May 17, 2024
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথের আশ্বাস পাওয়ার পর ভারতে রেসিডেন্ট ভিসা পাওয়া নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। এখন তিনি জীবনের শেষদিনগুলো ভারতের মাটিতেই কাটাতে চান বলে জানিয়েছেন। এমনকি বাংলাদেশে ফিরে আসার ডাক পেলেও তা গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। বুধবার কলকাতাভিত্তিক একটি নিউজ পোর্টাল এ খবর প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে ফেরার অনুমতি পেলে কী করবেন এর জবাবে তার স্পষ্ট বক্তব্য, অনুমতি পেলেও বাংলাদেশে ফিরতে চান না তিনি। বরং ভারতেই থেকে যেতে চান বাকি জীবন।এই দেশ তার দ্বিতীয় ঘর। বুধবার একটি সাক্ষাতকারে এই বিদ্রোহী লেখিকা বলেন, ‘আমি ভারতেই থাকতে চাই। ভারত ছেড়ে কোথায় আর যাব?। আমি আমেরিকার স্থায়ী বাসিন্দা। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতকে বেছে নিয়েছি সংস্কৃতির টানে। আজ বাংলাদেশ আমাকে ভিটেতে ফেরার অনুমতিও দিলেও, আমি বাকি জীবনটা ভারতেই কাটাতে চাইব।’ তিনি আরো বলেন, গত ২০ বছর বাংলাদেশ থেকে অনেক বেশি বন্ধু হয়েছে এই দেশে। যারা তার ভাষাকে বুঝেছে। তাই এমন বন্ধু বা আত্মীয় তিনি চান না, যারা তার আবেগের মূল্য দেয় না। তিনি আরো জানান, দেশ থেকে বিতারিত হওয়ার পর বাংলাদেশের কোনো প্রকাশক বা বুদ্ধিজীবী তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেনি। তাই ওপার বাংলার সঙ্গে সম্পর্ক একপ্রকার ছিন্ন হয়ে গেছে তার। ৫১ বছরের এই লেখিকাকে দীর্ঘ মেয়াদি রেসিডেন্ট পারমিট দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেই আশায় ভর করেই ভারতে থাকার স্বপ্ন বুনছেন এই নারীবাদী লেখিকা।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান ও পরিবারের সদস্যরা পবিত্র ওমরা হজ পালন করেছেন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে নবনির্মিত মাতাফ ব্রিজের দ্বিতীয় তলা দিয়ে সফরসঙ্গীদের নিয়ে তাওয়াফ শুরু করে রাত ৩টার দিকে ওমরাহ পালন সম্পন্ন করেন তারা। খালেদা জিয়া এরাবিয়াতে (ট্রলি) করে তাওয়াফ এবং সাফওয়া মারওয়া সাঈ করলেও পায়ে হেঁটেই তাওয়াফ এবং সাঈ করেন তারেক রহমান। ওমরাহ’র আনুষ্ঠানিকতা সেরে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং তাদের সফর সঙ্গীদের নিয়ে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। পরে সৌদি রয়েল প্যালেসের উদ্দেশে তারা যাত্রা করেন। এর আগে গত তিন দিন মদিনার মসজিদে নববীতে ইবাদত বন্দেগিতে কাটান খালেদা জিয়া। সোমবার আসর থেকে এশার নামাজ পর্যন্ত তিনি মসজিদে নববীতে ছিলেন। তারেক রহমানও ইবাদত বন্দেগিতে কাটান সারাদিন। কুরআন তেলাওয়াত ও নফল নামাজ পড়েন তিনি। মঙ্গলবার ইফতার ও মাগরিবের নামাজ শেষে বিমানযোগে খালেদা জিয়া ও তার সফরসঙ্গীরা মদিনা থেকে মক্কায় পৌঁছেন। বিমানবন্দরে তাকে মক্কা ও জেদ্দা বিএনপির নেতাকর্মীরা স্বাগত জানান। পরিবারের সদস্য ছাড়াও খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গীদের মধ্যে রয়েছেন চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত এনামুল হক চৌধুরী, আলোকচিত্রী নুরুদ্দিন আহমেদ, বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শাহ শরীফ কামাল তাজ। তবে তারেক রহমানের সঙ্গে সার্বক্ষণিক দেখা গেছে বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থকে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তার বড় পুত্র তারেক রহমানকে নিয়ে মদিনায় পৌঁছেছেন। শনিবার রাতে ঢাকা থেকে দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে পৌছালে খালেদা জিয়ার সাথে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাক্ষাৎ হয়। ওই সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মা-ছেলের চোখে ছিল অশ্রæর বন্যা। খালেদা জিয়া দুবাইয়ের স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে লন্ডন থেকে আগেই পৌঁছে মায়ের জন্য অপেÿায় ছিলেন তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান ও তারেকের মেয়ে জায়মা রহমান। তারা দুবাইয়ে ৮ ঘণ্টার যাত্রাবিরতিতে মায়ের অপেÿায় ছিলেন। খালেদা জিয়া দুবাইয়ে দুই ঘণ্টা যাত্রাবিরতি শেষে ছেলে তারেকসহ অন্যদের নিয়ে স্থানীয় সময় রাত ১টা ৫৫ মিনিটে সরাসরি মদিনা মনোয়ারার উদ্দেশে রওনা করেন। এর আগে সৌদি সরকারের আমন্ত্রণে রাজকীয় অতিথি হিসেবে ওমরা পালন করতে শনিবার রাতে ঢাকা ত্যাগ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফাইটযোগে (ইকে-৫৮৫) শনিবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি। তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দারের স্ত্রী-ছেলেসহ কয়েক স্বজন সফরসঙ্গী হিসেবে আছেন। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার বছর পর তারেক রহমানের সঙ্গে তার মায়ের দেখা হলো।
নিজস্ব প্রতিবেদক: সামনে ঈদের ছুটিতে ২ ছেলের দেশে ফেরার কথা ছিল। মাকে বলেছিলেন, ঈদে বাড়ি আসছি। সুস্থ শরীরে ফিরে আসার কথা বলে আশীর্বাদ করেছিলেন মা। ফিরলেন ঠিকই, তবে কফিনবন্দি হয়ে। আজ শুক্রবার দুপুরে বাড়িত আসে ২ ছেলের নিথর দেহ। জীবিকার তাগিদে লিবিয়া যাওয়া ২ সন্তানের কফিন দেখে মা-বাবার আকাশ ভাঙ্গা কান্না। উপার্জনক্ষম কর্মঠ ২ সন্তানকে হারিয়ে পুরো পরিবার এখন দিশেহারা। লিবিয়ায় মিসাইল হামলায় নিহত ২ সহদর স্বপন ছৈয়াল ও মিলনের মরদেহ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে তাদের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের কোদালপুরে পৌঁছে। শুক্রবার ভোর ৫টায় তুরস্ক এয়ারয়েজের একটি বিমানে তাদের মরদেহ দেশে নিয়ে আসা হয়। নিহত ২ সহদরের মরদেহ নিজ গ্রামে আসলে স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। শুক্রবার বাদ জুমা জানাজা শেষে তাদের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত স্বপনের স্ত্রী মালেকা বেগম বলেন, ’২ বছরের শিশু পুত্র সাব্বির আহমেদ জন্মের পর তার বাবাকে দেখেনি। পবিত্র ইদুল ফিতরের ছুটিতে দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ঈদের আগে জীবিত আর ফেরা হলো না স্বপন ছৈয়ালের। স্বপন ফিরেছে ঠিকই, তবে জীবিত নয় লাশ হয়ে। সঙ্গে নিয়ে এসেছে আরেক সহদর মিলনের মরদেহ।’ বিলাপ করতে করতে মিলনের মা মোর্শেদা বেগম বলেন, ‘শনিবার সকালে আমার বুকের মানিক ফোন করেছিল। বাংলাদেশের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কথা জানতে পেরে আমাদের সাবধানে থাকতে বলেছিল। আমরা সাবধানে রইলাম, আমার বুকের মানিক কোথায় চলে গেল?’ তিনি বলেন, ‘এবার ঈদের ছুটিতে ২ ছেলের বাড়ি আসার কথা ছিল। কিন্তু ঈদের আগেই তাদের নিথর দেহ বাড়ি ফিরেছে।” স্বপন ও মিলনের ছোটভাই ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি এ বছর এসএসসি পাস করেছি। আমার কলেজের ভর্তি ও বইপত্র কেনার জন্য ভাইয়াদের টাকা পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু পেলাম ভাইয়ের লাশ।’ স্বপন ও মিলনের বাবা কুদ্দুস ছৈয়াল বলেন, ‘আমি দরিদ্র কৃষক মানুষ। সংসারের দারিদ্রতা ঘুচানোর জন্য ফসলী জমি বিক্রি করে দুই সন্তানকে লিবিয়া পাঠিয়েছিলাম। আমার সন্তানরা এভাবে অকালে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে কল্পনাও করতে পারিনি।’ এর আগে আজ শুক্রবার সকালে শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বপন ছৈয়াল ও মিলন ছৈয়ালের লাশ গ্রহণ করেন স্বজনরা। গত ২১ শে জুন রাতে লিবিয়ার স্থানীয় সময় রাত সোয়া ১০টায় বেনগাজি শহরের সামা লিবিয়া নামের একটি পানি বিশুদ্ধকরণ কারখানার আবাসিক ক্যাম্পে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ২ ভাই মারা যান।
‘আমরা সরকারি বাহিনীকে যেমন ভয় পাই, তেমনি বিদ্রোহীদের নিয়ে আতঙ্কিত। যা কিছু নড়াচড়া করছে, তার ওপরই গুলি ছুড়ছে সেনাদের হেলিকপ্টার। আমরা যেতে চাই, কিন্তু পারছি না।’ ইরাক প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক শেখ বেলাল টেলিফোনে তাঁর এই দুর্গতির কথা জানান। আজ শুক্রবার ইউএনবির খবরে এ কথা জানানো হয়। বেলাল জানান, গত বুধবার তিকরিত শহরে ইরাকি সেনা ও সুন্নি জঙ্গিদের মধ্যে যখন সংঘর্ষ চলছে, এ সময় গোলাগুলি থেকে রক্ষা পেতে শেখ বেলাল ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন বাংলাদেশি শ্রমিক একটি গুদামে গুটিসুটি মেরে লুকিয়ে ছিলেন। এ সময় ইরাকে বাংলাদেশি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা সংঘর্ষ থামলে উদ্ধার করা হবে বলে আশ্বাস দেন। পরে দূতাবাসের সহায়তায় তাঁরা মুক্তি পান। আক্ষেপ করে বেলাল বলেন, এটি তাঁদের দুর্ভাগ্য। তাঁরা সবাই ইরাকে শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে কাজ করতে চান। ২৯ বছরের বেলাল বাংলাদেশের একজন কৃষক। তিনি গত বছর ইরাকে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যান। বেশি উপার্জনের আশায় ইরাকে যাওয়ার পরে বাংলাদেশি, ভারতীয় ও নেপালি শ্রমিকদের জীবন রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। তাঁদের প্রায়ই জঙ্গি ও সেনাদের সংঘর্ষের মধ্যে পড়তে হয়। জীবন থাকে হুমকির মুখে। ইরাকে অস্থিতিশীলতা সত্ত্বেও অভিবাসী শ্রমিকদের বড় একটি অংশ সেখানে যাচ্ছেন। তাঁরা বেশির ভাগই নির্মাণশ্রমিক, সেবিকা, গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। ইরাকে ভারতের ১০ হাজার শ্রমিক ও বাংলাদেশের ৩৫ হাজার শ্রমিক অভিবাসী হিসেবে কাজ করছেন।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শওকত হোসেন বলেন, সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। প্রয়োজনে ইরাক থেকে বাংলাদেশি অভিবাসীদের দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, বাগদাদের বাংলাদেশি দূতাবাস ৫১ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে গত মাসে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় শহর মসুল থেকে সরিয়ে নিয়ে আসতে সহায়তা করেছে। কিন্তু অভিবাসী শ্রমিকেরা বাংলাদেশে ফিরতে চান না; বরং তাঁরা ইরাকের অন্য কোথাও থেকে কাজ করতে চান।
রিয়াদ : রিয়াদের পুলিশ রাজধানীতে অবৈধ ভাবে বসবাসকারি ২’শ ৮২জন প্রবাসিকে আটক করেছে। পুলিশ শহরের অদূরে মাঠ, গ্রাম এবং রিয়াদের বিভিন্ন স্থানে ৬ দিন ধরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এ প্রসঙ্গে রিয়াদের পুলিশের মূখপাত্র কর্নেল ফাওয়াজ আল মাইমান বলেন, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সবাই রিয়াদে অবৈধভাবে বসবাস করছিল। ্এর মধ্যে ১শত ৩৪ জন ইথিওপিয়ার নাগরিক,৭৬ জন ইয়েমেনের ,২১ জন ভারতীয় , ২১ জন পাকিস্থানি , ৪ জন বাংলাদেশি এবং ১৭ জন সুদানের। এছাড়াও সোমালিয়া ও সিরিয়ারও কিছু নাগরিক ছিল। তিনি আরো বলেন, এটা ছিল মাঠ পর্যায়ের একটা অভিযান। এতে আইন ভঙ্গকারিদের ধরা হয়েছে। সৌদি সরকার অবৈধ ভাবে বসবাসকারিদের তাদের কাগজ পত্রের বৈধতা নিশ্চিত করার একটি সুযোগ দিয়েছিল। এবং শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে তাদের সতর্ক করা হয় যদি তারা কাগজ বৈধ না করে তবে ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং তাদের ২ বছর জেল হতে পারে ।
ডেস্ক রিপোর্ট: সৌদি আরবের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোর জন্য আরও বহু বছর দক্ষ ও অদক্ষ প্রবাসী কর্মী প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন দেশটির শুরা কাউন্সিলের সদস্য সাদ আল বাজি। একই মত দিয়েছেন ফিলিপাইনের ইঞ্জিনিয়ারিং ও আর্কিটেক্ট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মারিও এ বালবোয়া। সাদ আল বাজি বলেন, সৌদি আরবের ইকোনমিক সিটি ও মেট্রো রেল প্রজেক্টসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোর জন্য তাদের আরও বহু বছর প্রবাসী কর্মীর প্রয়োজন রয়েছে। কিং সাউদ ইউনিভার্সিটির সাবেক এই অধ্যক্ষ আরও বলেন, “এই বিশাল উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো সম্পন্ন করতে যে পরিমাণ কর্মী প্রয়োজন, তা এখানে নেই। তাই প্রবাসী কর্মীদের ওপর নির্ভর করতে হবে।” আর এই প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে পশ্চিমা স্থপতি, প্রকৌশলী, পরামর্শক ও উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও প্রয়োজন আছে বলে উলেøখ করেন তিনি। আর আধা দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের বেশির ভাগই আসে বাংলাদেশ, ফিলিপিন, ভারত, পাকিস্তান ও নেপাল থেকে। বর্তমানে সৌদি আরবে মোট জনসংখ্যা ২৯.৫ মিলিয়ন, যার মধ্যে ৯ মিলিয়ন প্রবাসী কর্মী। সম্প্রতি হাইল, মদিনা, জাজান মেট্রো কিং আবদুলøাহ ইকোনমিক সিটিসহ বেশ কিছু বড় উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সৌদি সরকার।
নিজস্ব প্রতিবেদক: লিবিয়ার বেনগাজি শহরে একটি পানি বিশুদ্ধকরণ কারখানার আবাসিক ক্যাম্পে শনিবার রাতে মিসাইল হামলায় দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ সেখানকার ৩২ জন বাংলাদেশিকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে। এর আগে ফেব্রুয়ারি ও মার্চে বেনগাজিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন বাংলাদেশি মারা যান। আহত হন কয়েকজন। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে লিবিয়ায় অবস্থানরত সব বাংলাদেশিকে গত মার্চ থেকেই সতর্কভাবে চলাফেরার পরামর্শ দিয়েছে সেখানকার বাংলাদেশি দূতাবাস। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও বেনগাজিতে অবস্থানরত ২৫ হাজার বাংলাদেশিকে সাবধানে থাকতে বলেছেন। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, ২১ জুন শনিবার রাতে লিবিয়ার স্থানীয় সময় রাত সোয়া ১০টায় বেনগাজি শহরের সামা লিবিয়া নামের একটি পানি বিশুদ্ধকরণ কারখানার আবাসিক ক্যাম্পে মিসাইল হামলায় শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার মোহাম্মদ মিলন ও মোহাম্মদ স্বপন মারা যান।
তাঁরা দুজন ভাই। এ ঘটনায় আরও দুজন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ইব্রাহিম নামের একজনকে চিকিত্সা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য একজন কামালের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি সোমবার দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, ঘটনার পর দূতাবাসের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, শনিবার কাজ শেষে তাঁরা কোম্পানির আবাসিক ক্যাম্পে ছিলেন। হঠাত্ বিকট শব্দে একটি মিসাইল ক্যাম্পের পেছনের দেয়ালে আঘাত করে। সে সময় ওই কক্ষে চারজন বাংলাদেশি ছিলেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিত্সকরা দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁদের মরদেহ বেনগাজি মেডিকেল সেন্টারের হিমঘরে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর কোম্পানির পক্ষ থেকে বাকিদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার লিবিয়া। তবে ২০১১ সালে দেশটিতে যুদ্ধাবস্থা শুরুর পর ৩৬ হাজার বাংলাদেশি ফিরে আসেন। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে গত দুই বছরে ২১ হাজার বাংলাদেশি নতুন করে সেখানে গেছেন। বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে সেখানে প্রায় ৪৫ হাজার বাংলাদেশি আছেন। এর মধ্যে একটা বড় অংশই আছেন রাজধানী ত্রিপোলি থেকে এক হাজার কিলোমিটার দূরের শহর বেনগাজিতে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে সেখানে ইসলামপন্থী ও ন্যাশনাল আর্মি নামের দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। উভয় পক্ষই ভারী আগ্নেয়াস্ত্র, স্বল্প পাল্লার মিসাইল নিয়ে যুদ্ধ করছে। প্রায়ই এসব গুলি ও মিসাইল লক্ষ্যচ্যুত হয়ে সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ঘটছে।
এর আগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি বেনগাজিতে বন্দুকযুদ্ধের মধ্যে পড়ে বরগুনার আবুল কালাম ও পিরোজপুরের শফিকুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই মাসেই বেনগাজি থেকে একদল বাংলাদেশিকে অপহরণ করা হয়, যদিও পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ২২ মার্চ বেনগাজিতে অস্ত্রধারীদের গুলিতে শেরপুরের সুমন আলী, ভোলার জসিমউদ্দিন ও নড়াইলের মোহসিন আহত হন। এর মধ্যে সুমন আলী পরে মারা যান। ১২ মার্চ একজন ভারতীয় চিকিত্সককে ও ২২ মার্চ সাতজন মিসরীয়কে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর আগে বেনগাজিতে মার্কিন দূতাবাসে হামলায় লিবিয়ার মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ চারজন মার্কিন নাগরিক নিহত হন। গত এক বছরে এভাবে শতাধিক বিদেশি নাগরিককে হত্যা করা হয়।
আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী প্রথম আলোকে জানান, রাজনৈতিক সহিংসতা, অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং আঞ্চলিক ও উপদলীয় বিরোধে প্রায়ই লিবিয়ায় সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সব বাংলাদেশি নাগরিককে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
……. প্রথম আলো
নিজস্ব প্রতিবেদক || খন্দকার মোশাররফ হোসেন।ইরাকে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সতর্ক অবস্থায় থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজন হলেই আমরা সেখানকার বিপদে পড়া বাংলাদেশিদের সরকারি খরচে দেশে ফিরিয়ে আনব।’ বৃহস্পতিবার জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার নতুন কার্যনির্বাহী সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘ইরাকে ২০ থেকে ২৫ হাজার বাংলাদেশি আছেন। আমরা তাঁদের খোঁজখবর রাখছি। কেউ যদি একান্ত বিপদে পড়ে দেশে ফিরে আসতে চান, তাহলে তাঁকে ফিরিয়ে আনব।’
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, এ খাতের সব অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। স্বল্প খরচে লোকজন যাতে বিদেশে যেতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আজ বেলা সোয়া ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত বৈঠক হয়। বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বায়রার সভাপতি আবুল বাশার প্রথম আলোকে বলেন, ‘অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের লাইসেন্স নবায়ন, এ খাতের ব্যবসা, ২০১৩ সালের অভিবাসী আইনসহ নানা বিষয়ে আমরা দীর্ঘ আলাপ করেছি। আমরা এ খাতে প্রতারণা বন্ধ ও অভিবাসন খরচ কমানোর প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানিয়েছি।’
দুবাই: সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে আসন্ন পবিত্র রমজান মাসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠানমালার লাইন আপ উন্মোচন করেন শারজাহ মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান শেখ সুলতান বিন আহমেদ আল কাসিমি। তিনি জানান, শারজাহ টিভি এবং শারজা রেডিওসহ বিভিন্ন চ্যানেলে পবিত্র রমজান মাসের প্রোগ্রাম সম্প্রচার করা হবে। অনুষ্ঠানমালায় থাকছে, ‘নবী নেতৃত্বাধীন যুদ্ধসমূহ’, অ্যানিমেটেড নাটক কুরআনে খবর বিস্ময়, বিশ্বের ম্যাগনিফিসেন্ট মসজিদ, আরবি সিরিয়াল ডাহশা, দৈনিক ইফতার। এছাড়া বিভিন্ন ইসলামী সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করা হবে। এসময় অন্যদের মধ্যে শারজাহ মিডিয়া করপোরেশনের ডিরেক্টর জেনারেল ডা. খালিদ ওমর আল মিদাফা, শারজাহ টিভি এবং রেডিও এর পরিচালক মোহাম্মদ খালাফ, শারজাহ টিভির প্রোগ্রাম ম্যানেজার সালেম আলী আলঘাইহি এবং শারজা রেডিও প্রোগ্রাম ম্যানেজার আবীর সেলিম টার্কিস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।