May 7, 2024
মাংসের নানা পদের পাশাপাশি ‘বিশেষ নিরামিষ পদের’ ইফতারের স্বাদ নিতে হলে রোজাদার আর ভোজনরসিকদের পা ফেলতে হবে ঢাকা সেনানিবাস সংলগ্ন কচুক্ষেত এলাকায়।
এই এলাকায় ১৯৯৫ সাল থেকে ব্যবসা করে আসছেন আব্দুল মজিদ। শুরুতে মাখানো মুড়ি বিক্রি শুরু করলেও, কিছুদিনের মধ্যে হাতের জাদুতে পুরো এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেন তিনি। তার রেস্তোরাঁ ‘আব্দুল মজিদের স্পেশাল ঘরোয়া খাবারকে’ এক নামে চেনেন এলাকাবাসী।
ক্যাপসিকামের চপ, ধনীয়া পাতার চপ, পুদিনাপাতার চপ, লাউ পাতা চপ, পুঁইশাক চপ, কলমী পাতা চপ, ঢেঁড়শের চপ, কুমড়ার চপ, সিমের চপ, মরিচের চপ, বরবটির চপ, ফুলকপি চপ, কাকরোলের চপ, পেঁয়াজ পাতা চপসহ ২০ পদের নিরামিষ চপের আয়োজন দেখা যায় তার কাছে।
মাত্র এক টাকা থেকে শুরু করে ১০ টাকায় মিলবে এসব চপ।
আব্দুল মজিদ বলেন, “রোজায় স্বাস্থ্যকর ইফতার খুব দরকার, সবাই মাংস খেতেও পারে না। তাদের কথা বিবেচনায় রেখেই এই আয়োজন করেছি।”
আব্দুল মজিদের গরুর মাংসের হালিমও সমান জনপ্রিয়। কোন হাঁড় ছাড়া মাংসে ভরপুর এই হালিমকে ‘স্বর্গীয়’ বলে আখ্যা দেন এলাকার ব্যবসায়ী সাইমন আহমেদ।
“মজিদ মিয়ার হাতে জাদু আছে, যা আপনার উদর হয়ে হৃদয়ে জায়গা করে নেবে। আর খুব কম দামে অথচ স্বাস্থ্যকর নিরামিষ পদের খাবার মিলছে এখানে, আমি প্রতিদিনই কিছু না কিছু কিনি এখান থেকে।”
কচুক্ষেতের আরেক ঐতিহ্যবাহী আদি ভাগ্যকুল মিষ্টান্ন ভাণ্ডারেও মাংসের পদের আয়োজন নেই। ব্যাপক জনপ্রিয় এই দোকানে জিলাপি ভেজে তোলার আগেই ফুরিয়ে যায়; তাই লাইনে দাঁড়িয়ে জিলাপি নিচ্ছেন বলে জানান অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক শ্যামল রায় বলেন, “২৭ বছর ধরে এই এলাকায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী ভাগ্যকুল মিষ্টান্ন ভাণ্ডার।”
এখানে রেশমি ও শাহী জিলাপি মিলবে কেজি প্রতি ৩০০ ও ১৬০ টাকায়। এছাড়াও রয়েছে স্পোশাল দই বড়া, যা বাটিপ্রতি (১০-১২ পিস) ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
‘আজওয়াহ’ নামের আরেক খাবারের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে ব্রেড-ক্রিম পুডিং। বিশেষ এই পুডিং মিলবে বাটিপ্রতি ২৫০ টাকায়।
এছাড়াও আজওয়াহর বিফ কোপ্তা, চিকেন কোপ্তা, চিকেন জালি রোল, চিকেন জ্যাম কাবাব সমানভাবে জনপ্রিয় বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী নাঈম ইসলাম।
বোরহানি, লাবাং ও মাঠার জন্য খ্যাত ‘নিউ জাহান ফাস্ট ফুডে’ স্পেশাল লাবাং ও বোরহানি মিলবে লিটারপ্রতি ১৬০ ও ১৩৫ টাকায়। মাঠা মিলবে লিটারপ্রতি ৭৫ টাকায়।
কচুক্ষেতে ৩৮ বছর ধরে ব্যবসা করে আরেক জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ সানমুন হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের বিরিয়ানি ও হালিমে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা।
ত্রিশ বছর ধরে কর্মরত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মোহাম্মদ খোকন বলেন, “আমাদের খাসির হালিম খুবই জনপ্রিয়। ইফতারের আগেই শেষ হয়ে যায়।”