May 19, 2024
টাঙ্গাইলে: টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় ছেলের সামনে মাকে নির্যাতনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে তিনজন নিহত হবার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এঘটনায় সাংবাদিকদের কাছে এখনো পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বৈঠক করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার নিহতদের লাশ হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
গত মঙ্গলবার ওই ঘটনার পর এলাকাবাসি বিক্ষোভ করে আসছিল। এরপর শুক্রবার স্থানীয় এলাকাবাসির বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা মহাসড়কে এসে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসির ব্যাপক সংঘর্ষ হয় ও পুলিশের গুলিতে উপজেলার সালেঙ্কা গ্রামের শামীম (৩২), সাতুটিয়া গ্রামের ফারুক (৩৫) ও কুষ্টিয়া গ্রামের শ্যামল দাস (১৫) নিহত হয়। সংঘর্ষে হতাহতের ব্যাপারে রাবার বুলেট ও লাঠিপেটার আঘাতে তাদের মৃত্যু হয় বলে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. মাহফিজা ইয়াসমিন জানিয়েছেন।
এঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় আরো ২ জনকে চিকিৎসার জন্যে ঢাকায় আনা হয়েছে। পুলিশের সংঘর্ষের সময় প্রায় ৫০ জনের মতো আহত হয়।
গত মঙ্গলবার সকালে ওই তরুণ ও তার মাকে আলোচনার জন্য বাড়িতে ডেকে আনে রফিকুল ইসলাম। সেখানেই মাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছে তরুণটি। ওই ঘটনায় নির্যাতিত মা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন এবং এরপরে পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তি রফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগী ভগ্নিপতি হাফিজকে গ্রেফতার করে। দুষ্কৃতিকারীদের বিচারের দাবীতে এলাকাবাসী ঘটনার পর থেকে বিক্ষোভ করছিল, তবে শুক্রবার এিিট বড় আকার ধারণ করে।
ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ওই তরুণ সাংবাদিকদের বলেন, রোমা তাকে ও তার মাকে ‘বিবস্ত্র করে পেটায়’ এবং পরে ঘরে নিয়ে তার মাকে ‘ধর্ষণ করে’।
এই ঘটনায় মঙ্গলবার রোমা, হাফিজসহ তিনজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে কালিহাতী থানায় মামলা করেন ওই তরুণের মা।
তিনি ও তার ছেলে ধর্ষণের কথা বললেও মামলায় শ্লীলতাহানির কথা বলা হয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা কালিহাতী থানার উপ-পরিদর্শক আবুল বাশার জানান।
ধর্ষকের বিচার দাবিতে শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে কালিহাতী উপজেলা সদরে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে লাঠিপেটা ও পরে রাবার বুলেট ছোড়ে। ওই সময় বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে বিজিবি ও র্যাব পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয়।