April 26, 2024
ঢাকা: ক্ষমতা কমে যাওয়াতে আপত্তি নেই দুর্নীতি দমন কমিশনের। ‘দুর্নীতি ও ঘুষ কেলেঙ্কারি’ অপরাধ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের তফসিল থেকে অন্য অপরাধগুলোকে বাদ দেওয়ার সরকারি উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসাবে মনে করছে কমিশন। সোমবার ‘দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৫’ ও ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ (সংশোধন) আইন, ২০১৫’ সংশোধনের প্রস্তাব চূড়ান্তভাবে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর এক প্রতিক্রিয়ায় কমিশনের চেয়ারম্যান একথা বলেছেন।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী দুর্নীতি ও ঘুষ কেলেঙ্কারির অপরাধসমূহের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশন মুদ্রা পাচার, জালিয়াতি, প্রতারণা, মাদক সংক্রান্ত অপরাধসহ বেশ কিছু অপরাধের তদন্ত ও মামলা পরিচালনা করে আসছে। আজকের সংশোধনীর খসড়ায় দুর্নীতি ও ঘুষ কেলেঙ্কারি ছাড়া অন্যান্য অপরাধসমূহ কমিশনের তফসিল থেকে বাদ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘কিছু অপরাধের তদন্ত ও মামলা পরিচালনার দায়িত্ব অন্যান্য সংস্থাকে দেওয়া হলে দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর চাপ অনেক কমে আসবে।’ এতে কমিশন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের মধ্যে কোনও ধরনের ব্যত্যয় সৃষ্টি হবে না বলেও জানান তিনি।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের সংশোধনের বিষয়ে বদিউজ্জামান বলেন, ‘আইনটি সংশোধনের বিষয়ে আমাদের সায় আছে। আমরাই চেয়েছি যাতে আইনটি সংশোধন করে বেসরকারি পর্যায়ের ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রতারণা, জালিয়াতি ও ভূমি দখল-বেদখলসহ এ ধরনের মামলাগুলো কমিশনের বাইরে অন্যান্য সংস্থাকে দেওয়া হয়। কেননা- এ ধরনের হাজার হাজার অভিযোগ এখন কমিশনের পেন্ডিং রয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে অনুসন্ধান করতে গিয়ে কমিশনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কাজেই আমরাও চেয়েছি- বিদ্যমান আইনটি সংশোধন করা হোক। এতে কমিশনের ওপর অনেক চাপ কমে আসবে।’
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশোধনীর প্রস্তাব সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই আইনটি সংশোধনের বিষয়ে অফিসিয়ালি আমি এখনও তেমন কিছু জানি না। তবে এই আইনটি সংশোধনের উদ্দেশ্য নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে আমাদের কমিশনের প্রতিনিধিও অংশ নিয়েছেন। মানিলন্ডারিং অপরাধের তদন্ত পুলিশ করতে চায় বলে ওই সময় আমাদের একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে। এতে আমরা কোনও দ্বিমত করিনি।’
আইন সংশোধনের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে বদিউজ্জামান বলেন, ‘এটা আমি মনে করি না যে কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করার উদ্দেশ্যে আইন সংশোধন করা হচ্ছে। কেননা- আইন সংশোধন করে কিছু মামলা অন্যান্য সংস্থার কাছে হস্তান্তর করার প্রস্তাব আমাদেরই ছিল। তাছাড়া কমিশন প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্যই ছিল- দুর্নীতি দমন। দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলা দায়েরের এখতিয়ার কমিশনের হাতেই থাকছে।’
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘তদন্ত ও মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা আগেও পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিয়েছি। অনেক মামলার ক্ষেত্রে আমরা আগেও যৌথভাবে তদন্ত ও অনুসন্ধান চালিয়েছি। এসব অপরাধের তদন্তভার এখন পুলিশের হাতে দিলে আমাদের ওপর চাপ অনেক কমে আসবে।’