April 26, 2024
ডেস্ক রিপোর্ট: প্রতি ঈদের মতো এবারও ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে নতুন নোটের বেচাকেনা। ব্যাংকের মাধ্যমে নতুন টাকার বিনিময়ের পাশাপাশি ফুটপাথেও জমে উঠেছে নতুন নোটের বাজার। রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিলসহ গুলিস্তান, চকবাজার এবং সদরঘাটের বেশ কয়েকটি জায়গায় চলছে নতুন টাকার ব্যবসা। পাশাপাশি চলছে পুরনো ও ছেঁড়া টাকার বদল। নতুন টাকার গ্রাহকরা জানান, ঈদে নাতি-নাতনীদের বকশিশ দিতে নতুন টাকার কোনো বিকল্প নেই। নতুন টাকা পেয়ে যেন ওরা চাঁদ হাতে পায়। এজন্য নতুন টাকা সংগ্রহ করা। তাছাড়া নতুন টাকা আমার নিজেরও ভালো লাগে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা থেকে নতুন টাকা সংগ্রহ করা যাচ্ছে। তবে যারা ব্যাংকে যেতে পারছেন না এবং লাইনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করতে চান না, মূলত তারাই ফুটপাথ থেকে নতুন টাকা সংগ্রহ করছেন। মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশেই গত কয়েকদিন ধরে শুরু হয়েছে নতুন টাকার এই রমরমা বাণিজ্য। ফুটপাথে ডালায় নতুন টাকা সাজিয়ে বসে আছেন এই মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ আবার হেঁটে হেঁটে ক্রেতাদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বিক্রি করছেন নতুন টাকা।
নতুন টাকার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের কাছে প্রতিটি ৫ টাকার বান্ডিলে রয়েছে ৫০০ টাকা। পুরনো টাকার বিনিময়ে যা বিক্রি করছেন ৬০০ টাকায়। ২ টাকার প্রতিটি বান্ডিলে রয়েছে ২০০ টাকা। যা বিক্রি করছেন ২২০ টাকায়। ১০ টাকার প্রতিটি বান্ডিলে রয়েছে ১ হাজার টাকা। যা বিক্রি করছেন ১ হাজার ৮০ টাকায়। ১০০ টাকার প্রতিটি বান্ডিলে রয়েছে ১০ হাজার টাকা। যা বিক্রি করছেন১০ হাজার ১০০ টাকায়। তবে আরো কয়েকদিন পর এই দাম আরো বাড়বে বলে জানান বিক্রেতারা।
আফরোজা বেগম মানুষের বাসায় কাজ করেন। যা আয় করেন তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। ঈদকে কেন্দ্র করে কিছু টাকা পুঁজি করে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করেন নতুন নোট। আর এই নিয়ে নেমে পড়েছেন ব্যবসায়। ব্যাংক থেকে নতুন টাকা সংগ্রহ করতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় বলে জানান আফরোজা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সপ্তাহে একদিন আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে মাত্র ৮ হাজার ৭০০ টাকা দেয়। সেখানে গিয়েও লাইন ধরতে হয়। অনেক চেষ্টার পর টাকা নিয়ে ফুটপাথে এসে বসি। আরেক টাকা ব্যবসায়ী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা আনতে সেখানকার কিছু কর্মচারীদের কমিশন দিতে হয়। তাই তেমন একটা লাভ থাকে না।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শাহাদত মতিঝিলে ফুটপাথে নতুন টাকার বাজার থেকে ৫ ও ১০ টাকার দুটি বান্ডিল কিনেছেন। তিনি জানান, ঈদ আসার আগেই নাতি-নাতনীদের বকশিশ দিতে হয়। তাই আগেভাগেই সংগ্রহ করে রাখলাম। ঈদ বকশিশে নতুন টাকার জুড়ি নেই। নতুন টাকা পেয়ে যেন ওরা চাঁদ হাতে পায়।
এদিকে ব্যাংক থেকে উৎসাহ-উদ্দীপনাসহকারে নতুন টাকা সংগ্রহ করছে মানুষ। বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে দেখা গেছে, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে নতুন টাকা সংগ্রহ করছেন সাধারণ মানুষ। গত ৮ই জুন থেকে নতুন টাকার বিনিময় শুরু করে ব্যাংকগুলো। যা চলবে আজ পর্যন্ত।
নতুন টাকা ন্যাশনাল ব্যাংকের যাত্রাবাড়ী শাখা, জনতা ব্যাংকের আব্দুল গণি রোড কর্পোরেট, অগ্রণী ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড, সিটি ব্যাংকের মিরপুর, সাউথইস্ট ব্যাংকের কাওরান বাজার, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা সিটি (পান্থপথ); উত্তরা ব্যাংকের চকবাজার, সোনালী ব্যাংকের রমনা কর্পোরেট, ঢাকা ব্যাংকের উত্তরা, আইএফআইসি ব্যাংকের গুলশান, রূপালী ব্যাংকের মহাখালী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মোহাম্মদপুর; জনতা ব্যাংকের রাজারবাগ, পূবালী ব্যাংকের সদরঘাট, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের মালিবাগ, ওয়ান ব্যাংকের বাসাবো, ইসলামী ব্যাংকের শ্যামলী, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের দক্ষিণ খান এসএমই অ্যান্ড এগ্রিকালচার, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বনানী ও ব্যাংক এশিয়ার ধানমন্ডি শাখায় পাওয়া যাচ্ছে।
সূত্র: মানবজমিন