পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

জনির সাফল্যের গল্প

Posted on June 3, 2015 | in তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা ও সংস্কৃতি | by

ঢাকা: কাঠের পিঁড়িতে ভর করে চলা শারীরিক প্রতিবন্ধী আতিকুল ইসলাম জনি (১৭) কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ গ্রেডে পাশ করেছে। 27469_1
জনির বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলার শিমুলবাড়ি গ্রামে। এক বছর আগে বিনা চিকিৎসায় বাবা মোখলেসুর রহমান মারা গেছেন। মা কাজুলী বেগম পরের বাড়িতে কাজ করেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে জনি ছোট। অভাব অনটনের সংসার। শুধু রয়েছে মাথা গোজার ঠাঁই চার শতকের বসতভিটা।

সে ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ি আব্দুল ওয়াদুদ কারিগরি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
মা কাজুলী বেগম বলেন, জন্মের পর ছোট আকারের দুই পা নাড়াতে পারেনি জনি। শরীরের সঙ্গে দুইটি পায়ের বাঁকা পাতা ঝুলছে। পিঁড়েতে ভর করে হামাগুড়ি দিয়ে চলা ফেরা করতে হয়। চলাচলের সামর্থ না থাকলেও ছেলের অদম্য ইচ্ছায় বাড়ির পাশে শিমুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন তাকে। এর পর থেকে শুরু হয় মায়ের কোলে চড়ে স্কুলে যাতায়াত। এভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করে ভর্তি হয় গোসাইবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে ২০১১ সালে জেএসসি পরীক্ষায় চার দশমিক উনচল্লিশ পয়েন্ট পেয়ে কৃতকার্য হয়। এরপর অভাবের কারনে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। দুই বছর পর আবারো ভর্তি হয় গোসাইবাড়ি আব্দুল ওয়াদুদ কারিগরি স্কুলে।

এসএসসি পাশের খবর পেয়ে স্বনজদের মুখে হাঁসি ফুটেছে। কিন্ত এ সাফল্য জনির মনে আনন্দের পরিবর্তে বয়ে এনেছে দুশ্চিন্তা। কারন জনি লেখাপাড়া করে আদর্শ শিক্ষক হতে চায়। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান জনির উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন আদৌ পুরন হবে কিনা এ নিয়ে সংশয় সৃষ্টি দিয়েছে। জনির সহপাঠিরা পরীক্ষায় পাশ করে পাড়ার সব মানুষের মাঝে মিষ্টি বিতরন করছে। জনিরও আশা ছিল সহপাঠিদের মতোই পাড়ার মানুষকে মিষ্টি খাওয়াবে। কিন্তু সে ভাগ্য তার নাই। ওই দিন তার ঘরে মিষ্টি কেনার টাকা ছিল না। আনন্দ করতে পাড়ার অনেকেই তার বাড়ীতে এসেছিলেন। কিন্ত তাদের আনন্দের ভাগিদার করতে পারেনি। তবে এক সময় হয়তো বিধবা মায়ের এই কষ্টও মুছে দিতে পারবে। এ আশাই তার মায়ের শান্তনা।

আতিকুল ইসলাম জনি জানায়, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়-এ কথা আমি বিশ্বাস করি। কারন আমার প্রবল ইচ্ছাকে দারিদ্রতা হার মানাতে পারেনি। তাই আজ আমার এ সাফল্য। আমার এ সাফল্যের জন্য শিক্ষক, মা ও বড় ভাই সবচেয়ে বেশী অনুপ্রেরনা রয়েছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud