May 6, 2024
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন এমবিএ কোর্সের এক ছাত্রী। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে এ ছাত্রীকে বিয়ে করলেও পরে সে শিক্ষক আবার যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক পরিশোধ না করায় এখন তালাক দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন তিনি। অভিযুক্ত ওই শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) বিভাগের প্রভাষক আবু নাসের মুহম্মদ সাইফ।
ওই শিক্ষার্থী সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), সিন্ডিকেটের সদস্য, বিভাগীয় চেয়ারম্যান এবং প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ করে ঘটনার প্রতিকার চেয়েছেন। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যৌন হয়রানি ও নিপীড়নরোধ কমিটির প্রধান ড. নাসরীন আহমেদ বলেন, ‘এমন একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনার জন্যে একটি সেল রয়েছে, সেহেতু সেলই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে। তবে বিষয়টি আগে সিন্ডিকেট কিংবা ডিনস কমিটির সভায় উঠতে হবে। সেখান থেকে দিক নির্দেশনা দিলেই সেলটি কাজ শুরু করবে।’
তিনি ঘটনাটিকে ‘নোংরামি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘তারা দেশে-বিদেশে নোংরামি করে বেড়াবে আর বিপদে পড়লেই আমাদের দ্বারস্থ হবে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আমজাদ আলী বলেন, ‘সম্প্রতি এ ধরনের একটি অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), সিন্ডিকেটের সদস্যবৃন্দ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্টদের কাছে দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন রোধে সেল রয়েছে, সেহেতু সেটি তারা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে।
অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআইএস বিভাগের প্রভাষক আবু নাসের মুহম্মদ সাইফের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। যৌন নিপীড়নের লিখিত অভিযোগপত্রে এমআইএসের ইএমবিএ ১৯তম ব্যাচের ওই ছাত্রী বলেছেন, পড়াশোনায় সাহায্য করার জন্য মুহম্মদ সাইফ ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ভবনে তার কক্ষে (৬০১২নং) আমাকে প্রায়ই যেতে বলতেন। আমিও মাঝে মাঝে তার কক্ষে যেতাম। এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে গত বছরের ২৪ নভেম্বর তিনি আমাকে ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে ঘটনাটি বন্ধু-বান্ধবদের জানাতে চাইলে তিনি আমাকে বিয়ে করতে প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর বেশ কয়েক বার দুই জন শারীরিক সম্পর্কে জড়াই। এর মধ্যেই কয়েক বার তাকে বিয়ে করতে অনুরোধ করলে তিনি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নেপালে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে যোগদান শেষে দেশে ফিরে এসে বিয়ে করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। সাইফ আমাকে নেপালেও নিয়ে যান এবং দুই জন একসঙ্গে হোটেলে ও তার বন্ধুর বাসায় থাকি।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, গত ৪ মার্চ সাইফ ও ওই ছাত্রী বিয়ের এফিডেভিট করেন এবং ৫ মার্চ বিয়ে করেন। এরপর তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একসাথে বাস করতে থাকেন। কিন্তু গত ১৫ মার্চ মুহম্মদ সাইফ ওই নারীর বাবা ও বোনের স্বামীর সঙ্গে রাজধানীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে তিনি ধানমন্ডিতে একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য ৮০ লখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু ওই ছাত্রী এবং তার বাবা ও বোনের স্বামী যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করলে তিনি রেগে যান ও রেস্টুরেন্ট ত্যাগ করেন। পরে তিনি দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না দিলে তালাকনামা পাঠাবেন বলে হুমকি দেন।