পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

চেকপোস্টের নামে পুলিশের রমরমা বাণিজ্য

Posted on May 30, 2014 | in জাতীয় | by

POLICEডেস্ক রিপোর্ট :  তল্লাশির নামে রাজধানীতে পথচারীদের প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে পুলিশ। রাজধানীতে চেকপোস্টের নামে চলছে পুলিশের রমরমা বাণিজ্য। কোনো পথচারীকে ধরতে পারলেই পাওয়া যাচ্ছে টাকা। তবে ওই টাকা পথচারীকে নিজে থেকে দিতে হচ্ছে না। পুলিশই তার পকেটে হাত ঢুকিয়ে টাকা তুলে নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশকে বাধা দেয়া হলে কোনো কথা নেই। সোজা জেলখানায় যেতে হচ্ছে। এভাবেই চলছে রাজধানীর চেকপোস্ট। ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তির অভিযোগে চেকপোস্ট সম্পর্কে এ ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সরেজমিন কয়েকটি চেকপোস্টে এমন চিত্র দেখাও গেছে। মঙ্গলবার রাত ৯টা। কারওয়ানবাজার থেকে  হেঁটে ফার্মগেটের দিকে যাচ্ছিলেন দুই বন্ধু সজল ও আরিফ। আনন্দ সিনেমা হলের কাছে ওভারব্রিজের নিচে পৌঁছলে চেকপোস্টে পুলিশের কবলে পড়েন তারা। পুলিশ প্রথমে  দুই বন্ধুকে দাঁড় করায়। এরপর কোথা থেকে এসেছে, কোথায় যাচ্ছে, কেন যাচ্ছে এসব জানতে চায়। একপর্যায়ে তাদের দেহ তল্লাশি করা হবে বলে হাত ওপরে তুলতে বলে।

এর মধ্যে অন্য পুলিশেরা আরো কয়েকজনকে দাঁড় করায়। দাঁড় করানো হয় আরোহীসহ কয়েকটি  মোটরসাইকেল। এদিকে দুই বন্ধু হাত উঁচু করে দাঁড়াতেই এক পুলিশ কনস্টেবল তাদের পকেটে হাত ঢুকিয়ে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ পকেট থেকে মোবাইল ও মানিব্যাগ বের করে এবং কিছু সময় মোবাইল দু’টি চাপাচাপি করে ফেরত দেয়। অপর এক পুলিশ সদস্য মানিব্যাগ ঘাঁটাঘাঁটি করে। তারা একটি মানিব্যাগ থেকে কয়েকটি নোট তুলে নেয়। এরপর মানিব্যাগও ফেরত দেয়া হয়। দুই বন্ধু মানিব্যাগ চেক করতে গেলে পুলিশ তাদের বলে ‘এদিক-সেদিক তাকাবি না। সোজা এখান থেকে চলে যাবি। না হলে অস্ত্র মামলায় সোজা থানায় নিয়ে যাবো’।

দুই বন্ধু কোনো কথা না বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এর তিন দিন আগে রাতে ফকিরাপুলে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়। সেখানে পুলিশ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল আটক করে। এক মোটরসাইকেল চালক অভিযোগ করেন, তার  মোটরসাইকেলের কাগজপত্র সব ঠিক আছে। কিন্তু তারপরও সেখানকার পুলিশ দুই হাজার টাকা দাবি করে। না দিলে অস্ত্র মামলা দিয়ে মোটরসাইকেলসহ তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। ভয়ে আরিফ নামে ওই মোটরসাইকেলারোহী পুলিশকে বলেন, তার কাছে দুই হাজার টাকা নেই। ১৬০০ টাকা আছে। পুলিশ ওই ১৬০০ টাকা রেখে তাকে ছেড়ে দেয়। একইভাবে অভিযোগ করলেন আরমান রহমান। তিনি বিদেশী প্রসাধনী আমদানিকারক একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।

রাতে রিকশায় মতিঝিল থেকে দয়াগঞ্জে বাসায় ফিরছিলেন। পথে টিকাটুলী এলাকায় চেকপোস্টে তার রিকশা দাঁড় করানো হয় এবং কয়েকজন কনস্টেবল তাকে প্রশ্ন শুরু করেন। আরমান বলেন, সব অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করতে থাকে। এর জন্য তাদের কিছু বললেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, আমি বারবার বলছিলাম আপনার অফিসারকে ডাকেন। আমি তো এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারব না। এতে কনস্টেবলরা আরো ক্ষেপে গিয়ে আরমানকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তারা তার প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে টাকা ও মোবাইল কেড়ে নেয়। পরে সেগুলো ফেরত চাইলে মোবাইলের সিমকার্ড খুলে দিয়ে বলে, ‘এখানে আর এক মুহূর্ত দাঁড়ালে তোর খবর আছে। এই বলেই ওই কনস্টেবল নিজের পকেট থেকে ইয়াবার মতো ট্যাবলেট বের করে বলে  ‘এটা তোর পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে চালান করে দেবো’।

সূত্র মতে, পুলিশের চেকপোস্ট বাণিজ্য নতুন কিছু নয়। তবে সম্প্রতি র‌্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ঘোষণা দিয়েছে তারা এখন থেকে আর চেকপোস্ট বসাবে না। এমনকি নিয়মিত টহল কার্যক্রমও বন্ধ রাখবে। যার কারণে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীতে চেকপোস্ট বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।

কিন্তু এই চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যারা  অপরাধী ধরার নামে  হয়রানি করছে সাধারণকে। সুযোগ বুঝেই কেটে নিচ্ছে তাদের পকেট। পথচারীরা অভিযোগ করছেন, জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য চেকপোস্ট। কিন্তু বর্তমানে এই চেকপোস্ট সাধারণ মানুষের আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছেন, চেকপোস্টগুলোতে এমন কিছু পুলিশ সদস্য রয়েছে যাদের আচরণ খুবই রূঢ়। মনে হয় তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র শিক্ষার আলো নেই। অপরাধী ও সাধারণ মানুষ সবার সাথে একই ভঙ্গিতে কথা বলে। কার সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় সেটাও জানে না। এ নিয়ে তাদের কিছু বোঝাতে গেলে তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে। এমন অবস্থা যে হাতে অস্ত্র থাকায় নিজেদের বড় সন্ত্রাসী মনে করে তারা।

এ ব্যাপারে ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীতে পুলিশের চেকপোস্ট বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি বলেন, চেকপোস্টে কোনো পুলিশ সদস্য সাধারণ মানুষের সাথে অসদাচরণ করলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অন্য দিগš

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud