পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

দেশের সব মেডিকেল কলেজে বার্ন ইউনিট হবে: প্রধানমন্ত্রী

Posted on April 6, 2016 | in জাতীয় | by

দেশের আর একটি মানুষও যাতে আগুনে পুড়ে মারা না যায়, সে জন্য পর্যায়ক্রমে সারা দেশের সব মেডিকেল কলেজে বার্ন ইউনিট চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার সকালে রাজধানীর চানখারপুলে শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, নিমতলী ট্রাজেডির পর বার্ন ইন্সস্টিটিউট স্থাপনের বিষয়টি তার মাথায় আসে।

এরপর বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনকালে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় ঢামেকের বার্ন ইউনিট অনেকের প্রাণ বাঁচিয়েছে। অনেককে বাঁচানো যায়নি।

২০১৩ থেকে চলা গত বছর পর্যন্ত এই পরিস্থিতির পর বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সস্টিটিউট স্থাপনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আর যাতে একটি মানুষও আগুনে পুড়ে মারা না যায়, সে লক্ষ্যেই ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা বড়লোক তারা বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাবেন, তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু দেশে বিশ্বমানের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না, এটা আমি বিশ্বাস করি না।

৫২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ের ইনস্টিটিউটটির নির্মাণকাজ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হবে।

অত্যাধুনিক এ ইনস্টিটিউটটি নির্মাণের পর এখানে প্রতিদিন গড়ে ৫`শ দগ্ধ রোগী একসঙ্গে চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি ইনস্টিটিউট থেকে বছরে ১০-১২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরী করা হবে।

ইনস্টিটিউটটি নির্মাণ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। নির্দিষ্ট সময়ে এ কাজ শেষ করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক।

বর্তমানে সারাদেশের ১৮টি মেডিকেলের মধ্যে ৯টিতে বার্ন ইউনিটের সুবিধা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্য সব মেডিকেল বার্ন ইউনিট চালু করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া দেশের মেডিকেল কলেজগুলোর সঙ্গে বার্ন ইউনিট ও ইন্সস্টিটিউটের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ থাকবে বলেও জানান তিনি।

দেশের জন্যে যা কলাণকর তা করেই যাবো ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢামেকের পুরাতন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভেঙ্গে নতুন অত্যাধুনিক ভবন তৈরি করা হবে।

রাজশাহী ও চট্টগ্রামে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন কর হবে।দেশী-বিদেশী উন্নত হাসপাতালগুলোর মধ্যে ডিজিটাল আন্তঃ যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে বিশেষায়িত হাসপাতালের সংখ্যা খুবই কম। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায়ে এসে আমরা বিশেষায়িত হাসপাতাল ও ইন্সস্টিটিউট স্থাপনের উদ্যোগ নেই।

তবে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে সেসবের অনেককিছু বন্ধ করে দিয়েছিল অভিযোগ করেন তিনি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, দেশে প্রতিবছর গড়ে ৬ লাখ মানুষ বিভিন্নভাবে দগ্ধ হন। তাদের চিকিৎসার জন্য কমপক্ষে দেড় হাজার ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ সার্জন প্রয়োজন হলেও বর্তমানে মাত্র ৫২ জন সেই সেবা দিচ্ছেন। ইনস্টিটিউট হলে প্রয়োজনে আটশ রোগীকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে বলে সামন্ত লাল জানান।

বার্ন ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল নির্মিত হবে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে। দুই তলা বেইজমেন্টসহ মোট ১২ তলা বহুতল ভবন হবে তিনটি ব্লকে। একটি ব্লকে বার্ন, একটিতে প্লাস্টিক ও অন্যটিতে একাডেমিক ভবন হবে।pm_9138

১৯৮৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ছয়টি বেড নিয়ে বার্ন বিভাগ চালু করেন দেশের প্রথম প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। অধ্যাপক সামন্ত লালের চেষ্টায় ২০০৩ সালে সেটি ৫০ বেডের পূর্ণাঙ্গ ইউনিট হিসেবে কাজ শুরু করে।

২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৭ জনের মৃত্যুর পর বার্ন ইউনিটের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এ ইউনিটের বেড বেড়ে প্রথমে ১০০ ও পরে ৩০০ হয়।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে দেশগুড়ে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হাজার হাজার রোগী এই বার্ন ইউনিট থেকেই চিকিৎসা নেন।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

গত বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মানের একটি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud