November 6, 2025
ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে বিজিবি ও পুলিশের তিন সদস্যসহ ৯ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- বিজিবির সুবেদার শাহজাহান, সদস্য সোহেল এবং পুলিশের নায়েক ফিরোজ ও কনস্টেবল জাকারিয়া। পরিচয় পাওয়া বাকি দুজন হলেন পথচারী সাইফুল ইসলাম ও মাছুম। তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
সোমবার ভোরে এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। ঢাকার শাপলা চত্বর থেকে ভোররাতে বিতাড়িত হয়ে হেফাজতের নেতাকর্মীরা কাঁচপুর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নেয়। এরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয়। এর আগে হেফাজত কর্মীরা কাঁচপুর পুলিশ ফাঁড়ি ও সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসে আগুন দেয়।
এদিকে তিনজনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক আজিজ আহমেদ ঢামেক হাসপাতালে যান।
জানা যায়, সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় মাদানী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও হেফাজতের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি এসে যোগ দেয়।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ভোরে ফজর নামাজের পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকার মাদানীনগর মাদরাসায় তল্লাশির চেষ্টা চালায় র্যাব ও পুলিশ। এসময় মাদ্রাসার ছাত্ররা তল্লাশি অভিযানে বাধা দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। একই সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালালে শুরু হয় ত্রিমুখী সংঘর্ষ। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা মাদরাসার বিভিন্ন কক্ষে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ফুটপাতের প্রায় ২৫টি দোকানের চৌকিতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ২০ থেকে ২৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেয় মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ ও প্রায় শতাধিক আহত হয়।