May 18, 2024
প্রযুক্তিবিশ্বে এক প্রতিষ্ঠানের অন্য প্রতিষ্ঠানকে কিনে নেওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। নতুন নতুন স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠানগুলোকে টেক জায়ান্টদের কিনে নেওয়া তো হরহামেশাই ঘটে যাচ্ছে। এ ছাড়া ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক নানা দিকের কারণে অনেক সময় বড় বড় কোম্পানিগুলোও বিক্রি হয়ে যায় অন্য কোনো কোম্পানির কাছে। মটোরোলা এবং নকিয়া যার বড় প্রমাণ। তবে খুব বেশি চাপে না থেকেও কোনো কোম্পানির নিজে থেকেই বিক্রি হয়ে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করার ঘটনা একটু বিরল বটে। তেমনটিই ঘটলো বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম পিসি নির্মাতা তাইওয়ানের এসারের বেলায়। এসারের প্রতিষ্ঠাতা স্ট্যান শিহ জানিয়েছেন, এসারকে কোনো কোম্পানি কিনে নিতে চাইলে তাতে আপত্তি নেই এসারের। তবে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে আগ্রহী কোনো ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ হয়নি এসারের। আগ্রহীদের এসার কিনে নিতে বড় অংকের অর্থ খরচ করতে হবে বলেও জানিয়েছেন স্ট্যান শিহ।
ক্রমেই পিসি বাজার অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে ওঠায় অনেক পিসি নির্মাতাই নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে পারছে না। কিছুদিন আগে আরেক পিসি নির্মাতা ডেলের বিক্রি হয়ে যাওয়ার আলোচনাও সাড়া ফেলেছিল প্রযুক্তিবিশ্বে। এসারের বিক্রি হয়ে যাওয়ার অনাপত্তির সংবাদও তেমনি সাড়া ফেলেছে। এর পেছনে অবশ্য ভূমিকা রেখেছে এসারের আর্থিক ক্ষতির বিষয়টি। চলতি বছরের জুলাই মাসে এসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এসারের পিসি বিক্রি কমে গেছে প্রায় ৩৩ শতাংশ। আবার চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গার্টনারের হিসাবে পঞ্চম স্থানে থাকা এই পিসি নির্মাতার দখলে ছিল পিসির ৬.৭ শতাংশ বাজার। গার্টনার জানাচ্ছে, আগের বছর একই সময়ে এসারের দখলে ছিল ৭.৬ শতাংশ বাজার। ফলে এসারের পড়তি অবস্থার কথা সহজেই অনুমেয়। এর প্রভাব পড়েছে তাদের রাজস্ব আয়েও। এই বছরের প্রথম ছয় মাসেই এসারের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২৮৯ কোটি তাইওয়ানিজ ডলার (প্রায় ৯ কোটি মার্কিন ডলার)। এই সময়ের রাজস্ব আয় আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৮ শতাংশ কম। কাজেই নিজেদের বিক্রি হওয়ার প্রস্তাবে এসারের আপত্তি না থাকার যথেষ্ট কারণ খুঁজে পাচ্ছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা।
তবে স্ট্যান শিহ এসারের বিক্রির সিদ্ধান্তের বিষয়ে অনাপত্তি জানালেও এসার যে শীঘ্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, বিষয়টি তা নাও হতে পারে। শিহ’র বক্তব্যের পরেও এসারকে কিনে নিতে আগ্রহী কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম না পাওয়াই তার প্রমাণ দেয়। পিসির এই পড়তি সময়ে নাজুক অবস্থায় থাকা এসারকে কিনতে তেমন কেউ আগ্রহী হবে না বলেও মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা।