November 6, 2025
ঢাকা:শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিকদের জন্য ‘গ্রুপ বীমা’ করার বাধ্যবাধকতা রেখে সংশোধিত শ্রম আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। যে সব প্রতিষ্ঠানগুলোতে ন্যূনতম ১০০ জন শ্রমিক রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এ আইনে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিক জানান, শ্রমিকের বীমা দাবির টাকা প্রতিষ্ঠানের মালিক নিজ উদ্যোগে আদায় করবে এবং কোনো কারণে শ্রমিক যদি মারা যায় বা তার মৃত্যু হয় তাহলে তার পোষ্যদের বীমার টাকা মালিকদের আদায় করে দিতে হবে। তিনি জানান, এ আইনে ৯০ দিনের মধ্যে বীমা দাবি নিষ্পত্তির বিধানও রাখা হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল খসড়ার নীতিগত অনুমোদন পাওয়ার পর আইন মন্ত্রনালয়ের ভেটিং শেষে চূড়ান্ত করা এ আইনে শ্রমিকের স্বার্থ, নিরাপত্তা ও অধিকার সমুন্নত করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। সিবিএ এবং ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোতে পার্টিসিপেটরি কমিটি করার বিধান রেখে এ আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন আইন পাশ হলে কোনো শ্রমিকের চাকরির মেয়াদ ১২ বছর হলে এক মাসের মজুরির সমান এবং ১২ বছরের বেশি হলে দেড় মাসের মজুরির সমান গ্রাচুইটি পাবেন। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় শ্রমিক নিয়োগে ‘আউট সোর্সিং’ কোম্পানিগুলোর জন্য রেজিস্ট্রেশন করার বিধান রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান। শ্রমিকদের বেতন-ভাতা সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে দেয়ার সুবিধার বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে। “বর্তমান আইনে ট্রেড ইউনিয়নের নামের তালিকা মালিকপক্ষকে সরবরাহ করতে হতো তবে নতুন আইন পাশ হওয়ার পর নামের তালিকা মালিক পক্ষকে দিতে হবে না।” বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
প্রতিষ্ঠানগুলোতে সিবিএগুলো বিশেষজ্ঞ সহায়তা নিতে পারবে বলেও উল্লেখ রয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। “শ্রমিকরা যে পরিবেশে কাজ করবে সেই পরিবেশের জন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা, প্রতিবন্ধকতা ছাড়া বহির্গমন পথ ও সিঁড়ি নিশ্চিত করার বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে।” রপ্তানিমুখী গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিকদের জন্য কল্যাণ তহবিল করার বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে। এ তহবিল করতে আলাদা বিধিমালার বিধান রাখা হয়েছে। এজন্য আলাদা একটি বোর্ড গঠন করা হবে। কারখানার কাঠামোগত নকশা ও লে-আউট পরিকল্পনার মধ্যে সামঞ্জস্য রাখার বিধান রাখার কথা বলা হয়েছে এ আইনে।
সংশোধিত শ্রম আইনে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠানে ৫ হাজারের বেশি শ্রমিক কর্মরত থাকলে সেখানে স্বাস্থ্যসেবার জন্য ক্লিনিক থাকতে হবে। শ্রমিক সংখ্যা এর চেয়ে কম হলে স্বাস্থ্যসেবার বিকল্প ব্যবস্থা রাখতে হবে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন),২০১৩’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।