পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

মওলানা ভাসানী এক প্রাতঃস্মরণীয় নাম

Posted on November 16, 2014 | in নির্বাচিত কলাম | by

Bhasani-1ঢাকা: মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে তিনি জলেন, ‘মওলানা ভাসানী আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক প্রাতঃস্মরনীয় নাম। সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশবাদ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের প্রবাদ পুরুষ মওলানা ভাসানী ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে উপ-মহাদেশের নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের পক্ষে তিনি আপোষহীন নেতৃত্ব দিয়েছেন। ’৫০ এর দশকেই মওলানা ভাসানী বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম বাণী শুনিয়েছিলেন এদেশের জনগণকে। তিনি আমাদের জাতীয় স্বাধীনতার প্রথম স্বাপ্নিক, দেশমাতৃকার মুক্তির পথ প্রদর্শক।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং কৃষক শ্রমিক মেহনতি জনতার ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ছিলেন প্রদীপ্ত এক আলোকবর্তিকা। তার অবস্থান ছিল শোষণের বিরুদ্ধে শোষিতের পক্ষে। অধিকার আদায়ে তিনি এদেশের মানুষকে সাহস যুগিয়েছেন তার নির্ভিক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে। তার হুংকারে কেঁপে উঠত অত্যাচারী শাসক শোষকগোষ্ঠীর মসনদ।’
খালেদা বলেন, ‘অসহায় মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় মওলানা ভাসানী আমাদের প্রেরণার উৎস। তার নিখাদ দেশপ্রেম, দেশ ও জাতির স্বার্থ রক্ষা এবং গণতন্ত্র ও মানবতার শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে যুগ যুগ ধরে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করবে। তার আদর্শকে সঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারলেই আমরা আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হবো।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘এদেশে আবারও গণবিরোধী শক্তি গায়ের জোরে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে গণতন্ত্রে স্বীকৃত মানুষের সকল স্বাধীনতাকে হরণ করে নিয়েছে। জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করে একের পর এক গোপন চুক্তির মাধ্যমে বর্তমানে দেশকে যেদিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে তাতে জাতীয় স্বাধীনতা বিপন্ন হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে আগ্রাসী শক্তির দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের মাটি, মানুষ সংস্কৃতির ওপর চলছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নিরবচ্ছিন্ন আগ্রাসন। তাই এই মুহূর্তে আধিপত্যবাদী শক্তি এবং তাদের এদেশীয় প্রতিভূদের রুখতে মওলানা ভাসানী প্রদর্শিত পথই আমাদের পাথেয়। আমরা সেই পথেই অপশক্তির অশুভ ইচ্ছাকে পরাস্ত করতে সক্ষম হবো।’
এদিকে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বাণী দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মওলানা ভাসানী ছিলেন আফ্রো-এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকার নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর। তার কণ্ঠে উচ্চারিত হতো বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের দাবি। তিনি ছিলেন মজলুমের বন্ধু, সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে, অত্যাচারী শাসক ও শোষকগোষ্ঠীর ত্রাস এক উচ্চারিত কণ্ঠ।’
মওলানা ভাসানী এক প্রাতঃস্মরণীয় নামউল্লেখ্য, বিংশশতকী ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম তৃণমূল রাজনীতিবিদ ও গণআন্দোলনের নায়ক মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। তার জন্ম ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর। ১৯৪৭ সালে সৃষ্ট পাকিস্তান ও ১৯৭১-এ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। দেশের মানুষের কাছে ‘মজলুম জননেতা’ হিসেবেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। মওলানা ভাসানী রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময় মাওপন্থি কমিউনিস্ট তথা বামধারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার অনুসারী অনেকেই তাকে ‘লাল মওলানা’ নামেও ডাকতেন।
তিনি ১৯৫৭ সালের কাগমারী সম্মেলনে পাকিস্তানের পশ্চিমা শাসকদের ‘ওয়ালাকুমুসসালাম’ বলে সর্বপ্রথম পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতার ঐতিহাসিক ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন। ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর মজলুম এ নেতা পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud