May 18, 2024
নিউজ ডেস্ক: দেশের দুই মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড এবং এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেড একীভূত হওয়ার জন্য গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিটিআরসি বরাবর আবেদন করেছে। আগামীকাল বুধবার বিটিআরসির ১৮৯ তম বৈঠকে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পর অনুমোদন দেবে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এরপর আগামী সপ্তাহেই একীভূত হতে চায় রবি-এয়ারটেল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিটিআরসির সচিব মো. সারওয়ার আলম জানিয়েছেন, রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও এয়ারটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্বাক্ষরিত একীভূত হওয়ার একটি আবেদনপত্র পেয়েছি। (বুধবার) কিমিশন মিটিং পরবর্তী এসব বিষয়ে চূড়ান্ত তথ্য জানানো যাবে। যৌথভাবে আবেদনপত্রে জানানো হয়েছে, রবি আজিয়াটা ৭৫ শতাংশ শেয়ার পাবে আর এয়ারটেল পাবে ২৫ শতাংশ। রবি যে ৭৫ শতাংশ পাবে তার মধ্যে ৫ শতাংশ পাবে রবির আরেক সহযোগী জাপানের এনটিটি ডকোমো। এদিকে রবিতে আজিয়াটার শেয়ার আছে ৯১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
আর ডকোমোর শেয়ার আছে ৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। ২০০৭ সালে ডকোমো তখনকার একেটেলের ৩০ শতাংশ শেয়ার কিনে যাত্রা করলেও পরে এখানকার বাজারে আর কোনো বিনিয়োগ করেনি। ফলে তাদের শেয়ার কমতে থাকে। আর বাড়তে থাকে আজিয়াটার শেয়ার। মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন হবে কিনা এ ব্যাপারে দুইটি প্রতিষ্ঠানের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে আগামী ২ বছর ০১৬ নাম্বার থাকবে। এরপর প্রয়োজন হলে নাম্বার পরিবর্তনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নিয়ম আনুসারে কোম্পানি এক্ট ১৯৯৪ অনুযায়ী রবি এবং এয়ারটেল একীভূত হবে। এর আগে বিটিআরসির আগামীকাল বুধবারের কমিশন বৈঠকে অনুমোদন পেলে সেটি সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে যাবে। এরপর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে। আদালত অনাপত্তি জানালে রবি ব্র্যান্ড নামেই এয়ারটেল যাত্রা শুরু করবে।
বিটিআরসির সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে প্রায় ১৩ কোটি মোবাইল গ্রাহকের মধ্যে রবির গ্রাহক রয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ আর এয়ারটেলের রয়েছে ৯০ লাখ গ্রাহক। দুটি প্রতিষ্ঠান একীভূত হলে রবির মোট গ্রাহক সংখ্যা হবে ৩ কোটি ৭ লাখ। ফলে বাংলালিংককে ছাড়িয়ে রবি হয়ে যাবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর। ২০১২ সাল থেকে লাভে থাকা রবির বাৎসরিক আয় ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং এয়ারটেলের ২ হাজার কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, গত মাসের শেষ সপ্তাহে মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুরে রবি আজিয়াটা ও এয়ারটেল একীভূত হওয়ার আলোচনা শুরু করে। যদিও তখন ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছিল ফ্রান্সের কোন একটি মোবাইল অপারেটর বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার এয়ারটেল কিনে নিতে পারে। তবে শ্রীলংকা এয়ারটেলের কোন খবর জানা না গেলেও বাংলাদেশের এয়ারটেল শেষ পর্যন্ত রবি কিনে নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ওয়ারিদ টেলিকমের হাত ধরে এয়ারটেল প্রবেশ করে ২০১০ সালে। তখন ওয়ারিদের ৭০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয় এয়ারটেল।
২০১৩ সালে এসে বাকি ৩০ শতাংশও নিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। তাদের বাংলাদেশে লাইসেন্স-এর মেয়াদ রয়েছে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। এদিকে রবি বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করে ১৯৯৭ সাল থেকে। তখন তাদের ব্র্যান্ড নাম ছিল একটেল। প্রতিষ্ঠানটি ২০১১ সালে তাদের প্রথম ১৫ বছরের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ করে দ্বিতীয় দফায় লাইসেন্সের অনুমোদন পেয়েছে।