October 2, 2025
ডেস্ক রিপোর্ট : উল্টো পথে গাড়ি ঠেকাতে মন্ত্রিপাড়ার কাছে হেয়ার রোডে বসানো কাঁটা তুলে ফেলা হয়েছে। বসানোর দুই সপ্তাহের মাথায় এই প্রতিরোধ যন্ত্র আর দেখা যায়নি। ফলে আবারো অবাধে উল্টো পথে সুযোগ হলো গাড়ি চলার। পুলিশ বলছে, কিছু লিমিটেশনের কারণে তারা সাময়িকভাবে এই ডিভাইস তুলে নিয়েছে। তবে খুব দ্রæত সময়ে আবারও প্রতিস্থাপন করা হবে। রাজধানীর রমনা পার্কের কাছে ভিআইপি রোডে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন সুগন্ধার সামনে বিশেষ এই স্বয়ংক্রিয় প্রতিরোধ যন্ত্র বসায় ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজি) হাসান মাহমুদ খন্দকার গত ২৩ মে ঘটা করে এর উদ্বোধন করেন। ‘প্রতিরোধ’ নামে আধুনিক এই যন্ত্রে ধারালো ধাতব কাঁটা উল্টো দিক দিয়ে প্রবেশ করা গাড়ির চাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফুটো করে দিত। প্রতিরোধ যন্ত্রটির ধারালো কাঁটা ৪৫ মিলিমিটার পরপর রাস্তার উপর তিন ইঞ্চি উঁচু হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। সোজা পথে চলা গাড়ির চাকা এর ওপর চাপ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা নিচু হয়ে গাড়ি চলে যেতে সাহায্য করবে। গাড়ি চলে যাওয়ার পরপরই আবার ধারালো কাঁটা দাঁড়িয়ে যেত। এ ডিভাইস স্থাপনের সময় টাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জরুরি প্রয়োজনে অনুমতি নিয়ে যান চলাচল করতে পারবে। তবে সাময়িকভাবে উল্টো পথে বন্ধ থাকে যান চলাচল। বাংলাদেশে তৈরি ডিভাইসটি সফলভাবে কাজ করলে পরবর্তীতে শহরের অন্যান্য সড়কেও তা বসানোর পরিকল্পনা আছে, জানিয়েছিল ট্রাফিক বিভাগ। কিন্তু গত শুক্রবার খুলনা থেকে একজন রোগীকে বহন করা একটি অ্যাম্বুলেন্স উল্টো পথে গিয়ে চারটি চাকা ফুটো হয়, আর সেই রোগীকে এক ঘণ্টা ফুটপাতেই থাকতে হয়েছিল। এরপর একজন মন্ত্রীর গাড়ি উল্টো পথে গিয়ে চাকায় বিদ্ধ হয় ধাতব কাঁটা। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় সোমবারের মন্ত্রিসভায়। মন্ত্রিসভার একজন সদস্য এ ডিভাইস নিয়ে আলোচনা তুললে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, আপনাদের নিরাপত্তার জন্যই এটা বসানো হয়েছে। কোন মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীর গাড়ির চাকা ফুটো হয়েছে তা বলতে চান নি তিনি।
তবে এর আগেই ওই কাঁটাগুলো ভাঙতে শুরু করে। বুধবার সকালে হেয়ার রোডে ওই বিশেষ ডিভাইস আর দেখা যায়নি। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে এ ডিভাইস তুলে ফেলায় এ নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি হয় হেয়ার রোডের যাত্রীদের কাছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার (দক্ষিণ) রিজওয়ান খান বলেন, কিছু লিমিটেশনের কারণে এ ডিভাইস তুলে নেওয়া হয়েছে। খুব দ্রæত সময়ে আবারও প্রতিস্থাপন করা হবে। যানজট নিয়ন্ত্রণে শুধুমাত্র হেয়ার রোডে নয়, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কেও এই ডিভাইস বসানো হবে, বলেন পুলিশ কর্মকর্তা রিজওয়ান।
এর আগে উল্টো পথে গিয়েই প্রথম চাকা ফুটো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদের একজন সদস্যের। মন্ত্রী পরিষদের ওই সদস্য জানান, প্রধানমন্ত্রী আলোচনার সময় বলেছেন, গাড়ির চাকা ফুটো হওয়াতো কম ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়। তার চেয়ে মন্ত্রী এমপিদেরই বেশি নিরাপত্তার মূল্যই তো বেশি। তাছাড়া মন্ত্রীদের এলাকাতেই তো ডিভাইস বসানো হয়েছে।
মন্ত্রিসভার অন্য একজন সদস্য বলেন, যানজট দেখে বুঝে অথবা না বুঝেই হোক চালক উল্টো পথে গাড়ি চালিয়েছেন হেয়ার রোডে। সব পথে তো আর এই প্রতিরোধক বসানো নেই। সে কারণেই হয়তো ভুলটি হয়েছে। হয়তো তার জানা ছিল না এই পথেই ডিভাইস বসানো রয়েছে। সে কারণে ফুটো হয়েছে। রাজপথে দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে থাকার পর বিরক্ত হয়ে অনেক চালকই উল্টো পথে গাড়ি চালান। এতে অনেক সময় যানজট আরো প্রকট আকার ধারণ করে। বাংলানিউজ