October 2, 2025
ঢাকা : ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বিদেশি অর্থ কিভাবে ব্যয় করে তা খতিয়ে দেখতে পারে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনিয়ম পেলে দুদকের মামলা দায়ের করাকেও স্বাগত জানানো হবে। রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটিকে এমনই আহ্বান জানিয়েছে বার্লিন ভিত্তিক সংস্থাটির বাংলাদেশ শাখা অফিস। বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল অবকাশে টিআইবি কর্তৃক আয়োজিত ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল: বাস্তবায়নের অগ্রগতি’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ কথা বলেন। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যদি আমাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি পাওয়া যায় তাহলে অনুসন্ধান করুন। অনিয়ম পেলে মামলা করুন।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার দুদক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু টিআইবির সমালোচনা করে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘টিআইবি বিদেশ থেকে টাকা এনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে তথাকথিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাদের এসব কাজের স্বচ্ছতা কি? সময় আসবে টিআইবির মুখোশ উন্মোচন করা হবে।’ এর একদিন পরই বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘গতকাল দুদকের মাননীয় কমিশনারের বক্তব্য আমি দেখেছি। বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখিয়ে তার বলার ভঙ্গিমায় আমি হতবাক এবং বিব্রত।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটা সবাই জানে যে আমরা বিদেশের অর্থেই গবেষণা প্রতিবেদন করি। টিআইবির কার্য্যক্রম বিদেশি অর্থায়নে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বিদেশি অর্থায়নের ওপর যদি তার এত অনীহা থাকে তাহলে তিনি (সাহাবুদ্দিন চুপ্পু) সরকারকে কিছু বলছেন না কেন? সরকারের অনেক প্রকল্পতো বিদেশি অর্থায়নে হয়।’
তিনি বলেন, সরকারের অনুমতি ছাড়া টিআইবি বিদেশ থেকে একটি পয়সাও পায় না। আবার আমরা যা ব্যয় করি তা সম্পর্কেও সরকার অবগত। টিআইবির ওয়েবসাইটে আমাদের আয় ব্যয়ের হিসাব রয়েছে। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে দুদক প্রতিষ্ঠার পেছনে টিআইবির অবদান কম নয়। দুর্নীতি দমন ব্যুরো থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন করার জন্য আমরাও কাজ করেছি। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমি খুব ইমোশনালি একটা কথা বলছি তা হলো, দুদককে বেবি (সন্তান) মনে করি। দুদককে টিআইবির প্রতিপক্ষ হিসেবে নয়; সহায়ক শক্তি হিসেবে দেখতে চাই।’
এদিকে টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় দুদকের কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়। মামলা দায়ের এবং প্রত্যাহারও হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। প্রতিবেদনে দুদক ছাড়াও নির্বাহী বিভাগ, জাতীয় সংসদ, বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনের সফলতা ও ব্যর্থতার দিক তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদন পাঠ করেন টিআইবি রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের শাম্মী লায়লা ইসলাম ও সাধন কুমার দাস। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এম হাফিজ উদ্দিন খান এবং উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের।