১১৫, ফিল্যান্ডার ৩/৬৭, রাবাদা ৩/১২৩)।
দক্ষিণ আফ্রিকা : প্রথম ইনিংস ৬৮ ওভারে ২১৪/৫ (এলগার ৫৪, বাভুমা ৪৮*, ডি ব্রুইন ৪৮, আমলা ২৯; ব্রড ২/২৭)।

বাংলাট্রিবিউন

Posted in Uncategorized | Comments Off on দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে রেখেছে ইংল্যান্ড

নৌকার টিকিট পেতে দৌড়ঝাঁপ, সংঘাতের আশঙ্কা তৃণমূলে

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সমান তালে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের।মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের তরুণ নেতা থেকে শুরু করে প্রবীণ নেতারাও এখন ব্যস্ত জনসম্পৃক্ততা ও এলাকায় জনপ্রিয়তা অর্জনে। প্রায় প্রতিটি আসন থেকেই দুই বা ততোধিক প্রার্থী তৎপরতা শুরু করেছে। ফলে মনোনয়ন দৌড়কে কেন্দ্র করে দলটির তৃণমূল পর্যায়ে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টানা ক্ষমতায় থাকায় এমনিতেই মাঠ পর্যায়ে দলটির নেতাকর্মীদের দাপট বেশি। এমনকি অনেক স্থানে তৈরি হয়েছে একাধিক নেতৃত্বের। এতোদিন এসব চাপানো থাকলেও জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে তৎপরতা বেড়েছে সবার মধ্যেই। আবার শুনা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জোট সম্প্রসারিত হতে পারে। সব মিলিয়ে নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যেই সংঘাতের আশঙ্কা তীব্র হয়ে পড়েছে।

দলটির বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ২০১৯ অনুষ্ঠিতব্য একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যেই একাধিক জরিপ পরিচালনা করেছে। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে গোয়েন্দাদের কাছ থেকেও। এরই মধ্যে একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে পৌঁছেছে।

এসব জরিপে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে আওয়ামী লীগ দলীয় শতাধিক সংসদ সদস্য নিজ নিজ এলাকায় জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। এমনকি বিভিন্ন সময়ে সংবাদমাধ্যমে খারাপ খবরের শিরোনামও হয়েছেন তারা। ক্ষমতাসীন দলটির নীতিনির্ধারণী মহল এসব বিতর্কিত সংসদ সদস্যকে বাদ দিয়ে অপোকৃত তরুণ এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মনোনয়ন দেয়ার চিন্তা করছেন।

অন্যদিকে, নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়নের বিষয়টি ভাবছে আওয়ামী লীগ। তাই যোগ্যতার মাপকাঠি হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে প্রার্থীদের জনসম্পৃক্ততা ও এলাকায় জনপ্রিয়তাকে। এলাকার জনগণের কাছে যার গ্রহণযোগ্যতা বেশি নৌকার টিকিট তার হাতেই যাবে এমন আভাস দিয়ে রেখেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

দল বা এলাকায় যতই প্রভাবশালী হোন না কেন ভোটারদের প্রিয়পাত্র না হলে সে ব্যক্তির মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলটির মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ।

তিনি বলেছেন, জনসম্পৃক্ততা না থাকলে বর্তমান সংসদ সদস্য হলেও মনোনয়নের ক্ষেত্রে পরিবর্তনের ইঙ্গিত রয়েছে।
জানা গেছে, এমন বার্তায় শতাধিক আসনে আওয়ামী লীগের অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রার্থীরা মনোনয়নের লড়াইয়ে নেমেছেন। সাবেক ছাত্রনেতারা এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যাপক হারে বাড়িয়ে দিয়েছেন। একই দৌড়ে সামিল হয়েছেন কোনো কোনো ব্যবসায়ী। মাঠ গোছাতে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলায় জেলায় সফর করছেন। এমপিরাও নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। আবার, বর্তমানে জেলা পর্যায়ে সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন বা দলের জেলা পর্যায়ের সভাপতি হিসেবে আছেন, তারাও মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন। তারা দলীয় মনোনয়ন পেতে এখনই তৃণমূল থেকে হাইকমান্ডে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। সব মিলিয়ে দেশের প্রতিটি এলাকায় মনোনয়ন পাওয়ার আশা করা বিভিন্ন কার্যক্রমের কারণেই সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে অধিকাংশ স্থানে। এক্ষেত্রে ‘জনপ্রিয়তা’র মাপকাটিকেই সমস্যা সমাধানের একমাত্র পন্থা হিসেবে বিবেচনা করছে দল। তাই সংঘাতের আশঙ্কা আরো ঘনীভূত হচ্ছে বলে দলটির সিনিয়র একজন রাজনীতিক মন্তব্য করেছেন।

জমা পড়া গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন না বর্তমান সংসদের অর্ধশত এমপি। কর্মী বিচ্ছিন্ন, উগ্র আচরণ, হাইব্রিড লালন ও লুটপাটে জড়িতদের বদলে খোঁজ হচ্ছে কর্মীবান্ধব, জনসম্পৃক্ত, এলাকায় গ্রহণযোগ্য প্রার্থী। সূত্র মতে, ইতোমধ্যে যেসব গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া গেছে তাতে আগামী নির্বাচনে ৪৩ জেলার ৮৫ আসনে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। যদিও শেষ মুহূর্তে দলীয় প্রার্থিতা অনেকাংশে নির্ভর করে প্রতিপক্ষের প্রার্থী মনোনয়নের ওপর।

দলের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা জানিয়েছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন মাথায় রেখে স্বচ্ছ, পরিচ্ছন্ন ইমেজের প্রার্থী বাছাইয়ে আগে থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এজন্য সরকারি ও দলীয় গোয়েন্দাদের একাধিক টিম কাজ করছে। এসব গোয়েন্দা প্রতিবেদন সরাসরি যাবে দলের হাইকমান্ডের কাছে। ইতোমধ্যে বর্তমান এমপি ও আসনভিত্তিক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আমলনামাভিত্তিক একাধিক প্রতিবেদন জমাও পড়েছে।

এসব প্রতিবেদন অনুসারে, দিনাজপুরের ছয়টি আসনের সবই আওয়ামী লীগের। কিন্তু এখানে সবক’টি আসনেই পরিবর্তনের আভাস রয়েছে কেন্দ্র থেকে। ফলে এখানে মনোনয়ন প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ বেশি। স্বাভাবিকভাবেই সংঘাতের আশঙ্কাটা এখানেই বেশি।

নীলফামারীতে বাদ পড়তে পারেন দুই এমপি। রংপুরে পরিবর্তন হচ্ছে দুটি আসনে। কুড়িগ্রামের চারটি আসনই এখন জাতীয় পার্টির। আগামী নির্বাচনে দুটি আসন নেবে আওয়ামী লীগ। গাইবান্ধায় পরিবর্তন আসতে পারে দুটি আসনে। বগুড়ায় নতুন মুখ আসতে পারে তিনটি আসনে। এসব স্থানে শেষ সময় পর্যন্ত সমীকরণ মেলাবেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।

রাজশাহীতে নতুন মুখ আসতে পারেন দুটি আসনে। নাটোরে বাদ পড়তে যাচ্ছেন একজন। এখানে মন্ত্রীর বিএনপিপন্থী আত্মীয়-স্বজনের কারণে অবস্থান নড়বড়ে। সিরাজগঞ্জের চারটি আসনে পরিবর্তন হতে পারে। মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ায় দুটি আসনে পরিবর্তন হতে পারে। চুয়াডাঙ্গায় বদল হচ্ছে একটি আসন। ঝিনাইদহ জেলায় নতুন প্রার্থী আসতে পারে তিনটি আসনে। যশোরের তিন এমপি’র খুব বেশি পোক্ত নয়। যশোর ও মাগুরায় পরিবর্তন হতে পারে একটি আসনে। খুলনায় নতুন মুখ আসছেন তিনটি আসনে। পিরোজপুর ও সাতক্ষীরায়  দুটি করে আসনে, পটুয়াখালী ও বরিশালে একটি করে আসনে পরিবর্তন আসতে পারে। ঝালকাঠিতে নিশ্চিত পরিবর্তন আসছে একটি আসনে। এসব আসনের অংক মেলানোর দৌড়ে সংঘাত অবশ্যম্ভাবী বলেও দলটির সিনিয়র নেতাদের আশঙ্কা।

জামালপুর ও শেরপুরে পরিবর্তন হচ্ছে একটি করে আসনে। ময়মনসিংহ জেলায় ১১টি আসন, তার চারটিতে জাতীয় পার্টি। সূত্র মতে, এবার জেলায় চারটি আসনে পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। নেত্রকোনার ছয়টি আসনের মধ্যে তিনটিতে নতুন মুখ আসার ইঙ্গিত রয়েছে।

মুন্সীগঞ্জের একটি আসনে পরিবর্তন আসছে নিশ্চিত। ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে ১৬টি আওয়ামী লীগের। জাতীয় পার্টির একটি, ওয়ার্কার্স পার্টির একটি, স্বতন্ত্র একটি ও বিএনএফের একটি। সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের ১৬টির মধ্যে চারটিতে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। গাজীপুর ও নরসিংদীতে বদল হতে পারে দুটি করে আসনে।

নারায়ণগঞ্জের চারটি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের দুটি আর জাতীয় পাটির দুটি। এখানে আগামীতে আরো একটি আসন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে। রাজবাড়ীতে দুটি আসনের একটি পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। শরীয়তপুরে একটি আসনে বদল হচ্ছে। ফেনীতে আলোচিত এমপি নিজাম হাজারী বাদ পড়তে পারেন। নোয়াখালীতে বাদ পড়তে পারেন একজন। চট্টগ্রামে এবার নিশ্চিত বাদ পড়ছেন নানা কারণে আলোচিত নগর থেকে নির্বাচিত এক এমপি। বাদ পড়তে পারেন একজন সাবেক মন্ত্রীও। এ ছাড়া সৌদি কানেকশনের একজন বর্তমান এমপিও বাদ পড়তে পারেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাদ পড়তে পারেন একজন। কুমিল্লায় বাদ পড়ছেন দুইজন। চাঁদপুরে একটি আসনে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। খাগড়াছড়ি আসনে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। এসব আসনে তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে একাধিক নেতা মাঠে নেমেছেন বলে জানা গেছে।

দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সংবিধান মতে সবকিছু ঠিক থাকলে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে অনুযায়ী ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের কাছাকাছি সময়ে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সে হিসেবে পরবর্তী নির্বাচনের এখনো ১ বছর ৯ মাস সময় হাতে রয়েছে। কিন্তু টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর তিন বছর পূর্ণ করেই পরের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ।

Posted in Uncategorized, জতীয় সংসদ, রাজনীতি, সারা দেশ | Comments Off on নৌকার টিকিট পেতে দৌড়ঝাঁপ, সংঘাতের আশঙ্কা তৃণমূলে

নির্বাচকদের ভরসা স্কোরকার্ড আর কোচের প্রতিবেদনে

ডেস্ক রিপোর্ট : এনামুল হক, লিটন দাসরা অস্ট্রেলিয়া গেলেন চোখে স্বপ্নের আবির মেখে। দারুণ কিছু করে ফিরতে চান জাতীয় দলে। হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) দলের আরও অনেকেই চান ভালো করে নির্বাচকদের নজর কাড়তে। নির্বাচকরাও নজর রাখছেন এই সফরে। তবে এই ‘নজর কাড়া’ আর ‘নজর রাখার’ দূরত্ব আপাতত অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশের দূরত্বের সমান। কোনো নির্বাচককেই যে পাঠানো হয়নি অস্ট্রেলিয়ায়!

১৫ দিনের সফরে অস্ট্রেলিয়ায় গেছে বিসিবি এইচপি দল। ডারউইনে খেলবে পাঁচটি একদিনের আর একটি তিন দিনের ম্যাচ। ১৬ সদস্যের দলের সঙ্গে কোচ-সাপোর্ট স্টাফ আছেন, কিন্তু নেই কোনো নির্বাচক। সফরে কোন ক্রিকেটার কেমন করল, সেটি জানার জন্য নির্বাচকদের ভরসা স্কোরকার্ড আর কোচের প্রতিবেদন। নিজের চোখে দেখার উপায় নেই!

কদিন আগে ইংল্যান্ডে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও কোনো নির্বাচক পাঠায়নি বিসিবি। অন্যতম নির্বাচক ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দূত হাবিবুল বাশার কদিনের জন্য গিয়েছিলেন ব্যক্তিগত সফরে।

আইসিসি টুর্নামেন্ট নির্বাচকদের না পাঠানো নিয়ে বোর্ডের একটি ব্যাখ্যা আছে। কিন্তু এবার এইচপি দলের সফরে নির্বাচক না পাঠানো বিস্ময়কর। রোববার সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান যা বললেন, মনে হলো তিনিও বেশ অন্ধকারে আছেন।
“আইসিসি ইভেন্টের বাইরে সবগুলোতেই আমাদের নির্বাচক পাঠানো হয়। আইসিসি ইভেন্টে যেহেতু দল নির্বাচনের কিছু থাকে না, আগে থেকেই সব ফাইনাল থাকে, তাই পাঠানো হয় না।”

“এইচপিতে পাঠাতে পারত। আমাদের সবগুলো বাইরের খেলাতেই আমরা পাঠাই, এটা আমি জানি। এটা একটা ট্রেনিং সফর হিসেবে গেছে বলে হয়ত পাঠানো হয়নি নির্বাচকদের। ওরাই তো দল নির্বচন করে দিয়েছে। সেটা একটা কারণ হতে পারে। আমি ঠিক জানি না, আমি তো আজকেই ফিরলাম (দেশের বাইরে থেকে)।”

বোর্ড প্রধান না জানলেও বোর্ডের অন্য কর্তাদের অনেকে হয়ত জানেন। নাজমুল হাসানের উত্তরের সময়ই বোর্ড পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস পাশ থেকে যোগ করলেন, “এইচপির তো ওখানে ট্রেনিং ক্যাম্প হচ্ছে, কিছু প্রস্তুতি ম্যাচ হচ্ছে। রিপোর্ট পাওয়া যাবে। নির্বাচকদের যাওয়া মনে হয় জরুরি না।”

প্রথমটুকু অবশ্যই ঠিক। এইচপি দলের এই সফর তাদের অনুশীলন প্রক্রিয়ারই অংশ। কিন্তু সত্যিই কি নির্বাচকদের যাওয়া জরুরি নয়? ক্রিকেটাররা তো এই সফরে ভালো খেলে নির্বাচকদের নজর কাড়ার কথা বলেছেনই যাওয়ার আগে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনও অনেক আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে এই সফরে।

“এইচপি দলের এই সফর অবশ্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতের জন্য ভাবনায় থাকা অনেকেই আছে দলে। পাশাপাশি নিকট ভবিষ্যতও আমাদের ভাবনায় আছে। জাতীয় দলে প্রয়োজন হলে এখনই যেন কাউকে নিতে পারি। গতবার যেমন মিরাজকে নিলাম এইচপি থেকেই। আসছে মৌসুমেও কাউকে প্রয়োজন হতে পারে আমাদের। এই সফরে তাই ভালোভাবেই নজর থাকবে আমাদের।”
নির্বাচকদের নজর বেশি থাকবে, এমন দুজনের নাম আলাদা করেই বললেন প্রধান নির্বাচক।

“বিজয় (এনামুল হক) কেমন করে, দেখতে চাই আমরা। বাইরে থাকার সময়ে কতটা উন্নতি করল। লিটনকে গত কিছুদিনে টেস্টেই বেশি বিবেচনা করা হয়েছে। এবার ঢাকা লিগে রান করেছে। সামনে ওয়ানডেতেও বিবেচনা করা হতে পারে। দুজনই ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করেছে। পরের ধাপটা হলো এই এইচপি দলের সফর। এখানেও ভালো করলে জাতীয় দলে ফেরার পথ সহজ হবে।”

কিন্তু ঢাকায় থেকে ডারউইনে এনামুল-লিটনদের খেলা কিভাবে দেখবেন নির্বাচকেরা? মিনহাজুল এবার হাসেন। কোড অড কন্ডাক্টের জন্য প্রধান নির্বাচকের মুখ বন্ধ। হাসিতেই যেন বুঝিয়ে দিতে চাইলেন অসহায়ত্ব।

নিজেদের করণীয়টুকু অবশ্য করে রেখেছেন নির্বাচকরা। এইচপির প্রধান কোচ সাইমন হেলমটকে বুঝিয়ে দিয়ছেন, কোন কোন ব্যাপার দেখতে ও জানতে চান তারা। সফরের পর কোচ প্রতিবেদন দেবেন সেভাবেই।

পরবর্তী সিরিজের দল যখন গঠন করতে বসবেন নির্বাচকেরা, হয়ত এক হাতে থাকবে স্কোরকার্ড, আরেক হাতে কোচের প্রতিবেদন। এইচপির ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স মূল্যায়নে ওই দুটিই ভরসা!

সূত্র : বিডিনিউজ

Posted in Uncategorized | Comments Off on নির্বাচকদের ভরসা স্কোরকার্ড আর কোচের প্রতিবেদনে

‘হঠাৎ শুনি আমরা দুই বোন এতিম হয়ে গেছি’

‘আমি ও রেহানা ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে ৩১ জুলাই জার্মানি পৌঁছাই। এরপর ১৫ দিনের মাথায় হঠাৎ শুনি আমরা দুই বোন এতিম হয়ে গেছি। নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে গেছি।’

বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের এ কে এম শাহজাহান কামালের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ও পরর্বতীতে দেশে ফেরা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শাহজাহান কামাল প্রশ্ন করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসায় প্রবেশে কোনও ধরনের বাধা পেয়েছিলেন কিনা।

দুই বোনের দেশে ফেরার প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনি মোশতাক ও তার দোসর জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড চালায়। এরপর হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। জিয়া নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করেন। আমি ও রেহানা দেশে ফিরতে চাইলে আমাদের বাধা দেওয়া হয়। রেহানার পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে তা জিয়াউর রহমানের নির্দেশে বর্ধিত করা হয়নি। ওই পাসপোর্টও ফেরত দেওয়া হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫-১৯৮১ সাল পর্যন্ত আমাদের বিদেশেই থাকতে হয়। খুনি জিয়া আমাকে ও আমার বোনকে দেশে আসতে দেয়নি। আওয়ামী লীগ আমাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করার পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে আমি দেশে ফিরে আসি। ওই সময় জিয়াউর রহমান আমাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি। দেশের জনগণ ও আওয়ামী লীগের নিবেদিত কর্মী বাহিনী সব বাধা উপেক্ষা করে আমাকে দেশে ফিরিয়ে আনেন।’

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘দেশে ফিরে ধানমান্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে গেলে আমাকে ওই বাড়িতে যেতে দেওয়া হয়নি। বাবা-মা, ভাইয়ের জন্য একটু দোয়া করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। পুলিশি প্রহরা ও গেটে তালা দিয়ে আমার পথ রুদ্ধ করা হয়। আমি রাস্তার উপরই বসে পড়ি এবং আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে মিলাদ ও দোয়া পড়ি। ১৯৮১ সালের ১২ জুন পর্যন্ত ওই বাড়িতে আওয়ামী লীগের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।’

রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সবাই অবাধে চলাচলের অধিকার রয়েছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, ‘দেশে ফেরার পরে আমাকে ৩২ নম্বরের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর ১৯৮১ সালের ১২ জুন হঠাৎ করে ১ ঘণ্টার নোটিশে বাড়িটি আমাকে তাড়াহুড়ো করে হস্তান্তর করা হয়। খুনি, ষড়যন্ত্রকারীরা জনমানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। কাজেই অধিকার ক্ষুণ্নের দিক থেকে আমি ও আমার বোন ব্যতিক্রম ছিলাম না।’

সূত্র : বাংলাট্রি্বিউন।

Posted in Uncategorized, জাতীয়, রাজনীতি, সারা দেশ | Comments Off on ‘হঠাৎ শুনি আমরা দুই বোন এতিম হয়ে গেছি’

শেখ হাসিনা লন্ডনে হামলার নিন্দায় নিম্দা জানিয়েছে

লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলায় নিন্দা জানিয়ে ব্রিটেনের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে নিরপরাধ মানুষের ওপর এই বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা এহেন নির্বোধের ন্যায় কাপুরুষোচিত কাজের কঠোর নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা যুক্তরাজ্যের জনগণের প্রতি সংহতি জানাই।”

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ও যুক্তরাজ্যের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই কঠিন সময়ে শোকাহত পরিবারগুলোর প্রতি আমাদের সহমর্মিতা ও প্রার্থনা রইল।”

শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে লন্ডন ব্রিজে ভিড়ের মধ্যে একটি ভ্যান চালিয়ে দেয় তিন হামলাকারী। এর পরপরই তারা সাদা রঙের ওই ভ্যান থেকে ছুরি হাতে বেরিয়ে আসে এবং কাছের বারা মার্কেট এলাকায় সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালায়। এতে সাতজন নিহত ও ৪৮ জন আহত হয়।

এর আগে গত মার্চে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার সেতুতে পথচারীদের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দিয়ে হামলার ঘটনায় নিহত হয় ৫ জন।

সূত্র : বিডিনিউজ২৪।

Posted in Uncategorized | Comments Off on শেখ হাসিনা লন্ডনে হামলার নিন্দায় নিম্দা জানিয়েছে

আষাঢ় প্রথম দিবস

স্টাফ রিপোর্টার : এবার বর্ষা যেন একটু আগেই জানান দিয়েছে নিজেকে। গরমের দাপটকে দমাতে স্বরূপে আবির্ভূত হয়েছে। বৃষ্টিতো ক’দিন ধরেই হচ্ছে। নদীতে পানি উপচেপড়া। কোথাও বিপৎসীমা ছাড়িয়ে। আকাশেও মেঘের ঘনঘটা। ঝুম ঝুম বৃষ্টি ঝরছে বর্ষার আগাম সংকেত হয়ে।15854
এসো নীপবনে ছায়াবীথিতলে, এসো করো স্নান নবধারাজলে…। আজ পয়লা আষাঢ়। রূপময় ঋতু বর্ষার প্রথম দিন। বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বর্ষা ঋতুর শুরুটা হবে আজ। আনুষ্ঠানিক ঋতু বর্ষার শুরু। বর্ষাকাল চলবে শ্রাবণের শেষ দিনটি পর্যন্ত। বাংলায় আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষা ঋতু।
চিরকালই আষাঢ সাজে নানা রুপে। বৃষ্টিরধারায় নবতর জীবন আসে পুষ্প-বৃক্ষে, পত্রপল্লবে, নতুন প্রাণের সঞ্চার করে প্রকৃতির অবয়বে। নতুন সুরের বার্তা নিয়ে সবুজের সমারোহে আগমন বর্ষার। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে… আসে বৃষ্টিরও সুবাস ও বাতাসও বেয়ে…’ কিংবা ‘ঐ আসে ঐ ঘন গৌরবে নবযৌবন বরষা, শ্যাম গম্ভীর সরসা…’ কিংবা ‘এমনও দিনে তারে বলা যায়, এমনও ঘনঘোর বরষায়…’।
বর্ষার সতেজ বাতাসে জুঁই, কামিনি, বেলি, রজনীগন্ধা, দোলনচাঁপা আরো কত ফুলের সুবাস। লেবু পাতার বনেও যেন অন্য আয়োজন। উপচেপড়া পুকুরে রঙিন হয়ে ফোঁটে পদ্ম, সে কেবলই বর্ষাকে পাওয়ার জন্য। কেয়ার বনেও কেতকীর মাতামাতি। আহা কত না মধুর এই বরষা।
এ সময় জলীয় বাষ্পবাহী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয় বর্ষায়। তাই চারপাশের পরিবেশ বদলে যায়। আসুন আমরা আজ মনটাকে ধুয়ে ফেলি প্রতীকী বর্ষার জলে। ‘বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল’-এর ভুবনভুলানো হাসি মনে ধারণ করি ।
কী গ্রাম, কী নগর সর্বত্রই বর্ষার আগমনী বার্তা দেয় কদম। যেন একই কথার জানান দিতে পেখম মেলে ময়ূর। বৃষ্টির জল গায়ে নিয়ে নৃত্য করে। বর্ষায় প্রকৃতির এমন পরিবর্তনের কথা তুলে ধরে নজরুল লিখেছেন-
রিম্ঝিম্ রিম্ঝিম্ ঘন দেয়া বরষে
কাজরি নাচিয়া চল, পুর-নারী হরষে
কদম তমাল ডালে দোলনা দোলে
কুহু পাপিয়া ময়ূর বোলে,
মনের বনের মুকুল খোলে
নট-শ্যাম সুন্দর মেঘ পরশে…।
বর্ষায় নিজের চিত্তচাঞ্চল্যের কথা জানিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন-
মন মোর মেঘের সঙ্গী,
উড়ে চলে দিগ্ দিগন্তের পানে
নিঃসীম শূন্যে শ্রাবণবর্ষণ সঙ্গীতে
রিমঝিম রিমঝিম রিমঝিম…।
রিমঝিম এ বৃষ্টিতে ভেজার আনন্দে কাটে বাঙালীর শৈশব। স্কুলে যেতে যেতে কিংবা ফেরার পথে দুরন্ত কিশোরী আনন্দে গায়ে মাখে বৃষ্টির ফোটা। তুমুল বৃষ্টিতে গাঁয়ের ছেলেরা নেমে পড়ে ফুটবল নিয়ে। বর্ষার এই রূপ কখনো কি ভোলা যায়? বর্ষার সবই উপভোগ্য। আবার ভারি বর্ষণে, পাহাড়ী ঢলে গ্রামের পর গ্রাম যে ভাসিয়ে নেয় সেও বর্ষা! বন্যাকবলিত নিচু এলাকার মানুষ তাই আতঙ্কে পার করে বর্ষা। একই কারণে সারা বছরের অর্জন ফসল তলিয়ে যায়। শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হয়।
সুখ স্মৃতিগুলো মনে রেখেই প্রতিবছর বর্ষাকে বরণ করে নেয় বাঙালি। বিশেষ করে শহরে নগরে হরেক আয়োজনে চলে বর্ষা বন্দনা। প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীতে আজ বর্ষাবরণে নানা আয়োজন রয়েছে। বর্ষার রাগীনিতে বর্ষাকে বরণ করে নেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলা আজ সকাল থেকেই মেতে উঠবে বর্ষাবরণ উৎসবে।
বর্ষাবরণে আয়োজন করছে সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং গানের দলগুলোও। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আজ ভোর সাতটায় বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে আয়োজন করছে বর্ষা উৎসব। এতে থাকছে দেশের প্রথিতযশা শিল্পীদের সঙ্গীত, নৃত্য, বাঁশি ও শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আয়োজন। আছে বর্ষা সংলাপ। এছাড়াও সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে রয়েছে বর্ষাবরণ উৎসব। কবিতা, গান ও নাচের মাধ্যমে বর্ষাকে বরণ করবেন তারা। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও সারাদিন নানা আয়োজনে গাইবে বর্ষার গান। বর্ষা নিয়ে থাকবে আলোচনা-স্মৃতিচারণ।
দেশের নৃতাত্বিক গোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে বর্ষাকে নিয়ে নানা মিথ। কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায় বর্ষাকে বরণ করে ভিন্ন মাত্রায়। প্রতিবছর তারা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মাসব্যাপী বর্ষাবরণ উৎসবের আয়োজন করে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকেরা এ বর্ষা বরণ উৎসবে যোগ দেয়।
হঠাৎ বর্ষা যেমন আনন্দের, তেমনি হঠাৎ বিষাদে ভরিয়ে তোলারও। বন্যা তার ভয়ংকর রূপটির নাম। তবুও বর্ষা বাঙালী জীবনে নতুনের আবাহন। সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাঙলা মায়ের নবজন্ম এই বর্ষাতেই। বর্ষার ফেলে যাওয়া অফুরন্ত সম্ভাবনার পলিমাটি থেকেই উন্মেষ ঘটে সারা বছরের খাদ্য-শস্য-বীজের।

Posted in Uncategorized | Comments Off on আষাঢ় প্রথম দিবস

শিরোপা জিতে ইতিহাস বার্সার

2968C56500000578-0-image-a-73_1433622410111স্পোর্টস ডেস্ক : নেইমার ও লুইস সুয়ারেজ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের আশা নিয়ে বার্সেলোনায় এসেছেন। বার্লিনের ফাইনালে জুভেন্টাসকে বার্সেলোনা ৩-১ গোলে হারানোয় দুজনের সেই স্বপ্ন পূরণ হলো, ফাইনালে গোল করলেন ব্রাজিল ও উরুগুয়ের তারকা। লিওনেল মেসি গোল না পাওয়ায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জেতা বার্সার কী একটা অপূূর্ণতা থেকে গেলো না! গোল নিয়ে অবশ্য কোনো মাথা ব্যধা থাকার কথা নয়। বার্সেলোনার তিনটি গোলেই অবদান রাখা এই আর্জেন্টাইন তারকাই যে ফাইনালের অলিখিত সেরা খেলোয়াড়। যদিও ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয় করেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা।
2968F50000000578-3113812-image-a-12_1433624677547শনিবার বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ৪ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। প্রথমার্ধ ১-০ থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সমতায় ফেরে জুভেন্টাস। ৫৪ মিনিটে ১-১ গোলে সমতা ফেরায় জুভরা। বার্সা শিবির কিছুটা চাপে। তবে লিওনেল মেসির মতো তারকা যেই দলে থাকে তাদের তো নির্ভারই থাকার কথা। হ্যাঁ, মেসি ফের ঝলক দেখালেন, দলকে এগিয়ে নিলেন। ৬৭ মিনিটে মাঝমাঠ ট্রেডমার্ক দৌড় দেন মেসি। ডি বক্সের ভেতর থেকে জোরালো শট নেন এলএম টেন। দুর্দান্ত দৃঢ়তায় বুফন শট ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বলে লুইস সুয়ারেজের নেয়া বুলেটগতির শট বুফন তো দূরের কথা কোনো গোলরক্ষকের পক্ষেই ঠেকানো সম্ভব নয়।
এর চার মিনিট পর নেইমারের গোল হ্যান্ডবলের কারণে বাতিল করে দেন ম্যাচ রেফারি। ডি বক্সের ভেতরে থেকে দুর্দান্ত হেড করে গোল করেছিলেন নেইমার। তবে বলে মাথা ছোঁয়ানোর আগেই হাতে স্পর্শ লাগে ব্রাজিলিয়ান তারকার। ফলে গোল বাতিল করেন রেফারি।
29685D6200000578-0-image-a-3_1433617547290শনিবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে শুরুতেই ম্যাজিেকের দেখা মিলল। বার্লিনের ফাইনালে চতুর্থ মিনিটে মেসি ঝলকে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। চার মিনিটের মাথায় জুভেন্টােসের ডি বক্সের ভেতর ইনিয়েস্তার সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান পাস খেলেন মেসি। একপর্যায়ে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা ইভান র‌্যাকিটিককে পাস দেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। আলেতা শটে বুফনকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান র‌্যাকিটিক।
প্রথমার্ধ ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে শেষ করে বার্সেলোনা। তবে ব্যবধান আরো বড় হতে পারতো কাতালানদের। ৩৮ ও ৩৯ মিনিটে পরপর দুবার গোল মিস করেন লুইস সুয়ারেজ। ৩৮ মিনিটে সুয়ারেজের নেয়া জোরালো শট বারপোস্টের ওপর দিকে চলে যায়। পরের মিনিটে ফাঁকায় বল পেয়েও গোল করতে পারেননি লিভারপুলের সাবেক তারকা। এবার বল তুলে দেন জুভ গোলরক্ষক বুফনের হাতে।
296895D900000578-0-image-a-51_1433620733497বিরতির এক মিনিট আগে মেসি ঝলকে ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ পেয়েছিল কাতালানরা। মাঝমাঠ থেকে ট্রেডমার্ক দৌড় দিকে পরপর তিনজনকে কাটিয়ে বল নিয়ে জুভেন্টাসের ডি বক্সে ঢুকেন মেসি। তবে বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারায় বল মাঠছাড়া হয়ে গেলে হতাশ হন কাতালান সমর্থকরা। প্রথমার্ধ ১-০ তে শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণের ধারা অব্যাহত রাখে বার্সেলোনা। তবে ৫৪ মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতে গোল করে বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে কালো-সাদার ঢেউ তুলে জুভেন্টাস্। ডি বক্সের ভেতর থেকে তেভেজের নেয়া জোরালো শট দুর্দান্ত দৃঢ়তায় রুখে দেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক টার স্টেগান। তবে ফিরতি বলে আলভেরো মোরাতোর শট আর রুখতে পারেননি তিনি। সেমিফাইনালের দুই লেগের পর ফাইনালেও গোল করে অসাধারণ কীর্গি গড়েন মোরাতা।
৬৭ মিনিটে সুয়ারেজের গোলে বার্সেলোনা এগিয়ে যাওয়ার পর একের পর এক আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমে উঠে। তবে কোনো দলই গোলের দেখা পাচ্ছিল না। ২-১ ব্যবধানে খেলা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় দর্শকরা। তখনই দেখা মিলল ম্যাচের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দৃশ্য। মাঝমাঠের সামান্য ভেতরে বল পান মেসি। মেসি বাড়িয়ে দেন নেইমারকে। নেইমার সামান্য এগিয়ে বদলি খেলোয়াড় পেদ্রো রদ্রিগেজকে বাড়িয়ে দেন। রদ্রিগেজ জুভ ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে নেইমারকে বল ফেরত দেন। বল ফেলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে গোল করার স্বপ্ন পূরণ করতে ভুল করেননি নেইমার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জেতার মধ্য দিয়ে সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে ট্রেবল জয় সম্পন্ন করে লুইস এনরিকের বার্সেলোনা। ইতিহাসের প্রথম ইউরোপিয়ান ক্লাব হিসেবে দুবার ট্রেবল জয়ের রেকর্ড গড়ে কাতালানরা। এর আগে ২০০৯ সালে পেপ গার্দিওলার অধীনে ট্রেবল জয় করেছিল কাতালানরা।
article-3113585-296867F000000578-729_964x3891ম্যাচের ৩-১ গোলের স্কোরলা্ইন দেখে মনে হতে পারে ম্যাচটি হয়তো হেসেখেলেই জিতেছে মেসি-নেইমারের দল। তবে বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইতালিয়ান জায়ান্টদের হারাতে রীতিমতো কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে মেসিদের। তেভেজ ও মোরাতা গোলের সহজ দুটি সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে বার্লিনের ফাইনালের ফলাফলটি অন্যরকম হতে পারতো। তবে বার্সেলোনা সেরা ও শ্রেষ্ঠ দল হিসেবেই শিরোপা জয় করেছে সেটা বার্সাবিরোধী ফুটবল সমর্থকরাও একবাক্যে মেনে নিবেন।

Posted in Uncategorized, খেলাধুলা | Comments Off on শিরোপা জিতে ইতিহাস বার্সার

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মহারণ আজ বার্সার পঞ্চম না জুভেন্টাসের তৃতীয়!

120 122 123 124স্পোর্টস ডেস্ক : দুই দলের সামনেই ইতিহাস গড়ার হাতছানি। ঘরোয়া লিগের ডাবলস জেতা বার্সেলোনা ও জুভেন্টাস ট্রেবল জয় থেকে আর মাত্র একটি জয় দূরে রয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে জুভেন্টাসকে হারাতে পারলে প্রথম ইউরোপিয়ান ক্লাব হিসেবে দুবার ট্রেবল জয়ের রেকর্ড গড়বে মেসি-নেইমারের বার্সেলোনা। আর স্প্যানিশ জায়ান্টদের হারিয়ে বার্লিনের ফাইনাল মাতাতে পারলে প্রথমবারের মতো ট্রেবল জয়ের স্বাদ পাবে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা।
বার্সেলোনা ও জুভেন্টাস যেই জিতুক চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইতিহাস গড়া হবে। এমন সমীকরণ নিয়ে আগামী শনিবার বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা ও জুভেন্টাস। বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে একটায় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে সেরা দল দুটিই উত্তীর্ণ হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বার্সেলোনা ও জুভেন্টাস ঘরোয়া ফুটবলে সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে আধিপত্য বিস্তার করেছে। দুটি দলই ডাবলস জিতে বার্লিনের ফাইনালের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে। বার্সেলোনা লা লিগা ও কোপা ডেল রে এবং জুভেন্টাস সিরি আ ও ইতালিয়ান কাপের শিরোপা জিতে ট্রেবল জয়ের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে।
বার্সেলোনা-সহ মোট সাতটি ইউরোপিয়ান দল ট্রেবল জেতার গৌরব অর্জন করেছে। তবে কোনো দলই দুবার ট্রেবল জিততে পারেনি। বার্সেলোনার সামনে এবার সেই সুযোগ এসেছে। অন্যদিকে প্রথমবারের মতো ট্রেবল জয়ের প্রহর গুনছে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা।
১৯৬৭ সালে স্কটিশ দল সেল্টিক প্রথম দল হিসেবে ট্রেবল জয়ের স্বাদ পায়। পাঁচ বছর পর নেদারল্যান্ডের দল আয়াক্স দ্বিতীয় দল হিসেবে ট্রেবল জয় করে। এরপর ১৯৮৮ সালে দ্বিতীয় ডাচ দল হিসেবে ট্রেবল জয়ের স্বাদ পায় পিএসভি ইন্ডোভেন। ১৯৯৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ট্রেবল জয় করে। এর ১০ বছর পর পেপ গার্দিওলার বার্সেলোনা প্রথম স্প্যানিশ দল হিসেবে ট্রেবল জয় করে। এক বছর পর ট্রেবল জয়ের স্বাদ পায় ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন ইন্টার মিলান। বায়ার্ন মিউনিখ সর্বশেষ দল হিসেবে ২০১২-১৩ মৌসুমে ট্রেবল জয়ের রেকর্ড গড়ে।
প্রথমবারের মতো ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন নিয়ে বার্লিন যাওয়া জুভেন্টাস তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয় থেকে মাত্র একটি জয় দূরে। ১৯৯৬ সালের পর প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জয়ের লক্ষ্য নিয়ে বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে তারা।
বার্সেলোনার শক্তিশালী আক্রমণভাগ ও জুভেন্টাসের দুর্ভেদ্য রক্ষণভাগের মধ্যকার জমজমাট লড়াইয়ের অপেক্ষায় গোটা ফুটবলবিশ্ব। দুর্দান্ত ও অপ্রতিরোধ্য ছন্দে থাকা লিওনেল মেসি, নেইমার ও লুইস সুয়ারেজকে থামানোর জন্য গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফনের পাশাপাশি দুই পরীক্ষিত রক্ষণসেনা বুনোচ্চি, বারজাগলির মতো তারকারা প্রস্তুত রয়েছেন। মিডফিল্ডে জুভেন্টাসের হয়ে ত্রাস ছড়াতে পারেন তরুণ পর পগবা। আবার কার্লোস তেভেজ ও আলভেরো মোরাতারা জেরার্ড পিকে ও সার্জিও বুসেকটসে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি ফেলতে পারেন।
রক্ষণে জুভেন্টাস যতো শক্তিশালীই হোক না কেন শনিবারের ফাইনালে বার্সেলোনাই ফেবারিট হিসেবে মাঠে নামবে। বিশেষ করে লিওনেল মেসির মতো অপ্রতিরোধ্য তারকার উপস্থিতিই কাতালানদের এগিয়ে রাখবে। জুভরা যতো পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নামকু না কেন মেসির এক ঝলকই ম্যাচের ফলাফল পাল্টে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে যেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে জার্মান দানব বায়ার্ন মিউনিখ। কোপা ডেল রে’র ফাইনালে অ্যাথলেটিক মাদ্রিদের বিপক্ষেও মেসি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন যে, তার দিনে কোনো রক্ষণ ও দেয়াল দিয়েও তাকে আটকানো যাবে না।
গত ১০ বছরে চতুর্থবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে শনিবারের ফাইনালে নামতে যাওয়া বার্সেলোনা ফেবারিট হিসেবে মাঠে নামলেও বার্লিনের ফাইনালটি সহজ হবে না বলে জানিয়েছেন বার্সেলোনা কোচ লুইস এনরিক।
লুইস এনরিক বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতলেই আমরা এবার ট্রেবল জয়ের অসাধারণ স্বাদ পাবো, যেটা সবাইকে রোমাঞ্চিত করছে। এটি ক্লাবের ইতিহাসে একবারের বেশি ঘটে না। তবে শনিবারের ফাইনালটি সহজ হবে না। তাদের বেশ কিছু বিশ্বমানের খেলোয়াড় রয়েছে। আশা করি ফাইনালে আন্দ্রে পিরলো বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। কারণ আমরা জানি সেরা ফর্মে থাকলে সে কী করতে পারে।’
এদিকে জুভেন্টাসের জন্য দুঃসংবাদ হলো ফাইনারে তারা রক্ষণভাগের সেরা তারকা জর্জিও কিয়েলানিকে পাচ্ছে না। বুধবার অনুশীলনের সময় ইনজুরিতে পড়া এই ইতালিয়ান ডিফেন্ডার দুই সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেছেন। ফলে মেসি-নেইমার ও সুয়ারেজের আক্রমণ সামলাতে হিমশিম খেতে হতে পারে জুভদের।
মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ (এমএনএস) ত্রয়ীর দুর্দমনীয় পারফরম্যান্সের কল্যাণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোল’তে ইংলিশ জায়ান্ট ম্যান সিটি, কোয়ার্টার ফাইনালে ফরাসি চ্যাম্পিয়ন পিএসজি এবং সেমিফাইনালে জার্মান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখকে নাকানি-চুবানি খাইয়েছে লুইস এনরিকের বার্সেলোনা। এরপর একই কায়দায় কোপা ডেল রে’র ফাইনালে বিলবাওকে উড়িয়ে দিয়েছে কাতালানরা। ফলে কঠিন এক পরীক্ষার মুখে পড়তে যাচ্ছে ম্যাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রির দল।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, করিম বেনজেমা ও গ্যারেথ বেলের মতো তারকাদের রুখে দিয়ে দুই লেগেই রিয়াল মাদ্রিদকে জয়বঞ্চিত করে জুভেন্টাস। শনিবারের ফাইনালেও যদি মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের নিস্ক্রিয় করতে পারে জুভেন্টাসের রক্ষণ ও গোলরক্ষক বুফন তবে ১৯৯৬ সালের পর প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান সেরার মুকুট পেতে পারে তারা।
সম্ভাব্য একাদশ:
বার্সেলোনা: মার্ক টার স্টেগান, হাভিয়ের মাসচেরানো, জেরার্ড পিকে, জর্ডি আলবা, দানি আলভেজ, সার্জিও বুসকেটস, ইভান র‌্যাকিটিক, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও নেইমার।
জুভেন্টাস: জিয়ানলুইজি বুফোন, লিওনার্দো বুনোচ্চি, আন্দ্রে বারজাগলি, স্টেফান লিচেস্টাইরেন, ক্লদিও মার্সিসিও প্যাট্টিক এভরা, পল পগবা, আন্দ্রে পিরলো, আর্তুরো ভিদাল, আলভেরো মোরাতা ও কার্লোস তেভেজ।

Posted in Uncategorized, খেলাধুলা | Comments Off on চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মহারণ আজ বার্সার পঞ্চম না জুভেন্টাসের তৃতীয়!

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud