April 26, 2024
প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংকের আমানতকারীদের জন্য কোনও সুসংবাদ নেই। উল্টো আছে দুঃসংবাদ। এখন থেকে যারা ব্যাংকে এক লাখ টাকা রাখবেন, বছর শেষে তাদের আবগারি শুল্ক গুনতে হবে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতাকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এই প্রস্তাব করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর লক্ষ্য বছরের যেকোনও সময় ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ডেবিট কিংবা ক্রেডিট হয়, এমন অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে তা আগের আবগারি শুল্ক আরোপ করা হয় না।
প্রসঙ্গত, সুদের হার কম থাকায় এমনিতেই ব্যাংকে আমানত রাখার হার এখন অনেক কম। আমানতকারীরা এখন আর ব্যাংকে টাকা রাখতে উৎসাহী হচ্ছেন না। এমন অবস্থায় আসছে স্থায়ী আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাবে বেশ শঙ্কিত আমানতকারীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবগারি শুল্ক বাড়ানো হলে ব্যাংকে আর টাকা রাখবেন না আমানতকারীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যাংকগুলোর আমানতের গড় সুদ ৫ দশমিক ১ শতাংশের মধ্যে। এদিকে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার ৫ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ। এখন ব্যাংকে এক লাখ টাকা আমানত থাকলে বছর শেষে যে ৫ হাজার টাকা পাওয়া যাবে তার মধ্যে উৎসে কর আবগারি শুল্ক ও মূল্যস্ফীতি বাবদ কেটে রাখার পর মূল মূলধনই কমে যাবে আমানতকারীর।
ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও বেসরকারি মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আবগারি শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাবে আমানতকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘ব্যাংক সুদের হার এখন অনেক কম, এর ওপর এমনিতে মূল্যস্ফীতি, উৎসে কর, মেইনট্যানেন্স চার্জ মিলিয়ে যা কেটে রাখা হয়, আমানতকারীর লাভ বলতে আর কিছুই থাকবে না।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি ব্যাংকগুলো এখন সাড়ে ৪ থেকে ৫ শতাংশ সুদে মেয়াদি আমানত নিচ্ছে। বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর বেশিরভাগ সঞ্চয় স্কিমেও সুদহার নেমে এসেছে একই পর্যায়ে। অনেক ব্যাংকের সুদহার ৫ শতাংশের কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ৫৭টি ব্যাংকে আমানত হিসাবের সংখ্যা প্রায় আট কোটি। এর মধ্যে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে নয় লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর অর্ধেকের বেশি মেয়াদি আমানত। সঞ্চয়ী আমানত রয়েছে ২০ শতাংশের মতো। মোট আমানতের মধ্যে বেসরকারি খাতের অংশ ৮৩ শতাংশ। বাকিটা সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের। গ্রাহকের আমানত থেকে যে মুনাফা আসে, তার ওপর ১০ শতাংশ কর নেয় সরকার। আর টিআইএন না থাকলে কাটা হয় ১৫ শতাংশ। এর পাশাপাশি আমানত ও ঋণ উভয় হিসাব থেকে বছরে একবার আবগারি শুল্ক কাটা হয়।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যারা ব্যাংকে টাকা রাখেন, তারা একটি নিদিষ্ট হারে কর দেনই। ব্যাংকে যে টাকা থাকে, তা আয়কর রিটার্নে প্রদর্শিত হয় ও ট্যাক্স দেওয়া হয়। কাজেই একই টাকার ওপরে আবার ‘আবগারি শুল্ক’ নামে ট্যাক্স কেটে নেওয়া উচিত নয়।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘এতে ব্যাংকের গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। অন্যান্য সোর্স না বাড়িয়ে একই জায়গা থেকে বার বার ট্যাক্স নেওয়া কোনও ভালো লক্ষণ নয়।’
প্রসঙ্গত, সুদের হার কম থাকায় এমনিতেই ব্যাংকে আমানত রাখার হার এখন অনেক কম। আমানতকারীরা এখন আর ব্যাংকে টাকা রাখতে উৎসাহী হচ্ছেন না। এমন অবস্থায় আসছে স্থায়ী আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাবে বেশ শঙ্কিত আমানতকারীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবগারি শুল্ক বাড়ানো হলে ব্যাংকে আর টাকা রাখবেন না আমানতকারীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যাংকগুলোর আমানতের গড় সুদ ৫ দশমিক ১ শতাংশের মধ্যে। এদিকে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার ৫ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ। এখন ব্যাংকে এক লাখ টাকা আমানত থাকলে বছর শেষে যে ৫ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। তার মধ্যে উৎসে কর আবগারি শুল্ক ও মূল্যস্ফীতি বাবদ কেটে রাখার পর মূল মূলধনই কমে যাবে আমানতকারীর।