পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

শেখ হাসিনা-এরশাদ বৈঠকে পাল্টাপাল্টি পরামর্শ- অনুরোধ

Posted on February 14, 2014 | in জাতীয় | by

pm_and_earshadরওশনকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পার্টিকে সংগঠিত করতে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে, মঞ্জুর হত্যা মামলা ঝুলিয়ে না রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। জাতীয় পার্টির একাধিক শীর্ষ নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে সংসদ নেতার কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মধ্যে বৈঠকে এ সব বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকটি দুই নেতার মধ্যে একান্তে অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার সময় অন্য কোনো নেতাদের সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। গোপনীয়তা রক্ষা করা হয় আলোচ্য বিষয় গোপন রাখার জন্য। বৈঠকটি মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শুরু হয়ে শেষ হয় সাতটা ২৫ মিনিটে। বৈঠকে শেখ হাসিনা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দেশের উন্নয়নে সরকারের পাশে থাকার আহ্বান জানান। আর সারা দেশে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করতে তৃণমূলে সফর করারও পরামর্শ দেন তিনি।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে গেলে তাকে নিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই প্রস্তাবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সায় দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বৈঠকে মেজর মঞ্জুর হত্যা মামলার বিচারক বার বার পরিবর্তন ও মামলাটি ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এরশাদ। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী সত্যিকারের শক্তিশালী বিরোধীদল হিসেবে জাতীয় পার্টিকে দেখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে মৌলবাদের উত্থান রোধে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

এরশাদ বৈঠকে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে রওশন এরশাদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানান তিনি যেখানে থাকবেন, সেখানেই জাপার সমর্থকরা থাকবে। আর সেটাই হবে প্রকৃত জাতীয় পার্টি। জবাবে প্রধানমন্ত্রীও নাকি আশ্বস্ত করেছেন জাতীয় পার্টির নেতা হিসেবে এরশাদকেই তাদের পছন্দ। তাকেই তারা সমর্থন দিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও আলোচনার বিষয়বস্তু প্রকাশ করতে চাননি। সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।

এদিকে, জাতীয় পার্টি সূত্র জানিয়েছে, রওশন এরশাদের ভূমিকার কারণে চরম দু:শ্চিন্তায় রয়েছেন এরশাদ। কারণ, তার কোনো কথাই শুনছেন না রওশন। নির্বাচন পরবর্তী বিরোধের সূত্রপাত হয়, বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচন নিয়ে। প্রথমে রওশনকে বিরোধীদলীয় নেতা করার পক্ষে থাকলেও পরে আপত্তি জানান এরশাদ। কিন্তু, রওশন বেঁকে বসায় এরশাদের মিশন ব্যর্থ হয়। এরপর মন্ত্রিসভায় যোগদান নিয়েও টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। এরশাদ চেয়েছিলেন মন্ত্রিসভায় অংশ না নিতে। কিন্তু, রওশনের ইচ্ছায় জাপা থেকে তিনজন মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন।

চলমান দ্বন্দ্বে ঘি ঢালেন এরশাদ নিজেই। হঠাৎ করে এককভাবে নারী এমপির তালিকা করেন এরশাদ। আবার রওশনও পাল্টা তালিকা করেন। যদিও এখন পর্যন্ত কোনোটাই চূড়ান্ত আলোর মুখ দেখেনি। তবে এরশাদের তালিকার অনেকের যে স্থান হচ্ছে না এ কথা অনেকটাই নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন রওশনপন্থিরা।

এরই মধ্যে ১২ ফেব্রুয়ারি জেলা কমিটির সভাপতি-সম্পাদক ও নির্বাচিত এমপিদের মতবিনিময় সভা ডাকেন এরশাদ। কিন্তু, সেখানে মাত্র চারজন এমপি হাজির হন। আর ৭৪ সাংগঠনিক জেলার মধ্যে মাত্র ২০ জেলার নেতারা অংশ নেন।

এরশাদ ওই বৈঠকে আক্ষেপ করে বলেন, ’৩০ জন লাঙল মার্কা নিয়ে এমপি হয়েও লাঙলের মিটিংয়ে আসেনি। ৩০ জন এমপি মানেই কি জাতীয় পার্টি!’

৩০ এমপিকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে এরশাদ বলেন ‘তোমরা ফিরে আসো। না হলে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ হবে।’

এরশাদ ওই সভায় বলেন, ‘জাতীয় পার্টিতে সংকট আছে। কিন্তু মহাসংকট নয়। এটা কৃত্রিম সংকট। জাপার সংকটের মধ্যেই পথ চলার অভ্যাস রয়েছে। জাতীয় পার্টি আগামীতে এককভাবে সরকার গঠন করবে।’

গত বছরের ৩ ডিসেম্বর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয় এরশাদের। এরপর ১২ ডিসেম্বর র‌্যাব তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করায়। এরশাদ সেখানে এক মাস অবস্থান করেন।

এরপর শপথ নিয়ে নানা রকম নাটক হলেও শেষ পর‌্যন্ত সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন এরশাদ। পরে তাকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত নিযুক্ত করা হয়। জবাবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রথমে চিঠি দিয়ে, দ্বিতীয় দফায় গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

কিন্তু দীর্ঘ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এরশাদের সরাসরি কোনো বৈঠক হয়নি। সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল গত বছরের ১৯ অক্টোবর। সেদিন গণভবনে নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন এরশাদ। (খবর: বাংলানিউজ)

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud