May 4, 2024
ডেস্ক রিপোর্ট : কয়েক মাস ধরে চড়া বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে ঈদের ছুটির এক দিন আগে চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। ওই দিনই হিলি ও ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ব্যবসায়ীরা প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করে। তবে ঈদের লম্বা ছুটির কারণে আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে বাজারে এখনো বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল।
গতকাল সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। মোটা চাল ৪৮-৫০ এবং অন্যান্য চাল ৫০-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, গত এক মাসে কোনো ধরনের চালের দাম কমেনি, বরং বেড়েছে। এর মধ্যে মোটা চালের দাম বেড়েছে ৩.৩০ শতাংশ, যা এক বছরের হিসাবে প্রায় ৪৭ শতাংশ। এখন বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৪৮ টাকা কেজিতে। এ ছাড়া এই এক মাসে সরু চালের দাম বেড়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ, এক বছরের হিসাবে বৃদ্ধির পরিমাণ ১৬.১৬ শতাংশ। টিসিবির হিসাবে বাজারে সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা দরে। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য মতে, সাধারণ মানের নাজির ও মিনিকেটের কেজি ৫৫-৫৮ টাকা আর ভালো মানেরটা ৫৮-৬০ টাকা।
ঢাকার কারওয়ান বাজার ও পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনো আমদানি করা চাল বাজারে আসেনি।
বাদামতলীর চালের পাইকারি বিক্রেতা শাওন ও কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা ঈসমাইল বলেন, এখনো বাজারে আমদানি করা চাল আসেনি। সেগুলো আসতে থাকলে দাম কমে আসবে। সরবরাহে কোনো ঘাটতি আছে কি না জানতে চাইলে তাঁরা জানান, মাস দেড়েক হয়েছে নতুন চাল বাজারে এসেছে। দাম বেশি হলেও সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই।
রাজধানীর শাহজাদপুরের ফাতেমা ট্রেডার্সের কামাল জানান, বাজারে এখন বেশির ভাগই নতুন চাল। তার পরও গত এক মাসে দাম তো কমেইনি, বরং বেড়েছে। আমদানি করা চাল বাজারে এসেছে কি না সে বিষয়ে তাঁর কাছে কোনো তথ্য নেই।
হাতিরপুল বাজারে মিল্টন নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘পত্রিকায় দেখেছি চাল আমদানি শুরু হয়েছে। কিন্তু বাজারে সেসব দেখছি না। যে কারণে বেশি দামেই কিনছি। ’
ঈদের ছুটির আগে ২৩ জুন ভোমরা ও হিলি বন্দরে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন চাল ছাড় করিয়েছে আমদানিকারকরা। গত ২ তারিখে বন্দর খুললেও এদিন কোনো চাল আসেনি।
ভোমরা বন্দরের সহকারী শুল্ক কর্মকর্তা বিকাশ কান্তি বড়ুয়া জানান, বন্দর রবিবার খোলা থাকলেও সেদিন কোনো চাল আমদানি হয়নি। কারণ সেদিন ভারতে সাপ্তাহিক ছুটির কারণে বন্দর বন্ধ ছিল। তবে আমদানিকারকরা চালের প্রচুর এলসি খুলছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, ট্যাক্স কমবে এই খবরে বন্দরে আটকে থাকা পাঁচ হাজার মেট্রিক টন চাল ঈদের আগে দেশে প্রবেশ করেছে। আমদানিকারকরা আরো প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টনের ঋণপত্র খুলেছে। তবে ঈদের পর রবিবার কোনো চাল আমদানি হয়নি।
জানা গেছে, শুল্ক কমানোর আগে যেখানে প্রতি টন চাল আমদানিতে ৯ হাজার ১২৫ টাকা শুল্ক দিতে হতো, এখন সেখানে দিতে হচ্ছে তিন হাজার ২২৫ টাকা।
সরকারি গুদামে মজুদ কমে যাওয়ায় এবং চুক্তি করেও মিলাররা সরবরাহ না করায় সরকারও চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কালের কণ্ঠ