May 7, 2024
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অর্থের উৎস সম্পর্কিত অংশ পুনঃতদন্তের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদন আপিল বিভাগেও খারিজ হয়ে গেছে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ রোববার কিছু পর্যবেক্ষণসহ এই আদেশ দেয়।
এর ফলে খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে দেওয়া হাই কোর্টের আদেশই বহাল থাকছে এবং নিম্ন আদালতে স্বাভাবিক বিচার কার্যক্রম চলতে কোনো বাধা থাকছে না বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদিন এবং মাহবুব উদ্দিন খোকন। সঙ্গে ছিলেন জাকির হোসেন ভূঁইয়া। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
খালেদার আইনজীবীদের ভাষ্য, মামলায় যে টাকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে তা সৌদি আরব থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে এসেছে বলে অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে। কিন্তু তাদের নথি অনুযায়ী ওই টাকা এসেছে কুয়েত থেকে। মামলার এ অংশটির পুনঃতদন্ত চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
তার ওই আবেদন গত ২ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে খারিজ হলে তার আইনজীবীরা হাই কোর্টে আবেদন করেন। কিন্তু ৯ মার্চ হাই কোর্টেও তা খারিজ হয়ে যায়। আপিল বিভাগে ওই আদেশই বহাল থাকল।
দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান আদেশের পর সাংবাদিকদের বলেন, “খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে হাই কোর্ট যে আদেশ দিয়েছিল আপিল বিভাগ তাতে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে সেই আদেশ বহাল রেখেছে। পর্যবেক্ষণে এ মামলার অর্থের উৎস সংক্রন্ত নথির বিষয়ে কোনো নির্দেশনা থাকতে পারে।”
অন্যদিকে খালেদার আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, “আপিল বিভাগ অর্থের উৎস সংক্রান্ত নথির বিষয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ বিচারিক আদালতকে আমলে নিতে হবে।”
এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। তদন্ত শেষে পরের বছর ৫ অগাস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
তার পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৎকালীন তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
খালেদা জিয়া, সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ এ মামলায় জামিনে আছেন। খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান গত নয় বছর ধরে দেশের বাইরে, তার বিরুদ্ধে এ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। এছাড়া কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন এই মামলাটি আত্মপক্ষ সমর্থন পর্যায়ে রয়েছে। একই আদালতে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাও বিচারাধীন।
সূত্র : বিডিনিউজ২৪।