পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

নিত্যপণ্যের বাজার চড়া

Posted on August 19, 2017 | in ব্যবসা-অর্থনীতি | by

ডেস্ক রিপোর্ট : মানুষের প্রতি দিনের খাবার তালিকায় যেসব পণ্য থাকে তার বেশিরভাগেরই দাম বেড়েছে; নিত্যপণ্যের এই বাড়তি দামে অসন্তোষ জানিয়েছেন ভোক্তারা।

বিক্রেতেরা বলছেন, বন্যার প্রভাবে বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে। ডিম ও পেঁয়াজের সঙ্গে কিছুটা বেড়েছে চালের দাম। আর বন্যার পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কাঁচা মরিচের ঝাল।

শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার এবং চালের পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ার এই চিত্র দেখা যায়।

রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে এক কেজি সবজি ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত ব্যবধানে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বন্যার প্রভাবে সবজির দাম বেড়েছে বলছেন বিক্রেতারা।

মহাখালী কাঁচাবাজারে ‍শুক্রবার প্রতি কেজি কাকরোল ৫০ টাকা, ঢ়েঁড়স ৪০ টাকা, সিম ১৪০ টাকা, ছোট আকারের করলা ৬০ টাকা, বড় করলা ৮০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা এবং পেঁয়াজ ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

এই বাজারে এক ডজন ডিম ৯৫ টাকায় বিক্রি হলেও কয়েকটি বাজারে এক ডজন ডিম ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

মহাখালী কাঁচা বাজারের বিক্রেতা বাবলু মিয়া বলেন, কয়েক দিন ধরেই সবজির দাম চড়া। বন্যার কারণে দাম বাড়ছে, দাম আরও বাড়তে পারে।

পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেশি হওয়ায় খুচরায়ও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান এই বিক্রেতা।

শুক্রবার কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি ঢ়েঁড়স ৪০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা টাকা, কাকরোল ৪০, কচুরমুখী ৩০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, চিচিংগা ৪০ টাকা, দেশি রসুন ১০০ থেকে ১১০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১২০ টাকা এবং আলু ১৬ থেকে ২২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি মার্কেটে এক পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্য বাজারগুলোতে শুক্রবার এক পাল্লা পেঁয়াজ ২৫০ টাকা থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হয়।

এ বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিউল বলেন, “গতকালও সবজির দাম বেশি ছিল। আজ (শুক্রবার) কয়েকটি সবজির দাম একটু কমলেও অন্যগুলোর দাম চড়া।”

মিরপুর-১ নম্বর কাঁচা বাজারে প্রতিকেজি ঢ়েঁড়স ৫০ টকা, পটল ৪৫ টাকা, কাকরোল ৬০, কচুরমুখী ৫০ টাকা, শসা ৫২ টাকা, পেঁপে ৩৫ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, চিচিংগা ৬০ টাকা এবং আলু ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

মিরপুরের এই বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৩০ টাকা থেকে দেড়শ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

সবজিসহ নিত্যপণ্যের জিনিসের দাম বেশি হওয়ায় ক্ষোভ ঝড়েছে কলেজ শিক্ষার্থী মাসুদুল হকের কণ্ঠে।

“বাড়ি থেকে মাসের যে খরচ পাই, তার বেশিরভাগই যাচ্ছে খাওয়ার পেছনে। জিনিসপত্রের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে মাস পার করাই সমস্যা হয়ে পড়বে।”

মেরুল বাড্ডার এনজিও কর্মকর্তা মোস্তফা ফিরোজ বলেন, “জিনিসপত্রের দাম নিয়ে কারো মাথাব্যথা নাই। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে অবশ্যই নজর দেওয় উচিত।”

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রতুল কুমার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এই জেলায় তিন হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। বন্যার পানি উঠেছে ১২৮ হেক্টর জমিতে। এতে করে দেড় হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বগুড়ার মতো বেশ কয়েকটি জেলায় ফসলের পাশাপাশি সবজি খেত বন্যায় পানিতে তলিয়ে গেছে বলে কৃষি সম্প্রসারণের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বন্যার প্রভাবে পাইকারি বাজারে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। খুচরা বাজারগুলোতে চালের দামেও ভিন্নতা দেখা গেছে।

মহাখালী বাজারে শুক্রবার ৫০ কেজির এক বস্তা মিনিকেট চাল ২৭০০ থেকে ২৮৫০ টাকা, নাজিরশাইল ২৭৫০ থেকে ৩০০০ টাকা, আটাশ ২৫০০ থেকে ২৬০০ টাকা এবং মোটা স্বর্ণা চালের বস্তা ২৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মহাখালীর শিমু ট্রেডার্সের চাল বিক্রেতা মোতালেব ভূঁইয়া বলেন, “চালের যোগান ঠিক থাকলেও বন্যার কারণে প্রতি বস্তা চালের দাম কিছুটা বেড়েছে।

“ভারত থেকে আমদানি হওয়া গুটি ও স্বর্ণা চাল লোকজন কিনতে চায় না। কারণ ওই চাল সিদ্ধ হতেই দুই ঘণ্টা সময় লাগে। আর ওই চালের ভাত খেতেও বেশি তরকারি লাগে।”

ভারতের গুটি ও স্বর্ণা চালের ৫০ কেজি ওজনের বস্তা ২৩০০ থেকে ২৩৫০ টাকায় বিক্রি হয় বলেও জানান মোতালেব।

বাবু বাজারের বসুন্ধরা রাইস এজেন্সির ম্যানেজার বাবুল মিয়া জানান, বেশ কিছুদিন ধরে একই দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে।

তিনি জানান, মিনিকেট ২৫০০ থেকে ২৭০০ টাকা; স্বর্ণা, গুটি ও পাইজাম চাল ২০০০ থেকে ২০৫০ টাকা এবং নাজিরশাইল ২৭০০ থেকে ২৮৫০ টাকা, মিনিকেট ২৮০০ থেকে ২৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারগুলোতে ধরণভেদে মিনিকেট চাল ৫৪ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

উত্তর বাড্ডার মেসার্স সাতারকুল রাইস এজেন্সির ম্যানেজার বিপ্লব হোসেন শুক্রবার বলেন, “গত ১৫ দিনে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক থেকে দেড় টাকা করে বেড়েছে। মৌসুম শেষ হওয়ায় বেড়েছে নাজিরশাইল চালের দামও।”

মোটা চালের কাম কিছুটা কমেছে জানিয়ে বিপ্লব বলেন, বুসরা মিলের মিনিকেট চাল ২৫৫০ টাকা বস্তায় পাওয়া যাচ্ছে। আর রশিদের মিনিকেট ২৬৩০ টাকা এবং ডায়মন্ড মিনিকেটের দাম ২৮৫০ টাকা।

এছাড়া বিআর-২৮ ২৩৫০ টাকা, পাইজাম ২১০০ থেকে ২১৫০ টাকা এবং স্বর্ণা চালের বস্তা ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এই চাল বিক্রেতা।

খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের তথ্যানুযায়ী, নাজিরশাইল চাল পাইকারিতে ৫১ থেকে ৫৬ টাকা এবং খুচরায় ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বিআর-২৮ ও পারিজা পাইকারিতে ৪৪ থেকে ৪৭ টাকা ও খুচরায় ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা এবং গুলি ও স্বর্ণা চাল পাইকারিতে ৪০ থেকে ৪২ টাকা ও খুচরায় ৪৩ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ও মিনিকেট ৫২ থেকে ৫৮ টাকা এবং স্বর্ণা চাল ৪৩ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার তথ্য জানিয়েছে টিসিবি।

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud