পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

বাজারে মধু ফলে বিষ, প্রশাসন চুপ

Posted on May 29, 2014 | in লাইফস্টাইল | by

BD (1) copyঢাকা: বাজারে এসেছে মৌসুমী ফল। জ্যৈষ্ঠের গরমে সরব মধুমাসের মধুফলের বাজার। তবে নতুন ফলের সাথে আসছে মানব শরীরের নিরব ঘাতকও। কীটনাসক ও ফরমালিন দেওয়া লাল টসটসে লিঁচু, কার্বাইডে পাকানো হলুদ আম, টেক্সটাইলে ডাইয়ে রাঙ্গানো আনারসেই বাজার সয়লাব। রাজধানীর অভিজাত সুপার শপগুলো থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তের ফলের দোকান কিংবা নিম্নবিত্তের ফুটপাত বাজার সবখানেই এই বিষাক্ত ফলের আগ্রাসন। ক্যামিকেলে পাকানো কলা অথবা হিট দেওয়া বেলের সাথে আছে বিষাক্ত পেয়ারাসহ হরেক ফল।

বাগান থেকে অপরিপক্ক ফল পেড়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে তা ঢাকায় পাঠাচ্ছে। বর্তমানে বাজারে রাজশাহী, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম ও লিঁচু বলে যা বিক্রি হচ্ছে তার সবই কার্বাইডে পাকানো বলে স্বীকার করেছেন ওই অঞ্চলের ফলের আড়তদাররা। রাজশাহীর শাল বাগান এলাকার পাইকারী ফল ব্যবসায়ী ফরিদ আহমেদ বলেন, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানগুলোতে এখনো আম পাকতে শুরু করেনি। স্বাভাবিক ভাবে আম পাকতে আরো অন্তত ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে।

সাধারণত মে মাসের ২৭/২৮ তারিখ থেকে রাজশাহীর পুরো বাগানগুলোতে গোপালভোগ পাকতে শুরু করলেও এবার অফ সিজন এবং নাবি ফলন হওয়ায় আমের মৌসুম ১৫ দিন পিছিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ঢাকার অসৎ ব্যবসায়ীরা অগ্রিম টাকা দিয়ে গাছ থেকে চাষীদের দিয়ে অপরিপক্ক আম পেড়ে কার্বাইড দিয়ে ঢাকা নিয়ে যাচ্ছেন। যা ঢাকা পৌছেতে গিয়ে পেকে হলুদ বর্ণ ধারণ করছে। ফরিদ আহমেদ আরো জানান, এখানকার গাছ পাকা আম কখনো এতোটা হলুদ হয়না, যতটা ঢাকার দোকানে শোভা পায়।

লিচু সম্পর্কে তিনি বলেন, খরায় এবার লিচুর ফলন কম। অতিরিক্ত তাপে লিচু পাকার আগেই গাছে ফেটে নষ্ট হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে স্থানীয় জাতের গুটি লিচু উঠলেও তা এখন শেষ পর্যায়ে। ২/১ দিন হলো বোম্বাই জাতের লিচু বাজারে আসলেও তার পরিমান কম। বেশির ভাগ লিচুই ফরমালিন ও বিষ দিয়ে বাগান থেকে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। এদিকে, আগাম আমের আর একটি উল্লেখযোগ্য মোকাম সাতক্ষীরা। এখানকার আমের আড়তদার বেলাল গাজী বাংলানিউজকে বলেন, সাতক্ষীরার আম কেবল পাকতে শুরু করেছে। কিন্তু ঢাকার বাজার ভরার মতো পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি।

তিনি বলেন, আজ থেকে ১৫-২০ দিন আগ থেকেই ঢাকার ব্যবসায়ীরা অগ্রিম টাকা দিয়ে কাঁচা আম পেড়ে কেমিক্যাল দিয়ে রাজধানীতে নেওয়া শুরু করে। এই আমের স্বাদও স্বাভাবিক নয়। অনেক ক্ষেত্রেই তা বিস্বাদেরই হয়। ঢাকার বাবু বাজারের ফল ব্যবসায়ী হাজী মোস্তফা আহমেদ জানান, আমরা ব্যাপারীদের পাঠানো আমও লিচু বিক্রি করছি। আমাদের এখানে কোন মৌসুমী ফলই এক দিনের বেশি রাখার প্রয়োজন হয়না। তাই ক্যামিকেল দেওয়ার প্রয়োজনও নেই।

তিনি বলেন, যদি কিছু হয়ে থাকে তা বাগান থেকেই হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের করারও কিছু নেই। এ দিকে রাজধানী জুড়ে বিষাক্ত ফলের জমজমাট ব্যবসা চললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেই। ভেজাল প্রতিরোধে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কার্যক্রমও নেই চোখে পড়ার মতো। কেবল মৌসুমী ফলই নয়, আমদানি করা আপেল, আঙ্গুর, মালটা, খেঁজুরসহ অন্যান্য বিদেশি ফলেও রয়েছে ফরমালিন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, ফল পাকাতে ক্যালসিয়াম কার্বাইড বা ইথোফেনের মতো বিষাক্ত জিনিসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। সেই সঙ্গে ফলকে আকর্ষণীয় করতে ব্যবহার করা হচ্ছে কেমিক্যাল জাতীয় রং। আর পচনরোধে স্প্রে করা হয় ফরমালিন। ফলে এখন আর কোনো ফল পচে না। মাসের পর মাস আঙ্গুর থোকায় থোকায় ঝুলে থাকে দোকানে। নির্ধারিত লাভ ছাড়া বিক্রি না হলে ক্ষতি নেই। আম, কলা, নাসপাতি, আপেল, কমলা এমনকি কাঁচাবাজারের টমেটোও শক্ত হয়ে থাকে দিনের পর দিন। …..বাংলানিউজ

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud