May 5, 2024
ডেস্ক রিপোর্ট: শনিবার রাত সোয়া ১১টা। শেরপুর শহর থেকে সাড়ে ৪ কিলোমিটার দূরে বাজিতখিলা গ্রামীণ ব্যাংক মোড়। এ মোড়ের গাজিরখামার সড়কের প্রবেশ মুখেই বেঞ্চ পেতে বসে রয়েছেন ১১ জন পুলিশ সদস্য।
এর ঠিক পশ্চিম পাশেই মোহাম্মদ আলীর চায়ের দোকান। কেটলিতে ফুটছে গরম পানি। জটলা পাকিয়ে বসে আছেন ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার জনা দশেক সংবাদ কর্মী। আশপাশের অন্যান্য দোকানগুলো বন্ধ। বন্ধ দু’এক দোকানের বাতি জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে। খানিকটা দূরে বাজিতখিলা মোড়ের দোকানপাটও বন্ধ।
ক’মিনিট বাদে বাদে টহল দিতে দেখা যাচ্ছে র্যাব-১৪, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের। সব মিলিয়ে স্বাভাবিক, শান্ত রয়েছে মানবতা বিরোধী অপরাধে সদ্য মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়া জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামানের বাজিতখিলা ইউনিয়ন।
কামারুজ্জামানের বাড়ির সড়কের প্রবেশ মুখেই বসে থাকা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) বিপ্লব বললেন, উপরের নির্দেশ রয়েছে, কবরের আশপাশে কাউকেই যেতে দেওয়া হবে না। সাংবাদিকদেরও যেতে দেওয়া হবে না। নিরাপত্তার স্বার্থেই উপর থেকে আমাদের কাছে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এরপর বিপ্লব ফোন দিলেন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে। তিনিও এ নির্দেশ বহাল থাকার বিষয়টি জানালেন স্থানীয় সাংবাদিকদের। পুলিশ জানাজা ও দাফনের জন্য চূড়ান্ত বাজিতখিলা কুমোরি ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও বাজিতখিলা কুমোরি এতিমখানায় সাংবাদিক প্রবেশে পুলিশি বাধায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ছুট দিলেন জেলা শহরের দিকে।
ততক্ষণে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়েছে। হাওয়া হয়ে গেছে বিদ্যুৎ। বাজিতখিলা গ্রামীণ ব্যাংক মোড়ের সামনে দিয়ে যাওয়া শেরপুর টু ঝিনাইগাতী সড়কে শাঁ শাঁ শব্দে ছুটে চলছে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন। মুহূর্তেই বদলে যাচ্ছে মোহাম্মদ আলীর চা দোকানের পরিবেশ।
আশপাশের বাড়ির দু’তিনজন মিলে যাও বসেছিলেন, বৃষ্টি শুরু হতেই তারা নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যেতে শুরু করলেন। পথ চলার আগে সেখানেই কথা হলো স্থানীয় বাসিন্দা মজনু মিয়ার সঙ্গে। চা দোকানে বসে দু’তিনজন মিলে আড্ডা দিচ্ছিলেন। চটপটে ভাব। পান চিবুচ্ছেন।
হাসিমাখা মুখে বললেন, মানুষ সমবেত হলে সমস্যা। এজন্য দোকান-পাট সন্ধ্যার পর থেকেই বন্ধ রাখা হয়েছে। সন্ধ্যার আগেও মানুষজনের আনাগোনা ছিল।
মজনুর আলাপের সূত্র ধরেই এবার মুখ খুলতে লাগলেন মোহাম্মদ আলী। তবে কথাবার্তায় তাকে বেশ সতর্ক মনে হলো। তবে বললেন, পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অস্বাভাবিক কোনো অবস্থা লক্ষ্য করি নাই। প্রশাসন নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক জোরদার করেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরপুর জেলা পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থেই সাংবাদিকদেরও কামারুজ্জামানের জানাজা ও দাফনের স্থানে যাবার অনুমতি নেই। উপর থেকেই এ নিষেধ করা হয়েছে।