পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

কারও কাছে মাথা নত করিনি, করবো না: প্রধানমন্ত্রী

Posted on February 21, 2014 | in জাতীয় | by

1392985543ঢাকা:  বাঙালি জাতি রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছে, একইসঙ্গে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বাঙালি কারও কাছে মাথা নত করেনি এবং করবেও না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার বিকেলে শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আয়োজিত ৪ দিনব্যাপী সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমনটি জানিয়ে দেন তিনি। এসময় যেকোনো মূল্যে স্বাধীনতার চেতনা সমুন্নত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছি, স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা কারও কাছে মাথা নত করিনি, ভবিষ্যতেও করবো না। শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীতে এমন দেশ খুব কমই আছে যেখানে ভাষার জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে। আমাদের বাংলা ভাষা এমনই ভাষা, যে ভাষার জন্য সংগ্রাম-লড়াই করতে হয়েছে। বাঙালি লড়াই করে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের ইতিহাস হচ্ছে বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এবং অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনের। আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করে মাতৃভাষা অর্জন করেছি। ভাষা সংগ্রামী দুই বীর শহীদ রফিক-সালামকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই রফিক-সালাম বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়ে আমাদের ভাষা দিয়ে গেছেন। আর দুই প্রবাসী সালাম-রফিক ভাষার মর্যাদার আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতির জন্য উদ্যোগ নিয়ে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রবাসী রফিকুল ইসলাম কিছুদিন আগে মারা গেছেন। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার নাম ইতিহাসে লেখা থাকবে। বাংলাকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য তাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, সালাম-রফিকসহ প্রবাসী বাঙালিদের উদ্যোগের পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে সব দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানের কাছে ভাষা-আন্দোলনের তথ্য ও ছবি পাঠানো হয়েছে। এর ফলেই খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্বীকৃতি পেয়েছে। এসময় ১৯৫২ সালের এ দিনে মাতৃভাষার সম্মান ধরে রাখতে যারা রাজপথে রক্ত ঢেলে দিয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতিও শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। ভাষা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ সালে এক বাঙালি বেঈমানের পরামর্শে উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু ভাষা সংগ্রামীদের নানাভাবে উৎসাহ দিয়ে গেছেন।

ক্ষমতায় আসার পর বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষার স্বীকৃতি বঙ্গবন্ধুই দিয়েছেন বলে জানান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেখলাম বায়ান্ন ও একাত্তরের পরাজিত শক্তিই আমাদের ওপর আগের পরাধীনতা চাপিয়ে দিতে চাইছে। ২০০১ সালে ওই পরাজিত শক্তি ক্ষমতায় এসে দেশকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করে বিশ্বের কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশকে বিশ্বের কালো তালিকা থেকে বের করে এনেছে। আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শুধু বাংলা নয়, বিশ্বের বিলুপ্ত সব ভাষা নিয়ে গবেষণা করতে হবে।

আর্থিক সংকটে দেরিতে হলেও এ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করতে পেরে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।  তবে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের পর পরবর্তী সরকার সে কাজে অবহেলা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। সকল সংকট কাটিয়ে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রের তালিকায় স্থান পাবে বলেও এসময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী, শিক্ষাবিদ, পেশাজীবীসহ সরকারের বর্তম‍ান ও সাবেক কর্মকর্তারা।

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud