পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

এক ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৬৭৭.৮০ টাকা!

Posted on February 29, 2016 | in ব্যবসা-অর্থনীতি | by

নিউজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী লে: কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খানের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান সামিট মেঘনাঘাট কেন্দ্র থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের ডিসেম্বর মাসে ইউনিট প্রতি ৬৭৭ টাকা ৮০ পয়সা দর দিয়ে বিদ্যুত কিনেছে বাংলাদেশ সরকার।0,,15890432_303,00 (1)
এছাড়া ওই অর্থবছরের আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ কেনায় ইউনিটপ্রতি খরচ হয় যথাক্রমে ৩০ টাকা ৬৫ পয়সা, ৩২ টাকা ৩৮ পয়সা, ৩৪ টাকা ৭০ পয়সা ও ৪১ টাকা ২০ পয়সা। তবে অর্থবছরের পরের ছয় মাস (জানুয়ারি-জুন) কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ কেনায় ব্যয় কিছুটা কম হয়।
জানা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সামিট মেঘনাঘাট কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা হয় ৪৭ কোটি ৬০ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা। এতে ব্যয় হয় ১ হাজার ৪১৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে ইউনিটপ্রতি গড় দাম পড়ে ২৯ টাকা ৭৭ পয়সা।
তবে শুধু সামিট নয়, ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বেসরকারি বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে অনেক বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনছে সরকার। অন্যদিকে সেই বিদ্যুত পিডিবির কাছ থেকে সাড়ে ৫ টাকার কিছু বেশি দরেকিনে গ্রাহক পর্যায়ে ৬-১০ টাকা দরে বিক্রি করছে বিতরণ কোম্পানিগুলো।
সূত্র জানায়, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে দৈনিক মেগাওয়াটপ্রতি ৭০০ ডলার ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয় পিডিবিকে। চুক্তি অনুযায়ী, বছরে ১০ শতাংশ সময়ে ওভারহোলিংয়ের কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকলেও এ চার্জ পরিশোধ করতে হয়। আবার চাহিদা না থাকলে কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ কেনা না হলেও এ চার্জ দিতে হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় উৎপাদন তথা অপারেশন চার্জ ইউনিটপ্রতি এক-দেড় টাকা। এছাড়া ডিজেলচালিত কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা (প্লান্ট ফ্যাক্টর) অনেক কম। আবার জ্বালানি ব্যবহারেও দক্ষতা (ফুয়েল ইফিশিয়েন্সি) কম। সব মিলিয়ে বেসরকারি খাতে উৎপাদন ব্যয় অনেক বেশি পড়ে।
ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশ এনার্জি থেকে গত অর্থবছর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামে বিদ্যুৎ কেনে পিডিবি। সিদ্ধিরগঞ্জের ডিজেলচালিত ভাড়াভিত্তিক ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রটি থেকে ওই সময় বিদ্যুৎ কেনা হয় ১৮ কোটি ৩৭ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা। ইউনিটপ্রতি দাম পড়ে ২৫ টাকা ৮৯ পয়সা। এ কেন্দ্রও ডিসেম্বরের বড় একটা সময় বন্ধ ছিল। ওই মাসে মাত্র ২৭ লাখ ২০ হাজার কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। এতে ডিসেম্বরে কেন্দ্রটির ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম পড়ে ১০০ টাকার বেশি।
খুলনার ভাড়াভিত্তিক এগ্রিকো পাওয়ার থেকে গত অর্থবছর বিদ্যুৎ কেনায় ইউনিটপ্রতি দাম পড়ে ২৪ টাকা ৫৫ পয়সা। ৫৫ মেগাওয়াটের ভাড়াভিত্তিক ডিজেলচালিত কেন্দ্রটি থেকে ওই সময় কেনা হয় ৮ কোটি ৭৪ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ। এ কেন্দ্রও গত অর্থবছরের ডিসেম্বরে বেশির ভাগ সময় বন্ধ রাখা হয়। ওই মাসে কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় মাত্র ২ লাখ ২০ হাজার কিলোওয়াট ঘণ্টা। ফলে ওই সময় কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় ছিল ১১০ টাকার মতো।
একই অবস্থা ভাড়াভিত্তিক আরজেড পাওয়ার ও ডিপিএ পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের। ডিজেলচালিত ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্র দুটি যথাক্রমে ঠাকুরগাঁও ও ঢাকার অদূরে পাগলায় অবস্থিত। আরজেড পাওয়ার থেকে গত অর্থবছর বিদ্যুৎ কেনা হয় ৪ কোটি ৫৭ লাখ ও ডিপিএ পাওয়ার থেকে ১২ কোটি ২৮ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা। এতে ইউনিটপ্রতি ব্যয় হয় যথাক্রমে ২৪ টাকা ৪৪ পয়সা ও ২৩ টাকা ৮৯ পয়সা।
ফার্নেস অয়েলচালিত কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে সিনহা পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির আমনূরা প্লান্টটি। চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থিত ভাড়াভিত্তিক ৫০ মেগাওয়াট কেন্দ্রটি থেকে গত অর্থবছর ১৫ কোটি ২৮ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ কেনা হয়। ইউনিটপ্রতি দাম পড়ে ১৮ টাকা ৭৫ পয়সা। এর পর রয়েছে রাজধানীর উপকণ্ঠে কাটাখালীতে স্থাপিত নর্দার্ন পাওয়ার। ভাড়াভিত্তিক ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ফার্নেস অয়েলচালিত কেন্দ্রটি থেকে গত অর্থবছর বিদ্যুৎ কেনা হয় ১৫ কোটি ৫০ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা। ইউনিটপ্রতি দাম পড়ে ১৮ টাকা ৪৩ পয়সা।
বেশি দামে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ফার্নেস অয়েলচালিত কেন্দ্রগুলোর মধ্যে পরের তিনটি অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে নাটোরের রাজলংকা পাওয়ার, হরিপুরের এনইপিসি কনসোর্টিয়াম বাংলাদেশ লিমিটেড ও গাজীপুরের আরপিসিএল। ফার্নেস অয়েলভিত্তিক কেন্দ্র তিনটির উৎপাদনক্ষমতা যথাক্রমে ৫০, ১১০ ও ৫২ মেগাওয়াট। কেন্দ্র তিনটি থেকে গত অর্থবছর বিদ্যুৎ কেনা হয় যথাক্রমে ১৮ কোটি ৪৮ লাখ, ৩৯ কোটি ৬৯ লাখ ও
১৭ কোটি ৯৯ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা। ইউনিটপ্রতি ব্যয় হয় যথাক্রম ১৭ টাকা ২৭ পয়সা, ১৬ টাকা ৬৫ পয়সা ও ১৬ টাকা ৬১ পয়সা।
জানতে চাইলে পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) খালেদ মাহমুদ বলেন, ডিজেলচালিত কেন্দ্রগুলোর বিদ্যুতের দাম তুলনামূলক বেশি হয়। কারণ কেন্দ্রগুলোর প্লান্ট ফ্যাক্টর কম। চাইলেও এগুলো ৫০ শতাংশ সময় চালানো সম্ভব নয়। এছাড়া ডিজেলের উচ্চমূল্যও বিদ্যুতের দাম বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ। এর সঙ্গে ক্যাপাসিটি চার্জ তো আছেই। তবে ডিজেলচালিত রাষ্ট্রায়ত্ত কেন্দ্রেও ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম ২৬-২৭ টাকাই পড়ে।
উল্লেখ্য, উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লান্ট ফ্যাক্টর এনইপিসির। গত অর্থবছর এটি ৪১ দশমিক ১৯ শতাংশ সময় চালু ছিল। এর পর রয়েছে রাজলংকা পাওয়ার ৪০ দশমিক ৫৬, নর্দার্ন পাওয়ার ৩৫ দশমিক ৩৮ ও সিনহা পাওয়ারের ৩৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ। বাকিগুলোর প্লান্ট ফ্যাক্টর ২০ শতাংশ বা তার চেয়েও কম। সূত্র: বণিক বার্তা

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud