পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা মংলা সমুদ্র বন্দরে ১৩৫ কি.মি নৌপথ

Posted on July 24, 2017 | in জাতীয়, ব্যবসা-অর্থনীতি | by

ডেস্ক রিপোর্ট : পশুর নদীর চ্যানেলের খনন কাজ শেষ হওয়ায় বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়া থেকে মংলা বন্দরের জেটি পর্যন্ত ১৩১ কিলোমিটার নৌপথ ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে। এতে দেশের সামুদ্রিক বন্দর মংলায় ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। এখন একসঙ্গে ৩৩টি দেশি-বিদেশি জাহাজ এখানে ভিড়তে পারছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন্দরে জাহাজে পণ্য আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। এখন মংলা বন্দর ব্যবহারের কথা ভাবছে নেপাল, ভূটান ও ভারত।

মংলা বন্দরের হারবার বিভাগ জানিয়েছে— সুন্দরবন সংলগ্ন করমজল, জয়মনিরগোল ও হারবাড়িয়া নামক স্থানে নোঙর ফেলে পণ্য খালাস করতো দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজগুলো। বন্দরের প্রবেশদ্বারে পলি জমা পড়ায় বিদেশি নাবিকরা ঝুঁকির কারণে হারবাড়িয়া পর্যন্ত আসতে চাইতেন না।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলীর (নৌ) অতিরিক্ষ দায়িত্বে থাকা শওকত আলী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, প্রতি বছর পশুর চ্যানেলে পলি জমতো ১ দশমিক ৪ ফুট। পশুর নদীর নাব্যতা না থাকায় ৯ মিটার গভীরতায় জাহাজগুলো বন্দরের জেটিতে ভিড়তে পারতো না। এ কারণে ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে পশুর চ্যানেলে নাব্যতা সৃষ্টির জন্য ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে চায়না হারবার কোম্পানি ৩৫ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারণ করে।

এরপর চ্যানেলে পুনরায় নাব্যতা সংকট দেখা দিলে বিভিন্ন মহলের দাবিতে ২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল একনেকের সভায় পশুর চ্যানেলে ড্রেজিং করার জন্য ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়। পরবর্তীতে বেড়ে যায় এর ব্যয়। ২০১২ সাল থেকে খনন প্রক্রিয়া শুরু করে শেষ হয় ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর। এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ১১১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ৩৪ লাখ ৮ হাজার মিটার পলি অপসারণ হয়েছে।

মংলা বন্দর (ছবি- সংগৃহীত)মংলা বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার ওলিউল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বন্দরের যাত্রার শুরুতে মংলা নালা ও পশুর নদীর সংযোগস্থলে নদীর গভীরতা ছিল ৩৫ ফুট। এখন জেটিসহ ফেয়ারওয়ে বয়ায় একসঙ্গে ৩৩টি জাহাজ ভিড়তে পারে। এছাড়া চারটি ট্রানজিট শিট ও দুটি ওয়ারহাউস রয়েছে। সেখানে ৬০ হাজার মেট্রিক টন মালামাল রাখার ব্যবস্থা আছে। এছাড়া তিনটি কন্টেইনার ইয়ার্ড ও গাড়ি ইয়ার্ডে দুই হাজার গাড়ি রাখা সম্ভব।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান অর্থ ও হিসাররক্ষণ কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬২৩টি জাহাজ আসা-যাওয়া করেছে। ড্রেজিংয়ের পর থেকে বন্দরের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক পরিচালক গোলাম মোস্তফা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নিজস্ব বন্দর না থাকায় কলকাতার হলদিয়া বন্দর ব্যবহার করে আসছে নেপাল ও ভূটান। এখন মংলা বন্দর ব্যবহারের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে তাদের। এ নিয়ে তারা গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে।’

মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভূটানের আট সদস্যের প্রতিনিধি দল ২০১৩ সালের ১১ জুলাই বাংলাদেশ সফর করেন। সূত্র জানায়, আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে খরচ কমানোর লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে নেপালের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মংলা বন্দর সফরের সময় সুবিধাগুলো পর্যবেক্ষণ করেন। ১৯৯৭ সালে নেপাল এই বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দিলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তাতে সম্মতি জানায়।

১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মংলা বন্দরের মাধ্যমে ৬৩ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করে নেপাল। ট্রাকযোগে বাংলাবন্দ চেকপোস্ট হয়ে এসব মালামাল নেওয়া হয় সেই দেশে। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ ভারতের বাধার পর এ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৯ সালে নেপালের পক্ষ থেকে মংলা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দেওয়া হয় আবারও। কিন্তু পরবর্তীতে দেশটি এগিয়ে না আসায় উদ্যোগটি সাফল্যের মুখ দেখেনি।

সূত্র : বাংলাট্রিবিউন।

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud