September 17, 2024
ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট অন ফেসিলিটেশন অফ ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড ইন এশিয়া এন্ড দি প্যাসিফিক চুক্তিতে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর করেছে।
ইউএনএসকাপ-এর সদরদপ্তরে জাতিসংঘের ইকোনমিক এন্ড সোস্যাল কমিশন ফর এশিয়া এন্ড দি প্যাসিফিক (ইউএনএসকাপ)-এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাদেশের পক্ষে থাইল্যান্ড সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশ এ চুক্তিতে প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ। এছাড়া চীন ও কম্বোডিয়া এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ।
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ‘হাইলেভেল ডায়ালগ অন এনহানসিং রিজিওন্যাল ট্রেড থ্রো ইফেকটিভ পার্টিসিপেশন ইন দি ডিজিটাল ইকোনমি’ শীর্ষক ডায়ালগে প্রথম প্যানেলিষ্ট হিসেবে বক্তৃতা করেন।
এসকাপ-এর আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এন্ড এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি ড. শামসাদ আক্তার-এর সভাপতিত্বে ডায়ালগে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন থাইল্যান্ডের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার কিয়েটচাই সোফাসটিনফং, কম্বোডিয়ার কমার্স মিনিস্টার পান সোরাসাক এবং থাইল্যান্ডে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বৈদেশিক বাণিজ্যে সক্ষমতা অর্জনে পেপারলেস ট্রেড সহায়ক ভূমিকা রাখবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালি জাতির স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়তে সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি বাঙ্গালী জাতিকে একটি স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, আজ তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঙ্গালি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি তথা দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করে ভিশন ২০২১ ঘোষণা করেছেন। ২০২১ সালে বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল মধ্য আয়ের দেশ। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিদেশী বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ এখন খুবই আকর্ষনীয়। বর্তমান সরকারের বিনিয়োগ বান্ধব নীতি ও পরিবেশের কারণে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশ এখন একটি বড় বাজার।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, সরকার আইন করে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করেছে। এরফলে বিনিয়োগকারীরা এখন শিল্পে শতভাগ বিনিয়োগ ও বিনিয়োগকৃত অর্থ লাভসহ যে কোন সময় ফেরত নেওয়ার সুবিধা পাচ্ছেন । প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ১শ’টি স্পেশাল ইকনোমিক জোনে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ গত বছরের চেয়ে ৪৪ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, বাণিজ্যে জটিলতা দূর ও দ্রুত কাজ সম্পাদন করতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশের আমদানি রপ্তানি অফিস, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি অফিস, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোসহ গুরুত্বপূর্ণ অফিসগুলোকে অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে।
এছাড়া তিনি ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য ইনফরমেশন পোর্টাল ও গ্লোবাল ট্রেড ডানা চালুসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সব ধরনের কার্যক্রমে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করার বিষয়টি তুলে ধরেন।
মন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় ৩৪.৮৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। এ বছর ৩৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সার্ভিস সেক্টরসহ এ রপ্তানি আয়ের পরিমান হবে ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ ঘোষিত এমডিজি অর্জন করে পুরষ্কার লাভ করেছে। এখন ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করতে সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
পরে তোফায়েল আহমেদ কম্বোডিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে একান্ত বৈঠক করেন। এ সময় থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী ৩০ আগষ্ট শ্রীলংকা যাবেন। সেখানে শ্রীলংকার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এবং বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং এফটিএ সম্পাদন বিষয়ে মতবিনিময় করবেন।
এছাড়া তিনি ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর কলম্বোয় অনুষ্ঠিতব্য ‘সেকেন্ড ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স-২০১৭’-এ যোগদান করে ১ সেপ্টেম্বর মিনিস্টার প্যানেলে বক্তৃতা করবেন।
এতে ২৯টি দেশের প্রতিনিধি অংশ নিবেন। এ কনফারেন্সের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘পিস, প্রোগ্রেস এন্ড প্রোসপারিটি।’
কনফারেন্সে বাণিজ্যমন্ত্রী ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলের দেশসমুহের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও নীতিনির্ধারকদের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করবেন। এতে করে বাংলাদেশের সাথে দেশগুলোর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাসস
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু নিপীড়িত, নির্যাতিত ও মেহনতি মানুষের নেতা ছিলেন।
তিনি বাঙালি জাতির মুক্তি তথা দেশের স্বাধীনতা এবং দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ার জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) শওকত আলীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল, সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা শওকত আলী, মেজর (অব.) রেজাউল করীম রেজা ও ঢাকা মহানগর সভাপতি আমজাদ হোসেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু অন্যায়ের সাথে কোন দিন আপোষ করেননি, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি, সেই দেশি ও বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ রাষ্ট্র পরিচালনা করুক, তা তারা চায়নি। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বিদেশে থাকার কারণে আল্লাহর অসীম রহমতে বেঁচে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য ১৯ বার প্রচেষ্ট চালানো হয়েছিল।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাতির পিতা বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য প্রায় ১২ বছর জেল খেটেছেন। তিনি যা বিশ্বাস করতেন, তাই করতেন।সারা বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
ডেস্ক রিপোর্ট : দুই দফা বন্যায় খাদ্য সঙ্কট এড়াতে সরকার শুল্ক কমিয়ে আনার পর প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হচ্ছে বাংলাদেশে।
চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ৫১ দিনে (১ জুলাই থেকে ২১ অগাস্ট) মোট ৩ লাখ ৫২ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের পুরো সময়ের (১২ মাস) প্রায় তিন গুণ।
সরকারি-বেসরকারি পর্যায় মিলিয়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মোট ১ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছিল।
চলতি অর্থবছরের ৫১ দিনের আমদানির তথ্য হিসাব করে দেখা যায়, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হচ্ছে।
সরকারি গুদামের মজুদ তলানীতে নেমে আসায় এবং দুই দফা বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় দেশের প্রধান খাদ্যপণ্য চাল আমদানিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সরকার।
আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে সরকার নিজে যেমন চাল আমদানি করছে, তেমনি দুই দফায় শুল্ক কমিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির অবাধ সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে পাশের দেশ ভারত থেকে স্থলপথে প্রচুর চাল আসছে।
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, এপ্রিল-জুনের বন্যায় বোরোর পর চলতি অগাস্টের বন্যায় আউশ ও আমনের উৎপাদন বড় ধাক্কা খেয়েছে।
“এ পরিস্থিতিতে আমরা আপৎকালীন সংকট মোকাবিলার জন্য মজুদ বাড়াতে চলতি অর্থবছরে সরকারি পর্যায়ে ১৫ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “দেশে কোনো রকম খাদ্য সঙ্কট নাই। আমাদের গুদামে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যশস্য আছে, বাজারেও পর্যান্ত পরিমাণ খাদ্যশস্য আছে।… আমরা কেবলমাত্র সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য, কোনো রকম সমস্যায় যাতে না পড়তে হয় সেজন্য বিদেশ থেকে চাল আমদানি করছি।”
এপ্রিলের শুরুতে হাওরে আগাম বন্যার কারণে এবার বোরো উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ লাখ টন কম হওয়ায় এবং বাজারে চালের দাম বাড়তে থাকায় গত ২০ জুন আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনে সরকার। সেই সঙ্গে ৩ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়।
কিন্তু তাতে মজুদ পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি না হওয়ায় এবং অগাস্টের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় দফা বন্যা দেখা দেওয়ায় চালের আমদানি শুল্ক দ্বিতীয় দফায় কমিয়ে ১০ শতাংশ থেকে ২ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দৈনিক খাদ্য মজুদ পরিস্থিতির তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২১ অগাস্ট পর্যন্ত সরকারের গুদামগুলোতে ৩ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে। গত বছরের এই দিনে চালের মজুদ ছিল ৭ লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন।
গত ২১ অগাস্ট পর্যন্ত যে ৩ লাখ ৫১ হাজার ৩৯ টন চাল আমদানি হয়েছে, তার মধ্যে বেসরকারি পর্যায়ে এসেছে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৮১ মেট্রিক টন। আর সরকারি পর্যায়ে ৮৩ হাজার ৫৮ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে।
আমদানির পর ভর করে সরকারি গুদামের খাদ্য মজুদ জুলাইয়ের ১ দশমিক ২৩ লাখ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে তিন লাখের উপরে উঠলেও বাজারে চালের দাম কমেনি।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, বুধবারও ঢাকার বাজারে মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ৪৩ থেকে ৪৫ টাকায়। আর ভালো মানের চাল চাইলে কেজিতে ৫৮ টাকা পর্যন্ত গুণতে হচ্ছে।
টিসিবির হিসাবে, গত এক মাসে মোটা চালের দাম কেজিতে এক টাকার বেশি বেড়েছে। আর এক বছরে বেড়েছে প্রায় ২৮ টাকা।
অবশ্য খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম মনে করছেন, চালের দাম এখনও মানুষের নাগালের মধ্যেই রয়েছে এবং দাম খুব একটা কমার সম্ভাবনাও তিনি দেখছেন না।
গত ১৮ অগাস্ট তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ট্যাক্স কমানোর ফলে বাজারে চালের দাম অবশ্যই আরও কমবে। বাজারে চালের দাম খুব একটা বেশি নাই, এখন একটা স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। সবার কাছে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আছে, এখন বাজারে দাম বেশি না।”
তবে অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর মনে করছেন, সরকার শুল্ক কমানোর উদ্যোগ আরও আগে নিলে বাজারে চালের দাম এতটা বাড়ত না।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সরকারের চাল আমদানির শুল্ক অনেক আগেই কমানো উচিৎ ছিল। তাহলে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি বাড়ত। আর সরবরাহ বাড়লে দামও সহনীয় থাকত।”
তিনি বলেন, “এখন যে করেই হোক সরকারি মজুদ বাড়াতে হবে। একবার যে ভুল হয়ে গেছে সেটা যেন আর না হয়। বর্তমানের আড়াই-তিন লাখ টন মজুদ একেবারেই নগন্য। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গরীব মানুষকে এই মজুদ থেকেই খাদ্য দিতে হবে।বিবেচনায় রাখতে হবে, একজন মানুষও যেন খাদ্যের অভাবে মারা না যায়।” বিডিনিউজ২৪
ডেস্ক রিপোর্ট : ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন অর্থমন্ত্রী-
বিলম্ব হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থের পুরোটাই ফেরত পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি এগিয়ে নেয়া হচ্ছে বিধায় এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আপাতত প্রকাশ করবে না সরকার। বন্যা ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে যেসব অঞ্চলে রাস্তাঘাট খারাপ হয়ে গেছে তা মেরামতে প্রয়োজনে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়া হবে। এছাড়া সঙ্কট মেটাতে দেড় লাখ টন চাল ও গম আমদানি করার অনুমতি দিয়েছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে ১ লাখ মেট্রিক টন গম এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি চাল।
বুধবার সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ওই সময় তিনি আরও বলেন, রিজার্ভ চুরির সব টাকা যাতে ফেরত পাওয়া যায় সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে টাকার একটি অংশ ফেরত এসেছে, এখন পুরো টাকা ফেরত আনার কার্যক্রম চলছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রাখা বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। তবে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে মার্চের শুরুতে। পরে ১৫ মার্চ এ ঘটনায় রাজধানীর মতিঝিল থানায় মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) যাওয়া টাকার একটি বড় অংশ পরে ফিলিপিন্সের একটি জুয়ার টেবিলে চলে যায়।
এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার। শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশিরভাগটাই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।
চুরি হয়ে ফিলিপিন্সে চলে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি ডলার ইতোমধ্যে ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাকি প্রায় সাড়ে ৬ কোটি ডলার ফেরতের বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে আলোচিত এই ঘটনায় সমালোচনার মুখে গবর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন ড. আতিউর রহমান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে আনা হয় বড় ধরনের রদবদল। গত বছরের মার্চ মাসে সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি, যার প্রধান করা হয় সাবেক গবর্নর ফরাসউদ্দিনকে।
এদিকে, গত ডিসেম্বর মাসে রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ দ্রুত উদ্ধারে সহায়তার জন্য হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত থেকে চুরির সবচেয়ে বড় এই ঘটনায় বাংলাদেশের তদন্ত প্রতিবেদন চায় ফিলিপিন্স সরকার। তবে রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়ার অনুরোধ নাকচ করে দিয়ে অর্থমন্ত্রী ওই সময় জানিয়েছিলেন, ফিলিপিন্স কর্তৃপক্ষকে এটি দেয়া হবে না। রিজার্ভ চুরির পর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই এ প্রতিবেদন তাদের দেয়া হবে না। এটি অন্যদের দিতে সরকার বাধ্য নয়। এটা কাউকেই দেয়া হবে না। বরং চুরির টাকা উদ্ধারে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ (এপিজি) বাংলাদেশের পক্ষে আইনী লড়াই করবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে কয়েক দফা উদ্যোগ নিলেও দেশটির পক্ষ থেকে কোন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
দেড় লাখ টন চাল গম আমদানি
আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে দেড় লাখ টন চাল ও গম কিনতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে ১ লাখ মেট্রিক টন গম এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি চাল। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্যাকেজ-২ এর আওতায় পৃথক তিনটি প্রস্তাবনায় এ চাল-গম আমদানি করা হবে। সচিবালয়ে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত পৃথক ৩টি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রতি মেট্রিক টন ২৫১ মার্কিন ডলার হিসেবে এতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ১০৪ কোটি টাকা। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির পৃথক আরেকটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৪১১ দশমিক ১১ মার্কিন ডলার হিসেবে এতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ১৭০ কোটি ৮৯ লাখ ৬ হাজার টাকা। এটি সরবরাহের কাজ পেয়েছে দুবাইয়ের একটি কোম্পানি। এছাড়া বৈঠকে আরও ১৮টি প্রস্তাবনা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তিনটি পৃথক কোটেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে ৯০ হাজার টন এমপিও সার আমদানির তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি ৩০ হাজার টন সার আমদানিতে সরকারের ব্যয় হবে ৫৮ কোটি ১২ লাখ ৫১ হাজার টাকা
ভারত থেকে আনা হবে ২২ হাজার টন ডিজেল
ভারতের শিলিগুড়ি থেকে ২২ হাজার টন ডিজেল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইন্দোবাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেডের শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে পার্বতীপুর ডিপোতে রেলপথে ট্যাংক ওয়াগনের মাধ্যমে ৫০০ পিপিএম মানমাত্রার এ ডিজেল আমদানি করা হবে। এতে সরকারের ব্যয় হবে ৮৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এসওপি অনুযায়ী এনআরএল থেকে ৫০০ পিপিএম মানমাত্রার ২২০০০ টন ডিজেল আমদানির ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম ৫ দশমিক ৫ ডলার করার সুপারিশ করেছে বিপিসি।
এর আগে ২০১৬ সালে বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ রেলপথে ট্যাংক ওয়াগনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২২৬৮ টন ডিজেল আমদানি করা হয়।
ডেস্ক রিপোর্ট : মানুষের প্রতি দিনের খাবার তালিকায় যেসব পণ্য থাকে তার বেশিরভাগেরই দাম বেড়েছে; নিত্যপণ্যের এই বাড়তি দামে অসন্তোষ জানিয়েছেন ভোক্তারা।
বিক্রেতেরা বলছেন, বন্যার প্রভাবে বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে। ডিম ও পেঁয়াজের সঙ্গে কিছুটা বেড়েছে চালের দাম। আর বন্যার পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কাঁচা মরিচের ঝাল।
শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার এবং চালের পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ার এই চিত্র দেখা যায়।
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে এক কেজি সবজি ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত ব্যবধানে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বন্যার প্রভাবে সবজির দাম বেড়েছে বলছেন বিক্রেতারা।
মহাখালী কাঁচাবাজারে শুক্রবার প্রতি কেজি কাকরোল ৫০ টাকা, ঢ়েঁড়স ৪০ টাকা, সিম ১৪০ টাকা, ছোট আকারের করলা ৬০ টাকা, বড় করলা ৮০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা এবং পেঁয়াজ ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
এই বাজারে এক ডজন ডিম ৯৫ টাকায় বিক্রি হলেও কয়েকটি বাজারে এক ডজন ডিম ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
মহাখালী কাঁচা বাজারের বিক্রেতা বাবলু মিয়া বলেন, কয়েক দিন ধরেই সবজির দাম চড়া। বন্যার কারণে দাম বাড়ছে, দাম আরও বাড়তে পারে।
পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেশি হওয়ায় খুচরায়ও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান এই বিক্রেতা।
শুক্রবার কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি ঢ়েঁড়স ৪০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা টাকা, কাকরোল ৪০, কচুরমুখী ৩০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, চিচিংগা ৪০ টাকা, দেশি রসুন ১০০ থেকে ১১০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১২০ টাকা এবং আলু ১৬ থেকে ২২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি মার্কেটে এক পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্য বাজারগুলোতে শুক্রবার এক পাল্লা পেঁয়াজ ২৫০ টাকা থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হয়।
এ বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিউল বলেন, “গতকালও সবজির দাম বেশি ছিল। আজ (শুক্রবার) কয়েকটি সবজির দাম একটু কমলেও অন্যগুলোর দাম চড়া।”
মিরপুর-১ নম্বর কাঁচা বাজারে প্রতিকেজি ঢ়েঁড়স ৫০ টকা, পটল ৪৫ টাকা, কাকরোল ৬০, কচুরমুখী ৫০ টাকা, শসা ৫২ টাকা, পেঁপে ৩৫ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, চিচিংগা ৬০ টাকা এবং আলু ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
মিরপুরের এই বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৩০ টাকা থেকে দেড়শ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
সবজিসহ নিত্যপণ্যের জিনিসের দাম বেশি হওয়ায় ক্ষোভ ঝড়েছে কলেজ শিক্ষার্থী মাসুদুল হকের কণ্ঠে।
“বাড়ি থেকে মাসের যে খরচ পাই, তার বেশিরভাগই যাচ্ছে খাওয়ার পেছনে। জিনিসপত্রের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে মাস পার করাই সমস্যা হয়ে পড়বে।”
মেরুল বাড্ডার এনজিও কর্মকর্তা মোস্তফা ফিরোজ বলেন, “জিনিসপত্রের দাম নিয়ে কারো মাথাব্যথা নাই। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে অবশ্যই নজর দেওয় উচিত।”
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রতুল কুমার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এই জেলায় তিন হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। বন্যার পানি উঠেছে ১২৮ হেক্টর জমিতে। এতে করে দেড় হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বগুড়ার মতো বেশ কয়েকটি জেলায় ফসলের পাশাপাশি সবজি খেত বন্যায় পানিতে তলিয়ে গেছে বলে কৃষি সম্প্রসারণের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বন্যার প্রভাবে পাইকারি বাজারে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। খুচরা বাজারগুলোতে চালের দামেও ভিন্নতা দেখা গেছে।
মহাখালী বাজারে শুক্রবার ৫০ কেজির এক বস্তা মিনিকেট চাল ২৭০০ থেকে ২৮৫০ টাকা, নাজিরশাইল ২৭৫০ থেকে ৩০০০ টাকা, আটাশ ২৫০০ থেকে ২৬০০ টাকা এবং মোটা স্বর্ণা চালের বস্তা ২৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মহাখালীর শিমু ট্রেডার্সের চাল বিক্রেতা মোতালেব ভূঁইয়া বলেন, “চালের যোগান ঠিক থাকলেও বন্যার কারণে প্রতি বস্তা চালের দাম কিছুটা বেড়েছে।
“ভারত থেকে আমদানি হওয়া গুটি ও স্বর্ণা চাল লোকজন কিনতে চায় না। কারণ ওই চাল সিদ্ধ হতেই দুই ঘণ্টা সময় লাগে। আর ওই চালের ভাত খেতেও বেশি তরকারি লাগে।”
ভারতের গুটি ও স্বর্ণা চালের ৫০ কেজি ওজনের বস্তা ২৩০০ থেকে ২৩৫০ টাকায় বিক্রি হয় বলেও জানান মোতালেব।
বাবু বাজারের বসুন্ধরা রাইস এজেন্সির ম্যানেজার বাবুল মিয়া জানান, বেশ কিছুদিন ধরে একই দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে।
তিনি জানান, মিনিকেট ২৫০০ থেকে ২৭০০ টাকা; স্বর্ণা, গুটি ও পাইজাম চাল ২০০০ থেকে ২০৫০ টাকা এবং নাজিরশাইল ২৭০০ থেকে ২৮৫০ টাকা, মিনিকেট ২৮০০ থেকে ২৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারগুলোতে ধরণভেদে মিনিকেট চাল ৫৪ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
উত্তর বাড্ডার মেসার্স সাতারকুল রাইস এজেন্সির ম্যানেজার বিপ্লব হোসেন শুক্রবার বলেন, “গত ১৫ দিনে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক থেকে দেড় টাকা করে বেড়েছে। মৌসুম শেষ হওয়ায় বেড়েছে নাজিরশাইল চালের দামও।”
মোটা চালের কাম কিছুটা কমেছে জানিয়ে বিপ্লব বলেন, বুসরা মিলের মিনিকেট চাল ২৫৫০ টাকা বস্তায় পাওয়া যাচ্ছে। আর রশিদের মিনিকেট ২৬৩০ টাকা এবং ডায়মন্ড মিনিকেটের দাম ২৮৫০ টাকা।
এছাড়া বিআর-২৮ ২৩৫০ টাকা, পাইজাম ২১০০ থেকে ২১৫০ টাকা এবং স্বর্ণা চালের বস্তা ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এই চাল বিক্রেতা।
খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের তথ্যানুযায়ী, নাজিরশাইল চাল পাইকারিতে ৫১ থেকে ৫৬ টাকা এবং খুচরায় ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বিআর-২৮ ও পারিজা পাইকারিতে ৪৪ থেকে ৪৭ টাকা ও খুচরায় ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা এবং গুলি ও স্বর্ণা চাল পাইকারিতে ৪০ থেকে ৪২ টাকা ও খুচরায় ৪৩ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ও মিনিকেট ৫২ থেকে ৫৮ টাকা এবং স্বর্ণা চাল ৪৩ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার তথ্য জানিয়েছে টিসিবি।
ডেস্ক রিপোর্ট : চাল আমদানিতে শুল্কহার কমানোর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে রাজধানীর পাইকারি বাজারে। নাজিরশাইল বাদে প্রায় সবধরনের চালের দাম কেজিতে ১-২ টাকা কমেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে আমদানি শুল্ক কমানোর সুফল পেতে আমদানিকারকদের উপর নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ পাইকারদের। তবে ঈদ সামনে রেখে উর্ধ্বমুখী জিরা ও এলাচের দাম।
টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পর থেকেই উধ্বর্মুখী হয় রাজধানীর চালের বাজার। এ পরিস্থিতিতে অস্থিতিশীল বাজার নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ লক্ষ্যে চাল আমদানিতে শুল্কহার দু’দফা কমিয়ে ২ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেলো, শুল্ক কমানোয় দীর্ঘদিন পর নিম্মমুখী মিনিকেট, আটাশ ও গুটিস্বণা’সহ অন্যান্য চালের দাম। তবে পাইকারদের অভিযোগ সরকার শুল্কহার কমালেও অবৈধ মজুদের কারণে এর সুফল পান না সাধারণ মানুষ।
এদিকে, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৭-৮ কমলেও প্রভাব পড়েনি রাজধানীর পাইকারি বাজারে। তবে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে আদা ও রসুনের দাম।
অন্যদিকে, ঈদের কারণে মসলার বাজারে বেড়েছে জিরা, এলাচের দাম। এলাচ কেজিতে ১৫০ টাকা বেড়ে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৪শ’ থেকে ১৮শ’ টাকায়।
স্থিতিশীল আছে ডাল ও তেলের দাম। দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৯০-৯৫ টাকায়, আমদানি করা মোটা মসুর ৫৩ থেকে ৫৮ টাকায়। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৩-৫৫ টাকায়। সময়টিভি অনলাইন
ডেস্ক রিপোর্ট : গেল অর্থবছর পণ্য বাণিজ্যে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৯ বিলিয়ন ডলার, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত বলছেন, অর্থবছরের শেষ দিকে রপ্তানি আয়ের চেয়ে আমদানি ব্যয় বেশি বাড়ায় এই ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশ মোট চার হাজার ৩৪৯ কোটি ১০ লাখ ডলার ব্যয় করেছে।
এই সময়ে বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশের আয় হয়েছে তিন হাজার ৪০১ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
এই হিসাবে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৯৪৭ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৪৭ শতাংশ বেশি।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৬৪৬ কোটি ডলার।
এর আগে ২০১০-১১ অর্থবছরে পণ্য বাণিজ্যে বাংলাদেশের ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৯৯৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার; সেটাই দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বাণিজ্য ঘাটতি।
গত অর্থবছরে আমদানি ব্যয় বেড়েছে ৯ শতাংশ। রপ্তানি আয় বেড়েছে ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত বলেন, জ্বালানি তেল এবং খাদ্যপণ্যের দাম কম থাকায় ২০১৫-১৬ অর্থবছর এবং তার আগের দুই অর্থবছরে আমদানি ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম ছিল। অন্যদিকে রপ্তানি আয় সে সময় বাড়ছিল বলে বাণিজ্য ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে ছিল।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি তেলের দাম ৫৫ থেকে ৬০ ডলারে ওঠানামা করায় এবং বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি।
সেবা খাতে ঘাটতি ৩.২৮ বিলয়ন ডলার ঘাটতি বেড়েছে সেবা খাতেও। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সেবা বাণিজ্যে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ২৭০ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
মূলত বীমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য পরিমাপ করা হয়।
বেড়েছে এফডিআই
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গত অর্থবছরে মোট ২৯৮ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) পেয়েছে
বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি।
এর মধ্যে নিট এফডিআই এসেছে ১৭০ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আগের বছরে এসেছিল ১২৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
এ হিসাবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিট এফডিআই প্রবাহ বেড়েছে ৩৩ শতাংশ।
বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে মোট যে এফডিআই আসে তা থেকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুনাফার অর্থ নিয়ে যাওয়ার পর যে অর্থ অবশিষ্ট থাকে তাকেই নিট এফডিআই বলা হয়। বিডিনিউজ২৪
ডেস্ক রিপোর্ট : সাংবাদিকদের জন্য নতুন কোনো বেতন কাঠামোর প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের যে বিদ্যমান বেতন কাঠামো আছে, যে পাঁচটি বেতন স্তর আছে, তা প্রায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পে-স্কেলের সমান। কাজেই সাংবাদিকদের জন্য নতুন করে আর বেতন কাঠানোর প্রয়োজন নেই।’ মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ অমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা থেকে যত পত্রিকা প্রকাশিত হয়, এরমধ্যে দশ/বারোটি ছাড়া অল আর রাবিশ, বোগাস। এসব পত্রিকায় কোনো সাংবাদিক নেই। এসব পত্রিকা বিনা শুল্কে কাগজ তোলে, সরকারের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নেয়। এসব পত্রিকার জন্য ওয়েজবোর্ড দেব?’
এ সময় অর্থমন্ত্রীকে সাংবাদিকরা বলেন, ‘আপনাকে ভুল বোঝানো হয়েছে। বেসরকারি টেলিভিশন ওয়েজবোর্ডের আওতায় নয়, এখানে কোনো বেতন কাঠামো নেই। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের এই বক্তব্য ঠিক নয়। সব সমান। সবার জন্যই ওয়েজবোর্ড আছে।’ তখন সাংবাদিকরা বলেন, ‘স্যার আপনাকে ভুল বোঝানো হয়েছে।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নোয়াব নেতারা অর্থমন্ত্রীকে সাংবাদিকদের বেতন কাঠামোর যে ৫টি ধাপ দেখিয়েছেন, সেখানে সর্বনিম্ন বেতন দেখানো হয়েছে ১৮ হাজার ৫০০টাকা। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেখেছি, আপনাদের সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো আর সরকারি কর্মচারীদের সর্বনিম্ন বেতন স্কেলও প্রায় সমান।’
এ সময় সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে একজন শিক্ষানবিস সাংবাদিক মাত্র ‘৮ হাজার টাকায় টেলিভিশনে কাজ করেন।’ জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা সত্য নয়।’
ঢাকা শহরে দশ/বারোটার বাইরে থাকা সব পত্রিকাকে বোগাস বলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা বলেন, ‘বোগাস পত্রিকাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন?’ জবাবে অর্থন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি।’
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিকদের বেতন কাঠামো সমান নয় উল্লেখ করে সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনাকে ভুল বোঝানো হয়েছে। আপনি সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বসুন।’ এ সময় তিনি বলেন, ‘আপনাদের এত সংগঠন, আমি কার সঙ্গে বসব।’
জবাবে সাংবাদিকরা বলেন, ‘ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), জাতীয় প্রেসক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)Ñএই চার সংগঠনের সভাপতি ও সাংবাদিক সম্পাদকের সঙ্গে বসুন।’ সাংবাদিকদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘দেখি, আমি বসব।’
নোয়াবের সঙ্গে বৈঠক বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এই মিটিংয়ে আমরা তাদের কথা শুনেছি। কোনও সিদ্ধান্ত নেইনি। আমরা সরকারের লোকজনের সঙ্গে পরে বসব। তারপর সিদ্ধান্ত নেব।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, নোয়াবের সভাপতি প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকাল প্রকাশক এ কে আজাদ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মর্তুজা আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, ডিএফপির মহাপরিচালক ইসতাক আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। আমাদের সময় ডটকম
ডেস্ক রিপোর্ট : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, পরিকল্পনা মাফিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করে সুষম উন্নয়ন করা হবে। প্রাকৃতিক গ্যাস ক্রম হ্রাসমান হলেও বিকল্প জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। গভীর-অগভীর সমুদ্রে এবং স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ জোরদার করা হয়েছে।
তিনি গতকাল সোনারগাঁও হোটেলে গ্যাস সেক্টর মাস্টার প্ল্যানের খসড়া উপস্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে। এতে চাহিদা, সরবরাহ এবং সম্ভাব্য প্রাপ্তির উৎস, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, ক্লিন এনার্জি বা বৈশ্বিক অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত বলা আছে। এটিকে ম্যাগনাকার্টা উল্লেখ করে তিনি বলেন, খাতভিত্তিক গ্যাসের চাহিদা নিরূপণ করে গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হবে।
ইকিউএমএস কনসাল্টিং লিমিটেডের সহায়তায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ডেনমার্কের র্যাম্বল কোম্পানি, ডেনমার্কের ভূতত্ব জরিপ অধিদপ্তর এ মাস্টার প্ল্যান করছে। এখানে চাহিদা ও সরবরাহ বিশ্লেষণ, সাশ্রয়ী মূল্যে গ্যাস সরবরাহের উপায়, সঞ্চালন অবকাঠামো নির্মাণ পরিকল্পনা ও আইনগত রীতি-নীতি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডেনমার্কের রাষ্ট্র্রদূত মিকায়েল উইন্থার, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনশুর মো. ফয়জুল্লাহ ও র্যাম্বল কোম্পানির পরিচালক সোরেন লভস্ট্যাড ক্রিসটেনসেন বক্তব্য রাখেন। বাসস
ডেস্ক রিপোর্ট : জামদানির পর এবার ইলিশের ভৌগলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন বা জিআই) স্বত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ। এখন শুধু সনদ হস্তান্তরের অপেক্ষা। চলতি মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে মৎস্য অধিদফতরের হাতে ইলিশের জিআই নিবন্ধনের সনদ তুলে দেওয়ার আশা করছেন পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর বলছে, জিআই পণ্য হিসেবে ইলিশ নিবন্ধনের যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ। এখন সনদ হাতে পাওয়ার অপেক্ষা।
তবে স্বত্ব পাওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও অবহিত নয় শিল্প মন্ত্রণালয়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা আবদুল জলিল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা এখনও অবহিত নই। বিষয়টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে শিল্প মন্ত্রণালয়কে কেউ জানায়নি।’
তবে এ মেধাস্বত্ব পাওয়ার বিষয়ে দীর্ঘদিন থেকে যে প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে তা উল্লেখ করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব বিষয়ক সংস্থা ‘ওয়াইপিও’র শর্ত মেনেই বাংলাদেশে ইলিশের জন্ম ও বিস্তারসহ যাবতীয় তথ্যপ্রমাণাদি পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর তথ্যপ্রমাণাদি যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ শেষে চলতি বছরের ১ জুন নিজস্ব জার্নালে ৪৯ পৃষ্ঠার একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদফতর। আশঙ্কা ছিল, প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার ইলিশের জিআই নিবন্ধনের ব্যাপারে আপত্তি জানাতে পারে। কিন্তু নিবন্ধন প্রকাশের দু’মাস পেরিয়ে গেলেও এ দুই দেশ আপত্তি তোলেনি বলে জানা গেছে।
এর আগে ব্যাপক চাহিদা থাকায় ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিকভাবে ইলিশের একক মালিকানা পাওয়ার লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জিআই নিবন্ধনের আবেদন করে মৎস্য অধিদফতর।
পেটেন্ট ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্কস অধিদফতরের রেজিস্ট্রার সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘জার্নাল প্রকাশের দুই মাস অপেক্ষা করাটা বাধ্যতামূলক। সেই দুই মাস ৩১ জুলাই শেষ হয়েছে। আমরা কোনও আপত্তি পাইনি। সুতরাং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা বাংলাদেশের ইলিশের নিবন্ধন দিতে যাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর ইলিশ বিপণনের ক্ষেত্রে স্বত্ব দিতে হবে বাংলাদেশকে। এর ফলে বর্তমানের তুলনায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি দাম পাবেন জেলেরা।
বাংলাট্রিবিউন