পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে চায় সরকার

Posted on May 26, 2013 | in আন্তর্জাতিক | by

46934

ওয়ার্ল্ড ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী ম্যাগাজিন দি ইকোনমিস্ট ২৫ মে ‘প্রেস ফ্রিডম ইন বাংলাদেশ : ইন দ্যা বেস্ট ইন্টারেস্ট অব দ্যা মিডিয়া’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে।  যাতে গত কয়েক মাসে বিভিন্ন ঘটনায় গণমাধ্যমের উপর সরকারের যে আচরণ দেখা যাচ্ছে তা মুক্ত গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর কর্তৃত্ব বলে দবি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে বাংলাদেশ সরকার মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বর্তমান স্বাধীনতা, সরকারের অবস্থান, গণমাধ্যমের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাসহ বিভিন্ন আলোচনা উঠে এসেছে।

অপরদিকে বাংলাদেশে সংবাদ মাধ্যমের পরিবেশ ক্রমেই খারাপ হয়ে ওঠায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষার সংগঠন দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস।

সম্প্রতি বাংলাদেশে বন্ধ হওয়া মিডিয়া চালু করতে সম্পাদকদের বিবৃতির কথা উল্লেখ করে তাতে বলা হয়, চলতি সপ্তাহে সংবাদপত্র সম্পাদকরা এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত বিরোধীদলীয় পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবি করেছেন সরকারের কাছে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সম্পাদকদের ওই বিবৃতি ‘সংবাদপত্রের স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়’ বলে তা সরাসরি প্রত্যাখান করেছেন। সম্পাদকরা মাহমুদুর রহমানের ‘আমার দেশ’ ছাপানোর পাশাপাশি বন্ধ দু’টি টিভি স্টেশনকে ফের সম্প্রচারের অনুমতির আহ্বান জানান। সম্পাদকদের ওই দাবি সরকার প্রত্যাখ্যান করেছে।

মিডিয়ার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়ে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্য সব প্রতিষ্ঠানের মতোই বাংলাদেশের মিডিয়া এদেশের পরস্পর বিদ্বেষী দুই রাজনৈতিক দলের কোন না কোন পক্ষের সমর্থক। এ বছর শেষে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। আর একে কেন্দ্র করে সামনের পরিস্থিতি আরও  কঠোরতর হয়ে উঠছে।
প্রতিবেদনে মন্তব্য করে মিডিয়াতে গভীর রাতে রাজনৈতিক টক শো হয়, যা ব্যাপক জনপ্রিয়। কিছু মিডিয়া বিকশিত হয়ে উঠছে নানাভাবে।

প্রতিবেদনে আমার দেশ ও মাহমুদুর রহমান সর্ম্পকে বলা হয়, মাহমুদুর রহমান একজন ব্যবসায়ী এবং বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। সরকার পত্রিকা বন্ধ করে দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত তার সম্পাদিত পত্রিকাটি হট কেকের মতোই বিক্রি হচ্ছিল। কয়েক মাসে এর প্রচার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল ৬ গুণ। প্রতিদিন পত্রিকাটি বিক্রি হয়েছে ২ লাখ কপি। এতে বলা হয়, মাহমুদুর রহমানকে আটক করা হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে। গত ডিসেম্বরে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের এক চেয়ারম্যান ও ব্রাসেলসের এক আইনজীবীর স্কাইপ সংলাপ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেছিলেন পত্রিকায়। সেখান থেকেই তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের সূত্রপাত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ রাজনীতিবিদরা মাহমুদুর রহমানের তীব্র সমালোচনা করে থাকে। কাউকে প্রভাবিত করতে তার অনেকটা অলৌকিক ক্ষমতা আছে বলে কেউ কেউ ধারণা করে থাকে। তারা মনে করে, তিনি যে কোন বিষয়ে জনগণকে উসকে দেয়ার বিশাল ক্ষমতা রাখেন।

তাকে আটক করার আগের দিন ‘আমার দেশ’ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানের আমলের ঘটনাবলী সম্পর্কে মার্কিন দূতাবাসের কূটনৈতিক তারবার্তা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে। ওই ঘোষণা দেয়া হয় তাদের ওয়েবসাইটে। বলা হয়, উইকিলিকস-এ প্রকাশিত গোপন বার্তা সিরিজ আকারে তারা বাংলায় অনুবাদ করে প্রকাশ করবেন। এর শিরোনাম হবে ‘মুজিব: দ্য নিউ মুঘল’। ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে একদলীয় শাসন চালুর জন্য ‘চেয়ারম্যান মুজিব’ একচ্ছত্র ক্ষমতা নিয়ে নেন- সেদিকেই এ ইঙ্গিত।

উইকিলিকসের আরেকটি বার্তায় বলা হয়েছে, শেখ মুজিবের মাথায় একনায়ক হয়ে ওঠার ভূত চেপে বসেছিল। বাঙালিদের আকাঙক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়ে তিনি ব্যক্তিগত ও বংশগত শাসন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ব্যাপকভাবে ক্ষমতা নিতে চেয়েছিলেন নিজের হাতে।

ওই তারবার্তার ভাষ্য ও মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তারের সময় দেখে মনে হয় সরকার মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে দেশের ইতিহাস সম্পর্কে তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিকে টিকিয়ে রাখতে।

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud