পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

`বাহাত্তরের গণপরিষদ প্রণীত ধারা আদালত কিভাবে অসাংবিধানিক’

Posted on July 9, 2017 | in রাজনীতি | by

ডেস্ক রিপোর্ট : বিচারপতি অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে থাকা অবৈধ ঘোষণা করে উচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ের বিষয়ে জাতীয় সংসদই সিদ্ধান্ত নেবে বলে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। শনিবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলটির কেন্দ্রীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাহাত্তরের গণপরিষদ যে সংবিধান প্রণয়ন করেছে, সেই সংবিধানের ধারা আমরা ফেরত আনতে চাই। সেটা কিভাবে আদালত অসাংবিধানিক বলেন?’ তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালত মার্শাল ল অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন। তাহলে মিলিটারি ডিক্টেটরের (সামরিক একনায়ক) করা আইন কিভাবে সাংবিধানিক হয়?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইনজীবী ও সুশীল সমাজের একটি সংঘবদ্ধ চক্র তালগোল পাকাতে চায়। একটি শূন্যতা তৈরি করতে চায় বলেই তারা এই ইস্যুটি নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিচার বিভাগকে নিয়ে রাজনীতি করিনি। জিয়া, খালেদা ও এরশাদ সবাই রাজনীতি করেছেন। বিচারপতিদের বয়স কমানো-বাড়ানোর কাজ তারাই করেছেন।’

ষোড়শ সংশোধনী প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আদালত অ্যামিকাস কিউরির মতামত নিয়েছেন। তারা তো হাইকোর্টে রায় দেওয়ার সময় সংবিধানের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। আপিলের রায়ের আগে তাদের মতামত আবার পরিবর্তন কিভাবে করলেন? অ্যামিকাস কিউরির কোনও কোনও আইনজীবী নিজেদের সংবিধান প্রণেতা দাবি করেন। তারা সংবিধানের বাইরে যান কিভাবে?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে সংসদ। ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের ব্যাপারে এই সংসদই সিদ্ধান্ত নেবে।’ এ বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে দলীয় নেতা ও সংসদ সদস্যদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে সংসদের বাইরে কথা বললে সেটা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হতে পারে।’

এসময় আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরু জাতীয় সংসদে উচ্চ আদালতের দেওয়া এ রায় সম্পর্কে আইনি ব্যাখ্যা নিয়ে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের বক্তব্য শোনেন।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আইন বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতিন খসরু বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়টি এখনও প্রকাশ হয়নি। তাই এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে বিস্তারিত না জেনে কথা না বলাই ভালো।’

পরে দলের কার্যনির্বাহী সদস্য ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম আইনজীবীদের বিভিন্ন ফোরামে দলের সমর্থক আইনজীবীদের অবস্থানগত দুর্বলতার কথা উল্লেখ করেন। একই ধরনের কথা বলেন আরেক কার্যনির্বাহী সদস্য নজিবুল্লাহ হিরু। তিনি বলেন, ‘আমি বারবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চেয়েছি। আমাদের অবস্থান দুর্বল থাকায় কিছু করা যায়নি।’

দলের কেন্দ্রীয় সভায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দলীয় নেতাদের প্রতি তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক। এজন্য সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। মানুষের ঘরে ঘরে দলের প্রচার করতে হবে।’ এসময় নির্বাচনকে ঘিরে কেন্দ্রভিত্তিক প্রচার কমিটি করার নির্দেশনা দেন তিনি।
ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় আওয়ামী লীগ সমর্থক কোনও ভোটার যেন বাদ না পড়েন, সে বিষয়ে দলীয় নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। নিজ নিজ এলাকার প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাররা স্বস্তঃস্ফূর্তভাবে  যেন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়, সেটা নিশ্চিত করতে বলেন তিনি। পাশাপাশি দলীয় সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম আরও গতিশীল করতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি।
বৈঠকে শোকের মাস আগস্টজুড়ে দলের বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud