
ঢাকা: রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশে সরকার যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিএনপি তা মানবে না বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু।
সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
দুদু বলেন, ‘সরকার অঘোষিতভাবে জাতির ওপর জরুরি অবস্থা চাপিয়ে দিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সভা-সমাবেশ না করতে দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছেন তা অসাংবিধানিক। বিএনপি এ অসাংবিধানিক নিয়ম মানবে না.।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, ‘সবকিছু ভেঙে পড়ার আগে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, সরকারেরও সে অবস্থা হয়েছে। তারা ভীত, আতঙ্কিত ও বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে।’
দুদু বলেন, ‘সরকার অঘোষিতভাবে বাকশাল কায়েমের চেষ্টা চলাচ্ছে। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও আদালতের রায় মানছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দিন খান আলমগীর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। তাদের একজনের সঙ্গে আরেকজনের কথার কোনো মিল নেই।’
মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশনের সম্প্রচারে অনুমতি ও আমার দেশের প্রেস খুলে দেয়ার দাবিতে ১৫ জন সম্পাদকের দেয়া বিবৃতি নিয়ে তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন শামসুজ্জামান দুদু।
তিনি ইনুর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি একদিনও সাংবাদিকতা করেছেন কিনা আমি জানি না। যারা বিবৃতি দিয়েছেন তারা ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন। তারা এদেশের দিকপাল। আপনি যে চেয়ারে বসেছেন সে চেয়ারে বসে এ ধরনের কথা বলা ঠিক না। এতে নিজের ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয়।’ তথ্য মন্ত্রীকে মাথা ঠাণ্ডা করে কথা বলার আহ্বান জানান দুদু।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘‘সরকারকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ‘যতোই প্রতিবন্ধকতা, জুলুম-নির্যাতন করুন না কেন, পদত্যাগ করে যথাসময়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতেই হবে। বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোট এর বাইরে কোন ব্যবস্থা মেনে নেবে না।’ কোনো অবস্থাতেই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে জানান তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের আদালত জামিন দিলেও সরকার তা মানছে না। তাদের আবার জেলগেট থেকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদকে জেলে নির্যাতন করা হচ্ছে। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ জেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্মমহাসচিব আমান উল্লাহ আমান ও মো. শাহজাহান জামিন পেলেও তাদের গ্রেপ্তার করার জন্য পিজি হাসপাতালের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
সভা-সমাবেশে এক মাসের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে দুদু বলেন, ‘যদি আইন মানেন, সংবিধান মানেন তাহলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আদেশ মানার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি আইন ও সংবিধান মানে।’
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রোগ মুক্তির জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা। পুলিশ এ দোয়া মাহফিল করতে দেয়নি।
দুদু অভিযোগ করেন, দলীয় কার্যালয়ের নিচে একটি কক্ষের ভেতরে দোয়া মাহফিল করতে চাইলেও পুলিশ কোনো নোটিশ ছাড়াই, গ্রেপ্তারের ভয় ও হুমকি-ধমকি দিয়ে তা করতে দেয়নি। পুলিশ বলেছে, দোয়া মাহফিলে বিশৃঙ্খলার সৃস্টি হবে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার শুধু দলীয় কার্যালয়ে তালা মারতে বাকি রেখেছে।
কোনো নেতাকর্মী স্বাচ্ছন্দে কার্যালয়ে আসতে, যেতে পারছে না।’ আরো কয়েকটি দলের কার্যালয়ে সরকার তালা ঝুলিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
…………………..ঢাকাটাইমস