পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

নতুন প্রজন্মের মাঝে একুশের চেতনা ছড়িয়ে দিন: প্রধানমন্ত্রী

Posted on February 20, 2014 | in জাতীয় | by

Photo8098ঢাকা:  একুশ ও স্বাধীনতার চেতনা বিরোধীদের মোকাবেলা করতে নতুন প্রজন্মের মাঝে একুশের চেতনা ছড়িয়ে দিতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যারা একুশের চেতনা ও স্বাধীনতার চার মূল স্তম্ভকে অস্বীকার করে তারা একুশের শত্রু, স্বাধীনতার শত্রু। এদের মোকাবেলা করতে  নতুন প্রজন্মের মধ্যে একুশের চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে। এ জন্য বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা সমাজের প্রতিটি স্তরে পৌঁছে দিতে হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘একুশে পদক-২০১৪’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অনেক প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে  হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী, জঙ্গি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তারা মানুষের হাত কাটছে, পা কাটছে, রগ কাটছে, একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছে। আমরা এ পরিস্থিতি আর চাই না। আমরা বাংলাদেশকে একটি শান্তির দেশে পরিণত করতে চাই। গণতান্ত্রিক ধারায় দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশ মানে বাঙালি জাতির আত্মত্যাগের এক বীরত্ব কাহিনী। একুশ মানে মাকে মা বলার অধিকার অর্জন, বাঙালি জাতির চেতনা ও গৌরবের উৎস একুশ, একুশ মানে হার না মানা অবিনাশী চেতনার নাম। একুশ আমাদের পরিচয়।

বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তজার্তিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বিশ্বের সকল মাতৃভাষার সুরক্ষা বিধানে ভূমিকা রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশকে। আমরা এ লক্ষ্যে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। একুশে পদকপ্রাপ্তদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পুরস্কার বাংলা ভাষার জন্য আপনাদের দীর্ঘ দিনের সাধনা, মেধা ও পরিশ্রমের স্বীকৃতি। আপনাদের অবদানের জন্য বাঙালি জাতি চিরকৃতজ্ঞ।

এ বছর রাষ্ট্রীয় মর্যাদাপূর্ণ একুশে পদক পেলেন ১৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি। রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ১৫ জন গুণী ব্যক্তির হাতে এবারের একুশে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস। এরপর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন। সকাল ১১টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিভিন্ন ধর্মগন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এর আগে অনুষ্ঠান স্থলে প্রধানমন্ত্রীর আগমনের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়।

পরে এক এক করে পদকপ্রাপ্তদের পরিচিতি পাঠ করা হয় এবং প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের হাতে একুশে পদক তুলে দেন। পদকপ্রাপ্ত প্রত্যেককে এককালীন নগদ এক লাখ টাকাসহ ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।

এ বছর একুশে পদক প্রাপ্তদের মধ্যে তিন জনকে মরণোত্তর পদক দেওয়া হয়। তারা হলেন ভাষা আন্দোলনে ভাষাসংগ্রামী ডা. বদরুল আলম, শিল্পকলায় নাট্যব্যক্তিত্ব এসএম সোলায়মান এবং ভাষা ও সাহিত্যে লেখক আবদুশ শাকুর। বাকি পদক প্রাপ্তরা হলেন, ভাষা আন্দোলনে শামসুল হুদা, শিক্ষায় ড. অনুপম সেন, শিল্পকলায় চিত্রকর সমরজিৎ রায় চৌধুরী ও লোকসঙ্গীত শিল্পী সংগ্রাহক রামকানাই দাশ, গবেষণায় ড. এনামুল হক, সমাজসেবায় ডা. মুজিবুর রহমান, শিল্পকলায় অভিনয়শিল্পী কেরামত মওলা, ভাষা ও সাহিত্যে কবি বেলাল চৌধুরী, রশীদ হায়দার, জামিল চৌধুরী ও ছড়াকার বিপ্রদাস বড়ুয়া এবারের একুশে পদক পেয়েছেন।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ১১ ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে এবারের একুশে পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করে। প্রতিবছর সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ মর্যাদাপূর্ণ পদক দিয়ে থাকে। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সাল থেকে এ পদক দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud