পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

হেফাজত হটাও অভিযান যেভাবে হল

Posted on May 6, 2013 | in জাতীয় | by

shaka (3)

ঢাকা: মধ্যরাত থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে পণ্ড হয়ে গেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের অবস্থান কর্মসূচি। সমাবেশের শুরু থেকে হেফাজতের কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ করে টিকে থাকলেও রাতের অভিযানে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। তাদেরকে হঠাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন কোন বেগ পেতে হয়নি। অভিযান শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে হেফাজতের কর্মীরা পিছু হঠে চলে যান। তবে তাদেরকে হঠাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শতশত রাউন্ড টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও গুলি ব্যবহার করতে হয়। অভিযানে কয়েক হাজার পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া অভিযানে সাঁজোয়া যানসহ পুলিশের আধুনিক সকল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়।

অভিযান শেষে ভোর পাঁচটার দিকে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জায়গায় রক্তের দাগ লেগে আছে, চার দিকে এলো মেলো পড়ে আছে জায়নামাজ, ছেড়া জুতা, পাউরুটির প্যাকেট আর ব্যাগসহ নানান ধরণের জিনিস পত্র। বিভিন্ন জায়গায় আগুনের ধ্বংসাবশেষ, ভেঙ্গে যাওয়া দোকান-পাটের সাটার, কাঁচ, রাস্তার মাঝের সড়ক দ্বীপের ইট তুলে ফেলা হয়েছে। যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে রাবার বুলেটের খোসা, টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট। শতশত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এলাকাটিতে অবস্থান করছেন। মাঝে মাঝে ফাঁকা গুলির শব্দ ভেসে আসছে। এদিকে সকালের আলো ফোটার আগেই সিটি করপোরেশনের কর্মীরা পরিস্কার কাজ করতে আসেন। হেফাজতের কর্মীরা ফুটপাতের হকারদের ছোট দোকানগুলো এনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল সেগুলো পরিস্কার করছেন। বিভিন্ন দোকানের ভাঙচুরের জিনিসপত্রও পরিস্কার করছেন তারা। এছাড়া যে সমস্ত হেফাজত কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছিলেন তাদেরকে পুলিশ গ্রেপ্তার না করে চলে যাওয়ার সুযোগ দেন। তারা যে যার মত চলে যায়। তদের অধিকাংশের মুখে আতঙ্কের ছাপ দেখা লক্ষ্য করা গেছে।

হেফাজতের এক কর্মী আব্দুল মালেক জানান, রাত সোয়া দুইটার দিকে যাত্রাবাড়ির দিকের রাস্তা খোলা রেখে সমাবেশের চারপাশ দিয়ে আক্রমণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারা সমাবেশের মূল মঞ্চসহ সমাবেশের সকল জায়গায় একসাথে গুলি, টেয়ারসেল ও বোমা নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় হেফাজতের অনেক কর্মী ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। তারা কি করবে বুঝে উঠতে না পেরে দিকবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। অনেককে গুলি খেয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেকে আশপাশের গলি দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সমাবেশ স্থল ফাঁকা হয়ে যায়।

ফকিরাপুলে বসবাস করা আব্দুল্লাহ বলেন, রাতে হঠাৎ গুলির বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। মনে হচ্ছে যেন কোন যুদ্ধের ময়দানে আছি। মঝে মাঝে বোমার বিকট শব্দ ভেসে আসে। লোকজনের চিৎকারে যেন এলাকাটি ভারি হয়ে উঠেছে। লোকজন বিভিন্ন বাসায় এসে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। তবে ভয়ে অধিকাংশ বাসার লোকজন দরজা খোলেনি। তবে বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় ও সিঁড়িতে আশ্রয় নেয় হেফাজত কর্মীরা।

অভিযানের বিষয়ে মতিঝিল থানার এডিসি মেহেদি হাসান বলেন, আমরা ঘণ্টাব্যাপী চারদিক থেকে অভিযান পরিচালনা করেছি। এই অভিযান অত্যন্ত সফল হয়েছে। কোনরকম মৃত্যু ছাড়াই হেফাজত কর্মীদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।

পুলিশ চারজনের মরদেহ মতিঝিল থেকে নিয়ে গেছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। তবে একজন পুলিশ মারা গেছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

তবে মতিঝিলের বিভিন্ন স্থান ঘুরে ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযানের সময় পুলিশকে অনেক মরদেহ গাড়িতে তুলতে দেখা যায়। ঢাকা মেডিক্যাল সূত্রে জানা গছে, সেখানে আট জনের মরদেহ রয়েছে।

এদিকে হেফাজত ইসলামের মিডিয়া সেলের প্রধান আহলুল্লাহ ওয়াসেল জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মধ্যরাতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে বহু লোককে হত্যা করেছে।পুলিশ ট্রাকে করে মরদেহগুলো নিয়ে গেছে। তাদের গুলিতে হাজার হাজার কর্মী আহত হয়েছে। আহতরা ঢাকা মেডিকেলসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud