পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

সন্তানদের বাঁচাতে কিডনি বেচবেন বাবা

Posted on April 18, 2015 | in আন্তর্জাতিক | by

Obese_3_inn_851887050আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের গুজরাটের পাঁচ বছর বয়সী যোগিতা নন্দন (৩৪ কেজি), তার তিন বছর বয়সী বোন আনিসা (৪৮ কেজি) ও দেড় বছর বয়সী ভাই হার্স (১৫ কেজি) বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ওজনের শিশু।
মাত্র দুই সপ্তাহে তারা যে পরিমাণ খাবার খায় তা দিয়ে দু‘টি পরিবারের পুরো এক মাস চলে যেতে পারে। কিন্তু নির্দিষ্ট খাবারেই তারা সন্তুষ্ট থাকতে পারছে না। দিনে দিনে খাবার চাহিদা বাড়ছে তাদের।
ক্রমেই এই সমস্যা বা ক্ষুধা রোগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে থাকায় তাদের বাঁচাতে নিজের কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাবা রমেশভাই নন্দন (৩৪)।
রমেশভাই বলেন, আমরা খুব আতঙ্কিত, এই ধারায় বড় হতে থাকলে ওরা একসময় মারাও যেতে পারে।
তিনি জানান, যোগিতা ও আনিসা-ই কেবল প্রতিদিন ১৮টি বড় বড় চাপাটি রুটি, তিন পাউন্ড চালের ভাত, দুই বাটি স্যুপ, ছয় প্যাকেট চিপস, পাঁচ প্যাকেট বিস্কুট, এক ডজন কলা ও এক লিটার দুধ খায়। আর এসব খাবার তৈরি করতে তাদের মা প্রাগনা বেনের (৩০) প্রায় পুরোটা দিনই কেটে যায়।
মা প্রাগনা বলেন, আমার সকাল শুরু হয় ৩০টি চাপাটি রুটি এবং ১ কেজি সবজি রান্না দিয়ে। এরপর আমি আবারও রান্না ঘরে কাজ করি। কিন্তু তাদের ক্ষুদা মেটে না। সারাদিন তারা ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাঁদতে থাকে।
এই দম্পতির ছয় বছর বয়সী আরও একটি মেয়ে রয়েছে। নাম ভাভিকা (৬)। তার ওজন মাত্র ১৬ কেজি। সে জানে না কেন তার এই তিন ভাইবোনের ওজন এত বেশি।
রমেশভাই জানান, যোগিতার যখন জন্ম হয় তখন সে খুবই দুর্বল ছিল। ওজন ছিল মাত্র দেড় কেজি। এরপর আনিসার যখন জন্ম হয়, তখন তার অবস্থাও ছিল একই রকম। আমাদের সবচেয়ে ছোট ছেলে হার্সের যখন জন্ম হয়, তখন আমরা বুঝতে পারি এদের অসুস্থতার বিষয়টি।
দিনমজুর রমেশভাইয়ের মাসিক আয় মাত্র তিন হাজার রুপি। তিনি বলেন, প্রতিদিন কাজ করে একশ’ রুপি পাওয়া যায়। তবে এমনও দিন থাকে, যেদিন কোনো কাজ থাকে না। কিন্তু কাজ না থাকলেও আমি আমার ভাই বা বন্ধুদের কাছে থেকে টাকা ধার করে ওদের জন্য খাবার নিয়ে আসি। গত তিন বছরে তিন জনের চিকিৎসা বাবদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা চলে গেছে।
রমেশভাই বলেন, তারা এখন আর হাঁটতে পারে না, নিজেদের কোনো কাজও করতে পারে না। আমি যখন বাড়িতে থাকি না, ওর মা ওদের গড়িয়ে গড়িয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। ওরা স্কুলে যেতে Obese__bg_601579508পারে না, সারাদিন কেবল খায় আর একে অন্যের সঙ্গে গল্প করে।
অসহায় রমেশভাই তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিডনি বিক্রি করে হলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন সন্তানদের। স্থানীয় চিকিৎসকদের মতে, এ তিন শিশুর মধ্যে প্রাডার-উইলি সিমড্রোম দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বোঝা যাচ্ছে না তাদের কী চিকিৎসা হতে পারে।
তবে, গুজরাটের একটি শিশু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. অক্ষয় মাধব বলেন, তারা ঠিক মতো শ্বাসও নিতে পারে না। উন্নত হাসপাতালে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেই ওদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud