May 3, 2024
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) আগামী নির্বাচনে মেয়র মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগে নতুন বিভেদ সৃষ্টি হচ্ছে। দলীয় মনোনয়ন পেতে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ্যে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। মহানগর সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মেয়র নির্বাচন নিয়ে দলীয় প্রধানের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। গত শনিবার দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক শেষে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ‘কাজ করতে’ বলেছেন বলে জানান সাবেক মেয়র কামরান। অন্যদিকে মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ দাবি করেছেন, দলীয় প্রধানের বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে কামরান বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময়মতো জনমতের ভিত্তিতে দলীয় প্রার্থী দেবেন বলে মনে করেন আসাদ।
২০১৩ সালের ১৫ জুন সিসিকের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রথমবারের মতো মেয়র হন বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী। তৎকালীন সিলেট পৌরসভায় কমিশনার থেকে চেয়ারম্যানের ধারাবাহিকতায় সিসিকের প্রথম মেয়র হিসেবে ১৭ বছর দায়িত্বে ছিলেন কামরান। গত নির্বাচনে পরাজিত কামরান কিছুদিন নীরব থাকার পর সাম্প্রতিক সময়ে ফের তৎপর হয়েছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ (সদর) আসনে আলোচনায় থাকা কামরান মেয়র পদে পুনরায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে সিসিকের নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় মনোনয়ন পেতে সক্রিয় হন আসাদ। নগরীতে তার সমর্থনে ‘মেয়র পদে দেখতে চাই’ লেখা ব্যানার-পোস্টারও সাঁটানো হয়েছে বিভিন্ন সময়ে।
গত শনিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় তাকে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেওয়া হয়েছে বলে জানান কামরান। সেদিনের বৈঠক শেষে কামরান ও রাজশাহীর সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সে সময় প্রধানমন্ত্রী তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে কামরান সমকালকে বলেন, দলের আরও অনেকেই তা শুনেছেন।
কামরান প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, নির্বাচনে জেতার জন্য একমাত্র পথ হচ্ছে জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা। এটাকে কামরান দলীয় প্রধানের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ বললেও আসাদ ভিন্নমত প্রকাশ করে সমকালকে বলেন, নেত্রীর সঙ্গে কেউ সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি সবাইকে বলেন, মাঠে যাও, মানুষের কাছে যাও, কাজ কর। এটাকে কামরান গ্রিন সিগন্যাল ভেবে ভুল করছেন বা প্রচার চালিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন।
নিজের অবস্থান প্রসঙ্গে আসাদ বলেন, ‘আমি এ শহরের ছেলে, এ শহরের সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। সিলেটবাসী পরিবর্তন চায়। জনমতের গুরুত্ব অনুযায়ী নেত্রী সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।’ অন্যদিকে নেত্রীর সিদ্ধান্তের পরও আসাদের এমন বক্তব্য দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে বলে দাবি করেন কামরান। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে কামরান দলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন আসাদকে।