November 5, 2025
সাভার: সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজার ধ্বংসস্তুপ সরানোর পর উদ্ধার কাজের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। ভবন ধসের ২০তম দিনে এসে সোমবার রাতে উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হলো।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় সেনাবাহিনীর সাভারস্থ কন্ট্রোল রুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার কাজের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী।
সংবাদ সম্মেলনে হাসান সারওয়ার্দী জানান, “একজন জীবিত ব্যক্তি অথবা মৃতদেহ উদ্ধার বাকি থাকা পর্যন্ত আমরা স্থান ত্যাগ করিনি। এখন পর্যন্ত জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ২ হাজার ৪৩৮ জনকে যাদের মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেছেন ১২ জন। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১২৭ জনে। তাদের মধ্যে ৮৩৪ জনের লাশ শনাক্ত হওয়ার পর তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। এছাড়া পরিচয় না পাওয়া ২৩৪ জনের ডিএনএ সংগ্রহের পর আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়েছে। এবং ৫৯ জনের লাশ শনাক্ত করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে ২৪ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ৩৮১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৯ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত ভারি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ৭৩৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়া জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে ১৮৬ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “জীবিত ব্যক্তি ও মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ শেষ করলেও অসুস্থদের চিকিৎসা সেবা প্রদান, সুস্থদের চাকরি এবং যাদের পরিবারে উপার্জন করার লোক নেই তাদেরকে পুনর্বাসনের বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মঙ্গলবার থেকে বিজিএমইএ সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি তথ্য সেল খুলবে, যেখান থেকে পরবর্তী তথ্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে। এছাড়াও সাভার ক্যান্টনমেন্ট সিইও অফিসে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অসুস্থ, নিখোঁজ ব্যক্তিদের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে।”
মঙ্গলবার সকাল ৬টায় জেলা প্রশাসনের কাছে রানা প্লাজার যাবতীয় দেখভালের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান জিওসি। এদিন দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় আহত, নিহত ও ক্ষতিগ্রস্থদের ব্যাপারে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
তিনি জানান, ইতিমধ্যে এক হাজার শ্রমিককে চাকরি দেওয়ার জন্য তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পঙ্গু রোগীদের কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন, গুরুতর অসুস্থদের দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টায় রানা প্লাজা নামের ৮তলা ভবন ধসে পড়ে। সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিস ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংস্থা এবং সাধারণ উদ্ধারকর্মীরা টানা ২০ দিন ধরে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেছেন।