November 5, 2025
ঢাকা: প্রস্তাবিত পদ্মা সেতুর দুর্নীতি ষড়যন্ত্রে পরিবারের সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ ডাহা মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কানাডার প্রভাবশালী সম্প্রচার সংস্থা সিবিসি টেলিভিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী তার পরিবারের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেন। গত বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচার করা হয়।
পদ্মা সেতু ও কানাডীয় প্রকৌশল সংস্থা এসএনসি-লাভালিনের ওপর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ ধরনের অভিযোগ করা হয়। সিবিসির ‘দ্য ন্যাশনাল’ অনুষ্ঠানে গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি সম্প্রচার করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পদ্মা সেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেতুটি হলে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকা-সহ আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং যোগাযোগব্যবস্থা সুগম হবে।”
দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতুর ঋণ বাতিলের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা বারবার কানাডা ও বিশ্বব্যাংককে এ-সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণ সরবরাহের জন্য বলেছি, কিন্তু তারা কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেয়নি।”
প্রতিবেদক বলেন, কিন্তু তারা তো দুর্নীতিতে জড়িত ব্যক্তিদের নামের তালিকা আপনাদের কাছে দিয়েছে। কখন ঘুষ চাওয়া হয়েছিল, এর দিন-তারিখও উল্লেখ করেছে। তাহলে আপনারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তারপর কমিশন তদন্ত শুরু করে।”
প্রতিবেদনে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে আওয়ামী লীগের অঘোষিত ট্রেজারার ও ক্যাশিয়ার বলে উল্লেখ করা হয়। সিবিসির প্রতিবেদক বলেন, অভিযোগ রয়েছে, সৈয়দ আবুল হোসেন আওয়ামী লীগ ও আপনার পক্ষে তহবিল সংগ্রহ করেন। এ অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রধানমন্ত্রী। ‘ক্যাশিয়ার’ শব্দে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, “না কখনোই না, তিনি (আবুল হোসেন) ক্যাশিয়ার নন। আমাদের দলের জন্য তহবিল সংগ্রহের তিনি কেউ নন। কেউ যদি এসব কথা বলেন, তাহলে তারা পুরোপুরি ভুল বলেন।”
সিবিসির অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করে। সরকার কোনোভাবে দুদকের কাজে হস্তক্ষেপ করে না।
আপনি কী করে বলেন কোনো দুর্নীতি হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “বিশ্বব্যাংকই বলেছে, কোনো দুর্নীতি হয়নি কিন্তু দুর্নীতির ষড়যন্ত্র হয়েছিল।”
পদ্মা সেতুর দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে শেখ হাসিনার আত্মীয় নিক্সন চৌধুরীর জড়িত থাকার অভিযোগেরও উল্লেখ করেন সিবিসির প্রতিবেদক। টেলিভিশনটির পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে বলা হয়, এর আগে দুদকের এক মামলায় আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, আপনি আপনার বোন শেখ রেহানার সহযোগিতায় অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন। এখন অভিযোগ পাওয়া গেছে, এসএনসি-লাভালিনের কাছে আপনার দল, পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের জন্য ঘুষ দিতে বলা হয়েছিল। এসব অভিযোগ কি সত্য নয়?
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “না। ডাহা মিথ্যা, থাকলে তারা প্রমাণ করতে পারত। গত তিন বছরে কি প্রমাণ করতে পেরেছে? না।”